সহিংস সংঘর্ষের পর শ্রীলঙ্কার প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগ

শ্রীলঙ্কার প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজাপাকসে সোমবার পদত্যাগ করেছেন। তার মুখপাত্র জানিয়েছেন, প্রধানমন্ত্রীর সমর্থক এবং সরকারবিরোধী বিক্ষোভকারীদের মধ্যে সহিংস সংঘর্ষের ৭৮ জন আহত হওয়ার পর তিনি এ পদত্যাগ করেন। খবর এএফপি’র।

মুখপাত্র  রোহান বিলিভিতা বলেছেন, ‘নতুন ঐক্য সরকারের’ পথ সুগম করতে ৭৬ বছর বয়সী মাহিন্দা রাজাপাকসে তার পদত্যাগপত্র ছোট ভাই প্রেসিডেন্ট গোটাবায়া রাজাপাকসের কাছে পাঠিয়েছেন।

ককপিটে সিগারেটের আগুন থেকেই বিধ্বস্ত হয় ইজিপ্টএয়ারের বিমান

মিশর এয়ারের একটি বিমান ২০১৬ সালে ৬৬ আরোহী নিয়ে ভূমধ্যসাগরে বিধ্বস্ত হয়েছিল। বুধবার প্রকাশিত ফরাসী বিশেষজ্ঞদের এক তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়, বিমানটির ককপিট থেকে শুরু হওয়া আগুনের কারনে এটি বিধ্বস্ত হয়।

মার্চে প্যারিসের আদালতে জমা দেয়া ১৩৪ পৃষ্ঠার এই তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়, দুর্ঘটনাগ্রস্ত ওই বিমানে কোনও যান্ত্রিক ত্রুটি ছিল না। উড্ডয়নের মাঝেই ককপিটের ভেতর সিগারেট জ্বালিয়েছিলেন পাইলট কিংবা কো পাইলট। তাতেই একটি আপদকালীন অক্সিজেন মাস্ক ফুট হয়ে যায়। এবং সেই অক্সিজেনের সংস্পর্শে এসেই সিগারেটের আগুন প্রথমে ককপিট এবং পরে তা পুরো বিমানেই ছড়িয়ে পড়ে। এরপর বিমানটি বিধ্বস্ত হয়।

বিমানটির ককপিট ভয়েস রেকর্ডার চালিয়ে তদন্তকারীরা একটি রহস্যজনক সূত্র পান। তাঁরা শুনতে পান, ককপিটের ভিতরেই হাওয়া বেরোনোর মতো খুব মৃদু শব্দ হচ্ছে। পরে তদন্তকারীরা বুঝতে পারেন, সেই সময় পাইলট কিংবা কো পাইলট ধূমপান করছিলেন। তাতেই অক্সিজেন মাস্ক ফুটো হয়ে গ্যাস বেরোতে শুরু করে। তারই শব্দ মাইক্রোফোনে রেকর্ড হয়ে যায়।

উল্লেখ্য, ২০১৬ সালের ১৯ মে ইজিপ্ট এয়ারের এমএস ৮০৪ কায়রোর উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করেছিল প্যারিস থেকে। কিন্তু গন্তব্যে পৌঁছনোর আগেই ভূমধ্যসাগরে এটি ভেঙে পড়ে। বিমান আরোহীর সকলেই প্রাণ হারায়।

ফের যুদ্ধ বন্ধে বৈঠকে বসার আহ্বান জানালেন জেলেনস্কি

ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদমির জেলেনস্কি যুদ্ধ বন্ধে বৈঠকে বসতে রুশ প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিনের প্রতি আবারো আহ্বান জানিয়েছেন।

ইউক্রেনের রাজধানীর কেন্দ্রস্থলে শনিবার এক সংবাদ সম্মেলনে জেলেনস্কি বলেন, যিনি এই যুদ্ধ শুরু করেছেন তার পক্ষেই সম্ভব এটি শেষ করার।

জেলেনস্কি আরো বলেন, যদি উভয়ের এই সাক্ষাত রাশিয়া ও ইউক্রেনকে শান্তি স্থাপনের দিকে নিয়ে যায় তবে তিনি পুতিনের সাথে বসতে ভয় পান না।

প্রথম থেকেই রুশ প্রেসিডেন্টের সাথে সরাসরি বৈঠকে বসার জন্যে জেলেনস্কি আহ্বান জানিয়ে আসছেন। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এটি এমন নয় যে আমি তার সাথে সাক্ষাত করতে চাইছি। বিষয়টি হলো কূটনৈতিক উপায়ে সমস্যার সমাধান করা।

এদিকে জেলেনস্কি আবারো সতর্ক করে বলেছেন, মারিওপোলের অবরুদ্ধ ইষ্পাত কারখানার বাদবাকী সৈন্যদের রাশিয়া হত্যা করলে তারা আর আলোচনায় বসবেন না।

যুক্তরাষ্ট্রে সুপ্রিম কোর্টের সামনে গায়ে আগুন দিয়ে আত্মাহত্যা

নিউ ইয়র্ক: যুক্তরাষ্ট্রের রাজধানী ওয়াশিংটন ডিসিতে পার্লামেন্ট ভবন ক্যাপিটল হিলের কাছে মার্কিন সুপ্রিম কোর্টের সামনে এক ব্যক্তি নিজের গায়ে আগুন ধরিয়ে দিয়ে আত্মাহুতি দিয়েছেন।

ওয়াশিংটন ডিসির মেট্রোপলিটন পুলিশ বিভাগ জানিয়েছে, স্থানীয় সময় শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টা ৫ মিনিটে ওয়েন ব্রুস (৫০) নামে এক ব্যক্তি নিজের গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেন। এ খবর জানিয়েছে মার্কিন সংবাদমাধ্যম বাংলা প্রেস।

নিহত ব্যক্তির বাড়ি বোল্ডার কলোরাডো অঙ্গরাজ্যে। পুলিশ দ্রুত তাকে উদ্ধার করে হেলিকপ্টারে করে ওয়াশিংটনের একটি হাসপাতালে ভর্তি করে। চিকিৎসাধীন সেখানেই তিনি মারা যান। তবে কী কারণে ওই ব্যক্তি গায়ে আগুন দিয়েছেন তা জানা যায়নি।

ওয়াশিংটন ডিসিতে বন্দুক হামলাকারী নিহত, আহত ৪

বাংলা প্রেস, নিউ ইয়র্ক: যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন ডিসিতে হামলাকারী সেই বন্দুকধারী আত্মঘাতী হয়ে নিহত হয়েছেন। উক্ত বন্দুকধারীর এলোপাতাড়ি গুলিতে চারজন আহত হয়েছেন। পরে নিজেও আত্মঘাতী হন ওই ব্যক্তি। একটি স্কুলের সামনে স্থানীয় সময় শুক্রবার (২২ এপ্রিল) এ হামলার ঘটনা ঘটে। এ খবর জানিয়েছে মার্কিন সংবাদমাধ্যম বাংলা প্রেস।

হামলার খবরে দ্রুত হাজির হন নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা। ঘিরে ফেলে পুরো এলাকা। লকডাউন করে রাখা হয় ইউনিভার্সিটি অব ডিস্ট্রিক্ট অব কলাম্বিয়ার আশপাশের এলাকা। হামলাকারীর সন্ধানে বাড়ি বাড়ি চালানো হয় তল্লাশি। বেশ কয়েক ঘণ্টা পর্যন্ত জারি ছিল সতর্কতাও।
ওয়াশিংটন পুলিশ জানিয়েছে, ভিডিও ফুটেজ দেখে একজনকে চিহ্নিত করা সম্ভব হয়েছে। সন্দেহভাজন ওই ব্যক্তির নাম রেমন্ড স্পেনসার। তার বয়স ২৩ বছর।প্রত্যক্ষদর্শীদের তথ্যানুযায়ী- ঘটনার তল্লাশি শুরু করে পুলিশ। এরপর পাশের একটি অ্যাপার্টমেন্টে অভিযান চালিয়ে হামলাকারীর অবস্থান শনাক্ত করেন তারা

পুলিশের দাবি- সেখানেই ওই হামলাকারী আত্মঘাতী হন। ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ আগ্নেয়াস্ত্রসহ রাইফেল উদ্ধার করে, যেটি স্নাইপার টাইপ সেটআপ করা ছিল।

পুলিশ আরও জানিয়েছে, হামলাকারীর মোটিভ ছিল সম্প্রদায়ের লোকজনদের ওপর হামলা করা। তবে এখনো তদন্ত চলছে বলেও জানিয়েছে তারা। হামলাকারী একজনই ছিলেন বলেও ধারণা তাদের।

আমিরাতের যুবরাজও কম খেল দেখাচ্ছেন না

সাংবাদিক জামাল খাসোগি হত্যার ঘটনা ৩৩ বছর বয়সী সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের ভবিষ্যৎ নিয়ে কিছুটা হলেও শঙ্কা তৈরি হয়েছে। বিপাকে পড়েছে সৌদি আরব। সৌদি বাদশা ও যুবরাজের ওপর আন্তর্জাতিক চাপ বাড়ছে। যুবরাজকে সরিয়ে দেওয়ার দাবিও উঠেছে। এমন অবস্থায় যুবরাজ মোহাম্মাদের আরেক দোসর সংযুক্ত আরব আমিরাতের (ইউএই) যুবরাজ মোহাম্মদ বিন জায়েদ খেলেছেন আরেক ভুল ঘুঁটি।

মোহাম্মদ বিন জায়েদের মারমুখী নীতি বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে দুবাইয়ের অগ্রগতিতে। সৌদি যুবরাজের চেয়ে বয়সে অনেক বড় হলেও মানসিক পরিপক্বতা খুব বেশি পার্থক্য নেই দুজনের। দুই যুবরাজকে রক্তক্ষয়ী ইয়েমেন যুদ্ধের জন্য দায়ী বলে মনে করা হয়। তাঁদের দুজনের জন্যই গত ১৭ মাস ধরে কাতারের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে আরব দেশগুলো। কিন্তু এসব নীতিতে কি খুব লাভবান হয়েছে দুবাই? মার্কিন সাময়িকী দ্য ইকোনোমিস্টের এক প্রতিবেদনে উঠ এসেছে বিষয়টি।

আসলে সৌদি যুবরাজের সঙ্গে হাত মিলিয়ে বেশ কিছু আন্তর্জাতিক ইস্যুতে জড়িয়েছেন যুবরাজ মোহাম্মদ বিন জায়েদ। এর মধ্যে অন্যতম দুটি হচ্ছে, ইয়েমেন যুদ্ধ। অপরটি হলো উপসাগরীয় সহযোগিতা পরিষদের (জিসিসি) সদস্য রাষ্ট্র কাতারের বিরুদ্ধে আকাশ, স্থল ও সমুদ্রপথে অবরোধ আরোপ। ২০১৭ সালের জুনে সৌদি আরবসহ সাতটি দেশ কাতারের সঙ্গে সব ধরনের সম্পর্ক ছিন্ন করে। তাদের অভিযোগ, দেশটি সন্ত্রাসবাদে আর্থিক সহায়তা ও মদদ দিয়ে আঞ্চলিক অস্থিতিশীলতা তৈরি করছে। বে দোহা কর্তৃপক্ষ বরাবরই এ ধরনের অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে। এ অবস্থায় সাময়িকভাবে ব্যাপক সমস্যাতেও পড়েছিল দোহা। সবচেয়ে বেশি ক্ষতির শিকার হয়েছিল দেশটির অর্থনীতি। আর সেই চাপকে কাজে লাগিয়ে কাতারকে শর্তের বেড়াজালে আটকে ফেলে সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাত। কিন্তু এই আক্রমণে দুবাই হারিয়েছে তাঁর ব্যবসায়িক অংশীদারকে।

দুবাই থেকে এখন কোনো ফ্লাইট দোহা বিমানবন্দরে যায় না। দুবাইয়ের জাবেল আলি বন্দর দিয়ে আমদানি করত কাতার, সেটাও বন্ধ হয়েছে। এমনকি ২০২২ সালে কাতারে বিশ্বকাপ ফুটবল আয়োজন নিয়ে অংশীদার হিসেবে দুবাই যে ব্যবসায়িক ফায়দা নিতে পারত সেটাও এখন অনিশ্চিত। ওই টুর্নামেন্টকে হতাশ করার ব্যাপক চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে ইউএই।

কিন্তু উপসাগরীয় অন্যান্য শেখদের রাজত্বের চেয়ে দুবাই বেশ ভিন্নই ছিল। দুবাইয়ের অর্থনীতির চালিকাশক্তি কেবল তেল নয়, বরং পর্যটন, বাণিজ্য ও আর্থিক খাতের ওপরও অনেকাংশে নির্ভরশীল। বিশ্বের অন্যতম ব্যস্ততম বিমানবন্দর দুবাইতে, এখন পর্যন্ত দুবাইয়ের ‘বুর্জ খলিফাই’ হচ্ছে বিশ্বের সবচেয়ে সুউচ্চ ভবন, রয়েছে উপসাগরীয় অঞ্চলের সবচেয়ে বড় সমুদ্রবন্দর জাবেল আলি। ২০১৮ সালে ইউএইর মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি ৩ দশমিক ৩ শতাংশ হবে বলে আশা করা হচ্ছে। ২০১৭ সালে এই হার ছিল ২ দশমিক ৮ শতাংশ।

২০১৭ সালের জুনে কাতারের ওপর অবরোধ আরোপ করে সাত দেশ। ছবি: রয়টার্সতবে ভালো ভালো পরিসংখ্যান চোখ ধাঁধালেও বেশ বিপদে আছে দুবাই। তেলের দাম বৃদ্ধি স্বল্পমেয়াদে কিছুটা গতি আনলেও, দীর্ঘ মেয়াদে এই ধারাটি নিম্নমুখী। দুবাইয়ের এমএফইউজি ব্যাংকের কর্মকর্তা ইশান খোমানসহ বিভিন্ন বিশ্লেষকেরা মনে করছেন, একটি বিশৃঙ্খল সম্পত্তি বাজার এবং আঞ্চলিক দ্বন্দ্ব এই উদ্বেগের অন্যতম কারণ। গত বছরের তুলনায় দুবাইয়ের পুঁজিবাজারে সূচকের দরপতন হয়েছে প্রায় ২০ শতাংশ। যা মধ্য প্রাচ্যের অন্য সব দেশের চেয়ে বেশি দরপতন। এর মধ্যে সম্প্রতি দুবাই ইন্টারন্যাশনাল ফাইন্যান্সিয়াল সেন্টারের বৃহত্তম সংস্থা আবরাজ গ্রুপের পতন আস্থায় নাড়া দিয়েছে। গত কয়েক বছর ধরে নতুন করে ব্যবসায়িক কর্মকাণ্ডে খুব কমই লাইসেন্স দেওয়া হচ্ছে, সেই সঙ্গে কর্মসংস্থানের হার কমেছে রেকর্ড পরিমাণ।

দুবাইয়ের জনসংখ্যার ৯০ শতাংশই বিদেশি, অথচ প্রবাসীদের জন্য স্কুলের সুবিধা বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে। আবাসন খাতের ব্যবসায়ীরা একদিকে বলছেন, খালি ফ্ল্যাট বিক্রি হচ্ছে না, অন্যদিকে ডেভলপাররা ফ্ল্যাট তৈরি করেই যাচ্ছেন। ২০১৭ সালে দুবাইয়ের সম্পত্তি বাজারের পারফরম্যান্স ছিল খুবই খারাপ। মূলত বাড়িভাড়ার দাম কমে যাওয়ায় এ সমস্যার তৈরি হয়। দুবাইয়ের অন্যতম বড় ডেভেলপার প্রতিষ্ঠান ইমার প্রপার্টিজের শেয়ারের দাম চলতি বছর ৩৮ শতাংশ পর্যন্ত কমে।

এর আগে ২০০৯ সালে একবার সংকটের মুখে পড়ে দুবাই। ঋণের ভারে ওই সংকট তৈরি হয়। সংকট কাটাতে আবুধাবি থেকে দুবাইকে প্রায় ২০ বিলিয়ন ডলার অর্থ সহায়তা নিতে হয়েছিল। তবে ওই অবস্থা বিচক্ষণ করেছে বর্তমান ব্যাংকিং খাতকে। বিশ্লেষকেরা আশা করছেন অত বড় সংকট হয়তো আর তৈরি হবে না। তবে ঝুঁকি নিয়ে আশঙ্কা রয়েই গেছে। আবাসন ঋণ আঞ্চলিক ব্যাংকগুলোকে ঝুঁকির মধ্যে ফেলছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক সহায়তা না করে অনেক ব্যাংকই দেউলিয়া হয়ে যেতে হতে পারে।

এ অবস্থার অন্যতম কারণ যুবরাজের বিভিন্ন পদক্ষেপ। শুধু কাতার নয় ইরানের সঙ্গেও সম্পর্ক নষ্ট করছে দুবাই। এত দিন দুজনের সম্পর্ক বেশ লাভজনকই ছিল। ইরানে পুনঃরপ্তানি করে প্রতিবছর প্রায় ১৭ বিলিয়ন ডলার বন্দর ফি আয় করত সংযুক্ত আরব আমিরাত। তবে দুই বিদ্রোহী প্রিন্সের সমর্থন নিয়ে ইরানের ওর যুক্তরাষ্ট্রের আবার নিষেধাজ্ঞা আরোপ এই ব্যবসায়িক সম্পর্কে ভীতি তৈরি করেছে। যেসব জাহাজ পণ্য নিয়ে প্রতি সপ্তাহে পারস্য সাগর পাড়ি দিত এখন মাসেও একবার এ পথ দিয়ে যায় না। ইরানের পেছনের দরজা হিসাবে দুবাইয়ের আকর্ষণ দিনদিনই কমছে। গত মে মাসে যুক্তরাষ্ট্র ও অ্যামিরেটসের পর্যবেক্ষকেরা ইরানের রেভ্যুলেশনারি গার্ড করপোরেশনের (আইআরজিসি) ব্যবহৃত একটি কারেন্সি এক্সচেঞ্জ নেটওয়ার্কের খোঁজ পায়। যুক্তরাষ্ট্র তার অ্যান্টি মানি লন্ডারিং ওয়াচ তালিকায় দুবাইকে রেখেছে।

ইয়েমেনে রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের জন্য দুই যুবরাজকেই দায়ী করা হয়। ছবি: রয়টার্সতবে যুবরাজ যতই হঠকারী হোক না কেন, আমিরকে তো বিজ্ঞ হতেই হয়। অভ্যন্তরীণ অর্থনীতিকে চাঙা করতে দুবাইয়ের আমির মোহাম্মদ বন রশিদ বেশ কিছু পদক্ষেপ নিয়েছেন। বিদেশিরা যাতে দেশ ছেড়ে না যায় এ জন্য প্রাইভেট স্কুলের বেতন ও কর কাঠামোতে ইতিবাচক পরিবর্তন এনেছেন। এ ছাড়া দীর্ঘ মেয়াদি কর্ম ভিসা চালুর করেছেন তিনি। এ ছাড়া ব্যবসার মালিকানা নিয়ে যে কড়াকড়ি ছিল তাও শিথিল করা হয়েছে। আশা করা যাচ্ছে চীনের বিনিয়োগকারীরা এতে আগ্রহী হবেন। এর বিপরীতে দুবাইয়ের দুকম বন্দরের উন্নয়নে কাজ করবে চীন।

রাজনৈতিক ক্ষেত্রে দেখা গেছে এক পক্ষের বিরোধপূর্ণ সম্পর্কে সুযোগ নেয় অপরপক্ষ। ইয়েমেন বন্দরে নিষেধাজ্ঞা আরোপে নতুন পথ খুলতে পারত বিশ্বের অন্যতম বন্দর পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠান দুবাইয়ের ডিপি ওয়ার্ল্ডের। যেমন লিবিয়ার যোদ্ধা জেনারেল খলিফা হাফারের সঙ্গে জোট করলে ভূমধ্যসাগরীয় অঞ্চলগুলো একই রকম সুবিধা পেতে পারে। সিরিয়ার বাশার আল আসাদের সঙ্গে ভালো সম্পর্ক তৈরি হলে পুনর্গঠন চুক্তি হতে পারে। কিন্তু ইউএই উপসাগরীয় অঞ্চলের রাজনৈতিক লড়াইয়ে বিভ্রান্ত হয়ে পড়েছে। তাই সুযোগ তো নিতেই পারছে না বরং ভিকটিম হয়ে পড়ছে।

সংকেত মিলেছে আর্জেন্টিনার নিখোঁজ সাবমেরিনের

আর্জেন্টিনার দক্ষিণ উপকূলে নিখোঁজ হওয়া সাবমেরিনের সংকেত মিলেছে স্যাটেলাইটের মাধ্যমে। বুধবার সকালে নিখোঁজ হওয়া ওই সাবমেরিনটিতে ৪৪ জন আরোহী ছিলেন। খবর বিবিসি।

কর্মকর্তারা বলছেন, স্যাটেলাইটের মাধ্যমে সাবমেরিনের যে সংকেত পাওয়া গেছে তা ওই নিখোঁজ সাবমেরিনের বলেই ধারণা করা হচ্ছে।

সান জুয়ান নামের ওই সাবমেরিনটি উসুয়ায় একটি নিয়মমাফিক রুটির শেষে ফিরে আসছিল। এটি রাজধানী থেকে প্রায় ৪৩০ কিলোমিটার দক্ষিণের মার দেল প্লাটা নৌ ঘাঁটিতে যাচ্ছিল।

বুধবার সকালে সর্বশেষ সাবমেরিনটির সর্বশেষ যোগাযোগ হয় কর্তৃপক্ষের। তারপরেই এর যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে এবং তারপর থেকে সাবমেরিনটির আর কোনো খবর পাওয়া যায়নি।

শনিবার স্যাটেলাইটের মাধ্যমে সাতবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়েছে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়। সাবমেরিনটি বর্তমানে কোথায় আছে সেটা চিহ্নিত করার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়েছে তারা।

নাসার একটি বিমান আর্জেন্টিনার এই উদ্ধার অভিযানে তাদের সহায়তা করছে। বর্তমানে দক্ষিণ আটলান্টিক সাগরে সাবমেরিনটির খোঁজে অনুসন্ধান চালানো হচ্ছে। ব্রিটেন এবং অন্যান্য দেশও আর্জেন্টিনাকে সাহায্য করার প্রস্তাব দিয়েছে।

২০২১ সালের মধ্যে চালকবিহীন গাড়ি আনছে যুক্তরাজ্য

২০২১ সালের মধ্যে চালকবিহীন গাড়ি আনছে যুক্তরাজ্য। দেশটির অর্থমন্ত্রী ফিলিপ হ্যামন্ড বুধবার বাজেট ঘোষণার সময় এ তথ্য জানিয়েছেন। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা এবং যুক্তরাজ্যের রাস্তায় চালকবিহীন গাড়ি আনতে ৭৫ মিলিয়ন পাউন্ডস তহবিল ঘোষণা করেন তিনি। খবর এএফপি।

গাড়ি শিল্পে চালকবিহীন গাড়ি সম্পর্কে নতুন ঘোষণা দেবেন হ্যামন্ড। ২০৩৫ সালের মধ্যে আনুমানিক ২৮ বিলিয়ন পাউন্ড ব্যয় করবে সরকার। রোববার মন্ত্রণালয়ের কার্যালয় থেকে নতুন বাজেট প্রকাশিত হয়েছে এবং তিন বছরের মধ্যেই ব্রিটেনের রাস্তায় চালকবিহীন গাড়ি চলার ঘোষণা দেয়া হয়েছে।

ব্রেক্সিট ইস্যু নিয়ে বেশ চাপের মধ্যেই এই বাজেট ঘোষণা করেছেন অর্থমন্ত্রী। পুরো দেশে ইলেক্ট্রিক কার চার্জ পয়েন্ট নির্মাণের জন্য বিভিন্ন কোম্পানিকে ৪শ পাউন্ড দেয়া হবে বলেও জানানো হয়েছে।

কারিগরী শিল্পকে গুরুত্ব দিয়ে ৭৫ মিলিয়ন পাউন্ড ব্যয়ের পরিকল্পনা করছে সরকার এবং ৫জি টেকনোলজি উন্নয়নে ১৬০ মিলিয়ন ডলার ব্যয় করা হবে বলে জানানো হয়েছে।

কংগ্রেসের সভাপতি হচ্ছেন রাহুল গান্ধী?

ভারতের গুজরাট প্রদেশের বিধানসভা নির্বাচনের আগেই রাহুল গান্ধী ভারতীয় কংগ্রেসের নেতৃত্ব পাচ্ছেন বলে দেশটিতে আলোচনা চলছে। কংগ্রেসের সভাপতি পদে রাহুল গান্ধীর পথ প্রশস্ত করতে দলের ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠক ডেকেছেন সোনিয়া গান্ধী। গুজরাটের ভোটের আগেই দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে মোকাবিলায় রাহুলের রাজনৈতিক ক্ষমতা আরো বাড়াতেই কংগ্রেস এই কৌশল নিয়েছে বলে দেশটির পর্যবেক্ষকরা মন্তব্য করেছেন।

রোববার কংগ্রেস বলছে, সোমবার সকাল সাড়ে ১০টায় কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠক ডাকা হয়েছে। সেখানে সভাপতি পদে নির্বাচনের সময় চূড়ান্ত হবে। কংগ্রেস নেতাদের বক্তব্য, সাধারণভাবে ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠকের পরে পুরো নির্বাচন প্রক্রিয়া শেষ করতে দশ দিনের মতো সময় লাগতে পারে।

কংগ্রেস নেতা জনার্দন দ্বিবেদী বলেন, ‘যদি আর কোনো প্রার্থী সভাপতি পদে না প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন তাহলে নাম প্রত্যাহারের শেষ দিনেই নতুন সভাপতির নাম ঘোষণা করা হবে।’ সভাপতি পদের জন্য রাহুল ছাড়া এখন পর্যন্ত অন্য কারও নাম দেয়ার সম্ভাবনা নেই বলে কংগ্রেসের বেশ কিছু সূত্র নিশ্চিত করেছে।

তবে রাহুলকে এখনই কংগ্রেসের সভাপতির দায়িত্ব দেয়া নিয়ে দলের মধ্যে নানা মত রয়েছে। দলের এক অংশ মনে করে, যদি রাহুলের প্রচারের পরও গুজরাট বা হিমাচলের বিধানসভা ভোটের ফল ভাল না হয়, তাহলে এই পদোন্নতি নিয়ে বিরূপ প্রতিক্রিয়া হতে পারে। এর প্রভাব পড়তে পারে আগামী বছর বিধানসভার একাধিক ভোটে। এমনকি লোকসভার ভোটেও।

৯ ডিসেম্বর গুজরাটে বিধানসভা নির্বাচনের প্রথম দফা ভোট অনুষ্ঠিত হবে। এই ভোটের আগেই রাহুল গান্ধী কংগ্রেসের সভাপতি নির্বাচিত হতে পারেন। অক্টোবরে এনডিটিভিকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে কংগ্রেসের বর্তমান সভাপতি সোনিয়া গান্ধীও রাহুলের কাঁধে দলের দায়িত্ব তুলে দেয়ার ইঙ্গিত দিয়েছিলেন।

১৯৯৮ সাল থেকে দলের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছেন সোনিয়া। টানা ১৭ বছর ধরে সোনিয়া গান্ধী দলটির সভাপতির দায়িত্বে রয়েছেন। ২০১৩ সালের জানুয়ারিতে কংগ্রেসের সহ-সভাপতি হওয়ার পর থেকেই রাহুল দলটির দ্বিতীয় সর্বোচ্চ নেতা।

সু চির সঙ্গে চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রীর সাক্ষাৎ

মিয়ানমার সফরে গিয়ে সেদেশের প্রেসিডেন্ট হতিন কিয়াও, ডি ফ্যাক্টো নেত্রী অং সান সু চি ও সেনাপ্রধান মিন অং হ্লেইংয়ের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রী ওয়াং ই। রোহিঙ্গা সঙ্কট নিয়ে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে আলোচনার পরদিন রোববার তিনি মিয়ানমারের নেতাদের সঙ্গে এ সাক্ষাৎ করেন।

গত আগস্টের শেষের দিকে রাখাইনে দেশটির নিরাপত্তাবাহিনীর তল্লাশি চৌকিতে হামলার জবাবে রোহিঙ্গা বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে ক্লিয়ারেন্স অভিযান শুরু করে সেনাবাহিনী। এই অভিযান শুরুর পর ৬ লাখের বেশি রোহিঙ্গা বাংলাদেশে পালিয়েছে। বাংলাদেশে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গারা বলছেন, সেনাবাহিনী এবং উগ্র বৌদ্ধরা রাখাইনে তাদের ওপর হামলা চালিয়ে, বাড়ি-ঘর পুড়িয়ে দিচ্ছে।

জাতিসংঘ মিয়ানমার সেনাবাহিনীর এই অভিযানকে জাতিগত নিধন হিসেবে চিহ্নিত করেছে। রাখাইনে সেনাবাহিনীর রক্তাক্ত এই অভিযানের জেরে আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে সমালোচনার মুখে রয়েছে মিয়ানমার। পশ্চিমা বিশ্ব থেকে একঘরে হয়ে পড়ার সময় থেকেই মিয়ানমারের ঘনিষ্ঠ মিত্র হিসেবে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রেখেছে চীন। রোহিঙ্গা নিপীড়নের জেরে আন্তর্জাতিক সমালোচনার মুখে মিয়ানমারের পাশে দাঁড়িয়েছে বেইজিং।

শনিবার ঢাকায় চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রী ওয়াং ই সাংবাদিকদের বলেন, রোহিঙ্গা সঙ্কট মিয়ানমার এবং বাংলাদেশের দ্বিপাক্ষিক উপায়ে সমাধান করা উচিত। এই সঙ্কটে বাইরের পক্ষগুলোর জড়িয়ে পড়া অনুচিত।

রোববার নেইপিদোতে মিয়ানমারের প্রেসিডেন্ট হতিন কিয়াও, ডি ফ্যাক্টো নেত্রী অং সান সু চি ও সেনাবাহিনীর প্রধান মিন অং হ্লেইংয়ের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন। সোমবার দেশটিতে এশিয়া এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেশগুলোর পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে নেইপিদোতে। বৈঠকে রোহিঙ্গা সঙ্কট নিয়ে জোরালো আলোচনা হতে পারে বলে প্রত্যাশা করা হচ্ছে।