চাকমা বিচ্ছিন্নতাবাদীদের রাষ্ট্রবিরোধী তৎপরতা

চাকমা তথা চাংমা বাংলাদেশের প্রধান ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী। পার্বত্য চট্টগ্রামের তিন জেলাতে চাকমাদের সংখ্যা প্রায় ৭ লক্ষ। রাঙামাটি ও খাগড়াছড়ি জেলাতে এদের সংখ্যা বেশী। তবে বান্দরবানেও স্বল্প সংখ্যায় চাকমাদের উপস্থিতি রয়েছে। চাকমা জনগোষ্ঠীর কিছু অংশ বর্তমান ভারতের উত্তর-পূর্বাংশে তথা ত্রিপুরা ও অরুণাচল রাজ্যে বসবাস করছে। এছাড়া চাকমাদের বড় একটি অংশ অভিবাসন নিয়ে বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, অস্ট্রেলিয়া, জাপানসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে অবস্থান করছে।

চাকমাদের প্রধান জীবিকা কৃষি কাজ। এরা প্রধানত থেরাবাদ বৌদ্ধ ধর্মের অনুসারী। তবে বর্তমানে অনেকে খ্রিস্টান ধর্মে দীক্ষা নিচ্ছে। বুদ্ধপুর্ণিমা ছাড়া তাদের অন্যতম প্রধান আনন্দ উৎসব বিজু। চাকমাদের ভাষার নামও চাকমা (চাংমা)। চাকমাদের নিজস্ব বর্ণমালা রয়েছে। বাঁশের অঙ্কুর হল চাকমাদের ঐতিহ্যগত খাদ্য। তারা এটাকে “বাচ্ছুরি” নামে ডাকে। এছাড়া চাকমারা শুকরের মাংস খেতে পছন্দ করে।

চাকমা ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর মানুষ তাদের সার্কেলের প্রধানকে রাজা বলে থাকে। সার্কেল চিফ তাদের প্রথা, রীতি, নীতি, ভূমি, রাজস্ব ব্যবস্থাপনা, পার্বত্য জেলা পরিষদ অধিবেশনে যোগ দেয়া, কার্বারী নিয়োগ, হেডম্যান নিয়োগের মত কাজ করে থাকে। কার্বারীরা যাবতীয় ঝগড়া, নানা সমস্যার নিস্পত্তি করে থাকে। হেডম্যানরা অনেক কাজ করলেও মুল কাজ খাজনা তোলা। চাকমা সমাজ পিতৃতান্ত্রিক সমাজ। চাকমা সমাজে ছেলেরা পূর্ব পুরুষদের সম্পত্তির বৈধ উত্তরাধিকার। ছেলেদের বর্তমানে কন্যা সন্তান কেবলমাত্র বিয়ের কাল পর্যন্ত ভরনপোষণ পাওয়ার অধিকার রাখে। পিতা বা স্বামীর অবর্তমানে চাকমা নারীরা সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত হন।

চাকমাদের আদিনিবাস ও মূল উৎসস্থান:

চাকমাদের বিষয়ে বিস্তারিত লিখতে গেলে একটা আলাদা ইতিহাসগ্রন্থ হয়ে দাঁড়াবে। তবে অতি সংক্ষেপে এদের বিষয়ে কিছু আলোকপাত করা যাক।  ইতিহাস পর্যালোচনা করে দেখা যায় যে, চাকমারা এই দেশের আদিবাসী নয়, তারা মঙ্গোলীয় জাতির একটি শাখা। বর্তমান মিয়ানমারের আরাকানে বসবাসকারী ডাইংনেট জাতিগোষ্ঠীকে চাকমাদের একটি শাখা হিসেবে গণ্য করা হয়।

আনুমানিক ১৫৫০ খ্রিস্টাব্দের দিকে পর্তুগিজ মানচিত্র প্রণেতা লাভানহা অঙ্কিত বাংলার সর্বাপেক্ষা পুরাতন মানচিত্রে পার্বত্য চট্টগ্রামের এসব চাকমাদের সম্পর্কে উল্লেখ পাওয়া যায়। কর্ণফুলি নদীর তীর বরাবর চাকমাদের বসতি ছিল। চাকমাদের আরও আগের ইতিহাস সম্পর্কে দুটি তাত্ত্বিক অভিমত প্রচলিত। উভয় অভিমতে মনে করা হয়, চাকমারা বাইরে থেকে এসে তাদের বর্তমান আবাসভূমিতে বসতি স্থাপন করে। বিশেষজ্ঞের অভিমত অনুযায়ী, চাকমারা মূলত ছিল মধ্য মায়ানমার ও আরাকান এলাকার অধিবাসী।

এ অভিমতে বলা হয়, চাকমারা উত্তর ভারতের চম্পকনগর থেকে পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলে অভিবাসী হিসেবে আসে। আঠারো শতকের শেষের দিকে কেবল পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলই নয় বরং আজকের চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার জেলার পাহাড়ি এলাকাগুলোতেও তাদের বিক্ষিপ্ত অবস্থান ছিল।

রাজা ভুবনমোহন রায় বিরচিত এবং বিপ্রদাশ বড়ুয়া সম্পাদিত ‘চাকমা রাজবংশের ইতিহাস’ নামক বইয়ে উল্লেখ করা আছে যে, চাকমা ও বড়ুয়ারা দীর্ঘকাল চট্টগ্রাম ও আরাকানে বাস করলেও তাঁরা এখানকার আদি বাসিন্দা নন জানতে পারি। চাকমারা চম্পকনগর থেকে এসেছেন- সেই হারানো চম্পকনগরের সংখ্যা এক নয়, একাধিক- তাও জানতে পারি’।

বৃটিশ কর্ণেল প্রী (Colonel Phyree) চট্টগ্রামের বড়ুয়া ও চাকমাদের ব্রহ্ম ইতিহাসের ৪৭ নম্বর পৃষ্ঠায় উল্লেখ করেছেন যে, বড়ুয়া ও চাকমাদের আকৃতিগত বৈশিষ্ট্যতার জন্য তাঁহারা দক্ষিণ বিহার অর্থাৎ মগধ হইতে আসিয়া থাকিবেন’।

 

আসামের ব্রহ্মপুত্রের তীরবর্তীতে চাকমা রাজ্যের রাজধানী ছিল চম্পক নগর। অনেকে বিশ্বাস করে চম্পকনগর ভারতের উত্তর-পশ্চিম প্রদেশ থেকে অনেক দূরে অবস্থিত এবং চাকমারা চন্দ্র বংশের ক্ষত্রীয়দের উত্তরসূরী কিন্তু তাদের চেহারার বা মুখমন্ডলের বৈশিষ্ট্য আর্যদের চেয়ে মঙ্গোলীয়দের সঙ্গে অধিক সাদৃশ্যপূর্ণ। সিংহভাগ চাকমাদের বিশ্বাস, তারা উচ্চ বর্ণের হিন্দুদের পরবর্তী বংশধর।

সার্বিক বিবেচনায় তাই বলা যায় যে, চাকমা বা অন্যান্য উপজাতীয়রা নয়, বরং বাঙালি ও বাংলা ভাষাভাষীরাই এই দেশের আদিবাসী। কারণ তারাই প্রোটো-অস্ট্রোলয়েড (Proto Astroloid) নামের আদি জনধারার অংশ এবং বাংলাদেশের বৃহত্তর জনগোষ্ঠীর তারাই একমাত্র আদিবাসী বা Son of the Soil বলে দাবি করতে পারে। এর পেছনে অনেক জাতিতাত্ত্বিক, নৃতাত্ত্বিক ও বৈজ্ঞানিক যুক্তি-প্রমাণও রয়েছে। বিশ্বের তাবৎ শীর্ষস্থানীয় নৃবিজ্ঞানী এবং গবেষকবৃন্দই এ ব্যাপারে একমত।

আদিবাসী বিতর্ক এবং চাকমাদের অবস্থান:

 

বাংলাদেশ সংবিধানের ২৩(ক) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী বাংলাদেশে কোন আদিবাসী নেই; বরং মূল বাঙালি জনগোষ্ঠীর বিপরীতে এই অ-বাঙালি জনসমষ্টিকে- উপজাতি; ক্ষুদ্র জাতিসত্তা; নৃগোষ্ঠী নামে অভিহিত করা হয়েছে। কিন্তু, এই অ-বাঙালি জনগোষ্ঠী জাতিসংঘ আদিবাসী অধিকার ঘোষণা ২০০৭ এবং আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার ১০৭ ও ১৬৯ নং কনভেনশনের ঘোষণা অনুযায়ী নিজেদের আদিবাসী স্বীকৃতির দাবি আদায়ের কর্মসূচি পালন করে আসছে।

তবে বাংলাদেশ সরকারের দৃঢ় অবস্থানের ফলে আদিবাসী ইস্যু কিছুটা স্তিমিত হলেও কতিপয় চাকমা নেতা দেশের তথাকথিত বুদ্ধিজীবীদের হাত করে এ ব্যাপারে তাদের অপতৎপরতা অব্যাহত রেখেছে। বিশেষতঃ UNPFII (United Nations Permanent Forum on Indigenous Issues), ILO (International Labour Organization), CHTC (Chittagong Hill Tracts Commision), আদিবাসী বিষয়ক সংসদীয় ককাস, আদিবাসী ফোরাম ইত্যাদি সংগঠনের মদদে এই ইস্যুটি এখনও চলমান রয়েছে। এতে প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষভাবে নেতৃত্ব দিচ্ছে বর্তমান চাকমা সার্কেল চিফ ব্যারিস্টার দেবাশীষ রায় এবং অন্যান্য চাকমা শীর্ষস্থানীয় নেতাদের একাংশ।

চাকমা সার্কেল চিফ দেবাশীষ রায় UNPFII’এর দক্ষিণ এশিয়ার আঞ্চলিক প্রতিনিধি হিসেবে ২০১১-২০১৩ এবং ২০১৪-২০১৬ সালের জন্য নির্বাচিত হয়েছিলেন। এই অবস্থানকে পুঁজি করে তিনি বিভিন্ন আন্তর্জাতিক গোষ্ঠী/সংস্থাসমূহের সাথে যোগসাজশের মাধ্যমে অত্যন্ত সুকৌশলে ইস্যুটির স্বপক্ষে তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছেন। তাছাড়া, বিভিন্ন দেশে (অস্ট্রেলিয়া, সুইডেন, থাইল্যান্ড, ডেনমার্ক, যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র, চীন ইত্যাদি) অভিবাসী হিসেবে বসবাসরত পার্বত্য উপজাতীয় সদস্যদের দ্বারাও একই তৎপরতা লক্ষ করা যায়।

সেই সাথে দেশের অভ্যন্তরে সরকারি বিভিন্ন পদস্থ কর্মকর্তা বা সংস্থার ব্যানারে এবং সুশীল সমাজের প্রতিনিধির মাধ্যমে এই দাবির পক্ষে প্রত্যক্ষ/পরোক্ষভাবে অত্যন্ত সুকৌশলে একচেটিয়া প্রচারণা চালানো হয়, যা সরকারের ভাবমর্যাদা ও অবস্থানকে ক্ষুণ্ন করে থাকে। সাম্প্রতিক সময়ে, মানবাধিকার কমিশন ও পার্বত্য চট্টগ্রাম কমিশন’কে প্ল্যাটফর্ম হিসেবে ব্যবহার করে এবং কতিপয় রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের দ্বারা আদিবাসী প্রচারণায় অংশগ্রহণের মাধ্যমে এই দাবিকে পুনরায় জোরালো করবার তৎপরতা জারি রয়েছে।

চাকমাদের আদিবাসী স্বীকৃতি দিতে সমস্যা কোথায়?

আমার মত অনেক মানুষের মাথার মধ্যেই এই প্রশ্ন ঘুরপাক খায়। তাদের জ্ঞাতার্থে জানাচ্ছি, বাংলাদেশের উপজাতীয় জনগোষ্ঠী আদিবাসী হিসেবে স্বীকৃতি পেলে বাংলাদেশের ভেতর সকল উপজাতীয়রা স্বায়ত্তশাসিত বা স্বশাসিত অঞ্চল ও সরকার ব্যবস্থার বৈধতা পাবে। ফলে বাংলাদেশকে বিভক্ত করে তাঁরা নতুন রাষ্ট্র গঠনের বৈধতা পাবে। এসব অঞ্চলে সরকার পরিচালনায় তারা নিজস্ব রাজনৈতিক কাঠামো, জাতীয়তা, অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনা, আইনপ্রণয়ন ও আত্মনিয়ন্ত্রণের অধিকার পাবে এবং এসব অঞ্চলের ব্যাপারে বাংলাদেশ সরকারের অধিকার ও কর্তৃত্ব ক্ষুণ্ন হবে। এ জন্যই চাকমারা পার্বত্য জেলাগুলোকে বাংলাদেশ থেকে বিচ্ছিন্ন করে স্বাধীন ‘জুম্মল্যান্ড’ গঠনের স্বপ্নে বিভোর।

বর্তমান চাকমা সার্কেল চিফ ব্যারিস্টার দেবাশীষ রায়ের পিতা ত্রিদিব রায় ছিলো একজন কুখ্যাত রাজাকার। তার অনুসারীরা এখনো সেই আদর্শ নিয়ে কাজ করে যাচ্ছে। আর সুযোগ সন্ধানী সন্তু লারমার সাহস কোন স্তরে থাকলে ভাবুন তো, আজো সে বাংলাদেশের নাগরিকত্ব গ্রহণ করেনি!!! নিজস্ব পতাকা, মানচিত্র, মুদ্রা, আইডি কার্ড থেকে শুরু করে একটি স্বাধীন রাষ্ট্র গড়ার জন্য যত কিছু প্রয়োজন সব কিছুর প্রাথমিক যোগান তারা করে রেখেছে। পাঠকদের জ্ঞাতার্থে সিএইচটি জুম্মল্যান্ড নামে চাকমা বিচ্ছিন্নতাবাদীদের পরিচালিত একটি পেইজের ঠিকানা এখানে দেয়া হলো (https://web.facebook.com/JUMMALAND.BD/?hc_ref=ARS8eWssT9AHidH9N357RcPPQu-q-evCgsma1Qx8_kwoIZD1hdsvT3vn7Bjh6VPwpnM)।

শুধু ফেসবুক বা সামাজিক গণমাধ্যম নয়, পাহাড়ী বিচ্ছিন্নতাবাদী সন্ত্রাসীরা বিভিন্ন নিউজ পোর্টাল খুলেও পার্বত্য চট্টগ্রামকে বিচ্ছিন্ন করে স্বাধীন জুম্মল্যান্ড গঠনের প্রচার চালাচ্ছে। তারা দাবি করে যে, পার্বত্য চট্টগ্রাম স্বাধীন করার মতো পর্যাপ্ত অস্ত্র তাদের হাতে রয়েছে। কাজেই বাংলাদেশের উপজাতিদের আদিবাসী স্বীকৃতি কোনো ছেলের হাতের মোয়া নয়। এর সাথে জড়িত রাষ্ট্রের সার্বভৌমত্ব, অখণ্ডতা, অস্তিত্ব, কর্তৃত্ব, ইতিহাস ও মর্যাদার প্রশ্ন।

 

মুক্তিযুদ্ধ ও চাকমাদের বিতর্কিত অবস্থান:

১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধে কতিপয় উপজাতীয় লোকজন মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে থাকলেও বেশিরভাগ উপজাতীয়রা মুক্তিযুদ্ধের বিপক্ষে অবস্থান নিয়ে পাকিস্তানের পক্ষাবলম্বন করে। বর্তমান চাকমা সার্কেল চীফ ব্যারিস্টার দেবাশীষ রায়ের পিতা ত্রিদিব রায় ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ শুরু হলে সরাসরি পাকিস্তানের পক্ষাবলম্বন করেন। তার আশঙ্কা ছিল যে স্বাধীন বাংলাদেশে চাকমা রাজ্যের স্বায়ত্তশাসন থাকবে না এবং বাঙালিদের কারণে চাকমারা স্থানচ্যুত হবে। তাই তিনি পশ্চিম পাকিস্তানের সাথে যুক্ত থেকে স্বায়ত্ত্বশাসন বজায় রাখতে চেয়েছিলেন।

মুক্তিযুদ্ধকালীন সময়ে তিনি রাংগামাটি জেলার রিজার্ভ বাজার এবং তবলছড়ি বাজারে জনসভায় ভাষণ দেন। এসব জনসভায় তিনি ‘পাকিস্তান জিন্দাবাদ’ স্লোগানের মাধ্যমে পাকিস্তান রাষ্ট্রের প্রতি তার আনুগত্য প্রকাশ করেন। ত্রিদিব রায় বাংলাদেশের একমাত্র যুদ্ধপরাধী যার লাশ পাকিস্তানে সমাহিত করা হয়েছে। যদিও তার ইচ্ছা ছিল যাতে তার শেষকৃত্য বাংলাদেশে অনুষ্ঠিত হয়। তবে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ দেশপ্রেমিক বাংলাদেশি জনতার প্রবল প্রতিরোধের মুখে তা সম্ভব হয়নি। মৃত্যুর দশদিন পর পাকিস্তানের ইসলামাবাদে তাকে দাহ করা হয়।

পার্বত্য চট্টগ্রামকে অস্থিতিশীল করতে এবং রাষ্ট্রবিরোধী কর্মকান্ডে চাকমা বিচ্ছিন্নতাবাদীদের ভূমিকা:

পার্বত্য চট্টগ্রামের স্থিতিশীল পরিবেশকে অস্থিতিশীল করে তুলতে এবং পার্বত্য চট্টগ্রামকে বাংলাদেশ থেকে বিচ্ছিন্ন করে আলাদা স্বাধীন ‘জুম্মল্যান্ড’ নামক দেশ গঠনের জন্য চাকমা নেতাদের একাংশ গোপনে বিভিন্ন কর্মকান্ড পরিচালনা করে আসছে। তারা দেশে-বিদেশে বিভিন্ন উগ্রপন্থী সংগঠনসহ নানান সংস্থার সাথে এ ব্যাপারে লবিং করছে। পাশাপাশি তারা নিজেদের সশস্ত্র সংগঠনের জন্য ব্যাপক অস্ত্র ক্রয় করছে। জানা যায় যে, পার্বত্য চট্রগ্রামের উপজাতি সন্ত্রাসীদের কাছে মায়ানমার থেকে সব অস্ত্রের চালান আসতো আরাকান আর্মির নেতা ডা. রেনিন সোয়ের মাধ্যমে।

পার্বত্য চট্টগ্রামের বর্তমান তিনটি আঞ্চলিক রাজনৈতিক দল জেএসএস(সন্তু), জেএসএস(সংস্কার) এবং ইউপিডিএফ এবং এর সশস্ত্র সংগঠনগুলোর মূল চালিকা শক্তি এই চাকমা উপজাতির একাংশ। বাংলাদেশ স্বাধীন হবার পর এম এন লারমার সশস্ত্র গেরিলা শান্তিবাহিনী গঠন; সন্তু লারমা, দেবাশীষ রায়, ঊষাতন তালুকদারদের দেশীয় স্বার্থ বিরোধী বিভিন্ন প্রচারণার পাশাপাশি বিভিন্ন স্বার্থান্বেষী মহলের সহায়তায় নতুন উদ্ভাবিত “আদিবাসী” স্বীকৃতির দাবী, ‘জুম্মল্যান্ড’ নামে আলাদা দেশ গঠনের চক্রান্ত এসব কিছুই চাকমা সম্প্রদায়ের দেশদ্রোহিতার বহিঃপ্রকাশ হিসাবে ফুটে ওঠে।

 

চাকমাদের একক আধিপত্যের কারণে পিছিয়ে পড়ছে অন্যান্য উপজাতি সম্প্রদায়:

পার্বত্য চট্টগ্রামে বিভিন্ন উপজাতি সম্প্রদায়ের বসবাস থাকলেও সর্বক্ষেত্রেই চাকমা সম্প্রদায়ের ব্যক্তিবর্গই নেতৃত্বের শীর্ষ স্থান দখল করে আছে। শিক্ষা এবং চাকুরীর ক্ষেত্রে চাকমারা অন্যান্য উপজাতিদের চেয়ে অনেক বেশি এগিয়ে। ২০১১ সালের সর্বশেষ জরিপ অনুযায়ী বাংলাদেশে সামগ্রিক শিক্ষার হার ৫৯.৬২% যেখানে চাকমাদের শিক্ষার হার ৭৩%। অথচ, পার্বত্য চট্টগ্রামের অন্যান্য সকল উপজাতিদের শিক্ষার হার ৪৪.৬২%।

শান্তিচুক্তির পর গড়ে ওঠা সংস্থাসমুহ যেমন- আঞ্চলিক পরিষদ, জেলা পরিষদ ইত্যাদিতে চাকমা সম্প্রদায়ের ব্যক্তিবর্গ অধিকাংশ সুযোগ সুবিধা ভোগ করছে। বাংলাদেশ সরকার ৫% উপজাতি কোটা বরাদ্দ করলেও এর অধিকাংশই চাকমারা ভোগ করছে। একই সাথে, বিদেশী সংস্থাসমূহের শীর্ষস্থানীয় পদগুলোতে চাকমা সম্প্রদায়ের ব্যক্তিবর্গ দায়িত্বপ্রাপ্ত রয়েছে। পার্বত্য চট্টগ্রামের ঘটনাপ্রবাহ এবং চাকমা সম্প্রদায়ের ইতিহাস পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, চাকমা নেতৃত্বের মধ্যে একপ্রকার স্বার্থপরতা, ক্ষমতার প্রতি লোভ এবং যেকোন প্রকারে শীর্ষ স্থান দখলের প্রবণতা কাজ করেছে।

চাকমাদের এই স্বার্থপরতা এবং ক্ষমতার লোভের কারণে পার্বত্য চট্টগ্রামের অন্যান্য উপজাতি সম্প্রদায় অনগ্রসরতার বেড়াজাল থেকে বের হতে পারছে না। সমগ্র পার্বত্য চট্টগ্রামের পরিস্থিতিকে চাকমারা নিজেদের স্বার্থের কারণে কুক্ষিগত করে রেখেছে। চাকমা সম্প্রদায়ের নেতৃবৃন্দের মধ্যে সবসময় ‘নিজ’ এবং গোষ্ঠীস্বার্থকে প্রাধান্য দিতে দেখা গিয়েছে। চাকমাদের এই একক আধিপত্য ও স্বার্থপরতাকে অন্যান্য উপজাতি সম্প্রদায় মেনে নিতে পারে না কিন্তু চাকমাদের সশস্ত্র সংগঠন আর বিভিন্ন দেশী-বিদেশী মহলে যোগাযোগ থাকার কারণে তারা ভয়ে কিছু বলতে পারে না।

পরিশেষ:

চাকমা সম্প্রদায়ের চিহ্নিত কিছু নেতৃবৃন্দ যদি স্বার্থপরতা ভুলে নিজ দেশ বাংলাদেশের স্বার্থকে প্রাধান্য দিয়ে কাজ করে তবে তা পার্বত্য চট্টগ্রামের পিছিয়ে পড়া অন্যান্য সম্প্রদায়কে আরো উন্নত গর্বিত বাংলাদেশী নাগরিক হিসাবে গড়ে তুলতে কার্যকর ভূমিকা রাখবে। বিভিন্ন জাতি, ধর্ম, বর্ণের সমন্বয়ে গঠিত আমাদের এই বাংলাদেশ। সকল সম্প্রদায়ের কৃষ্টি-কালচার মিলে বাংলাদেশের সংস্কৃতিকে করেছে সমৃদ্ধ। আর তাই অতীতের সংঘাত এবং জাতিগত ভেদাভেদ ভুলে সকলে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করলে এ দেশ সোনার বাংলা হিসেবে বিশ্বের বুকে মাথা উঁচু করে দাঁড়াবেই।

পার্বত্য চট্টগ্রামের সার্কেল প্রথার আড়ালে বঞ্চনা ও সাম্প্রদায়িকতা

প্রবাদ আছে “ঢাল নেই, তলোয়ার নেই, নিধিরাম সর্দার”। কালের বিবর্তনে প্রবাদটির বাস্তব রূপ এখন পার্বত্য চট্টগ্রামের তিন স্ব-ঘোষিত রাজার বেলায়। এরা নিজেরা নিজেদেরকে রাজা বললেও আইন অনুযায়ী এদের প্রকৃত পদের নাম ‘সার্কেল চিফ’। বৃটিশ শাসনামলে চিটাগাং হিল ট্রাক্টস রেগুলেশন ১৯০০ আইন বা চিটাগাং হিল ট্রাক্টস ম্যানুয়েল এর ক্ষমতাবলে এই পদের সৃষ্টি হয়। দূর্গম পাহাড়ি এলাকা হওয়ায় খাজনা আদায়ের সুবিধার জন্য এবং চাকমা বিদ্রোহ দমনের লক্ষ্যে পার্বত্য চট্টগ্রামকে তিনটি সার্কেল বা অঞ্চলে বিভক্ত করে তারা। চাকমা সার্কেল চিফের অধীনে রাঙামাটি, বোমাং সার্কেল বান্দরবানে আর মং সার্কেলের অধীনে খাগড়াছড়ি জেলাকে দায়িত্ব দেয়া হয়। সেই থেকে চালু হয় সার্কেল প্রথা। সেই থেকে ব্রিটিশ আমল, পাকিস্তান আমল ও বাংলাদেশ আমলে তারা সার্কেল চিফ নামেই অভিহিত হয়ে আসছে। শান্তিচুক্তিতেও তাদের সার্কেল চিফই বলা হয়েছে।

তবে নিজ সার্কেলে বসবাসকারী জনগণের কাছে তারা নিজেদেরকে রাজা বলেই পরিচয় দেয়। যা Chittagong Hill Tracts Regulation 1/1900 এর ৩৫ নং আইন এবং অন্যান্য বিদ্যমান আইন অনুযায়ী বিধি সম্মত নয়।

 

১৯৪৭ সালে ব্রিটিশরা এদেশ থেকে চলে যাওয়ার পরেও সার্কেল চিফরা তাদের এই প্রথা চালু রেখেছিলো। সমতলের জমিদার প্রথার সাথে পার্বত্য চট্টগ্রামের সার্কেল প্রথার ভিন্নতা রয়েছে। সমতলের জমিদারদের জমি কেনা বেচার অধিকার থাকলেও সার্কেল চিফদের জমির মালিকানা ছিলো না। ১৯০০ সালের আইন অনুযায়ী পার্বত্য চট্টগ্রামের সকল জমির মালিক সরকারের পক্ষে জেলা প্রশাসক। সার্কেল চিফরা হলো তাদের উপদেষ্টা ও পরামর্শক। পাকিস্তান আমলে জমিদারী অধিগ্রহণ আইন করার পর জমিদারদের অস্তিত্ব বিলুপ্ত হলেও পার্বত্য চট্টগ্রামের সার্কেল প্রথা চালমান রয়েছে। স্থানীয় অধিবাসীদের কাছ থেকে সরকারের পক্ষে ট্যাক্স আদায় করাই তাদের মূল দায়িত্ব। একই সাথে পাহাড়ী জনগোষ্ঠীগুলোর প্রথাগত আইনে সামাজিক বিচার-শালিস করার দায়িত্বও তাদের। উচ্চ শিক্ষিত এবং আধুনিক রাষ্ট্র ব্যবস্থায় এর প্রয়োজনীয়তা ফিকে হয়ে এলেও পার্বত্য তিন জেলায় এখনো টিকে আছে এই সার্কেল প্রথা।

প্রতি বছর সার্কেল চীফরা তাদের অধীনস্ত এলাকার অধিবাসীদের কাছ থেকে খাজনা আদায় করে। এর থেকে নামমাত্র একটা অংশ সরকারী কোষাগারে জমা দেয় আর বড় অংশই যায় তাদের ব্যক্তিগত কোষাগারে। নিজেদের কোষাগারকে আর্থিকভাবে হৃষ্টপুষ্ট করার এই বাণিজ্যের কারনেই তারা নানান ধরনের অযুহাত আর আইন দেখিয়ে এই সার্কেল প্রথা চালু রেখেছে।

দেশে প্রচলিত নিয়ম অনুযায়ী জায়গা-জমি ক্রয়-বিক্রয়, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তি, সরকারী চাকরীতে আবেদনসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে একজন ব্যক্তিকে নাগরিকত্বের সনদ বা স্থায়ী বাসিন্দা সনদ (Permanent Resident Certificate) দাখিল করতে হয়। পার্বত্য চট্টগ্রামের তিন জেলা রাঙামাটি, বান্দরবন এবং খাগড়াছড়ি ছাড়া দেশের অন্য সকল জেলায় এই সনদপত্র সাধারণত সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান অথবা পৌর মেয়র বা কাউন্সিলরের কর্তৃক করা হয়ে থাকে। কিন্তু পার্বত্য চট্টগ্রামের জেলাগুলোতে সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসক ও সার্কেল চিফগণ এই সনদপত্র প্রদান করে থাকেন।

 

সার্কেল চিফগণ যেহেতু উপজাতি সম্প্রদায়ের তাই এক্ষেত্রে উপজাতিরা সহজেই এ সকল সনদপত্র পেলেও পার্বত্য চট্টগ্রামে বসবাসরত বাঙালিরা প্রায়শঃই এই সনদপত্র পাওয়ার ক্ষেত্রে বঞ্চিত ও দূর্ভোগের শিকার হচ্ছে। বাঙালিরা সঠিক দলিল বা কাগজপত্র উপস্থাপন করার পরও তাদের দাখিলকৃত দলিল বা কাগজপত্রে ভুল বা অসংগতি রয়েছে বলে উল্লেখ করে সার্কেল চিফগণ কৌশলে বাঙালিদের সনদপত্র প্রদানে বিরত থাকেন। পার্বত্য চট্টগ্রাম থেকে বাঙালি অপসারণ ও বিতাড়ন উপজাতিদের বহু পুরানো বাসনা। বাঙালিদের প্রতি সার্কেল চিফদের এহেন বৈষম্য তারই অন্যতম বহিঃপ্রকাশ।

সার্কেল চিফগণ স্থায়ী বাসিন্দা সনদপত্র প্রদানে যে ফরম ব্যবহার করেন সেখানে তারা নিজেদেরকে রাজা হিসেবে উল্লেখ করেন যা Chittagong Hill Tracts Regulation 1/1900  এর ৩৫ নং আইন অনুযায়ী বিধি সম্মত নয় এ কথা পূর্বেই বলেছি। এছাড়াও, বাংলাদেশ সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনী মোতাবেক ‘আদিবাসী’ শব্দটি ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা থাকার পরও সার্কেল চিফগণ তাদের সনদপত্রে ‘আদিবাসী’ শব্দটি ব্যবহার করছেন।

বাঙালিরা সনদ আনতে গেলে তাদের সনদ না দিয়ে বলেন যে, সনদপত্রে ‘আদিবাসী’ শব্দটি মুদ্রিত আছে তাই এটি বাঙালিদের জন্য প্রযোজ্য নয়। সার্কেল চিফগণ তাদের সনদপত্রের ফরমে ‘আদিবাসী’ শব্দটি ব্যবহার করে বাংলাদেশ সংবিধানের অবমাননা করছেন।

সম্প্রতি, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয় থেকে প্রকাশিত এক চিঠিতে সার্কেল চিফদের সনদপত্রের ফরমে সংবিধান পরিপন্থি ‘আদিবাসী’ শব্দটি পরিহার করে সংবিধানে উল্লেখিত ‘উপজাতি’, ‘ক্ষুদ্র জাতিসত্তা’, ‘নৃগোষ্ঠী ও সম্প্রদায়’ শব্দগুলো ব্যবহার করতে বলা হয়েছে। বাংলাদেশ সংবিধান এবং বিভিন্ন সরকারি প্রজ্ঞাপনের নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও সার্কেল চিফগণ কর্তৃক ‘আদিবাসী’ শব্দের ব্যবহার এবং উপজাতি সংগঠণগুলোর নানান ধরনের আদিবাসি দাবীর তৎপরতার কারণে পার্বত্য চট্টগ্রামের বাঙালি জনগোষ্ঠী সার্কেল চিফগণের সনদপত্রে ‘আদিবাসী’ শব্দের ব্যবহার এবং তাদের সনদপত্র প্রাপ্তির জটিলতার ক্ষেত্রে এই আইনের পূর্ণ বাস্তবায়ন হবার আগ পর্যন্ত স্বস্তি পাচ্ছে না। একই সাথে তারা দাবী করে পার্বত্য চট্টগ্রামের সার্কেল প্রধানদের স্বঘোষিত রাজা দাবী করা নিষিদ্ধ ঘোষণা করতে হবে।

পাঁচজনে একজনের বেশি নারী অনলাইনে হয়রানির শিকার

পাঁচজনে একজনের বেশি নারী অনলাইনে হয়রানির শিকার বলে জানিয়েছে আন্তর্জাতিক মানবাধিকারবিষয়ক সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল। নমুনায় চার হাজারের বেশি নারীকে রেখে গবেষণা করে এ ধরনের তথ্য প্রকাশ করেছে সংস্থাটি।

গবেষণার ফলাফল অনুযায়ী, হয়রানির শিকার এ নারীদের অধিকাংশকেই অনলাইনে হেনস্থা করা হয়েছে। অর্ধেকের বেশি ভুক্তভোগী জানিয়েছেন, তাদেরকে যৌন হয়রানি করা হয়েছে। এক-চতুর্থাংশ নারীরা শারীরিক কিংবা যৌনতা-সংক্রান্ত হুমকি পেয়েছেন।

জরিপে দেখা যায়, হয়রানির শিকার ৬০ শতাংশ নারী বর্ণবার্দী আচরণ, যৌন হয়রানি কিংবা সমকামিতার প্রস্তাব-হুমকি পেয়েছেন।

অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের প্রযুক্তি ও মানবাধিকারবিষয়ক গবেষক অাজমিনা ধরদিয়া জানান, ‘নারীদের জন্য ইন্টারনেট ভয়ঙ্কর এবং বিপজ্জনক স্থান হতে পারে। নারীদের সঙ্গে বিরূপ আচরণ নতুন কোনো বিষয় নয়। তবে এ জরিপের ফলে দেখা যাচ্ছে, ইন্টারনেটের অপব্যবহার করে নারীদের সঙ্গে কী ধরনের বৈরি আচরণ করা হচ্ছে।’

পশ্চিমাবিশ্বের আটটি দেশের ওপর জরিপ চালিয়ে এ গবেষণার ফলাফলে বলা হচ্ছে, অনলাইনে হয়রানির ফলে দীর্ঘমেয়াদি ক্ষতি হতে পারে।

হয়রানির শিকার নারীদের ৪১ শতাংশ প্রতিদিনের কাজকর্মে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। এমনকি চারজনে একজন নিজের পরিবারের সদস্যদের কাছ থেকেও নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন।

বেশিরভাগ নারীই জানিয়েছেন, হয়রানির শিকার হওয়ার পর থেকেই ইন্টারনেট ব্যবহার করার ব্যাপারে আতঙ্কে আছেন তারা।

রাজধানীতে চলছে নবায়নযোগ্য শক্তি প্রযুক্তি মেলা

রাজধানীতে চলছে তিন দিনব্যাপী নবায়নযোগ্য শক্তি প্রযুক্তি মেলা ও কর্মশালা। রোববার প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেলে এর উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রীর জ্বালানি উপদেষ্টা ড. তৌফিক-ই-এলাহী চৌধুরী।

মেলায় দেশি-বিদেশি প্রায় ৩৫টি স্টলের মাধ্যমে নবায়নযোগ্য শক্তি ব্যবহার করে উদ্ভাবিত বিভিন্ন প্রযুক্তি এবং প্রকল্প প্রদর্শন করা হচ্ছে। প্রতিদিন সকাল সাড়ে ৯টা থেকে রাত সাড়ে ৮টা পর্যন্ত সবার জন্য উন্মুক্ত থাকছে এ মেলা।

জার্মান ডেভেলপমেন্ট কো-অপারেশন কেএফডাব্লিউর সহযোগিতায় ইনফ্রাস্ট্রাকচার ডেভেলপমেন্ট কম্পানি লিমিটেড (ইডকল) এ মেলা ও কর্মশালা আয়োজন করেছে। সহ-আয়োজক অল্টারনেটিভ এনার্জি প্রমোশন সেন্টার (এইপিসি), নেপাল।

তিন দিনের এ কর্মশালায় এশিয়ার বিভিন্ন দেশের নবায়নযোগ্য শক্তি প্রযুক্তি সংশ্লিষ্ট নীতিনির্ধারক, অর্থায়নকারী, উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান, বিশেষজ্ঞ এবং বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান অংশ নিয়েছে।

আয়োজকরা জানিয়েছেন বিভিন্ন দেশের নবায়নযোগ্য শক্তি খাতে কর্মরত ব্যক্তিদের নিয়ে এ প্ল্যাটফর্ম করা হয়েছে। যার উদ্দেশ্য হচ্ছে এ প্রযুক্তির প্রসার, বাজার সৃষ্টি, অর্থায়ন, নীতি-নির্ধারণ ইত্যাদি বিভিন্ন বিষয়ে অংশগ্রহণমূলক আলোচনা করা।

কর্মশালায় ১৫টি দেশের প্রায় ৫০ জন এবং স্থানীয় ৮০ জন যোগ দিচ্ছেন। এতে নবায়নযোগ্য শক্তি সংশ্লিষ্ট সাম্প্রতিক বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হবে।

টাকার জন্য লাশ আটকে রাখা যাবে না

চিকিৎসা ব্যয় পরিশোধ না করার ব্যর্থতায় মৃত ব্যক্তির লাশ কোনো ক্লিনিক বা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জিম্মি রাখার কোনো সুযোগ নেই মর্মে পর্যবেক্ষণ দিয়ে রায় ঘোষণা করেছেন হাইকোর্ট।

একই সঙ্গে স্বাস্থ্য সচিব ও স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালককে এ সংক্রান্ত একটি সার্কুলার জারি করে সারাদেশের সকল হাসপাতালে ও ক্লিনিককে টাকার জন্য লাশ জিম্মি না রাখার বিষয়ে জানাতে বলা হয়েছে।

একইসঙ্গে ওই চিকিৎসা ব্যয় পরিশোধে একটি তহবিল গঠন করতে স্বাস্থ্য সচিব ও স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালককে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।

এ বিষয়ে জারি করা রুল নিষ্পত্তি করে সোমবার হাইকোর্টের বিচারপতি সৈয়দ মোহাম্মদ দস্তগীর হোসেন ও বিচারপতি মো. আতাউর রহমান খানের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এই রায় ঘোষণা করেন।

আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট মনজিল মোরসেদ। অন্যদিকে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অমিত তালুকদার। হাসপাতালের পক্ষে আইনজীবী ছিলেন নাবিল আহসান।

২০১২ সালের ৮ জুন মোহাম্মদপুর সিটি হাসপাতালে অসচ্ছ এক ব্যক্তি তার সন্তানকে ভর্তি করান। পরবর্তীতে সন্তানটি মারা গেলে ২৬ হাজার টাকা বেশি বিল দাবি করে লাশ হস্তান্তরে অস্বীকৃতি জানায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

বিষয়টি নিয়ে পরে জনস্বার্থে হাইকোর্টে রিট দায়ের করেন অ্যাডভোকেট মনজিল মোরসেদ। ওই রিটের শুনানিতে রুল জারি করেন আদালত। আজ ওই রুলের চূড়ান্ত শুনানি নিয়ে হাইকোর্ট এই রায় দেন।

রায়ে সেবামূলক প্রতিষ্ঠান আঞ্জুমান মুফিদুল ইলামকে সিটি হাসপাতাল ৫ হাজার টাকা দেবে বলেও উল্লেখ করা হয়েছে।

আসছে তৌসিফ-মাহার ‘ভালো থাকার গল্প’

মুক্তির অপেক্ষায় আছে স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র ‘ভালো থাকার গল্প’। এর প্রধান দুই চরিত্রে অভিনয় করেছেন তৌসিফ মাহবুব ও মাহা। চলচ্চিত্রটি নির্মাণ করেছেন সঞ্জয় সমদ্দার। জানা গেছে অডিও ও ভিডিও প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান সিএমভি’র ইউটিউব চ্যানেলে ছবিটি শিগগিরই মুক্তি পাবে এটি।

নির্মাতা সঞ্জয় সমদ্দার বলেন, ‘এটি এক নব দম্পতির সংসারে অভাব-অনটনের গল্প। যেখানে তৌসিফকে দেখা যাবে চাকরি হারানো বেকার যুবকের চরিত্রে। আর তার স্ত্রী মাহা সেই অভাব কাটাতে নিজেকে জড়ান মডেলিংয়ে।’

 

মুক্তির অপেক্ষায় আছে স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র ‘ভালো থাকার গল্প’। এর প্রধান দুই চরিত্রে অভিনয় করেছেন তৌসিফ মাহবুব ও মাহা। চলচ্চিত্রটি নির্মাণ করেছেন সঞ্জয় সমদ্দার। জানা গেছে অডিও ও ভিডিও প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান সিএমভি’র ইউটিউব চ্যানেলে ছবিটি শিগগিরই মুক্তি পাবে এটি।

নির্মাতা সঞ্জয় সমদ্দার বলেন, ‘এটি এক নব দম্পতির সংসারে অভাব-অনটনের গল্প। যেখানে তৌসিফকে দেখা যাবে চাকরি হারানো বেকার যুবকের চরিত্রে। আর তার স্ত্রী মাহা সেই অভাব কাটাতে নিজেকে জড়ান মডেলিংয়ে।’

জন্মদিনের শুভেচ্ছায় ভাসছেন জয়া আহসান

মডেল হিসেবে যাত্রা শুরু করেছিলেন। সেখানে বাজিমাত করে নাম লিখিয়েছিলেন নাটক-টেলিছবির অভিনয়ে। এরপর আসেন সিনেমায়। পরের গল্পটা কেবলই সাফল্যের। একের এক পর তিনি চমক দেখিয়েছেন বৈচিত্রময় চরিত্রে। ঢাকার পাশাপাশি তার অভিনয়ের মায়ায় বাঁধা পড়েছে কলকাতার সিনেমার দর্শকও।

আজ সেই প্রিয়মুখের জন্মদিন। জীবনের সুন্দর এই দিনটিতে বন্ধু-সহকর্মীদের শুভেচ্ছায় ভাসছেন জয়া আহসান। জয়াকে নিয়ে নির্মাতা অনিমেষ আইচ ফেসবুকে লিখেছেন, ‘জন্মদিনে অনেক শুভেচ্ছা নিও। পরসমাচার এই যে, দীর্ঘদিন যাবত তোমার সহিত কোনরুপ সাক্ষাত হইতেছে না, যদিও ফোনে বেশ কয়েকবার কথা হইয়াছে। যাহা হউক শুভ জন্মদিন। আজ রাতে বাংলাদেশে ফিরছি, আশা করি দুয়েকদিনের মধ্যে দেখা হবে। তোমার সর্বাঙ্গীন সাফল্য কামনা করি।’

 

মডেল হিসেবে যাত্রা শুরু করেছিলেন। সেখানে বাজিমাত করে নাম লিখিয়েছিলেন নাটক-টেলিছবির অভিনয়ে। এরপর আসেন সিনেমায়। পরের গল্পটা কেবলই সাফল্যের। একের এক পর তিনি চমক দেখিয়েছেন বৈচিত্রময় চরিত্রে। ঢাকার পাশাপাশি তার অভিনয়ের মায়ায় বাঁধা পড়েছে কলকাতার সিনেমার দর্শকও।

আজ সেই প্রিয়মুখের জন্মদিন। জীবনের সুন্দর এই দিনটিতে বন্ধু-সহকর্মীদের শুভেচ্ছায় ভাসছেন জয়া আহসান। জয়াকে নিয়ে নির্মাতা অনিমেষ আইচ ফেসবুকে লিখেছেন, ‘জন্মদিনে অনেক শুভেচ্ছা নিও। পরসমাচার এই যে, দীর্ঘদিন যাবত তোমার সহিত কোনরুপ সাক্ষাত হইতেছে না, যদিও ফোনে বেশ কয়েকবার কথা হইয়াছে। যাহা হউক শুভ জন্মদিন। আজ রাতে বাংলাদেশে ফিরছি, আশা করি দুয়েকদিনের মধ্যে দেখা হবে। তোমার সর্বাঙ্গীন সাফল্য কামনা করি।’

ধ্রুব’র গানে কলকাতার প্রিয়াঙ্কা

স্টার জলসার মেগা সিরিয়াল ‘মা’ দুই বাংলাতেই বেশ জনপ্রিয়। এই সিরিয়ালের বুবলী নামটির সঙ্গে সবাই বেশ পরিচিত। যিনি এই সিরিয়ালে ঝিলিকের ননদ (নেগেটিভ) চরিত্রে অভিনয় করেছেন তিনি হচ্ছেন কলকাতার প্রিয়াংকা ভট্টাচার্য বুবলী।

প্রথমবারের মত কোনো মিউজিক ভিডিওতে কাজ করলেন তিনি। আর সেটাও বাংলাদেশের গানে। গেলো মে মাসে নর্থ কলকাতায় শুটিং সম্পন্ন হয় জনপ্রিয় সংগীতশিল্পী ধ্রুব গুহ’র ‘তোমার ইচ্ছে হলে’ শিরোনামের গানটির।

 

স্টার জলসার মেগা সিরিয়াল ‘মা’ দুই বাংলাতেই বেশ জনপ্রিয়। এই সিরিয়ালের বুবলী নামটির সঙ্গে সবাই বেশ পরিচিত। যিনি এই সিরিয়ালে ঝিলিকের ননদ (নেগেটিভ) চরিত্রে অভিনয় করেছেন তিনি হচ্ছেন কলকাতার প্রিয়াংকা ভট্টাচার্য বুবলী।

প্রথমবারের মত কোনো মিউজিক ভিডিওতে কাজ করলেন তিনি। আর সেটাও বাংলাদেশের গানে। গেলো মে মাসে নর্থ কলকাতায় শুটিং সম্পন্ন হয় জনপ্রিয় সংগীতশিল্পী ধ্রুব গুহ’র ‘তোমার ইচ্ছে হলে’ শিরোনামের গানটির।

ডিসেম্বরে মুক্তি পাচ্ছে জনসনের ‘জুমানজি’

ডোয়েইন ডগলাস জনসন দি রক নামেই অধিক পরিচিত। একজন মার্কিন-কানাডীয় অভিনেতা, প্রযোজক ও পেশাদার কুস্তিগির তিনি। এরই মধ্যে উপহার দিয়েছেন বেশ কিছু জনপ্রিয় সিনেমা। বর্তমানে মুক্তির অপেক্ষায় আছে তার অভিনীত ‘জুমানজি’ নামের একটি সিনেমা। নতুন খবর হল চলচ্চিত্রটির মুক্তির তারিখ ঠিক হয়েছে। জনসন ছবিটির মুক্তির তারিখ ঘোষণা করে ইনস্ট্রাগ্রামে একটি পোস্ট শেয়ার করেছেন। পাশাপাশি এই সিনেমার একটি টিজার শেয়ার করেছেন।

টিজারটিতে ‘জুমানজি’র লোগো ও এটি মুক্তির তারিখ দিয়ে লেখা, ‘দি গেম ইজ নট ওভার’। রকের ঘোষণা অনুযায়ী ছবিটি ১৩ ডিসেম্বর ২০১৯ মুক্তি পাবে।

 

ডোয়েইন ডগলাস জনসন দি রক নামেই অধিক পরিচিত। একজন মার্কিন-কানাডীয় অভিনেতা, প্রযোজক ও পেশাদার কুস্তিগির তিনি। এরই মধ্যে উপহার দিয়েছেন বেশ কিছু জনপ্রিয় সিনেমা। বর্তমানে মুক্তির অপেক্ষায় আছে তার অভিনীত ‘জুমানজি’ নামের একটি সিনেমা। নতুন খবর হল চলচ্চিত্রটির মুক্তির তারিখ ঠিক হয়েছে। জনসন ছবিটির মুক্তির তারিখ ঘোষণা করে ইনস্ট্রাগ্রামে একটি পোস্ট শেয়ার করেছেন। পাশাপাশি এই সিনেমার একটি টিজার শেয়ার করেছেন।

টিজারটিতে ‘জুমানজি’র লোগো ও এটি মুক্তির তারিখ দিয়ে লেখা, ‘দি গেম ইজ নট ওভার’। রকের ঘোষণা অনুযায়ী ছবিটি ১৩ ডিসেম্বর ২০১৯ মুক্তি পাবে।

‘শুটিংয়ের সময় চুমু খাওয়ার চেষ্টা করেছিল ম্যানেজার’

দুনিয়াজুড়ে ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে এখন আলোচ্য বিষয় কাস্টিং কাউচ। অনেক অভিনেত্রীরাই কাজ করতে গিয়ে যৌন হয়রানি নিয়ে মুখ খুলছেন। বলিউডের প্রতিবাদী অভিনেত্রী স্বরা ভাস্করও একাধিকবার ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে ঘটে চলা যৌন নির্যাতন নিয়ে সরব হয়েছেন। এবার তিনি সরাসরি যৌন হেনস্থার অভিযোগ করেছেন এক পরিচালকের ম্যানেজারের বিরুদ্ধে।

ভারতীয় গণমাধ্যম সূত্রে জানা গেল, একটি টেলিভিশন চ্যানেলে সাক্ষাৎকার দিতে গিয়ে স্বরা বলেন, একটি ফিল্মের আউটডোর শুটিং করছিলেন তিনি। সেখানেই নাকি এক প্রথম সারির পরিচালকের ম্যানেজার তাকে চুমু খাওয়ার চেষ্টা করেছিলেন। এখানেই শেষ নয়, স্বরার বাড়ির ঠিকানা জানতে চাইছিলেন। বিপদ বুঝে তাড়াতাড়ি সেখান থেকে মিটিং শেষ করার চেষ্টা করছিলেন অভিনেত্রী। তখনই স্বরাকে জড়িয়ে ধরে কানে চুমু খাওয়ার চেষ্টা করেন ওই ম্যানেজার। এবং স্বরাকে বলেন ‘আমি তোমাকে ভালবাসি’। কোনো রকমে তার হাত থেকে নিজেকে বাঁচিয়ে ফিরেছিলেন অভিনেত্রী।