ইতিহাসের অন্যতম ভয়াবহ দাবানলে পুড়ছে যুক্তরাষ্ট্রের অঙ্গরাজ্য!

হৃদয় বিদারক পরিস্থিতি যুক্তরাষ্ট্রের। পুড়ছে দেশটির বেশ কিছু অঙ্গরাজ্য। প্রায় এক সপ্তাহ ধরে চলা দাবানলের থাবায় সব পুড়ে ছাই। সহায় সম্বল হারিয়ে নিঃস্ব ক্ষতিগ্রস্থ অঙ্গরাজ্যের বাসিন্দারা। এর মধ্যে সর্বাধিক বিপাকে হাওয়াই দ্বীপের মাউই কাউন্টিই অঙ্গরাজ্যটি। 

ইতিহাসের সবচেয়ে ভয়াবহ দাবানলের সামনে বনে যাচ্ছে সাধারন মানুষ। বাড়ছে মৃতের সংখ্যা এবং বাস্তুচ্যুত হয়ে পড়ছে হাজার হাজার মানুষ। বলা হচ্ছে বিগত ১০০ বছরের মধ্যে সবচেয়ে ভয়ানক দাবানলের স্বাক্ষী হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। 

ইতিহাসের অন্যতম ভয়াবহ এই দাবানলে নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাড়িয়েছে ৯৩ জনে। এখনও নিখোঁজ আছে শত শত মানুষ। ইতিমধ্যে পুড়ে গেছে মাউই দ্বীপের ৮০ শতাংশের বেশি অঞ্চল। জানা গেছে, মাউইতে কমপক্ষে আরো দুটি দাবানল জ্বলছে। যদিও এখন পর্যন্ত সেখান থেকে কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি। 

এরই সাথে ঐতিহাসিক লাহাইনা শহর পুরোপুরি পুড়ে এখন শুধু ছাই। লাহাইনার উত্তরে পশ্চিম মাউইএর উপকূলীয় এলাকা কানাপালিতে শুক্রবার সন্ধ্যায় আগুনের চতুর্থ দফা শুরু হয়। এক পর্যায়ে আগুন নেভানো গেলেও, ছাই ছাড়া কিছু বাকি নেই সেখানে। 

স্থানীয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে সময় বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বাড়তে পারে নিহতের সংখ্যা। আর তাই ঘরবাড়ি ছেড়ে নিরাপদ স্থানে যেতে বলা হয়েছে হাজার হাজার বাসিন্দাদের। 

জানা গেছে, এই দাবানল এতটাই ছড়িয়ে পড়েছে, যার ফলে ঘর বাড়ি এবং অন্যান্য স্থাপনা মিলিয়ে প্রায় ১৭০০ ভবন ধ্বংস হয়েছে। এরই সাথে, ক্ষয়ক্ষতির পরিমান এখন পর্যন্ত ১০০ কোটি ডলার ছাড়িয়েছে। 

গত মঙ্গলবার ৮ই আগস্ট এই দাবানলের সূত্রপাত হয়েছিল। পরে হারিকেনডোরারপ্রভাবে তৈরি হওয়া প্রচণ্ড বাতাসের কারণে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ে। এই দাবানলের ভয়াবহতা বিবেচনা করে গভর্নর জোস গ্রিন সূত্রপাতের দিনটিকেহৃদয়বিদারক দিনহিসেবে উল্লেখ করেছেন।

 ধ্বংযজ্ঞ চালানো এই দাবানলের সূত্রপাত কিভাবে হয়েছিল তা এখন পর্যন্ত জানা যায়নি। তবে যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় আবহাওয়া সংস্থা কয়েকদিন ধরে হাওয়াইয়ে দমকা হাওয়া এবং শুষ্ক আবহাওয়ার ব্যাপারে সতর্কতা দিয়ে আসছিল। যা ধরনের আবহাওয়া একটি দাবানলের জন্য পূর্ব লক্ষন।

বার্তাসংস্থা রয়টার্স রোববার (১৩ আগস্ট) এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের বন বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, দেশটিতে যত দাবানলের সূত্রপাত হয় তার ৮৫ শতাংশের জন্যই দায়ী থাকেন মানুষ। অপরদিকে প্রাকৃতিকভাবে মাঝে মাঝে দাবানলের সূত্রপাত হয়। প্রাকৃতিক কারণের মধ্যে রয়েছে বজ্রপাত আগ্নেয়গিরি।

এদিকে সংবাদমাধ্যম সিএনএনকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে, ইয়েল স্কুল অব এনভায়রনমেন্টের গবেষক এবং  বিজ্ঞানী জেনিফার লোপেজ জানিয়েছেন, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে ধরনের অস্বাভাবিক ঘটনা ঘটছে যুক্তরাষ্ট্রে।

তিনি বলেছেন, ‘হাওয়াইয়ে এত ভয়াবহ দাবানল, বিষয়টি শুনতেই অস্বাভাবিককারন এই অঙ্গরাজ্যটি একটি ভেজা এবং গ্রীষ্মমণ্ডলীয় দ্বীপ। কিন্তু জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে অস্বাভাবিক বিষয় স্বাভাবিক হয়ে যাচ্ছে।

তার মতে, হাওয়াইয়ের দাবানল এত ভয়াবহ হয়েছে শক্তিশালী বাতাস এবং শুষ্ক পরিবেশের কারণে। দ্বীপটির ভৌগলিক অবস্থানের কারণে এটি আরও শক্তিশালী হয়েছে।

এদিকে মাউইএর বনবিভাগ জানিয়েছে, টানা এক সপ্তাহ ধরে চলা দাবানলের আগ্রাসনে বনাঞ্চলের শত শত একর বনভূমি পুড়ে গেছে। অনেক জায়গায় ছোট ছোট আকারে আগুন জ্বলছে। পরিস্থিতি এখনো বিপজ্জনক। পরিস্থিতি বিবেচনায়, সেখানকার বাসিন্দাদেরফায়ার জোনথেকে দূরে থাকার পরামর্শ দিয়েছে মাউই বনবিভাগের প্রধান ব্রাড ভেনচুরা।

এক শতাব্দী আগে, ১৯১৮ সালের ক্লোকেট শহরের আগুন খরাপীড়িত উত্তর মিনেসোটায় ছড়িয়ে পড়ে এবং বেশ কয়েকটি গ্রামীণ সম্প্রদায়ের হাজার হাজার বাড়িঘর ধ্বংস হয়ে শত শত লোক মারা যায়। সেই ধ্বংসলীলার ১০০ বছর পর এবার ভয়াবহ দাবানলের থাবায় পড়তে হয়েছে দেশটিকে।  

 

আল-কায়দার নতুন টার্গেট বাংলাদেশ এবং ভারত!

আলকায়দার নতুন টার্গেট বাংলাদেশ। সাথে রয়েছে ভারত। এই দুই দেশে পুনরায় সংগঠিত হবার চেষ্টায় মরিয়া আল কায়দা গোষ্ঠীটি। এমন তথ্য বেড়িয়ে এসেছে আন্তর্জাতিক মহলে। চলুন জেনে নেই বিস্তারিত।

সংবাদ সংস্থা ইন্ডিয়া টুডে জানিয়েছে, গত সপ্তাহে প্রকাশিত দ্য অ্যানালিটিকাল সাপোর্ট অ্যান্ড স্যাংশন্স মনিটরিং টিম অব দ্য ১২৬৭ আইএসআইএল (দায়েশ) এবং জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের আল-কায়েদা স্যাংশন্স কমিটির ৩২তম প্রতিবেদনে ওই সতর্কবার্তা এসেছে।

মূলত ভারতের জম্মু ও কাশ্মীর, বাংলাদেশ ও মিয়ানমারে সক্রিয় হওয়ার লক্ষ্য নিয়ে আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসী দল আল কায়েদা তাদের আঞ্চলিক মিত্রদলগুলোকে আবারও ‘সংগঠিত’ করছে বলে সতর্কবার্তা এসেছে জাতিসংঘের সেই প্রতিবেদনে।

জাতিসংঘের একটি সদস্য রাষ্ট্রের পর্যবেক্ষণ তুলে ধরে ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আল কায়েদা এখন একিউআইএসকে (আল-কায়েদা ইন দ্য ইন্ডিয়ান সাবকন্টিনেন্ট) সংগঠিত করছে, তাদের লক্ষ্য বাংলাদেশ, জম্মু ও কাশ্মীর এবং মিয়ানমারে কার্যক্রম বিস্তৃত করা।

আল-কায়েদার মূল ঘাঁটি আফগানিস্তানে এখনো তাদের ৩০ থেকে ৬০ জন সদস্য এবং প্রায় ৪০০ যোদ্ধা রয়েছে। পরিবারের সদস্য ও সমর্থক মিলিয়ে এ সংখ্যা দুই হাজারে পৌঁছাতে পারে বলে ধারণা দেওয়া হয়েছে প্রতিবেদনে।

সেখানে বলা হয়েছে, ভারতীয় উপমহাদেশে আল-কায়েদার প্রায় ২০০ যোদ্ধা ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছে, যাদের নেতা ওসামা মেহমুদ।

এছাড়া আফগানিস্তানে সক্রিয় আরেক জঙ্গি দল আইএসআইএল-কে কে এখন ওই অঞ্চলের জন্য সবচেয়ে বড় হুমকি হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে জাতিসংঘের প্রতিবেদনে। পরিবারের সদস্যদের মিলিয়ে আইএসআইএল-কে এর ৪ থেকে ৬ হাজার সদস্য আফগানিস্তানে রয়েছে।

সানাউল্লাহ গাফারিকে আইএসআইএল-কে এর সবচেয়ে উচ্চাভিলাষী নেতা ধরা হয়। যদিও একটি সদস্য রাষ্ট্র বলেছে, সানাউল্লাহ গত জুনে আফগানিস্তানে নিহত হয়েছেন। তবে ওই তথ্যের সত্যতা এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি বলে জাতিসংঘের প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।

জাতিসংঘের প্রকাশিত প্রতিবেদনটির মাধ্যমে আর জানা গেছে, “আইএসআইএল-কে আফগানিস্তানে তালেবান এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় উভয়ের উপরই হামলা করছে এবং দিন দিন তাদের হামলার সক্ষমতা এবং সফলতা বাড়ছে। তারা ‘হাই প্রোফাইল টার্গেটে’ হামলার কৌশল নিয়েছে, যাতে দেখানো যায় দেশটির বর্তমান তালেবান প্রশাসন নিরাপত্তা দিতে কতটা ব্যর্থ।”

বলাই বাহুল্য আফগানিস্তান এখনো সন্ত্রাসী এবং জঙ্গি দলগুলোর চারণভূমি হয়ে আছে। দেশটিতে প্রায় ২০টি জঙ্গি দল সক্রিয়। তারা ওই অঞ্চলের পুরোটা জুড়ে নিজেদের প্রভাব বিস্তার করতে এবং ধর্মভিত্তিক রাষ্ট্র ব্যবস্থা গড়ে তুলতে চাইছে।

আফগানিস্তানের কুনার ও নুরিস্তান প্রদেশে নতুন নতুন প্রশিক্ষণ সেন্টার বানিয়ে আল-কায়েদা নিজেদের ‘পুনর্গঠন’ করছে বলেও ওই প্রতিবেদনে সতর্ক করা হয়েছে।

প্রসঙ্গত ২০০১ সালে নিউ ইয়র্কের বিশ্ব বাণিজ্য কেন্দ্র (টুইন টাওয়ার), পেন্টাগন আর পেনসিলভানিয়ায় আত্মঘাতী হামলা চালিয়ে ৩ হাজারের বেশি মানুষকে হত্যার ঘটনায় পর ধীরে ধীরে পুরা বিশ্বে জঙ্গিবাদের বিস্তার ঘটায় আল-কায়েদা।

এ দলের নেতা ওসামা বিন লাদেন ২০১১ সালে পাকিস্তানে নিহত হওয়ার পর আল-কায়েদার প্রভাব কিছুটা কমে আসে। আরেক সন্ত্রাসী দল আইএস এর উত্থানও আল-কায়েদার প্রভাব কমাতে ভূমিকা রাখে।

লাদেনের মৃত্যুর পর আল-কায়েদার নেতৃত্ব দিচ্ছিলেন আয়মান আল-জাওয়াহিরি । ২০২২ সালের অগাস্টে আফগানিস্তানে সিআইএ-এর ড্রোন হামলায় তিনিও নিহত হন।

এরপরই বাংলাদেশে ২০১৩ সালের পর থেকে একের পর এক জঙ্গি হামলা ও হত্যার মধ্যে বেশ কিছু ঘটনার দায় স্বীকার করা হয়েছিল আল-কায়েদার তরফ থেকে। বাংলাদেশের আইন শৃঙ্খলা বাহিনী অবশ্য দাবি করে আসছে, ওইসব ঘটনা ঘটিয়েছে দেশীয় উগ্রবাদীরাই।

২০১৪ সালে এক অডিও বার্তায় বাংলাদেশ সৃষ্টির উদ্দেশ্য নিয়ে প্রশ্ন তুলে ‘ইসলামবিরোধী ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে জিহাদের’ ডাক দিয়েছিলেন জাওয়াহিরি। ওই বছরই আরেক অডিও বার্তায় আল-কায়েদার ভারতীয় শাখা গড়ে বাংলাদেশেও কাজ করার ঘোষণা দেন তিনি।

শুধু তাই নয়, আন্তর্জাতিক আরেক সন্ত্রাসী দল আইএসও গুলশান হামলাসহ বেশ কিছু জঙ্গি হামলার ‘কৃতিত্ব’ দাবি করেছিল। তারাও বাংলাদেশে আলাদা ‘খিলাফত’ ঘোষণা করে তাদের নেতার নাম ঘোষণা করেছিল। তবে গুলশান হামলার পর কয়েক বছর ধরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সাঁড়াশি অভিযানের মধ্যে দেশে জঙ্গি দলগুলোর তৎপরতা স্তিমিত হয়ে আসে।

বিশ্লেষকদের মতে আল কায়দার পুঃসঙ্গঠিত হওয়ার খবরে শংকিত আন্তর্জাতিক মহল। কারন দলটি বর্তমান বাংলাদেশ এবং ভারতে নজর দিয়ে রাখলেও, শংকায় আচ্ছান্ন কিন্তু অন্যান্য দেশ। কারন অতীতের ঘটনা থেকে বলাই যায়, অত্যন্ত লুকিয়ে লুকিয়ে নিজেদের গোষ্ঠী সংঘঠন করে থাকে দলটি। এরপরই নিজের মিশন কার্যকর করে থাকে। তাই এই দুই দেশের পর তাদের পরবর্তী টার্গেট কোন দেশে আটকায় তা ভাবতেই সন্দীহান অন্যান্য দেশ।

এমপি পদ হারিয়ে ফের সাংবাদিকতায় ফিরছেন বরিস জনসন।

এমপি পদ হারিয়ে ফের সাংবাদিকতায় ফিরছেন বরিস জনসন। ক্ষমতা হারানোর পর নিজের পুরো পেশাকে বেছে নিলেন এই সাবেক নেতা।  প্রবল চাপের মুখে ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রীর পদ খুইয়েছেন আগেই। গত শুক্রবার এমপি-র পদ থেকেও ইস্তফা দিয়েছেন তিনি।

আপাতত বরিসের ছেড়ে দেওয়া এমপি আসনের জন্য নতুন করে ভোট হবে ২০ জুলাই। ওই আসনে বেছে নেওয়া হবে নতুন এমপিকে।

তবে এই পরিস্থিতিতে  ক্ষমতা হারানো সেই বরিস জনসন এখন যুক্তরাজ্যের দৈনিক পত্রিকা ডেইলি মেইলে কলামিস্টের চাকরি পেয়েছেন। এখন থেকে প্রতি শনিবার পত্রিকাটির জন্য কলাম লিখবেন তিনি। শুক্রবার (১৬ জুন) এক বিবৃতিতে বরিস জনসনের যোগদানের বিষয়টি নিশ্চিত করেছে ডেইলি মেইল।

বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘আপনি বরিসকে পছন্দ করুন কিংবা না করুন তার কলাম আপনাকে পড়তে হবে। সরকারি দলের ব্যক্তিবর্গ থেকে বিশ্বের লাখ লাখ মানুষ সবার জন্যই এটা প্রযোজ্য।’

যুক্তরাজ্যের সবচেয়ে পরিচিত ও বিভাজন সৃষ্টিকারী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে ইতোমধ্যে নাম কুড়িয়েছেন ৫৮ বছর বয়সী বরিস জনসন।

বরিস জনসন, ছিলেন যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী। কিন্তু করোনা মহামারীর সময়ে লকডাউনের বিধিনিষেধ উপেক্ষা করে সরকারি বাসভবনে নেতাকর্মী-বন্ধুদের নিয়ে পার্টি করেছিলেন, যা পার্টিগেট কেলেঙ্কারি নামে পরিচিত। এর জেরে প্রথমে প্রধানমন্ত্রিত্ব হারান। ওই একই কারণে হারাতে হয় নিজের সংসদ সদস্য (এমপি) পদও।

সব কিছু বিবেচনা করেই নিজ থেকেই পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নেন এই সাবেক প্রধানমন্ত্রী। কিন্তু অন্যান্য রাজনীতিবিদরা বলছেন আরেক কথা। রাজনীতিবিদেরা বলছেন, মুখে যা-ই বলুন না কেন, আগেভাগে ইস্তফা না দিলে সম্প্রতি প্রকাশিত রিপোর্টের ভিত্তিতে বরিসকে ৯০ দিনের জন্য বরখাস্ত করত পার্লামেন্ট।

ভাবছেন কোন রিপোর্টের কথা বলা হচ্ছে? ব্রিটেন জুড়ে হইচই ফেলে দেওয়া পার্টিগেট কেলেঙ্কারির তদন্তে শুক্রবার ১৬ই জুন ১০৬ পাতার রিপোর্ট জমা করেছে পার্লামেন্টের তদন্তকারী প্রিভিলেজেস কমিটি।

তারা জানিয়েছে, কমিটিকে ইচ্ছাকৃত ভাবে ভুল পথে চালিত করেছেন বরিস। তদন্তকারীদের তিনি বলেছেন, কোভিডের সময় সরকারি বাসভবনের সব জমায়েতে সমস্ত নিয়ম মানা হয়েছে বলেই তাঁর উপদেষ্টারা তাঁকে জানিয়েছিলেন। অথচ বাস্তবে উপদেষ্টারা এমন কথা বলেননি বলেই জানতে পেরেছেন তদন্তকারীরা।

তদন্তের গতিপ্রকৃতি দেখে কমিটি গত কালের রিপোর্ট জমা করার আগেই এমপি পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছিলেন প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী। রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে, মুখ বাঁচাতে আগেভাগেই ওই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন বরিস। যদিও প্রকাশ্যে তিনি বলেছেন, প্রহসন চলছে। তাঁর বিরুদ্ধে রাজনৈতিক চক্রান্ত করা হয়েছে।

এদিকে তার সদস্যপদ পুনরায় বহাল করা হবে কি না, সেই সিদ্ধান্তের জন্য ফের এমপিদের মধ্যে ভোটাভুটি হত। আগেভাগে বরিস ইস্তফা দেওয়ায় সেই পথে আর এগোতে হবে না পার্লামেন্টকে। নিষেধাজ্ঞার কোপ পড়েছে বরিসের উপরেও। প্রাক্তন এমপি পাস ব্যবহার করেও বরিস আর পার্লামেন্টে ঢুকতে পারবেন না।

তবে ক্ষমতা হারালেও আয় রোজগারের জন্য বসে থাকেননি বরিস। বার্তাসংস্থা রয়টার্সের তথ্য অনুযায়ী, গত এক বছরে দেশে-বিদেশে বিভিন্ন সেমিনার ও কনফারেন্সে বক্তব্য দিয়ে ইতোমধ্যে লাখ লাখ পাউন্ড উপার্জন করেছেন যুক্তরাজ্যের সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী।

জনসনের ক্যারিয়ার শুরু হয়েছিল সাংবাদিকতা দিয়ে।অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক এই ছাত্র প্রতিনিধির পেশাগত ক্যারিয়ার শুরু সাংবাদিকতার মাধ্যমেই। ১৯৮৭ সালে টাইমস ম্যাগাজিনের প্রতিবেদক হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন তিনি; কিন্তু কোনও এক প্রতিবেদনে মনগড়া মন্তব্য দেওয়ার কারণে সেই চাকরি হারাতে হয় তাকে।

তারপর বিভিন্ন সময়ে ব্রিটিশ দৈনিক দ্য টেলিগ্রাফ ও দ্য স্পেকটেটরে প্রতিবেদক ও কলামিস্টের কাজ করেছেন তিনি।

একসময় রাজনীতি আর সাংবাদিকতা একসঙ্গে চালিয়েছিলেন তিনি। লিখেছেন।২০০১ সালে কনজারভেটিভ পার্টিতে যোগ দেন বরিস। ওই বছর এমপিও হন তিনি। তারপর থেকে সংবাদপত্রে তার ব্যস্ততা কমতে থাকে।

সংসদ সদস্য এবং স্পেক্টেটর ম্যাগাজিনের সম্পাদকের দায়িত্ব একসঙ্গে সামলেছিলেন জনসন। এছাড়া প্রধানমন্ত্রী হওয়ার আগে পর্যন্ত ডেইলি টেলিগ্রাফে নিয়মিত কলামও।

 

তিনশ’ বছরের মধ্যে সবচেয়ে বড় গোলাপি হীরা আবিষ্কার

অ্যাঙ্গোলার খনি শ্রমিকরা বিরল ও খাঁটি এক গোলাপি হিরা আবিষ্কার করেছে। ধারনা করা হচ্ছে গত তিনশ’ বছরের আবিষ্কারের মধ্যে এটিই সবচেয়ে বড় হীরা।

হীরাটির নাম দেয়া হয়েছে লুলো রোজ। এটির ওজন ১৭০ ক্যারেট।  দেশটিতে ব্যাপকভাবে হীরা পাওয়া যায় এমন উত্তরপূর্বাঞ্চলের লুলো খনিতে এটি পাওয়া গেছে।

লুকাপো ডায়মন্ড কোম্পানী এক বিবৃতিতে বলেছে, এ যাবত পাওয়া সকল হীরার মধ্যে এটি সবচেয়ে বড়।
বিরল ও বিশুদ্ধ প্রাকৃতিক পাথরের রূপের এই হীরার আবিষ্কারকে ঐতিহাসিক বলে উল্লেখ করেছে অ্যাঙ্গোলান সরকার। অ্যাঙ্গোলার সরকারও এই খনির অংশীদার।

আন্তর্জাতিক দরপত্রে হীরাটি চমকপ্রদ দামে বিক্রি করা হবে। এর আগে হংকংয়ে ২০১৭ সালে ৫৯.৬ ক্যারেটের একটি গোলাপি হীরা নিলামে ৭১.২ মিলিয়ন মার্কিন ডলারে বিক্রি হয়। এটি এখনও পর্যন্ত বিক্রি হওয়া এ যাবতকালের সবচেয়ে দামী হীরা।

মালয়েশিয়ায় করোনায় নতুন করে ২ হাজার ৭২০ জন আক্রান্ত, ৩জনের মৃত্যু

মালয়েশিয়ায় রোববার মধ্যরাত পর্যন্ত মহামারি করোনাভাইারাসে নতুন করে ২,৭২০ জন আক্রান্ত হয়েছে। এনিয়ে দেশটিতে সংক্রমণের সংখ্যা বেড়ে মোট ৪,৬৫২,৬৫১ জনে দাঁড়ালো। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এ তথ্য জানিয়েছে। খবর সিনহুয়ার।

মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা উপাত্ত অনুযায়ী, এদের মধ্যে ২,৭১৫ জন স্থানীয়ভাবে সংক্রমিত হয়েছে এবং বাকি পাঁচজন বিদেশ ফেরত। এদিকে ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে তিন জনের মৃত্যু হওয়ায় দেশটিতে এনিয়ে করোনাভাইরাসে মৃতের সংখ্যা বেড়ে মোট ৩৫,৯১৪ জনে দাঁড়ালো।

মন্ত্রণালয় জানায়, একই সময়ে কোভিড-১৯ রোগে আক্রান্ত ৪,০১২ জন সুস্থ হয়ে উঠায় হাসপাতাল থেকে ছাড়া পাওয়া মানুষের সংখ্যা বেড়ে মোট ৪,৫৬৭,৪৮৫ জনে দাঁড়ালো। বর্তমানে দেশটিতে ৪৮,২৫২ চিকিৎসাধীন রোগি রয়েছে। এদের মধ্যে ৫৪ জনকে ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিটে রাখা হয়েছে এবং তাদের মধ্যে ৩২ জনকে অক্সিজেন দেওয়া হচ্ছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, মালয়েশিয়ায় রোববার ১২,৫৮০ জ কে টিকা দেওয়া হয়। দেশটির মোট জনসংখ্যার ৮৫.৯ শতাংশ কমপক্ষে প্রথম ডোজ, ৮৪ শতাংশ দ্বিতীয় ডোজ, ৪৯.৫ শতাংশ প্রথম বুস্টার ডোজ এবং ০.৯ শতাংশ দ্বিতীয় বুস্টার ডোজ টিকা নিয়েছেন।

যুক্তরাষ্ট্রে রেকর্ড তাপমাত্রা ॥ দাবানল ছড়িয়ে পড়েছে ক্যালিফোর্নিয়ায়

ক্যালিফোর্নিয়ায় শনিবার হাজার হাজার একর বনে দাবানল ছড়িয়ে পড়েছে, একদিন আগে এই দাবানলের সূত্রপাত হয়। ইতোমধ্যেই তাপমাত্রা রেকর্ড ছাড়িয়ে যাওয়ায় লাখ লাখ আমেরিকান তীব্র তাপদাহে হাঁসফাঁস করছে।  শুক্রবার ক্যালিফোর্নিয়ার কাছে ইয়োসেমাইট ন্যাশনাল পার্কে ছড়িয়ে পড়া প্রধান ওকফায়ারের মতো চলমান তাপপ্রবাহ আরো একাধিক অঞ্চলে দাবানলের ঝুঁকি বাড়িয়ে দিয়েছে। ইয়োসেমাইট ন্যাশনাল পার্কের এই দাবানলে ইতোমধ্যে সংরক্ষিত দৈত্যাকার সিকোইয়াস (বিরল সুউচ্চ বৃক্ষ) হুমকির মুখে পড়েছে।

কর্মকর্তরা এই দাবানলকে ‘বিষ্ফোরক’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন, শুরুতে এটি ৬০০ একরে ছড়িয়ে পড়লেও ২৪ ঘন্টায় তা বেড়ে এখন ১১,৯০০ একরে (৪,৮০০ হেক্টর) বিস্তৃত হয়েছে। মারিপোসা কাউন্ট্রি ঘিরে এই দাবানলে ইতোমধ্যে ১০টি স্থাপনা ধ্বংস হয়েছে, ৫ টি ক্ষতিগ্রস্ত এবং আরো হাজার হাজার হুমকির মুখে পড়েছে।

ক্যালিফোর্নিয়ার বন বিভাগ ও ফায়ার প্রোটেকশন কর্মকর্তা হেক্টর ভাসকুয়েজ বলেছেন, শনিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত অনিয়ন্ত্রিত এ দাবানলের কারণে এলাকা থেকে ৬ হাজারের বেশী লোক সরিয়ে নেয়া হয়েছে।
ফায়ার বিভাগ বলেছে, দাবানল পরিস্থিতি এ সময় চরম পর্যায়ে ছিল।

ক্যালিফোর্নিয়ার গভর্নর গ্যাভিন নিউসম ব্যক্তি ও সম্পদের চরম ঝুঁকির নিরাপত্তা বিধানে শনিবার মারিপোসা কাউন্টিতে “জরুরি অবস্থা” ঘোষণা করেছেন।

পাঁচ শতাধিক দমকলকর্মী বিমানের সহায়তায় আগুন নেভাতে কাজ করছেন, কর্মকর্তারা বলেছেন আগুন নিয়ন্ত্রনে আসতে এক সপ্তাহ সময় লাগতে পারে।

শ্রীলংকায় ভোটগ্রহণ শুরু

শ্রীলংকায় নতুন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের জন্যে বুধবার পার্লামেন্টে ভোটগ্রহণ শুরু হয়েছে। নতুন প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপাকসের স্থলাভিষিক্ত হবেন। গোতাবায়া বিক্ষোভের মুখে গত সপ্তাহে পদত্যাগ করে দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন।

পার্লামেন্টের সেক্রেটারি জেনারেল ধাম্মিকা দাসানায়েক কোরাম বেল বাজানোর পর গোপন ব্যালটে ভোটগ্রহণ শুরু হয়। পার্লামেন্টের ২২৫ জন আইনপ্রণেতা তিনজন প্রার্থীর মধ্য থেকে দেশটির ভবিষ্যত নেতা নির্বাচন করবেন।

উল্লেখ্য, শ্রীলংকায় বর্তমানে তীব্র অর্থনৈতিক সংকট চলছে।

জরুরি অবস্থা ঘোষণা শ্রীলংকার ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্টের

শ্রীলংকার ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট রনিল বিক্রমাসিংহে সোমবার থেকে দেশব্যাপী জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছেন। খবর সিনহুয়ার।
জারি করা একটি বিশেষ গেজেট বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বিক্রমাসিংহে জন নিরাপত্তা, আইনশৃংখলা রক্ষা এবং জন জীবনের জন্য নিত্য প্রয়োজনীয় সরবরাহ ও অত্যাবশ্যকীয় সেবা বজায় রাখার স্বার্থে দেশে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেন।

গোতাবায়া রাজাপাকসে ক্ষমতা থেকে সরে দাঁড়ানোর পর আগামী ২০ জুলাই শ্রীলংকার পার্লামেন্টে নতুন প্রেসিডেন্ট নির্বাচন করার কথা রয়েছে। দক্ষিণ এশিয়ার এ দেশে বড় ধরনের অর্থনৈতিক সংঙ্কটের প্রেক্ষাপটে গোতাবায়া মালদ্বীপ হয়ে সিঙ্গাপুরে পালিয়ে যান।

শ্রীলংকার প্রেসিডেন্ট পদের প্রার্থীদের মঙ্গলবার মনোনয়নপত্র আহ্বান করা হবে।

শ্রীলংকায় সুদের হার বৃদ্ধি, আরো বিপদের সতর্কতা

নগদ অর্থ সংকটে থাকা শ্রীলংকায় সুদের হার এক পয়েন্ট বাড়ানো হয়েছে। গত তিন মাসে দ্বিতীয় দফায় সুদের হার বাড়ানো হলো।
এদিকে দেশটির কেন্দ্রীয় ব্যাংক ৮০ শতাংশ মুদ্রাস্ফীতি এবং বেদনাদায়ক মন্দার বিষয়ে সতর্ক করেছে।

শ্রীলংকার ‘দ্য সেন্ট্রাল ব্যাংক’ আমানতের পরিমাণ এবং সুদের হার ১৪.৫ শতাংশ থেকে ১৫.৫ শতাংশ বাড়িয়েছে।

দেশটিতে গত মাসে মুদ্রাস্ফীতির পরিমাণ ছিল ৫৪.৬ শতাংশ।
শ্রীলংকায় খাদ্য ও জ্বালানি সংকটের পাশাপাশি দীর্ঘ বিদ্যুৎ ঘাটতি চলছে। এ অবস্থায় অব্যাহত রয়েছে সরকার বিরোধী বিক্ষোভ এবং তারা প্রেসিডেন্ট গোটাবায়ে রাজাপাকসের পদত্যাগ দাবি করছে।

এদিকে কেন্দ্রীয় ব্যাংক চলতি বছর অর্থনীতি মন্দায় রূপ নিতে পারে বলে সতর্ক করেছে।

প্রধানমন্ত্রী রনিল বিক্রমাসিংহে পার্লামেন্টে বলেছেন, অর্থনীতি সর্বোচ্চ ৭ দশমিক শূন্য শতাংশ সংকুচিত হতে পারে।

সিডনিতে বন্যায় হাজার হাজার লোক বাড়িঘর ছেড়ে অন্যত্র আশ্রয় নিচ্ছে

অস্ট্রেলিয়ার নিউ সাউথ ওয়েলস রাজ্যে মঙ্গলবার বন্যা মারাত্মক রূপ নিয়েছে। বাড়িঘর জলমগ্ন এবং সড়ক তলিয়ে গেছে। হাজার হাজার লোক তাদের বাড়িঘর ছেড়ে যেতে বাধ্য হচ্ছে।

কর্মকর্তারা বলছেন, নিউ সাউথ ওয়েলস রাজ্যে পানি অব্যাহতভাবে বাড়তে থাকায় জরুরি সেবার লোকজন প্রায় ৫০ হাজার লোককে অন্যত্র সরে যেতে কিংবা সরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেয়ার নিদের্শ দিয়েছে।  সিডনিতে গতরাতে জরুরি সেবার লোকজন সেনা সদস্যদের সহযোগিতায় ২২ জনকে উদ্ধার করে। পরিস্থিতি বিবেচনায় সিডনিতে একশ’ সেনা মোতায়েন করা হয়েছে।

কর্মকর্তারা আরো বলেন, প্রবল বৃষ্টি, বন্যা ও প্রচন্ড বাতাসের কারণে ১৯ হাজার বাড়িঘরের বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে।
ফেডারেল সরকার নিউ সাউথ ওয়েলস রাজ্যের ২৩টি প্লাবিত অংশে প্রাকৃতিক দুর্যোগ ঘোষণা করেছে এবং ক্ষতিগ্রস্ত বাসিন্দাদের ত্রাণ দেয়ার উদ্যোগ নিয়েছে।

এদিকে নিউ সাউথ ওয়েলস রাজ্যের প্রধানমন্ত্রী ডোমেনিক পেরোটেট লোকজনকে বাড়ি ঘর ছেড়ে যাওয়ার নির্দেশ পালনের আহ্বান জানিয়েছেন।

উল্লেখ্য, মার্চে প্রবল ঝড় বৃষ্টিতে অস্ট্রেলিয়ার পূর্ব উপকূলে বন্যা দেখা দেয়। এ সময়ে ২০ জনের প্রাণহানি ঘটে।
জলবায়ু পরিবর্তনের খ্ষতিকর প্রভাবের শিকার অস্ট্রেলিয়ায় বন্যা, খরা, দাবানলসহ নানা ধরনের প্রাকৃতিক দুর্যোগ এখন নিয়মিত ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে।