৬ দিন ফেরিতে পণ্যবাহী গাড়ি পারাপার বন্ধ

ঢাকাঃ ঈদে ঘরমুখো মানুষের চলাচল নির্বিঘ্ন করতে ফেরিঘাটে পণ্যবাহী যানবাহন পারাপার বন্ধ থাকবে। ঈদের তিন দিন আগে এবং ঈদের দুই দিন পর পর্যন্ত মোট ৬ দিন এই নিষেধাজ্ঞা বলবৎ থাকবে বলে জানিয়েছে বিআইডব্লিউটিসি।

বিআইডব্লিউটিসি জানায়, ঈদ উপলক্ষে ফেরিঘাটের সবধরনের যানবাহনের ভিড় বেড়েছে। যাত্রীবাহী যানবাহনে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে পারাপার করা হবে। এ কারণে দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া, শিমুলিয়া-কাঁঠালবাড়ি ও মঙ্গল মাঝিরঘাট, দৌলতদিয়া কাজিরহাট, ভোলা-লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর-শরীয়তপুরসহ সবগুলো ফেরিঘাটে পণ্যবাহী যানবাহন পারাপার ঈদের তিন দিন আগে থেকে বন্ধ করা হবে এবং ঈদের দুই দিন পর পর্যন্ত এই নিষেধাজ্ঞা বলবৎ থাকবে। এ কারণে পণ্যবাহী ট্রাক, লরি, কাভার্ডভ্যান পারাপার করা হবে না।

তবে ওষুধবাহী গাড়ি, পচনশীল মালামাল রয়েছে এমন সব পণ্যবাহী যানবাহন পারাপার অব্যাহত থাকবে।

বাংলাদেশ চীনের ঋণের ফাঁদে পড়ার আশঙ্কা নেই : পররাষ্ট্রমন্ত্রী

বাংলাদেশ চীনের ‘ঋণের ফাঁদে’ পড়ার কোনো আশঙ্কা নেই উল্লেখ করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন আবারও বলেছেন, অর্থনীতিবিদদের যারা এ ধরনের কথা বলছেন, তারা হয়তো যুক্তরাষ্ট্রকে খুশি করতে চান।

গতকাল মঙ্গলবার পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশ জাপানের কাছ থেকে সবচেয়ে বেশি ঋণ নিয়েছে, তবে চীনের ঋণ নিয়ে তাদের একমাত্র মাথাব্যথা, কিন্তু জাপানের কথা কেউ বলে না।’

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেন, ‘ঋণ নেওয়ার সময় আমরা খুব সতর্ক থাকি। ঋণের ফাঁদে পড়ার কোনো সুযোগ নেই।’

পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রতিটি দিক সঠিকভাবে যাচাই-বাছাই করে সিদ্ধান্ত নেন এবং কোনোভাবেই শ্রীলঙ্কার সঙ্গে বাংলাদেশের তুলনা করা উচিত নয়।

এ ছাড়া পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা জানি না, তবে মাঝেমধ্যে আমরা আপনাদের কাছ থেকে শুনি, আপনারা লিখেন যে, বাংলাদেশ নাকি চীনের ঋণের ফাঁদে পড়ে যাচ্ছে। পরে দেখি যে, আপনারা সম্পূর্ণ অলীক কথা লিখেন।’

চীনের ঋণ নিয়ে অর্থনীতিবিদদের নেতিবাচক মন্তব্যের কথা বলতে গিয়ে মোমেন বলেন, ‘তারা হয়তো যুক্তরাষ্ট্রকে খুশি করতে চায়।

ঈদে বাড়ি ফেরা মানুষের ভোগান্তি কমাতে শরীয়তপুরে নতুন আরো একটি ফেরিঘাট চালু

ঈদুল ফিতরকে সামনে রেখে যানজট কমাতে মঙ্গলমাঝি, সাত্তার মাদবর-শিমুলিয়া নৌ-রুটে ফেরি চলাচল নির্বিঘœ রাখতে শরীয়তপুরের জাজিরার মঙ্গল মাঝির (সাত্তার মাদবর) ঘাটে নতুন আরেকটি ফেরিঘাট চালু হয়েছে। আজ বুধবার নতুন ঘাটটিতে ফেরি নোঙর ও যানবাহন ওঠানামা পুরোদমে শুরু হয়।

পরীক্ষামূলকভাবে কর্ণফুলী নামের একটি ছোট ফেরি শিমুলিয়া ঘাট থেকে ছেড়ে আসে জাজিরার সাত্তার মাদবর নতুন ফেরিঘাটে ।

বিআইডব্লিটিএ শিমুলিয়া নদী বন্দরের নৌ-সংরক্ষণ ও পরিচালন বিভাগের উপ-পরিচালক ওবায়দুল করিম খান বলেন, মঙ্গল মাঝির নতুন ঘাটটির কাজ শুরু হয় ১৯ এপ্রিল। সাতদিনে ঘাটের কাজ শেষ হয়। নতুন ঘাটটির ফলে এখন মঙ্গলমাঝি ঘাটে একসঙ্গে তিনটি ফেরি নোঙর ও যাত্রী-যানবাহন ওঠানামা করতে পারবে। আগে ঘাটটিতে দুটি ফেরি নোঙরের সুযোগ ছিল। মাঝেমধ্যেই আবার একটি নোঙর করলে আরেকটি নোঙরের করার জন্য অপেক্ষা করতে হতো। এতে যানবাহনকে বেশি সময় ঘাটে অপেক্ষা করতে হতো। আসন্ন ঈদে যানবাহনের সংখ্যা বাড়বে। তাই নতুন ঘাট স্থাপন করা হয়েছে। নতুন ঘাটটিতে মিডিয়াম, কে-টাইপ ও ডাম্প ফেরি নোঙর করছে। ফলে ফেরি চলাচলে আরও গতি আসবে। ঘাটে যানবাহন নিয়ে যাত্রীদের বেশি সময় অপেক্ষা করতে হবে না। এছাড়া এই রুটে দিনে-রাতে মোট ৮টি ফেরি চলাচল করছে। আরও দুটি ফেরি যুক্ত করার পরিকল্পনা চলছে। তিনি বলেন, পদ্মা সেতু এড়িয়ে শিমুলিয়া-মঙ্গল মাঝি ও বাংলাবাজার-শিমুলিয়া নৌ-রুটে ২৪ ঘণ্টা ফেরি সচল থাকবে।

ঘাট এলাকার বাসিন্দা কাজি মো. বাচ্চু ও জামাল হোসেন ফকির বলেন, আগে একটি ফেরি ঘাট ছিল। এতে আমাদের সড়কটিতে যানজট লেগেই থাকতো। নতুন আরেকটি ফেরি ঘাট হওয়া যানজট কমেছে। এতে যাত্রী, গাড়ির ড্রাইভার ও আমাদের জন্য ভালো হয়েছে।

এদিকে, ফেরির পাশাপাশি মঙ্গল মাঝির ঘাটে ২০টি লঞ্চ ও ২৩টি স্পিডবোট সচল রয়েছে বলে জানা গেছে।

শেষ দিনের টিকিট পেতে কমলাপুরে ঘরমুখো মানুষের ভিড়

ঢাকাঃ পবিত্র ঈদ-উল-ফিতর উপলক্ষে ঘরমুখো যাত্রীদের জন্য এবারের শেষ দিনের মতো রাজধানীর কমলাপুর রেলস্টেশনে অগ্রিম টিকিট বিক্রি চলছে। বুধবার (২৭ এপ্রিল) সকাল ৮টা থেকে টিকিট বিক্রি শুরু হয়। আজ পঞ্চম দিনে দেওয়া হচ্ছে আগামী ১ মের টিকিট।

আজও স্টেশনে রয়েছে টিকিট প্রত্যাশীদের উপচেপড়া ভিড়। শেষ দিনে টিকিট সংগ্রহের জন্য ঘরমুখো মানুষের আপ্রাণ প্রচেষ্টা। বুধবার ট্রেনের টিকিট না পেলে খুঁজতে হবে বিকল্প উপায়।

১ মের টিকিট পেতে কমলাপুরে গতকাল বিকাল থেকেই মানুষের লাইনে সিরিয়াল দেওয়া শুরু করে। প্রতিটি কাউন্টারের সামনে মানুষের দীর্ঘ লাইন। এই লাইনে কেউ দাঁড়িয়েছেন গতকাল বিকেলে, সন্ধ্যায়, রাতে, কেউবা আজ ভোরে এসে যুক্ত হয়েছেন। টিকিট বিক্রি শুরু হওয়ার সময় এই লাইন আরো দীর্ঘ হয়ে একে বেঁকে বাহিরের রাস্তায় চলে গেছে।

বুধবার (২৭ এপ্রিল) সকালে কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন এলাকা ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে।

স্টেশন ঘুরে দেখা যায়, আগে থেকেই যাত্রীরা নিজ উদ্যোগে লাইনে দাঁড়ানোর সিরিয়াল লিখে রেখেছেন। সবাই যাতে সিরিয়াল মেনে টিকিট নিতে পারেন এজন্যই তারা এমনটি করেছেন। এ কাজে তাদের সহযোগিতা করছেন রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনী বা আরএনবি। লাইনের বাইরে কেউ যেতে চাইলেই পেছন থেকে অন্যরা চিৎকার করে বাধা দিচ্ছেন। এতে কেউ লাইনের আগে যেতে সাহস করছেন না।

আজ প্রধানমন্ত্রীর ঈদ উপহারের ঘর পাচ্ছেন ৩৩ হাজার পরিবার

ঈদের আগেই ৩৩ হাজার পরিবারকে ঈদের আনন্দ উপহার দিচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আজ মঙ্গলবার (২৬ এপ্রিল) প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে দেশের চারটি উপজেলায় ভার্চুয়ালি যুক্ত হবেন তিনি। এ সময় আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের আওতায় তৃতীয় ধাপে আরও ৩২ হাজার ৯০৪টি বাড়ি‌ হস্তান্তর করা হবে গৃহহীন ও ভূমিহীন পরিবারের মধ্যে। এতে এ পর্যায়ে প্রায় দেড় লাখেরও বেশি মানুষ ঈদের আগেই প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া ঈদ আনন্দ পাবেন উপহার হিসেবে।

রোববার (২৪ এপ্রিল) প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সিনিয়র সচিব তোফাজ্জল হোসেন মিয়া এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ফরিদপুরের নগরকান্দা উপজেলার কাইচাইল ইউনিয়নের পোড়াদিয়া বালিয়া আশ্রয়ণ প্রকল্প, বরগুনা সদর উপজেলার গৌরিচন্না ইউনিয়নের খাজুরতলা আশ্রয়ণ প্রকল্প, সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার খোকশাবাড়ী ইউনিয়নের খোকশাবাড়ী আশ্রয়ণ প্রকল্প এবং চট্টগ্রামের আনোয়ারার বারখাইন ইউনিয়নের হাজিগাও আশ্রয়ণ প্রকল্পে সরাসরি গণভবন থেকে যুক্ত হবেন।

তোফাজ্জল হোসেন মিয়া জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মুজিববর্ষ উপলক্ষে ঘোষণা দিয়েছেন যে বাংলাদেশের কোনো মানুষ যাতে ভূমিহীন, গৃহহীন না থাকে। সেজন্য তিনি দুই শতক জমির ওপর দুই রুম বিশিষ্ট একটি ঘর উপহার দিচ্ছেন। এসব ঘরের ডিজাইন প্রধানমন্ত্রী নিজেই প্রণয়ন করেছেন।

তিনি আরও বলেন, প্রথম পর্যায়ে ২০২১ সালের ২৩ জানুয়ারি ৬০ হাজার ১৯১টি ঘর, ২০ জুন ৫৩ হাজার ৩০০টি ঘর হস্তান্তর করা হয়েছে। প্রথম ও দ্বিতীয় পর্যায়ে নির্মিত মোট ঘরের সংখ্যা ১ লাখ ১৭ হাজার ৩২৯টি। তৃতীয় পর্যায়ে নির্মাণাধীন একক ঘরের সংখ্যা ৬৫ হাজার ৬৭৪টি। এর মধ্যে ৩২ হাজার ৯০৪টি হস্তান্তর হবে।

সিনিয়র সচিব আরও জানান, যে ঘর দেওয়া হচ্ছে এগুলো স্বামী-স্ত্রীর যৌথ নামে দেওয়া হচ্ছে। যার স্বামী নেই সেক্ষেত্রে স্ত্রীর নামে দেওয়া হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী প্রায় ৩৩ হাজার ঘর হস্তান্তর করবেন তাতে প্রায় দেড় লাখ মানুষ যাদের একটি ঠিকানা ছিল না, দাঁড়ানোর জায়গা ছিল না, তারা একদিনে আশ্রয় পাবে।

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মহাপরিচালক (প্রশাসন) মো. আহসান কিবরিয়া সিদ্দিকি, আশ্রয়ণ প্রকল্প-২ এর প্রকল্প পরিচালক আবু ছালেহ মোহাম্মদ ফেরদৌস খান (যুগ্ম সচিব) প্রমুখ।

জানা গেছে, মুজিববর্ষ উপলক্ষে একটি পরিবারও গৃহহীন ও ভূমিহীন থাকবে না— প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এমন ঘোষণার পর থেকে যাদের নিজস্ব জমি নেই, ঘর নেই তাদের জমি ও ঘর দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হয়। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় আশ্রয়ণ প্রকল্প-২ অধীনে এই বাড়ি নির্মাণ করা হচ্ছে। এসব ঘর নির্মাণ করা হচ্ছে সরকারি খাস জায়গা কিংবা দখল হওয়া জায়গা দখলমুক্ত করে। ইতোমধ্যে দেশের আট বিভাগে বিপুল পরিমাণ বেদখল হওয়া সরকারি খাস জমি উদ্ধার করা হয়েছে। উদ্ধার করা এই জমির মূল্য প্রায় ২ হাজার ৯৬৭ কোটি টাকা। কয়েকটি আশ্রয়ণ প্রকল্প ঘুরে দেখা গেছে, ঘরগুলো বেশ মজবুতভাবে নির্মাণ করা হচ্ছে। ঘরসহ বাড়ি যাদের দেওয়া হবে, আগেই তাদের বলে দেওয়া হয়েছে। এতে করে ঘরগুলো সঠিক তদারকির সুযোগ পাচ্ছেন ভূমিহীনরা।

শিল্প কলকারখানাসহ প্রতিটি ভবনে অগ্নি নির্বাপন ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে : প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, শিল্প কলকারখানাসহ প্রতিটি ভবন, যেখানে অফিস-আদালত, স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়,  বিভিন্ন ইনস্টিটিউশন, শপিং মল, বিনোদন কেন্দ্র, সিনেমা হল, প্রতিটি ক্ষেত্রেই অগ্নি নির্বাপন ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে।
তিনি বলেন, বর্তমান সরকার জনগণের ভাগ্যোন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছে। দেশ এগিয়ে যাচ্ছে। এ জন্য প্রতিটি ক্ষেত্রে অগ্নিনির্বাপন ব্যবস্থা থাকাটা অত্যন্ত জরুরী।
তিনি বলেন, অঅমাদেরকে জলাধারগুলো সংরক্ষণ করতে হবে। পাশাপাশি বৃষ্টির পানি সংরক্ষণেরও ব্যবস্থা নিতে হবে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ সকালে দেশের বিভিন্ন স্থানে ৪০টি নবনির্মিত ফায়ার স্টেশনের উদ্বোধনকালে দেয়া ভাষণে এসব কথা বলেন।
তিনি গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে রাজধানীর ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তর ভবনে অনুষ্ঠিত মূল অনুষ্ঠানে ভাচ্যুয়ালি অংশগ্রহণ করেন। উদ্বোধন হওয়া ৫টি বিভাগের ২৫টি জেলার ৩৯টি উপজেলার ৪০টি ফায়ার সার্ভিস স্টেশনও ভার্চ্যুয়ালি অনুষ্ঠানে সংযুক্ত ছিল।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিভিন্ন এলাকায় যে সব প্রতিষ্ঠান গড়ে ওঠে সেখানেও অগ্নিনির্বাপনের ব্যবস্থাটা থাকতে হবে।
তিনি বলেন, যারা আমাদের উন্নয়ন কতৃর্পক্ষ এবং যারা স্থাপত্যবিদ বা প্রকৌশলী যারা ডিজাইন বা সবকিছু করেন তাদেরকে লক্ষ্য রাখতে হবে নতুন কোন প্রকল্প গ্রহণ করলে সেখানে অগ্নিনির্বাপনের আধুনিক ব্যবস্থা যেমন নিশ্চিত করতে হবে পাশাপাশি কখনও আগুন লেগে গেলে সেটা নির্বাপনে পর্যাপ্ত পানির ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে, জলাধারগুলো সংরক্ষন করতে হবে।
জলাধার ভরাট করে বক্স কালভার্ট করাটা ঠিক নয় উল্লেখ করে তিনি ২০০৯ সালে বসুন্ধরা শপিং মলের টাওয়ার অংশে লাগা অগ্নিকান্ডের কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে বলেন,  এক সময় এই পাস্থপথের পুরো এলাকাটাই বিল ছিল, যেখানে বস্ন্ধুরা শপিং মল তৈরি হয়েছে। আজকে সেখানকার জলাধার ভরাট করে বক্স কালভার্ট করে পুরো এলাকার জলাধার বিলীন করে ফেলায় সেদিনের অগ্নিকান্ডে আগুন নেভানোর জন্য হোটেল সোনারগাঁও’র সুইমিং পুল থেকে  দমকল কর্মীদের পানি সরবরাহ নিশ্চিত করতে হয়েছে।
তিনি দুর্গত এলাকায় যেন দমকল বাহিনীর গাড়ি পৌঁছতে পারে, সেজন্য রাস্তার প্রশস্ততার পাশাপাশি পানির সহজ প্রাপ্যতা নিশ্চিত করার নির্দেশ দেন।
আমাদের দমকল বাহিনীর এখন ২০ তলা পর্যন্ত অগ্নিনির্বাপন সক্ষমতা রয়েছে এবং ক্রমেই এই সক্ষমতা বৃদ্ধি পাচ্ছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বহুতল ভবন নির্মাণের সময় দুর্ঘটনা ঘটলে সেখান থেকে উদ্ধার পাবার সম্ভাবনা সম্পর্কে সকলকে নিশ্চিত হয়েই নির্মাণ পরিকল্পনা করার পরামর্শ দেন। এজন্য নিয়মিত অগ্নি নির্বাপন মহড়ার আয়োজন এবং বহুতল ভবনে খোলা বারান্দা রাখার ওপরও গুরুত্বারোপ করেন তিনি।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান এবং স্বরাষ্ট্র মন্ত্রনালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগের সচিব মো. মোকাব্বির হোসেন অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন। ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো.সাজ্জাদ হোসাইন সূচনা বক্তব্য প্রদান করেন।
অনুষ্ঠানে দমকল বাহিনীর আধুনিকায়ন এবং নবনির্মিত ৪০টি ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের ওপর একটি ভিডিও চিত্রও প্রদর্শিত হয়।

দ্বিতীয় দিনে ট্রেনের অগ্রিম টিকিট বিক্রি শুরু

পবিত্র ঈদ-উল-ফিতর উপলক্ষে ঘরমুখো যাত্রীদের জন্য দ্বিতীয় দিনের মতো রাজধানীর কমলাপুর রেলস্টেশনে অগ্রিম টিকিট বিক্রি শুরু হয়েছে। রোববার (২৪ এপ্রিল) সকাল ৮টা থেকে টিকিট বিক্রি শুরু হয়। আজ দেওয়া হচ্ছে আগামী ২৮ এপ্রিলের টিকিট। আজও স্টেশনে রয়েছে টিকিট প্রত্যাশীদের উপচেপড়া ভিড়।

২৮ এপ্রিলের টিকিট পেতে কমলাপুরে গতকাল শনিবার বিকাল থেকেই মানুষের লাইনে সিরিয়াল দেওয়া শুরু করে। প্রতিটি কাউন্টারের সামনে মানুষের দীর্ঘ লাইন। এই লাইনে কেউ দাঁড়িয়েছেন গতকাল বিকেলে, সন্ধ্যায়, রাতে, কেউবা আজ ভোরে এসে যুক্ত হয়েছেন। টিকিট বিক্রি শুরু হওয়ার সময় এই লাইন আরও দীর্ঘ হয়ে একে বেঁকে বাহিরের রাস্তায় চলে গেছে।

এদিকে ইন্টারনেটেও ই-টিকিটিংয়ের মাধ্যমে অগ্রিম টিকিট বিক্রি সকাল ৮টা থেকে শুরু হয়েছে।

এর আগে শনিবার (২৩ এপ্রিল) সকাল ৮টা থেকে দেওয়া হয় ২৭ এপ্রিলের টিকিট। ‘টিকিট যার ভ্রমণ তার’ নিশ্চিত করতে যাত্রীদের এনআইডি বা জন্ম নিবন্ধন সনদের ফটোকপি কাউন্টারে প্রদর্শন করে টিকিট কিনতে হচ্ছে। একজন যাত্রী একসঙ্গে সর্বোচ্চ ৪টি টিকিট কিনতে পারবেন। ঈদের অগ্রিম বিক্রিত টিকিট ফেরত নেওয়া হবে না।

যাত্রীর চাপ কমানোর লক্ষ্যে ঢাকা শহরের ৫টি কেন্দ্রে টিকিট বিক্রি করা হচ্ছে। স্থানগুলো হলো- কমলাপুর, ঢাকা বিমানবন্দর, তেজগাঁও, ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট ও ফুলবাড়িয়া (পুরাতন রেলওয়ে স্টেশন)।

বগুড়ায় পুলিশ কনস্টেবল পদে ১২০ টাকা খরচ করে চাকরি পেলন ৯৪ জন

১২০ টাকা খরচ করে বগুড়ায় পুলিশ কনস্টেল পদে চাকরি পেলন ৯৪ জন নারী-পুরুষ । বুধবার রাত ১০ টায় বগুড়া পুলিশ লাইন্স অডিটোরিয়ামে কনস্টেবল পদে ফলাফল ঘোষণা করেন বগুড়া জেলা পুলিশ সুপার সুদীপ কুমার চক্রবর্ত্তী। নাম ঘোষণার পর সমবেত নতুন নিয়োগ পাওয়া নারী-পুরুষের জয় বাংলা ধ্বনীতে পুলিশ লাইন্স অডিটোরিয়াম প্রকম্পিত করে তোলেন।

কনস্টেবল পদে এবছর শারীরিক ও মেধা অনুসারে উত্তীর্ণ হন ৯৪ জন। এর মধ্যে ৮০ জন পুরুষ এবং নারী প্রার্থী ১৪ জন। অবৈধ লেনদেন ছাড়াই নিজেদের মেধা ও শারীরিক যোগ্যতার ভিত্তিতে ১২০ টাকা খরচ করে কৃতকার্য হন। ১২০ টাকার মধ্যে আছে ১০০ টাকার ব্যংক ড্রাফটও ২০ টাকা মোবাইলে এসএমএস খরচ।

বুধবার রাতে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রয়ায় বগুড়া জেলা পুলিশ সুপার সুদীপ কুমার চক্রবর্ত্তী বলেন, “মাত্র ১২০ টাকা খরচ করে এ ৯৪ জন চাকরি নামের সোনার হরিণের দেখা পেল। যারা শুধু মাত্র শারীরিক এবং মেধার যোগ্যতায় চাকরি পেয়েছে। নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু হওয়ার আগেই আমরা অত্যন্ত সতর্কতার সঙ্গে দালাল ও প্রতারক চক্রকে দমন করার চেষ্টা করেছি এবং সক্ষম হয়েছি। সুষ্ঠু, স্বচ্ছ ও সুন্দরভাবে নিয়োগ পরীক্ষা আমরা সম্পন্ন হয়েছে । ইন্সপেক্টর জেনারেল অব পুলিশ ড. বেনজির আহমেদ যে মিশনটি নিয়েছিলেন তা শতভাগ সচ্ছতার মধ্য দিয়ে পুলিশ নিয়োগ পরীক্ষা হয়েছে। জেলা পুলিশ সুপার জানান ,গত ২৯ মার্চ মাত্র একশ টাকা ব্যাংক ড্রাফট করে বগুড়া পুলিশ লাইনে ৩ হাজার ২৬০ জন ট্রেইনি রিক্রুট কনস্টেবল পদে নিয়োগ পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেন। বিভিন্ন ধাপ শেষ করে ৯২৫ জন লিখিত পরীক্ষায় অংশ গ্রহণ করে ২৫৬ পাস করেন। এরপর মৌখিক পরীক্ষা শেষে ৮০ জন পুরুষকে চূড়ান্ত এবং ১৪ জন নারীকে চূড়ান্তভাবে মনোনীত করে ফল প্রকাশ করা হয়।

মেধা তালিকায় উত্তীর্ণ হওয়া পুরুষদের মধ্যে প্রথম স্থান অধিকার করেন শিবগঞ্জের কিচক এলাকার কৃষক হারুন অর রশিদের ছেলে রাব্বী হাসান। তিনিবলেন, “গত বছর এ সময়ে আমি এ পদে পরীক্ষা দিয়ে বাদ পড়েছিলাম। কিন্তু এবার আমার মধ্যে জেদ চাপে এবার আমি উত্তীর্ণ হবো। আমার বাবা একজন কৃষক। এ চাকরির মাধ্যমে আমার বাবা– মা এবং প্রতিবন্ধী বোন ও ছোট ভাইয়ের স্বপ্ন পূরণ করতে পেরেছি।“

নারীদের মধ্যে মেধা তালিকায় প্রথম স্থান অধিকার করেন সুমাইয়া আক্তার আবেগ ভরা কন্ঠে বলেন, “আমার বাবা একজন প্রতিবন্ধী। তিনি কাজ করতে পারেন না। আমাদের অভাবের সংসার। ছোট ভাই পড়াশুনা করলেও অভাবের কারণে সে পড়াশুনা ছেড়ে রাজমিস্ত্রীর কাজ করে সংসার চালায়। আজকে এ অভাবের মধ্য দিয়ে কঠিন মনোবল নিয়ে পড়াশুনা করে আমি সফল হয়েছি। ১২০ টাকায় যে চাকরি হতে পারে তিনি তা বিশ^াস করতে পারেননি।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) আলী হায়দার চৌধুরী, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) আব্দুররশিদ, সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শরাফত ইসলাম, নওগাঁ জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবতাবউদ্দিন, চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ফজল ই খুদাসহ জেলার অন্যান্য পুলিশ কর্মকর্তা।

দুদকের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী কাল : অভিযোগ ও সাজা দুটোই বেড়েছে

দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) ত্রয়োদশ প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী আগামীকাল মঙ্গলবার। নানা কর্মসূচির মধ্য দিয়ে দিবসটি পালন করবে দুদক। সকাল সাড়ে নয়টায় কমিশনের প্রধান কার্যালয় প্রাঙ্গণে জাতীয় পতাকা ও কমিশনের পতাকা উত্তোলন করবেন দুদক চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ।

এছাড়া তিনি সকাল পৌনে দশটায় একই স্থানে শান্তির প্রতীক পায়রা অবমুক্ত, বেলুন ও ফেস্টুন উড়ানো ছাড়াও বেলা ১০টায় বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালা অডিটোরিয়ামে কমিশনের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের দুর্নীতিমুক্ত থেকে দাফতরিক কার্যক্রম পরিচালনায় অঙ্গীকারাবদ্ধ থাকার লক্ষ্যে দুর্নীতিবিরোধী শপথ বাক্য পাঠ করাবেন।

একই স্থানে একই সময় দুর্নীতি দমন কমিশনের চলতি বছরের সার্বিক কার্যক্রম বিষয়ক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. মোহাম্মদ ফরাসউদ্দীন। কেন্দ্রীয় কর্মসূচির সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে কমিশনের ৬টি বিভাগীয় কার্যালয় এবং ২২টি সমন্বিত জেলা কার্যালয়ে একই কর্মসূচি উদযাপন করা হবে।

প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর কর্মসূচি উদযাপন উপলক্ষে কমিশনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের উদ্দেশে দুদক চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ বলেন, দুদকের সব আকাঙ্খা পূরণ হয়নি। আশা ছিল এমন অবস্থার সৃষ্টি হবে যাতে দুর্নীতিপরায়ণ ব্যক্তি বিশেষ করে সরকারি কর্মকর্তারা দুর্নীতি করার অনৈতিক সাহস সম্পূর্ণ হারিয়ে ফেলেন। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে এখনও সে পর্যায়ে যেতে পারেনি দুদক।

তিনি বলেন, কমিশনের বহুমুখী পদক্ষেপ গ্রহণের কারণেই এই প্রতিষ্ঠানের প্রতি জনগণের আস্থা বৃদ্ধি পাচ্ছে। ২০১৫ সাল থেকে ২০১৭ সালে কমিশনে অভিযোগ প্রাপ্তি বৃদ্ধি পেয়েছে প্রায় ৬০ শতাংশ। ২০১৭ সালে মামলার সাজার হার বৃদ্ধি পেয়ে প্রায় ৭০ শতাংশে উপনীত হয়েছে ।

তিনি বলেন, দুদকের সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য কর্মকর্তাদের দেশ-বিদেশে প্রশিক্ষণ দেয়া হচ্ছে। এ বছর কমিশনের নিজস্ব হাজতখানা, সশস্ত্র পুলিশ ইউনিট, গোয়েন্দা ইউনিট, দুদক অভিযোগ কেন্দ্রের হটলাইন ১০৬, রেকর্ড রুম নির্মাণ, সম্পদ পুনরুদ্ধার ইউনিট গঠনসহ বিভিন্ন অবকাঠামো নির্মাণের উদ্যোগ বাস্তবায়ন করা হয়েছে। তিনি এসব কার্যক্রম বাস্তবায়নের জন্য কর্মকর্তাদের অভিনন্দন জানান।

সরকারি অফিসে ৩ লাখ ৬০ হাজার পদ শূন্য

জনপ্রশাসন মন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম জানিয়েছেন, বর্তমানে দেশে সরকারি অফিস, মন্ত্রণালয়, অধিদফতরসমূহে ৩ লাখ ৫৯ হাজার ২৬১টি পদ শূন্য রয়েছে।

সোমবার বিকেলে জাতীয় সংসদে মোরশেদ আলমের (নোয়াখালী-২) প্রশ্নের জবাবে এ তথ্য জানান তিনি। এ সময় মন্ত্রী সংসদে উপস্থিত না থাকায় তার পক্ষে প্রশ্নের জবাব দেন প্রতিমন্ত্রী ইসমত আরা সাদেক।

মন্ত্রী জানান, শূন্য পদ পূরণের লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। সরকারি অফিসে শূন্য পদে লোক নিয়োগ একটি চলমান প্রক্রিয়া। বিভিন্ন মন্ত্রণালয়/বিভাগ এবং এর অধীন সংস্থাসমূহের চাহিদার প্রেক্ষিতে সরকারি কর্ম কমিশনের মাধ্যমে ৮ম, ৯ম, ও ১০-১২ গ্রেডের (১ম ও ২য় শ্রেণি) শূন্য পদে জনবল নিয়োগ করা হয়ে থাকে।

১৩-২০ গ্রেডের (৩য় ও ৪র্থ শ্রেণি) পদে স্ব স্ব মন্ত্রণালয়/বিভাগ/ অধিদফতর/ সংস্থার নিয়োগবিধি অনুযায়ী জনবল নিয়োগ দেয়া হয়। এছাড়া জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সংগঠন ও ব্যবস্থাপনা অনুবিভাগ থেকে ধারাবাহিকভাবে সব মন্ত্রণালয়/বিভাগ/ অধিদফতর/ বিভাগ স্ব স্ব নিয়োগবিধি অনুযায়ী বিভিন্ন পদে জনবল নিয়োগের প্রয়োজনীয় কার্যক্রম গ্রহণ করে থাকে।