আজ থেকে হজের আনুষ্ঠানিকতা শুরু

বৈশ্বিক মহামারি করোনার পর আজ বুধবার থেকে বৃহত্তম পবিত্র হজের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়েছে। লাখ লাখ ধর্মপ্রাণ মুসলমান সৌদি আরবের পবিত্র মক্কায় কা’বা তওয়াফের মাধ্যমে হজ কার্যক্রম শুরু করেছেন। এবার করোনার বিধি নিষেধের কড়াকড়ি না থাকায় তাদের বেশীর ভাগই মাস্কবিহীন অবস্থায় হজ কার্যক্রমে যোগ দিয়েছেন।

সম্পূর্ণ টিকাপ্রাপ্ত ১০ লাখ মুসলিম হজ পালনে মক্কায় সমবেত হয়েছেন। তাদের মধ্যে ৮ লাখ ৫০ হাজার বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে এসেছেন। বাকিরা সৌদি আরবের নাগরিক।  মহামারির কারণে দুই বছর সীমিত সংখ্যক লোকের হজ পালনের মাধ্যমে বৃহত্তম হজ অনুষ্ঠানের বিরতির পর এবার ১০ লাখ লোক হজ পালনের সুযোগ পেল।

মক্কায় মসজিদুল হারাম চত্বরে স্বর্ণালী হরফ খচিত কালো কাপড়ে আবৃত পবিত্র কাবাগৃহের ‘তওয়াফ’ এবং অল্লাহর কাছে ক্ষমা ও দোয়া চাওয়ার মাধ্যমে হজের প্রথম আনুষ্ঠানিক কার্যক্রম শুরু হচ্ছে। গোটা বিশ্বের মুসলমানরা এই পবিত্র কা’বার দিকে মুখ করে নামাজ আদায় করেন।

মঙ্গলবার বিকেলে সাদা এহরামের পোশাক পরিহিত নারী ও পুরুষরা কা’বা চত্বরে পাশাপাশি হেঁটে কা’বা শরীফ তওয়াফ করেছেন। তাদের বেশীর ভাগেরই মাস্ক ছিল না, যদিও কর্তৃপক্ষ গত মাসে বলেছিল কা’বা চত্বরে মাস্ক পড়া বাধ্যতামূলক।
গত ২০২০ এবং ২০২১ সালের চেয়ে এবারের হজের সমাবেশ অনেক বড় তবে করোনা পূর্ববর্তী স্বাভাবিক হজের চেয়ে ছোট।
২০১৯ সালে হজে প্রায় ২৫ লাখ লোকের সমাবেশ হয়েছে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে মুসলমানরা এই বার্ষিক হজ অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছেন। সামর্থ্যবান প্রত্যেক মুসলিমের জন্য জীবনে একবার হজ পালন করা ইসলামের অবশ্য পালনীয় পাঁচটি স্তম্ভের একটি অন্যতম ভিত্তি।

কিন্তু, করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে নাটকীয়ভাবে হজ যাত্রীদের সংখ্যা হ্রাস করতে বাধ্য হয় সৌদি সরকার। ২০২১ সালে সম্পূর্ণ ভ্যাকসিন নেয়া মাত্র ৬০ হাজার সৌদি নাগরিক এবং সৌদিতে বসবাসকারী লোকদের হজ পালনের সুযোগ দেয়া হয়। যা ২০২০ সালের চেয়ে কয়েক হাজার বেশী।

পবিত্র মক্কা নগরী এবং আশপাশের এলাকায় পাঁচদিনের বেশী সময়ে নিয়ম অনুযায়ী হজ পালন অনুষ্ঠান সম্পন্ন হবে।
আরাফাত ময়দানে সমবেত হওয়ার মূল অনুষ্ঠানের আগে বৃহস্পতিবার হাজীগণ মসজিদুল হারাম থেকে পাঁচ কিলোমিটার দূরে মিনায় যাবেন। আরাফাত ময়দানে সমবেত অনুসারীদের সামনে হযরত মোহাম্মদ (সা:) তাঁর বিদায় হজের ভাষণ দিয়েছিলেন।
মঙ্গলবার মক্কায় তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছাড়িয়েছে। মসজিদুল হারামের ভেতরে চিকিৎসা সেবাদানকারীরা বিভিন্ন জায়গায় সার্বক্ষণিক প্রস্তুত রয়েছেন এবং হাজীদের প্রয়োজনীয় সেবা দিতে স্বেচ্ছাসেবকরা হুইল চেয়ার নিয়ে দীর্ঘ লাইনে অপেক্ষমান দেখা যায়।

কর্তৃপক্ষ অনেকগুলো স্বাস্থ্য সেবা দান ব্যবস্থা প্রস্তুত রেখেছে। ভ্রাম্যমান ক্লিনিক এবং অ্যাম্বুলেন্স প্রস্তুত রেখেছে।

বিদ্যুৎ সাশ্রয়ে আলোকসজ্জা না করার জন্য দেশবাসীর প্রতি আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিদ্যুৎ সাশ্রয়ের লক্ষ্যে সারা দেশে বিভিন্ন সামাজিক অনুষ্ঠান, কমিউনিটি সেন্টার, শপিং মল, দোকানপাট, অফিস ও বাসাবাড়িতে আলোকসজ্জা না করার জন্য দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।

তিনি আজ গণভবনে বাংলাদেশ হাই-টেক পার্ক পরিচালনা পর্ষদের সঙ্গে দ্বিতীয় বৈঠক শুরু করার আগে সেখানে উপস্থিত উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের সাথে আলোচনাকালে এ আহ্বান জানান।

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ এবং এর প্রেক্ষিতে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপ কর্তৃক রাশিয়ার ওপর অবরোধ আরোপের কারণে বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য প্রয়োজনীয় জ্বালানীর দাম বৃদ্ধির ফলে তিনি বিদ্যুৎ সাশ্রয়ের লক্ষ্যে আলোকসজ্জা না করার আহ্বান জানিয়েছেন।

প্রধানমন্ত্রীর সহকারী প্রেস সচিব এমএম ইমরুল কায়েস বাসসকে একথা নিশ্চিত করেছেন।

ঈদের ছুটির পূর্বে শ্রমিকদের বেতন-ভাতা পরিশোধ করুন : বাংলাদেশ ন্যাপ

পবিত্র ঈদুল আযহার ছুটির পূর্বে শ্রমিকদের বেতন ও উৎসব ভাতা পরিশোধের জন্য মালিকদের প্রতি আহ্বান এবং অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতে কর্মরত শ্রমিকদের জন্য রাষ্ট্রের পক্ষ থেকে বিশেষ ঈদ ভাতা প্রদানের জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি-বাংলাদেশ ন্যাপ চেয়ারম্যান জেবেল রহমান গানি ও মহাসচিব এম. গোলাম মোস্তফা ভুইয়া।

বুধবার (৬ জুলাই) গণমাধ্যমে প্রেরিত এক বিবৃতিতে নেতৃদ্বয় এ আহ্বান জানান।
তারা বলেন, দেশের অধিকাংশ মানুষ শ্রমজীবী। তারা খুব সামান্য আয়ে দৈনন্দিন জীবন-যাপন করে। বর্তমান বাজারের তুলনায় শ্রমিকের শ্রমমূল্য অতি নগণ্য। ফলে শ্রমজীবী মানুষদের সঞ্চয় বলে কিছু থাকে না। ঈদের সময় সন্তান ও পরিবার-পরিজনের জন্য ভালো খাবার তুলে দেওয়ার জন্য শ্রমিকদেরকে উৎসব ভাতার ওপর নির্ভর করতে হয়। শ্রমিকরা যে উৎসব ভাতার দিকে সারা বছর চেয়ে থাকে সেই উৎসব ভাতা নিয়ে মালিকরা প্রতি বছর টালবাহানা করে। যা দেশের জন্য যেমন লজ্জার ঠিক তেমনিভাবে প্রতিটি শ্রমিকের জন্য কষ্টদায়ক।

নেতৃদ্বয় বলেন, দেশের একটি বৃহৎ অংশ শ্রমিকরা অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতে কর্মরত রয়েছে। এই সকল শ্রমিক উৎসব ভাতা বঞ্চিত। রাষ্ট্রের অর্থনৈতিক চাকা সচল রাখতে প্রাতিষ্ঠানিক খাতে কর্মরত শ্রমিকদের পাশাপাশি অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতে কর্মরত শ্রমিকদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতে কর্মরত শ্রমিক তালিকা প্রণয়নপূর্বক তাদের জন্য রাষ্ট্রীয় কোষাগার থেকে উৎসব ভাতা প্রদান করতে হবে। ভুলে গেলে চলবে না দেশের প্রতিটি শ্রমিকের মুখে হাসি ফোটানো রাষ্ট্রের অন্যতম দায়িত্ব।

তারা বলেন, সিলেট ও উত্তরবঙ্গসহ দেশের একটি বৃহৎ অংশে এখনো ভয়াবহ বন্যা চলছে। বন্যার কারণে অসংখ্য শ্রমিক কর্মহীন অবস্থায় আছে। এই সকল শ্রমিকের জন্য রাষ্ট্রীয় কোষাগার থেকে বিশেষ বরাদ্দ দিতে হবে। বন্যাদুর্গত মানুষের জন্য ত্রাণ কার্যক্রম জোরদার করতে হবে। যতদিন না কর্মহীন শ্রমিক তার কর্মক্ষেত্রে ফিরতে পারছে ততদিন পর্যন্ত তাদের দৈন্দদিন খাবার, ওষুধ ও যাবতীয় খরচের ব্যয়ভার সরকারকেই বহন করতে হবে।

দেশের প্রথম ক্যাম্পাস-ভিত্তিক স্বপ্নের ইনকিউবেটর উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ নির্মাণের অংশ হিসেবে চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (চুয়েট) দেশের প্রথম বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস ভিত্তিক আইটি বিজনেস ইনকিউবেটর উদ্বোধন করেছেন। প্রধানমন্ত্রী চুয়েট ক্যাম্পাসে এক অনুষ্ঠানে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জ্যেষ্ঠ পুত্র শেখ কামালের নামানুসারে ‘চুয়েট শেখ কামাল আইটি বিজনেস ইনকিউবেটর’ উদ্বোধন করেন।

শেখ হাসিনা আজ সকালে তাঁর সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি অনুষ্ঠানে যোগ দেন।অনুষ্ঠানকে কেন্দ্র করে চুয়েট ক্যাম্পাস উৎসবের আমেজ সৃষ্টি হয়। চারদিকে রঙিন আলো জ্বলে ওঠে এবং বিভিন্ন রঙের ব্যানার, ফেস্টুন ও বেলুনও প্রদর্শন করা হয়। এ ছাড়াও, এই ইনকিউবেটর শিল্প এবং শিক্ষার্থীদের মধ্যে সেতুবন্ধন তৈরি করবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা তাদের উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন।

ইনকিউবেটরের লক্ষ্য আইটি উদ্যোক্তাদের বিকাশ এবং ২০৪১ সালের মধ্যে ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ গড়ে তোলার জন্য জ্ঞান-ভিত্তিক অর্থনীতি সম্প্রসারণ করা। কারণ, দেশটি ইতোমধ্যেই ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ ক্যাম্পেইনকে বাস্তবায়ন করেছে।
বিজনেস ইনকিউবেটর, যার স্টার্ট আপ এবং ব্যবসার জন্য একটি সম্পূর্ণ উদ্ভাবনী ইকো-সিস্টেম রয়েছে, যা প্রায় ২২০ উদ্যোক্তা, প্রশিক্ষণার্থী, ফ্রিল্যান্সার এবং সম্ভাব্য স্টার্টআপকে মেন্টরশিপের পাশাপাশি আর্থিক ও লজিস্টিক পরিষেবা প্রদান করবে।

শিল্পের অভ্যন্তরীণ ব্যক্তিরা অভিমত ব্যক্ত করেছেন যে, আইটি বিজনেস ইনকিউবেটর ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ বাস্তবায়নের অন্যতম চাবিকাঠি হবে। কারণ, এটি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী এবং স্নাতকদের দ্বারা উদ্ভাবিত নতুন ধারণাগুলোকে বাস্তবায়িত করার কেন্দ্র এবং সেই সাথে মেধা, বুদ্ধি এবং জ্ঞানের বিবর্তন কেন্দ্র হবে।

ইনকিউবেটরটি বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতকদের নিজেদের উদ্যোক্তা হিসেবে গড়ে তুলতে, বিশ্ববিদ্যালয় এবং আইটি শিল্পের মধ্যে কার্যকর যোগসূত্র স্থাপনের পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুষদ ও শিক্ষার্থীদের জন্য গবেষণা ও উদ্ভাবনী কার্যক্রমের সুযোগ তৈরি করতে সহায়তা প্রদানের দিকেও মনোযোগ দেয়।

চুয়েট ক্যাম্পাসে ১১৩ কোটি টাকা ব্যয়ে ৪ দশমিক ৭ একর জায়গার উপর নির্মিত এটি হবে ডিজিটাল বাংলাদেশ প্রচারাভিযান থেকে দেশকে ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’-এ রূপান্তর করার নতুন ধাপ, যা ২০০৮ সালে বর্তমান সরকারের নির্বাচনী ইশতেহারে প্রথম উন্মোচন করা হয়েছিল।

ইনকিউবেটরে বিটিসিএলের মাধ্যমে উচ্চ গতির ইন্টারনেট সংযোগ রয়েছে। জুলাই ২০১৭ থেকে জুন ২০২২ পর্যন্ত বাস্তবায়িত এই অনন্য প্রকল্পে ৫০ হাজার বর্গফুট  জায়গাসহ ১০ তলা পর্যন্ত একটি ডিম্বাকৃতি ইনকিউবেশন বিল্ডিং অন্তর্ভুক্ত। প্রতিটি ফ্লোরে ৫ হাজার বর্গফুট আছে। এ ছাড়া প্রধানমন্ত্রী শেখ জামাল ও রোজী জামালের নামে দু’টি পৃথক চারতলা ডরমেটরিও উদ্বোধন করেন। ভবন দ’ুটির মোট আয়তন ৪০ হাজার বর্গফুট এবং প্রতিটি ডরমেটরিতে ৪০টি কক্ষ রয়েছে।

এ ছাড়াও, একটি ৬ তলা বহুমুখী প্রশিক্ষণ ভবন রয়েছে, যার মোট ফ্লোর এলাকা ৩৬ হাজার বর্গফুট। প্রতিটি ফ্লোর ৬ হাজার বর্গফুটের।

ইনকিউবেশন ভবনটিতে একটি স্টার্টআপ জোন, ইনোভেশন জোন, ইন্ডাস্ট্রি-একাডেমিক জোন, ব্রেনস্টর্মিং জোন, একটি এক্সিবিশন সেন্টার, একটি ই-লাইব্রেরি জোন, একটি ডেটা সেন্টার, রিসার্চ ল্যাব, ভিডিও কনফারেন্সিং রুম এবং একটি কনফারেন্স রুম রয়েছে।

এছাড়াও ব্যাংক এবং আইটি ফার্ম, সাইবার ক্যাফে, ফুড কোর্ট, ক্যাফেটেরিয়া, রিক্রিয়েশন জোন, ডিসপ্লে জোন এবং মিডিয়া রুমগুলোর জন্য আলাদা কর্নার থাকবে।

অতিরিক্তভাবে, বহুমুখী প্রশিক্ষণ ভবনে ২৫০ জন ধারণ ক্ষমতার একটি অত্যাধুনিক অডিটোরিয়াম এবং ৫০ জন ধারণ ক্ষমতার চারটি কম্পিউটার/সেমিনার কক্ষ রয়েছে। একটি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ল্যাব, একটি মেশিন লার্নিং ল্যাব, একটি অপটিক্যাল ফাইবার ব্যাকবোন, একটি সাবস্টেশন এবং একটি সোলার প্যানেলও স্থাপন করা হচ্ছে।

বন্যাদুর্গতদের পাশে গ্রামীণফোন ও বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি

বাংলাদেশের উত্তর ও উত্তর-পূর্ব অঞ্চলে ভয়াবহ বন্যার কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া লাখো মানুষের খাবার, স্বাস্থ্যসেবা ও নিরাপদ আশ্রয়ের প্রয়োজনীয়তা দেখা দিয়েছে। এ প্রতিকূল পরিস্থিতিতে, দায়িত্বশীল প্রতিষ্ঠান হিসেবে এগিয়ে এসেছে গ্রামীণফোন। প্রতিষ্ঠানটি বন্যাদুর্গত এলাকার মানুষদের ত্রাণ ও পুনর্বাসন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সহায়তা করার লক্ষ্যে বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির (বিডিআরসিএস) সাথে যৌথ উদ্যোগ গ্রহণ করেছে।

এ উদ্যোগের আওতায়, ইতোমধ্যে নেত্রকোনা, সিলেট ও সুনামগঞ্জে চারটি মেডিকেল ক্যাম্প স্থাপন করা হয়েছে। এই ক্যাম্পগুলোর মাধ্যমে এ জেলাগুলোর পাশ্ববর্তী উপজেলা সমূহে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত মানুষদের সম্পূর্ণ বিনামূল্যে চিকিৎসা সংক্রান্ত পরামর্শ ও ওষুধ সরবরাহ কার্যক্রম শুরু হয়েছে। দশ দিন ব্যাপী এ উদ্যোগটি গত মাসের ২৯ তারিখ থেকে শুরু হয়েছে, যা চলবে আগামী ০৮ জুলাই। এ সময়ে ছয় হাজারেরও বেশি রোগীকে চিকিৎসা সেবা দেয়া হবে বলে প্রত্যাশা করা হচ্ছে। এ লক্ষ্যেই টিমের প্রতিটি সদস্য এ অঞ্চলগুলোতে নিবেদিতভাবে কাজ করছেন। গ্রামীণফোন ও বিডিআরসিএস’র যৌথ এ উদ্যোগের মাধ্যমে ইতিমধ্যে নেত্রকোনা সদর, বারহাট্টা, কলমাকান্দা, দক্ষিণ সুরমা, কানাইঘাট, ওসমানীনগর, বালাগঞ্জ, বিশ্বনাথ, কোম্পানীগঞ্জ, গোয়াইনঘাট, বিশ্বম্ভরপুর ও সুনামগঞ্জ সদর উপজেলায় বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত ২১৭৩জনকে চিকিৎসা সংক্রান্ত সেবা ও পরামর্শ দেয়া হয়েছে।

গ্রামীণফোনের প্রধান নির্বাহী ইয়াসির আজমান বলেন, “টানা বৃষ্টিতে হঠাৎ বন্যা পরিস্থিতি দেশের উত্তর এবং উত্তর-পূর্ব অঞ্চলের মানষ বিপন্ন অবস্থায় পড়েছেন। এ অবস্থায় মোবাইল কানেক্টিভিটি বন্যাদুর্গতের যোগাযোগের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ন। গ্রামীফোন টিম রেগুলেটর, স্থানীয় প্রশাসন, আইনশৃংখলা বাহীনি এবং নেটওয়ার্ক পার্টনারদের সাথে নিয়ে একসাথে জরুরী ভিত্তিতে নেটওয়ার্ক পুনস্থাপনের কাজ করে যাচ্ছেন। পাশাপাশি জরুরী স্বাস্থ্যসেবা এবং খাদ্য সরবারহের নিয়ে আমরা বন্যাপীড়িতের পাশে আছি। আমাদের সার্বিক সহায়তার কার্যক্রমে সহায়তার জন্য আমি বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি প্রতি ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি ।”

মেডিকেল ক্যাম্প ছাড়াও, খুব শিগগিরই ১৫ হাজার মানুষের মাঝে ১৫ হাজার ফুড রিলিফ প্যাক বিতরণ কার্যক্রম শুরু হবে, যা দিয়ে প্রতিটি পরিবারের এক সপ্তাহের খাবারের জোগান নিশ্চিত হবে। এর আগে, বন্যাদুর্গত এলাকায় মোবাইল সেবার মাধ্যমে জরুরি চাহিদা মেটাতে গ্রাহকদের ১০ মিনিট ফ্রি টক-টাইম দিয়েছে গ্রামীণফোন।

বরিশালে জোয়ারের পানিতে ডুবে ৩ জনের মৃত্যু

বরিশালঃ জেলার বাকেরগঞ্জ উপজেলার নলুয়া ইউনিয়নে চর থেকে গরু আনতে গিয়ে খালের স্রোতে ভেসে ডুবে দাদি-নাতিসহ তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। তাদের মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে পুরো এলাকায়।

মঙ্গলবার (৫ জুলাই) সন্ধ্যায় নলুয়া ইউনিয়নে চর গজালিয়া এলাকা থেকে এলাকাবাসী ও পুলিশ ওই তিনজনের লাশ উদ্ধার করেছেন।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বাকেরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আলাউদ্দিন মিলন।

তিনি বলেন, উপজেলার নলুয়া ইউনিয়নে চর গজালিয়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। সোমবার সন্ধ্যার কিছুক্ষণ আগে তারা বাড়ির পাশের একটি চরে গরু আনতে যান। কিন্তু চরে জোয়ারের পানি বেড়ে যাওয়ায় তিনজনই খালের স্রোতে ভেসে যায়।

এরমধ্যে মাজেদার বয়স ৭৫ বছর। তার নাতি মারিয়ার বয়স ১১ বছর ও মাজেদার প্রতিবেশী আলো বেগমের বয়স ৭০ বছর। একজনের মরদেহ সোমবার শেষ রাতে পাওয়া যায়। আর মারিয়া ও মাজেদা বেগমের মরদেহ মঙ্গলবার ভোরে পাওয়া যায়।

ওসি বলেন, তিনজনের মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে। কিন্তু এটি নিছকই একটি দুর্ঘটনা। পরিবারের লোকজন লাশ দাফন করেছেন।

চাঁদাবাজি: দুই সার্জেন্টসহ ১০ পুলিশ প্রত্যাহার

রাজধানীতে ট্রাফিক পুলিশের চাঁদাবাজিতে অতিষ্ঠ নগরবাসী। চাঁদাবাজির শিকার হচ্ছে গণপরিবহন ও মোটরসাইকেল। গণপরিবহনের মধ্যে শহর ও শহরতলি রুটে চলাচলকারী প্রায় ১৫ হাজার বাস রয়েছে। ঢাকায় চলাচলকারী ৩ হাজার সিএনজি চালিত অটোরিকশাও প্রতিনিয়ত কাগজপত্র যাচাইয়ের নামে চাঁদাবাজির শিকার হচ্ছে। অ্যাপসের মাধ্যমে ভাড়ায় চালিত মোটরসাইকেলগুলোও ট্রাফিক পুলিশের চাঁদাবাজির শিকার হচ্ছে।

প্রতিদিন রাত ৮টার পর থেকে গভীর রাত পর্যন্ত সার্জেন্ট ও ট্রাফিক কনস্টেবলরা যেখানে সেখানে যানবাহন থামিয়ে কাগজপত্র চেক করার নামে চাঁদা আদায় করেন বলে অভিযোগ রয়েছে।

শুধু তাই নয়, সার্জেন্ট ও ট্রাফিক কনস্টেবলদের টার্গেট এখন ছোট পিকআপ গাড়ি। বাসা পরিবর্তন ও বড় ধরনের কেনাকাটার জন্য মালামাল পরিবহন করতে ছোট পিকআপ গাড়ি ব্যবহার হয়। এসব ছোট পিকআপ গাড়ির চালকদের বেশির ভাগেরই লাইসেন্স নেই। এই সুযোগটি কাজে লাগায় সার্জেন্ট ও ট্রাফিক কনস্টেবলরা। সড়কের মোড়ে এসব পিকআপ গাড়ি দেখলেই সার্জেন্ট ও কনস্টেবলরা আটক করে ২০০ টাকা চাঁদা নেয়। আবার রেন্ট-এ-কারের মাইক্রোবাস তো হরহামেশাই চাঁদাবাজি শিকার হচ্ছে। রেন্ট-এ-কার প্রতিষ্ঠানগুলো থেকে সার্জেন্টরা মাসিক চুক্তিভিক্তিক চাঁদা নেয়।