কোন আসনে কে প্রতিপক্ষ, জানার চেষ্টায় আ.লীগ–বিএনপি

নির্বাচন কমিশনে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার সময় আছে আর মাত্র পাঁচ দিন। কিন্তু কোনো দল বা জোটই এখনো চূড়ান্ত মনোনয়ন তালিকা প্রকাশ করেনি। প্রধান দুই রাজনৈতিক দল বিএনপি ও আওয়ামী লীগের নেতারা বলছেন, দলীয় মনোনয়ন কারা পাচ্ছেন, সেটা ইতিমধ্যেই চূড়ান্ত করেছে দুই দল। কিন্তু আনুষ্ঠানিক প্রকাশ আটকে আছে জোটের সমীকরণ আর পরস্পরের প্রার্থিতা জানার আগ্রহে।

দুই দলের নেতারাই বলছেন, ৩০০ আসনের মধ্যে দেড় শ থেকে দুই শ আসনে প্রতিপক্ষ দলের কে প্রার্থী হচ্ছেন, তা মোটামুটি আগে থেকেই জানা থাকে। তারপরও তাঁরা সব আসনেই নিজ দলীয় প্রার্থীর প্রতিপক্ষ কে হচ্ছেন সে ব্যাপারে খোঁজ রাখছেন।

আওয়ামী লীগ ও বিএনপির একাধিক সূত্র জানায়, তাঁরা পরস্পরের মনোনয়নের দিকে তাকিয়ে আছেন। কোন আসনে কোন দল থেকে প্রার্থী হচ্ছেন, সেটা নিশ্চিত হয়ে নিজেদের প্রার্থী ঘোষণা করবেন, এমন সুযোগের অপেক্ষায় সব পক্ষই। অবশ্য নিজেদের জোটগত আসন ভাগাভাগি এখনো শেষ হয়নি। সেই ভাগ-বাঁটোয়ারায় বাদ পড়তে পারেন দলীয় অনেকেই। দুই দলের দায়িত্বশীল নেতারাই বলছেন, প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী দলগুলোর প্রার্থী কারা, সেটা জানার চেষ্টা তাঁরা করছেন। বিশেষ করে যেসব আসনে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হওয়ার সম্ভাবনা আছে, সেসব আসনে প্রতিদ্বন্দ্বী দলের প্রার্থী কে, সেটা জানাটা জরুরি। দুই দলের দুজন দায়িত্বশীল নেতা প্রথম আলোকে বলেছেন, ইতিমধ্যে তাঁরা বিভিন্ন উৎসে কিছুটা জেনেছেন। এটা নির্বাচনের আগে সব সময়ই করা হয়।

অবশ্য ক্ষমতার বাইরে থাকা বিএনপির নেতারা এও বলছেন, আগে আগে চূড়ান্তভাবে একক প্রার্থীর নাম প্রকাশ করা হলে ক্ষমতাসীনরা ওই প্রার্থীকে নানাভাবে হয়রানি করার সুযোগ পাবে। প্রার্থীর প্রার্থিতা বাতিলের সুযোগও নিতে পারে। এসব কথা বিবেচনা করেও বিএনপি কিছুটা দেরিতে প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

আওয়ামী লীগ আগামী ২৫ বা ২৬ নভেম্বর দলীয় প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করতে পারে বলে দলটি সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের সম্প্রতি সংবাদ ব্রিফিংয়ে জানিয়েছেন। অন্যদিকে বিএনপি প্রার্থী তালিকা প্রকাশের ব্যাপারে কোনো সময়ের কথা এখনো উল্লেখ করেনি।

আওয়ামী লীগ ও বিএনপি দলীয় সূত্রগুলো জানায়, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী হতে আওয়ামী লীগ থেকে ৪ হাজার ২৩টি ও বিএনপি থেকে হয়েছে ৪ হাজার ৫৮০টি মনোনয়ন ফরম বিক্রি হয়েছে। দুই দলেরই সাক্ষাৎকার পর্ব শেষে মনোনয়নের তালিকা প্রায় চূড়ান্ত। আওয়ামী লীগের প্রায় সব কটি আসনেই কারা দলীয় মনোনয়ন পাবেন, সেটা চূড়ান্ত হয়েছে। এখন তারা কোন আসনে ঐক্যফ্রন্ট বা বিএনপির কে প্রার্থী হতে পারেন, সে হিসাব মেলানোর চেষ্টা করছে।

আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক হাছান মাহমুদ প্রথম আলোকে বলেন, আওয়ামী লীগ তার নিজস্ব ধরনে প্রার্থী বাছাই করে। স্থানীয়ভাবে জনপ্রিয়, সাধারণ মানুষের কাছে গ্রহণযোগ্য প্রার্থী মনোনয়ন দিচ্ছে তাঁর দল। তিনি বলেন, সময়মতোই আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থীদের নাম প্রকাশ করা হবে। আওয়ামী লীগের এই নেতা বলেন, রাজনৈতিক দল হিসেবে আওয়ামী লীগ দলীয় প্রার্থী সম্পর্কে যেমন খবর রাখে, তেমনি প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী কে, তাঁকে কীভাবে ভোটের মাঠে মোকাবিলা করতে হবে, সে সম্পর্কেও তথ্য রাখে।

ঐক্যফ্রন্ট-বিএনপির প্রার্থিতা ও জোটের সমীকরণ খোলাসা হতে আরও বেশ কয়েক দিন লেগে যেতে পারে বলে দাবি বিএনপির একাধিক নেতার। এমনকি সেটা মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার পর পর্যন্ত গড়াতে পারে। এখন পর্যন্ত বিএনপি তাদের মনোনয়নপ্রত্যাশী সবাইকেই নির্বাচন কমিশনে মনোনয়নপত্র জমা দিতে বলেছে। পরবর্তীতে নিজেদের জোটের সমীকরণ মিলিয়ে প্রার্থী ঘোষণা করতে পারে তারা। সে ক্ষেত্রে দুই পক্ষই সুবিধাজনক অবস্থানে থাকতে চায়।

জাতীয় পার্টি ২ হাজার ৮৬৫টি মনোনয়ন ফরম বিক্রি করলেও সাক্ষাৎকারে ডেকেছিল বাছাই করা ৭৮০ জনকে। কিন্তু সেখানে পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ বলে দিয়েছেন, ৩০০ আসনে তিনিই প্রার্থী চূড়ান্ত করবেন। সবাই যেন তাঁর সিদ্ধান্ত মেনে দলের পক্ষে কাজ করেন। জোটের বিষয়েও তিনি নিজে সিদ্ধান্ত নিয়ে জানাবেন বলে ঘোষণা দিয়েছেন।

সে হিসেবে ১৪ দলের সঙ্গে আওয়ামী লীগের চূড়ান্ত বনিবনা হয়নি বলেই ধরে নিচ্ছেন রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টরা। তাঁরা বলছেন, আওয়ামী লীগ ৬৫-৭০ আসন ছাড়তে চাইলেও শরিকদের দাবি আরও বেশি। তবে আওয়ামী লীগের সূত্রগুলো জানায়, তাদের সংসদীয় বোর্ড দলীয় প্রার্থীদের বাছাইয়ের কাজ শেষ করেছে। ৮-১০টি আসন বাকি আছে, যেগুলো প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজেই চূড়ান্ত করবেন। জোট ও মিত্রদের যেসব আসন নিয়ে একাধিক ব্যক্তি মনোনয়ন চান, সেগুলোর ব্যাপারেও তিনি সিদ্ধান্ত জানাবেন। পরে জোটগতভাবেই মনোনয়ন তালিকা প্রকাশ করা হবে।

জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের অন্তর্ভুক্ত গণফোরাম ৩৫০টি, জেএসডি ৫৪৭টি, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ ৬০টি মনোনয়ন ফরম বিক্রি করেছে। দলগুলোও জানিয়েছে, আসন ভাগাভাগি নিয়ে বিএনপির সঙ্গে তাদের আলোচনা চলছে।

বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী মনে করেন, দলীয় প্রার্থী বা জোটের প্রার্থী কারা হচ্ছেন, তা কৌশলগত কারণে সুনির্দিষ্ট সময়ে প্রকাশ করা হবে। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ ও তাদের জোটের প্রার্থীরাই নির্বাচনে বিএনপির প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী হবেন। তাঁর দল অবশ্যই প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের সঙ্গে ভোটের লড়াইয়ে জিততে পারবেন, এমন প্রার্থীকেই মনোনয়ন দেবে। তিনি বলেন, সময়মতোই প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করা হবে।

কংগ্রেস সভাপতির দায়িত্ব নিচ্ছেন রাহুল

ভারতের অন্যতম রাজনৈতিক দল জাতীয় কংগ্রেসের সভাপতি পদে রাহুল গান্ধীকে বসানোর প্রস্তাব পাস করেছে দলটির ওয়ার্কিং কমিটি।

সোমবার (২০ নভেম্বর) নয়াদিল্লিতে কংগ্রেস সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধীর ১০ জনপথের বাড়িতে বৈঠক বসে কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটির। ওই বৈঠকেই রাহুল গান্ধীকে সভাপতি পদে বসাতে প্রস্তাব পাস হয়।

কংগ্রেসের বর্তমান সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধী বলেন, ‘রাহুল সভাপতি হলে দল আরও শক্তিশালী হবে। কংগ্রেসের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ১ ডিসেম্বর সাংগঠনিক নির্বাচনের বিজ্ঞপ্তি জারি করা হবে। মনোনয়ন পেশ করার শেষ দিন ৪ ডিসেম্বর। মনোনয়ন পরীক্ষা করা হবে ৫ ডিসেম্বর। মনোনয়ন প্রত্যাহারের শেষ দিন ১১ ডিসেম্বর। সাংগঠনিক নির্বাচন হবে ১৬ ডিসেম্বর। ভোট গণনা এবং ফল ঘোষণা হবে ১৯ ডিসেম্বর।’

তবে দলীয় সূত্রে জানা যায়, কংগ্রেসের সভাপতি পদে রাহুল গান্ধী ছাড়া আর কারো মনোনয়ন পেশ করার সম্ভাবনা নেই। ফলে, ৫ ডিসেম্বরই কংগ্রেসের সভাপতি হিসেবে রাহুল গান্ধীর নাম ঘোষণা করা হতে পারে।

কংগ্রেসের দলীয় সূত্রে খবর, আগামী ১৮ ডিসেম্বর গুজরাট ও হিমাচল প্রদেশে বিধানসভা নির্বাচনের ফল ঘোষণার পরের দিন দলের দায়িত্ব নিতে চলেছেন রাহুল গান্ধী। এদিন কংগ্রেসের ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন ভারতের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং, মল্লিকার্জুন খাড়গে, আহমেদ পটেলসহ কংগ্রেসের প্রথম সারির নেতারা।

অন্তর্বর্তীকালীন কোচ হচ্ছেন সুজন

বাংলাদেশ জাতীয় দলের কোচের পদ থেকে চন্ডিকা হাথুরুসিংহে পদত্যাগের পর থেকেই এক ধোয়াশা সৃষ্টি হয়েছে। হাথুরু কোচ থাকছেন কি থাকছেন না তা এখনো অনিশ্চত।

এদিকে আগামী মাসের শেষ দিকে একটি পূর্ণাঙ্গ সিরিজ খেলতে ঢাকা আসছে শ্রীলঙ্কা ক্রিকেট দল। তাই হাথুরু ফিরছে না ধরে নিয়েই দলের অন্তর্বর্তীকালীন কোচের দায়িত্ব নিচ্ছেন জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক খালেদ মাহমুদ সুজন।

সোমবার (২০ নভেম্বর) বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) সভাপতি নাজমুল হাসান জানিয়েছেন, জাতীয় দলের কোচ হিসেবে অনেকের নামই আলোচনায় এসেছে। তবে আন্তর্বর্তীকালীন কোচ খালেদ মাহমুদের হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি।

মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে সাংবাদিকদের নাজমুল হাসান বলেন, ‘হাথুরুসিংহের জন্য আমরা আর অপেক্ষা করতে চাই না। নতুন কোচ খুঁজছি আমরা। দেশি-বিদেশি অনেকের নামই আলোচনায় এসেছে। কেউ নিজে থেকেই যোগাযোগ করছেন। তবে আপাতত আমরা আন্তর্বর্তীকালীন কোচ হিসেবে কাউকে দায়িত্ব দিতে চাই। এ ক্ষেত্রে খালেদ মাহমুদের হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি।’

হাথুরুসিংহের জন্য অপেক্ষা না করলেও তিনি কেন পদত্যাগ করেছেন সেটা জানতে চায় বিসিবি। এ ব্যাপারে বিসিবি সভাপতি বলেন, ‘হাথুরুসিংহে যে কয়দিন বাংলাদেশ দলের দায়িত্বে ছিলেন, তিনি যথেষ্টই পেশাদার ছিলেন। কিন্তু কী কারণে তিনি পদত্যাগ করেছেন সেটা আমরা জানতে পারিনি। তার পদত্যাগের কারণ সম্পর্কে আমরা জানতে চাই। সে কারণে আমরা তাকে ঢাকায় আসতে বলেছিলাম।’

অবশ্য নতুন কোচ হিসেবে বেশ কয়েকদিন ধরেই আলোচনায় আসে খালেদ মাহমুদের নাম। তা ছাড়া তিনি নিজেও আগ্রহ দেখিয়েছেন মাশরাফিদের কোচ হতে।

খালেদ মাহমুদ এর আগে বাংলাদেশ জাতীয় দলের সহকারী কোচ ছিলেন। বেশ কিছুদিন দলের ম্যানেজারের দায়িত্বে ছিলেন। বিপিএলের গত আসরে তার অধীনে দারুণ সাফল্য পেয়েছিল ঢাকা ডায়নামাইটস। জিতেছিল শিরোপা। এবারও তিনি ঢাকার কোচ।

সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়স বাড়ছে না

সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়স বাড়িয়ে ৩৫ বছর করার কোনো পরিকল্পনা আপাতত সরকারের নেই বলে জানিয়ে দিয়েছেন জনপ্রশাসনমন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম।

সোমবার (২০ নভেম্বর) জাতীয় সংসদে এক প্রশ্নের জবাবে জনপ্রশাসনমন্ত্রীর অনুপস্থিতিতে প্রশ্নের জবাব দেন জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ইসমাত আরা সাদেক।

স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য রুস্তম আলী ফরাজির প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, ‘সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়স বাড়িয়ে ৩৫ বছর করার কোনো পরিকল্পনা আপাতত নেই।’

জনপ্রশাসনমন্ত্রী বলেন, ‘আগে বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বড় ধরনের সেশনজট থাকলেও বর্তমানে উল্লেখযোগ্য সেশনজট নেই বললেই চলে। ফলে শিক্ষার্থীরা সাধারণত ১৬ বছরে এসএসসি, ১৮ বছরে এইচএসসি এবং ২৩ থেকে ২৪ বছরে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করে থাকেন। সাধারণ প্রার্থীদের জন্য চাকরিতে প্রবেশের সর্বোচ্চ বয়সসীমা ৩০ বছর বিধায় স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করার পরও তারা চাকরিতে আবেদনের জন্য ছয় থেকে সাত বছর সময় পেয়ে থাকেন। এ ছাড়া ৩০ বছর বয়সসীমার মধ্যে একজন প্রার্থী চাকরির জন্য আবেদন করলে নিয়োগপ্রক্রিয়া সম্পন্ন হতে এক থেকে দুই বছর সময় লাগলেও তা গণনা করা হয় না।’

মন্ত্রী আরও বলেন, ‘সম্প্রতি চাকরি থেকে অবসর গ্রহণের বয়সসীমা ৫৭ বছর থেকে ৫৯ বছরে উন্নীত হওয়ায় বর্তমানে শূন্য পদের সংখ্যা স্বাভাবিকভাবেই কমেছে। এই প্রেক্ষাপটে চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা বাড়ানো হলে বিভিন্ন পদের বিপরীতে চাকরিপ্রার্থীদের সংখ্যা ব্যাপক হারে বেড়ে যাবে। ফলে নিয়োগের ক্ষেত্রে অধিকতর প্রতিযোগিতার সৃষ্টি হতে পারে। এতে করে যাঁদের বয়স বর্তমানে ৩০ বছরের বেশি, তারা চাকরিতে আবেদন করার সুযোগ পেলেও ৩০ বছরের কম বয়সী প্রার্থীদের মধ্যে হতাশার সৃষ্টি হতে পারে।’

টিটুর পক্ষে লড়বে ৫ সংগঠনের ১০ আইনজীবী

ফেইসবুকে ধর্ম অবমাননাকর লেখা ও ছবি পোষ্ট করার অভিযোগে গ্রেফতার রংপুরের পাগলাপীর ঠাকুরপাড়ার টিটু রায়ের পক্ষে আইনী লড়াইয়ের ঘোষণা দিয়েছে ৫ টি সামাজিক ও ধর্মীয় সংগঠনের রংপুর শাখা।

সোমবার (২০ নভেম্বর) সন্ধ্যায় এ তথ্য জানিয়েছেন ওই ৫টি সংগঠনের সমন্বয়কারী এ্যাড. রথীশ চন্দ্র বাবু সোনা।

এ সংগঠনগুলোর ১০ আইনজীবী বিনা খরচে এ মামলা লড়বেন বলে জানা গেছে।সংগঠনগুলো হচ্ছে ঘাতক দালাল নির্মুল কমিটি, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট, বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ, ব্লাস্ট এবং হিন্দু-বৌদ্ধ-খৃষ্টান ঐক্য পরিষদ।

রথীশ চন্দ্র জানান, শুধু টিটু রায়ই নয় এ ধরনের ঘটনার শিকার যে কোন নাগরিককে বিনা খরচে আইনী সহায়তা দিবেন।

তিনি বলেন, ‘টিটু রায়ের পরিবারের পক্ষ থেকে আইনী সহযোগিতা চাওয়া হয়নি।সংগঠনগুলো স্ব উদ্যোগে এ পদক্ষেপ নিয়েছে।’ টিটু রায়ের পরিবারের কাছ থেকে প্রয়োজনীয় তথ্য ও কাগজপত্র সংগ্রহ করা হচ্ছে বলে জানান তিনি।

টিটু রায়ের পক্ষে যে ১০ জন আইনজীবী মামলা লড়বেন তারা হলেন, এডভোকেট ইন্দ্রজিত রায়, এডভোকেট কমল মজুমদার, এডভোকেট বিনয় ভূষন, এডভোকেট নরেন চন্দ্র সরকার, এডভোকেট মাহফুজ শিবলী, এডভোকেট রিয়াজুল ইসলাম এবং ব্লাস্টের ৪ জন। বর্তমানে টিটু রায় ২য় দফায় আরও ৪ দিনের রিমান্ডে রয়েছেন।

এনজিও’র কার্যক্রম নজরদারির নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর

দেশে পরিচালিত সব এনজিও’র সব ধরনের কার্যক্রম নজরদারি করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সোমবার তেজগাঁও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভার বৈঠকে এক অনির্ধারিত আলোচনায় অংশ নিয়ে তিনি এ নির্দেশ দেন।

সভায় উপস্থিত নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক মন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলে এসব কথা জানা গেছে। তারা জানান, মন্ত্রিপরিষদ সভায় শিল্প-কারখানাসহ সব পর্যায়ের শ্রমিকদের বেতনভাতা নিয়ে আলোচনার সময় ট্রেড ইউনিয়ন কেমন চলছে এবং এগুলোতে বাইরের কেউ হস্তক্ষেপ করছে কিনা জানতে চান প্রধানমন্ত্রী। ওই সময় এনজিও’র কার্যক্রম নজরদারির নির্দেশ দেন তিনি।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক মন্ত্রী বলেন, সভায় শ্রম প্রতিমন্ত্রী মুজিবুল হক চুন্নু বলেন, বাংলাদেশের শিল্প-কারখানার শ্রমিকরা ভালো আছেন, তারা বেতনও ভালো পাচ্ছেন। এখন শুরুতেই শ্রমিকরা ৭/৮ হাজার টাকা বেতন পান। নৌ-পরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খান বলেন, শ্রমিকরা ভালো আছেন, এটা ঠিক। তবে তাদের বেতন-ভাতা আরেকটু বাড়ানো উচিত। কারণ সরকারি কর্মচারীদের বেতন আগের চেয়ে অনেক বেড়েছে। কিন্তু  সেই তুলনায় শ্রমিকদের বেতন-ভাতা বাড়েনি। এ সময় চুন্নু প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশ করে বলেন, যেহেতু নৌমন্ত্রী শ্রমিকদের বেতন-ভাতা বাড়ানোর প্রস্তাব করেছেন তাই মজুরি কমিশন পুনর্বিন্যাস করা যেতে পারে। কারণ বিদ্যমান শ্রম আইন অনুসারে পাঁচ বছর পরপর মজুরি কমিশন পুনর্গঠনের বিধান আছে। কিন্তু সর্বশেষ মজুরি কমিশন গঠনের পর এখনও পাঁচ বছর পূর্ণ হয়নি। ২০১৮ সালে কমিশনের মেয়াদ পাঁচ বছর পূর্ণ হবে। ২০১৩ সালে মজুরি কমিশন করা হয়। পুনর্গঠনের পর কমিশন যদি বেতন বাড়ানোর সুপারিশ করে তখন শ্রমিকদের বেতন-ভাতা বাড়ানো যেতে পারে।

আলোচনার এক পর্যায়ে প্রধানমন্ত্রী এ দেশে পরিচালিত এনজিওগুলোর কার্যক্রম সম্পর্কে জানতে চান। তিনি জানতে চান, এখন বাইরে থেকে গিয়ে কেউ কারখানার ভেতরে ট্রেড ইউনিয়নের আন্দোলন করতে পারে কিনা বা করে কিনা? জবাবে চুন্নু বলেন, এখন আর সেই সুযোগ নেই। কারণ, এখন কারখানার শ্রমিকরাই ট্রেড ইউনিয়ন করেন। আর এসব ট্রেড ইউনিয়নকে বিভিন্ন এনজিও পৃষ্ঠপোষকতা করে। তবে এনজিওগুলো কোথা থেকে ফান্ড নিয়ে আসে, তাদের কার্যক্রম কী, কোথায় সেই ফান্ড ব্যয় হয় তা আমাদের মনিটর (নজরদারি) করা হয় না। তখন প্রধানমন্ত্রী বলেন, হ্যাঁ, এনজিওগুলোর কার্যক্রম নজরদারি করা উচিত। এ সময় প্রধানমন্ত্রী সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে বাংলাদেশে পরিচালিত এনজিওগুলোর কার্যক্রম নজরদারির নির্দেশ দেন।

প্রধানমন্ত্রীর কাছে পুরস্কার হস্তান্তর : গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর কাছে বহুমাত্রিক ডিজিটাল সেবা পৌঁছানোর জন্য ডাক বিভাগকে এএসওসিঅঅইও-২০১৭ ডিজিটাল গভর্নমেন্ট অ্যাওয়ার্ড দেয়া হয়। ১৯৮৩ সালে এশিয়া ও ওসিয়েনিয়া (ওসিইএএনআইএ) অঞ্চলের ২৪ দেশের ন্যাশনাল আইসিটি অ্যাসোসিয়েশনের সমন্বয়ে এএসওসিআইও গঠিত হয়। এ প্রতিষ্ঠান প্রতি বছর চারটি ক্যাটাগরিতে পুরস্কার দিয়ে থাকে। সরকারের পক্ষে ডাকা ও টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী পুরস্কারটি ১৮ সেপ্টেম্বর গ্রহণ করেন এবং তা প্রধানমন্ত্রীর কাছে হস্তান্তর করেন। পোস্টাল ক্যাশ কার্ড ব্যাংকিং ফর আইন ব্যাংকড পিপল কার্যক্রমের জন্য রানার্স আপ লিডার অ্যাওয়ার্ড পায় সরকার। পুরস্কারটি প্রদান করে এশিয়া প্যাসিপিক কাউন্সিল ফর ট্রেড ফেসিলেশন অ্যান্ড ইলেকট্র্রনিক বিজনেস (এএফএসিটি)। ১২ সেপ্টেম্বর তাইওয়ানে অনুষ্ঠিত ইএশিয়া অ্যাওয়ার্ড অনুষ্ঠানে এ পুরস্কার দেয়া হয়। পুরস্কারটি গ্রহণ করে ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম এবং সোমবার প্রধানমন্ত্রীর কাছে হস্তান্তর করা হয়।

এছাড়া ডাকা বিভাগের ৯ হাজার ৮৮৬টি ডাকঘরের মধ্যে ৮ হাজার ৫০০ পোস্ট ই-সেন্টার রূপান্তরের জন্য ডিজিটাল অপরচুনিটি ক্যাটাগরিতে ইউটসা মেরিট পুরস্কার পেয়েছে। ইউটসা বর্তমান বিশ্বের আইসিটি শিল্পের লিডিং অর্গানাইজেশন। বিশ্বের ৮০ দেশের সদস্য এবং আইসিটি মার্কেটের প্রায় ৯০ ভাগ প্রতিষ্ঠানের সদস্য দেশগুলোর প্রতিনিধিত্ব করে। প্রতিষ্ঠানটি প্রতি বছর ৮টি ক্যাটগরিতে পুরস্কার প্রদান করে থাকে। ১২ সেপ্টেম্বর তাইওয়ানে অনুষ্ঠিত অনুষ্ঠানে ডাকা বিভাগকে পুরস্কার প্রদান করে। সরকারে পক্ষে প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম তা গ্রহণ করেন এবং তা প্রধানমন্ত্রীর কাছে হস্তান্তর করেন।

সশস্ত্র বাহিনী দিবস আজ

সশস্ত্র বাহিনী দিবস আজ, ২১ নভেম্বর। প্রতি বছরের ন্যায় আজ যথাযথ মর্যাদা ও উৎসাহ উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে এবারও উদযাপিত হচ্ছে দিবসটি। এ উপলক্ষে সব সেনানিবাস, নৌ-ঘাঁটি ও স্থাপনা এবং বিমান বাহিনী ঘাঁটির মসজিদগুলোতে দেশের কল্যাণ ও সমৃদ্ধি এবং সশস্ত্র বাহিনীর উত্তরোত্তর উন্নতি ও অগ্রগতি কামনা করে ফজরের নামাজ শেষে বিশেষ মোনাজাত অনুষ্ঠিত হয়। এ বিশেষ মোনাজাতের মধ্য দিয়ে শুরু হয়েছে দিবসের কর্মসূচি।

এদিকে সশস্ত্র বাহিনী দিবস উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি ও সশস্ত্র বাহিনীর সর্বাধিনায়ক মোঃ আবদুল হামিদ এবং প্রধানমন্ত্রী ও প্রতিরক্ষামন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া পৃথক বাণী প্রদান করেছেন। দিবসের অনুষ্ঠান কর্মসূচি সুশৃঙ্খলভাবে উদযাপনের লক্ষ্যে ঢাকা সেনানিবাসে আজ নির্দিষ্ট সময়ের জন্য সাধারণ যানবাহন চলাচল সীমিত করা হয়েছে।

আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদফতরের (আইএসপিআর) সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ রেজাউল করিম শাম্মী জানান,  ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধে আত্মোৎসর্গকারী সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী সকালে ঢাকা সেনানিবাসের শিখা অনির্বাণে পুষ্পস্তবক অর্পণ করছেন। এরপর সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল আবু বেলাল মোহাম্মদ শফিউল হক, নৌবাহিনী প্রধান এডমিরাল নিজামউদ্দিন আহমেদ এবং বিমান বাহিনী প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল আবু এসরার নিজ নিজ বাহিনীর পক্ষ থেকে শিখা অনির্বাণে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। তিন বাহিনীর প্রধানরা বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতি এবং সশস্ত্র বাহিনী বিভাগে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন।

আইএসপিআর জানায়, ‘সশস্ত্র বাহিনী দিবস-২০১৭’ উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী ঢাকা সেনানিবাসস্থ আর্মি মাল্টিপারপাস কমপ্লেক্সে বীরশ্রেষ্ঠদের উত্তরাধিকারী এবং নির্বাচিত সংখ্যক খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা ও তাদের উত্তরাধিকারীদের সংবর্ধনা জানাবেন। এছাড়া প্রধানমন্ত্রী ১০ জন সেনা, একজন নৌ এবং একজন বিমান বাহিনী সদস্যকে ২০১৬-১৭ সালের শান্তিকালীন পদকে এবং ১০ জন সেনা, দুইজন নৌ এবং দুইজন বিমান বাহিনী সদস্যকে ২০১৬-১৭ সালের অসামান্য সেবা পদকে ভূষিত করবেন। অনুষ্ঠানে মুক্তিযুদ্ধবিষয়কমন্ত্রী, প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তা উপদেষ্টা, সেনাবাহিনী প্রধান, নৌবাহিনী প্রধান, বিমান বাহিনী প্রধান, সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার (পিএসও)সহ সামরিক ও বেসমারিক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত থাকবেন।

এছাড়াও দিবসটি উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক ঢাকা সেনানিবাসের সেনাকুঞ্জে এক বৈকালীন সংবর্ধনা অনুষ্ঠিত হবে। এ সংবর্ধনায় উল্লেখযোগ্য আমন্ত্রিত ব্যক্তিত্বদের মধ্যে রয়েছেন জাতীয় সংসদের স্পিকার, প্রধান বিচারপতি, সাবেক রাষ্ট্রপতি, সংসদের বিরোধীদলীয় নেতা, সাবেক প্রধান উপদেষ্টা, মন্ত্রী ও মন্ত্রীর পদমর্যাদাসম্পন্ন ব্যক্তি, প্রতিমন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রীর পদমর্যাদাসম্পন্ন ব্যক্তি, ডেপুটি স্পিকার, বাংলাদেশে নিযুক্ত বিভিন্ন বিদেশি রাষ্ট্রদূত, আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রধানরা, প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও নির্বাচন কমিশনারসহ বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ।

সশস্ত্র বাহিনী দিবস উপলক্ষে তিন বাহিনী প্রধানরা নিজ নিজ বাহিনীর খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা বা তাদের উত্তরাধিকারীদের অনুরূপ সংবর্ধনা প্রদান করবেন। ঢাকা ছাড়াও সাভার, বগুড়া, ঘাটাইল, চট্টগ্রাম, কুমিল্লা, সিলেট, যশোর, রংপুর, খুলনা এবং রাজেন্দ্রপুর সেনানিবাসেও সংবর্ধনার আয়োজন করা হয়েছে।

দিনটি যথাযোগ্য মর্যাদায় পালনের জন্য ঢাকার বাইরে দেশের অন্য সেনা গ্যারিসন, নৌ-জাহাজ ও স্থাপনা এবং বিমান বাহিনী ঘাঁটিতেও বিভিন্ন কর্মসূচি নেয়া হয়েছে। ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, চট্টগ্রাম, খুলনা, মংলা, বরিশাল ও চাঁদপুরে বিশেষভাবে সজ্জিত নৌবাহিনী জাহাজগুলো ২১ নভেম্বর  বেলা ২টা থেকে বিকাল ৪টা ৩০ মিনিট পর্যন্ত সর্বসাধারণের পরিদর্শনের জন্য উন্মুক্ত থাকবে।

সোমবার সশস্ত্র বাহিনী দিবসের তাৎপর্য তুলে ধরে বাংলাদেশ টেলিভিশন রাত ৯টায় সশস্ত্র বাহিনীর পরিবেশনায় ‘বিশেষ অনির্বাণ’ অনুষ্ঠান সম্প্রচার করে। বাংলাদেশ বেতার আজ সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় ‘বিশেষ দুর্বার’ অনুষ্ঠান সম্প্রচার করবে। ‘বিশেষ অনির্বাণ’ অনুষ্ঠানটি বেসরকারি টিভি চ্যানেলগুলোতে পরবর্তী সময়ে পর্যায়ক্রমে সম্প্রচারিত হবে। দিবসটি উপলক্ষে বিভিন্ন জাতীয় দৈনিকে বিশেষ ক্রোড়পত্র প্রকাশিত হয়েছে। এছাড়াও সশস্ত্র বাহিনীর পরিচালনাধীন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে রচনা ও চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়েছে।

বাণীতে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া বলেছেন, সশস্ত্র বাহিনী সাহস, শৌর্য এবং শৃঙ্খলা দিয়ে তৈরি জাতির এক গর্বিত প্রতিষ্ঠান। আমাদের মুক্তিযুদ্ধে এ বাহিনীর গৌরবোজ্জ্বল ভূমিকা ইতিহাসে স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে।
এ উপলক্ষে তিনি বাংলাদেশ সেনা, নৌ ও বিমান বাহিনীর সব সদস্যকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানান এবং সশস্ত্র বাহিনীর সব সদস্য ও তাদের পরিবারের অব্যাহত সুখ, শান্তি ও সমৃদ্ধি কামনা করেন।
ঢাকা সেনানিবাসে যান চলাচল সীমিত থাকবে : সশস্ত্র বাহিনী দিবসের অনুষ্ঠান উপলক্ষে আজ ঢাকা সেনানিবাসের রাস্তাগুলো (শহীদ জাহাঙ্গীর গেট থেকে স্টাফ রোড পর্যন্ত প্রধান সড়ক) যানজটমুক্ত রাখার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এ লক্ষ্যে সেনানিবাসে অবস্থানকারী ব্যক্তিবর্গ এবং আমন্ত্রিত অতিথিদের বহনকারী যানবাহন ব্যতীত সব ধরনের যানবাহন চালকদের সকাল ৭টা থেকে সকাল সাড়ে ১০টা পর্যন্ত এবং দুপুর ১২টা থেকে রাত সাড়ে ৮টা পর্যন্ত সেনানিবাস এলাকা দিয়ে চলাচল পরিহার করার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে। সাময়িক অসুবিধার জন্য সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের পক্ষ থেকে আন্তরিক দুঃখ প্রকাশ করা হয়েছে।

সশস্ত্র বাহিনী দিবস উপলক্ষে সেনাকুঞ্জের বৈকালীন সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত সশস্ত্র বাহিনীতে কর্মরত কর্মকর্তাদের বিকাল ৩টার মধ্যে এবং অন্য অতিথিদের বিকাল সোয়া ৩টার মধ্যে উপস্থিত হওয়ার জন্য অনুরোধ জানানো হয়েছে।

হাতিয়ায় র‍্যাবের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ দুই জলদস্যু নিহত

নোয়াখালীর হাতিয়া উপজেলার বয়রাচরের চতলারঘাট এলাকায় র‍্যাবের সঙ্গে কথিত বন্দুকযুদ্ধে ২ জন ঘটনাস্থলেই নিহত হয়েছেন। র‍্যাবের দাবি, তাদের একজন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তালিকাভুক্ত জলদস্যু বাহিনীর প্রধান সাইফুল ইসলাম ও অন্যজন তার সহযোগী মো. শফিক।

সোমবার (২০ নভেম্বর) দিবাগত রাত সাড়ে তিনটার দিকে ‘বন্দুকযুদ্ধ’ হয়। র‍্যাব জানান, ঘটনাস্থল থেকে ছয়টি আগ্নেয়াস্ত্র, বেশ কিছু গুলি, ডাকাতির অন্যান্য সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়েছে।

অভিযান পরিচালনাকারী র‍্যাব–১১–এর লক্ষ্মীপুর ক্যাম্পের জ্যেষ্ঠ সহকারী পুলিশ সুপার মো. জসীম উদ্দিন চৌধুরীর জানান, কয়েক দিন ধরে মেঘনার বিভিন্ন এলাকায় জলদস্যু সাইফুল বাহিনী কয়েকটি ডাকাতির ঘটনা ঘটায়। ডাকাতির প্রস্তুতির খবর পেয়ে গতকাল (২০ নভেম্বর) রাতে র‍্যাব অভিযান চালায়। র‍্যাবের উপস্থিতি টের পেয়ে তাদের (র‍্যাবকে) লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে সাইফুল বাহিনী। র‍্যাবও পাল্টা গুলি চালায়। ঘটনাস্থল থেকে র‍্যাব দুজনকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে চরজব্বর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। সেখানে দায়িত্বরত চিকিৎসক তাদের মৃত ঘোষণা করেন। পরে মরদেহ নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের মর্গে নেয়া হয়।

র‍্যাব জানান, সাইফুলকে তারা শনাক্ত করেছে। স্থানীয় কয়েকজন শফিককে শনাক্ত করেছেন। সাইফুলের বিরুদ্ধে হত্যা, ডাকাতিসহ বিভিন্ন অপরাধের নয়টি মামলা রয়েছে বলে র‍্যাব জানিয়েছে।

এ ঘটনায় মামলা করার প্রস্তুতি চলছে।

ঢাকা মেডিকেল থেকে শিশু চুরির অভিযোগ

ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নতুন ভবনের মেডিসিন বিভাগের ওয়ার্ড থেকে ঘুমন্ত অবস্থায় মায়ের পাশে থাকা তিন মাসের শিশু (জিম) চুরির অভিযোগ পাওয়া গেছে। সোমবার (২০ নভেম্বর) দিবাগত ১২টা থেকে ১টার মধ্যে এ চুরি হয় বলে শিশুটির পরিবারের সদস্যরা অভিযোগ করেছেন। এর আগেও ঢাকা মেডিকেল থেকে শিশু চুরির ঘটনা ঘটেছে।

শিশুটির পরিবার সূত্রে জানা গেছে, শিশুটির বাবা জুয়েল মিয়া রিকশাচালক। কিছুদিন ধরে তিনি অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি। জুয়েল মিয়ার স্ত্রী সুমাইয়া আকতার তাকে দেখাশোনার জন্য শিশুটিকে নিয়ে রাতে হাসপাতালে ছিলেন। এক পর্যায়ে শিশুটিকে পাশে নিয়ে তিনি ঘুমিয়ে পড়েন। ঘুম ভাঙার পরে শিশুটিকে আর খুঁজে পাননি। রাতেই বিষয়টি ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পুলিশ ফাঁড়িতে অভিযোগ করেন তারা।

পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ উপপরিদর্শক (এসআই) বাচ্চু মিয়া জানান, শিশুটির স্বজনেরা অভিযোগ করেছেন। আমরা পুরো বিষয়টি শাহবাগ থানাকে অবহিত করেছি। বিষয়টি শাহবাগ থানা-পুলিশ দেখছে।

অন্যদিকে, হাসপাতালের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. রাশিদুল ইসলাম জানান, বিষয়টি আমরা শুনেছি। বিষয়টি শাহবাগ থানার পুলিশ দেখছে।

সুন্দরবনে ৬ জেলেকে অপহরণ, মুক্তিপণ দাবি

সুন্দরবন সাতক্ষীরা রেঞ্জের বাদুড়ঝুলি খাল থেকে ৬ জেলেকে মুক্তিপণের দাবিতে অপহরণ করেছে নবাগত বনদস্যু মুন্না বাহিনীর সদস্যরা।

সোমবার (২০ নভেম্বর) বিকালে শ্যামনগর উপজেলাধীন সুন্দরবনের বাদুড়ঝুলি খাল থেকে জন প্রতি ২০ হাজার টাকা মুক্তিপণ দাবিতে তাদের অপহরণ করা হয়।

অপহৃত জেলেরা হলেন-শ্যামনগর উপজেলার গাবুরা ইউনিয়নের ৯ নং সোরা গ্রামের সিদ্দিক গাজীর ছেলে মাসুম বিল্লাহ (৩২)। একই গ্রামের আজিজুল গাজীর ছেলে আল মামুন (২৮), করিম সরদারের ছেলে জামাল সরদার (৩৮), রফি খাঁর ছেলে এশার আলী (৪৩), নজিব মোল্যার ছেলে বিল্লাল মোল্যা (৩৫) ও কওসার গাজীর ছেলে কালাম গাজী (২২)।

অপহৃত জেলেদের বরাত দিয়ে ৯ নং সোরা গ্রামের আজিজুল গাজী ও আল আমিন জানান, গত ৩ দিন আগে বুড়িগোয়ালীনি ফরেষ্ট ষ্টেশন থেকে বৈধ পাস নিয়ে তারা সুন্দরবনের বাদুড়ঝুলি খাল এলাকায় কাঁকড়া ধরতে যান। সোমবার (২০ নভেম্বর) বিকালে নবাগত বনদস্যু মুন্না বাহিনীর সদস্যরা অতর্কিত হামলা চালিয়ে উক্ত ৬ জেলেকে অপহরণ করে। বনদস্যুরা জন প্রতি ২০ হাজার টাকা মুক্তিপণ দাবি করে।

সুন্দরবন সাতক্ষীরা রেঞ্জের বুড়িগোলীনি ষ্টেশন কর্মকর্তা বেলাল হোসেন জানান,জেলে অপহরণের বিষয়টি শুনেছি কিন্তু এখনও পর্যন্ত কেউ কোন অভিযোগ আমাদের কাছে দেননি।