আবারও জেট ফুয়েলের দাম বাড়ায় বিপাকে দেশীয় বিমান

অভ্যন্তরীণ বাজারে জেট ফুয়েলের দাম ব্যাপকহারে বেড়ে যাওয়ায় দেশীয় এয়ারলাইন্সগুলোর মারাত্মক ক্ষতির সম্মখীন হওয়ার পাশাপাশি বিশ্বব্যাপী প্রতিযোগিতামূলক বাজার হারানোর সম্ভাবনায় রয়েছে বলে জানিয়েছেন অ্যাভিয়েশন খাত সংশ্লিষ্টরা।

বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের (বিপিসি) সহযোগী প্রতিষ্ঠান পদ্মা অয়েল কোম্পানি লিমিটেড সম্প্রতি জেট ফুয়েলের দাম প্রতি লিটার ১৯ টাকা বাড়িয়েছে।
যা গত ৯ জুলাই থেকে কার্যকর করা হয়েছে।
ফলে এখন প্রতি লিটার জেট ফুয়েলের দাম দাঁড়িয়েছে ১৩০ টাকা।

জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্তের কারণে বিপিসির ওপর চটেছেন অ্যাভিয়েশন খাতের সঙ্গে জড়িতরা। তাদের দাবি, আন্তর্জাতিক বাজারে জেট ফুয়েলের দাম কমেছে।
এ অবস্থায় বিপিসির সিদ্ধান্তের পক্ষে কোনো যুক্তি থাকতে পারে না।

শ্রীলংকায় সুদের হার বৃদ্ধি, আরো বিপদের সতর্কতা

নগদ অর্থ সংকটে থাকা শ্রীলংকায় সুদের হার এক পয়েন্ট বাড়ানো হয়েছে। গত তিন মাসে দ্বিতীয় দফায় সুদের হার বাড়ানো হলো।
এদিকে দেশটির কেন্দ্রীয় ব্যাংক ৮০ শতাংশ মুদ্রাস্ফীতি এবং বেদনাদায়ক মন্দার বিষয়ে সতর্ক করেছে।

শ্রীলংকার ‘দ্য সেন্ট্রাল ব্যাংক’ আমানতের পরিমাণ এবং সুদের হার ১৪.৫ শতাংশ থেকে ১৫.৫ শতাংশ বাড়িয়েছে।

দেশটিতে গত মাসে মুদ্রাস্ফীতির পরিমাণ ছিল ৫৪.৬ শতাংশ।
শ্রীলংকায় খাদ্য ও জ্বালানি সংকটের পাশাপাশি দীর্ঘ বিদ্যুৎ ঘাটতি চলছে। এ অবস্থায় অব্যাহত রয়েছে সরকার বিরোধী বিক্ষোভ এবং তারা প্রেসিডেন্ট গোটাবায়ে রাজাপাকসের পদত্যাগ দাবি করছে।

এদিকে কেন্দ্রীয় ব্যাংক চলতি বছর অর্থনীতি মন্দায় রূপ নিতে পারে বলে সতর্ক করেছে।

প্রধানমন্ত্রী রনিল বিক্রমাসিংহে পার্লামেন্টে বলেছেন, অর্থনীতি সর্বোচ্চ ৭ দশমিক শূন্য শতাংশ সংকুচিত হতে পারে।

দেশবাসীকে বিদ্যুৎ নিয়ে সরকারের আত্মতুষ্টির খেসারত দিতে হচ্ছে : বাংলাদেশ ন্যাপ

সরকারের অব্যবস্থাপনার কারণেই দেশজুড়ে মারাত্মক লোডশেড়িং। দেশবাসীকে বিদ্যুৎ নিয়ে সরকারের অতিকথন ও আত্মতুষ্টির খেসারত দিতে হচ্ছে বলে মন্তব্য করে বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি-বাংলাদেশ ন্যাপ চেয়ারম্যান জেবেল রহমান গানি ও মহাসচিব এম. গোলাম মোস্তফা ভুইয়া বলেছেন, সরকারের ভুল নীতি, জ্বালানিখাতে দুর্নীতি, অব্যবস্থাপনা ও সিস্টেম লসের কারণে আজ বিদ্যুতের এই বেহাল দশা। অথচ সরকারের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিবর্গ দম্ভ করে বলে আসছিলেন যে, শতভাগ বিদ্যুৎ নিশ্চিত করে লোডশেডিং তারা যাদুঘরে পাঠিয়ে দিয়েছেন।

বৃহস্পতিবার (৭ জুলাই) গণমাধ্যমে প্রেরিত এক বিবৃতিতে নেতৃদ্বয় এসব কথা বলেন।

তারা বলেন, কেবলমাত্র ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধ বা আন্তর্জাতিক বাজারের কথা বলে মারাত্মক বিদ্যুৎ ঘাটতির দায় সরকার এড়িয়ে যেতে পারে না। ভর্তুকির নামে প্রতিদিন জনগণের করের কোটি কোটি টাকা অপচয় করেও বিদ্যুৎ পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে সরকারের ব্যর্থতা প্রমানিত।

নেতৃদ্বয় সারা দেশে ঘটা লোডশেডিং নিয়ে তীব্র ক্ষোভ ও উদ্বেগ প্রকাশ করে বিদ্যুৎ পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে জরুরি ভিত্তিতে পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানিয়ে বলেন, সংবিধানের মূল দৃষ্টিভঙ্গিকে উপেক্ষা করে বেসরকারি খাতের প্রাধান্য বৃদ্ধির ফলে কমিশনভোগী ও বিশেষ গোষ্ঠী লাভবান হয়েছে। প্রতিবছর জনগণের হাজার হাজার কোটি টাকা লোপাট হয়েছে ও হচ্ছে। আজ তার পরিণতিতে বিদ্যুৎ সংকট তীব্র হয়ে উঠেছে। সাধারণ মানুষকে দুর্ভোগে পড়তে হচ্ছে। কৃষি, শিল্প উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে। এ পরিস্থিতি চলতে থাকলে দেশ আরেক সংকটে পড়বে।

তারা বিদ্যুৎসহ জ্বালানি খাতের অপরাধীদের চিহ্নিত ও বিচারের দাবি জানিয়ে কোনো কারণে বিদ্যুৎ উৎপাদনে ঘাটতি হলে প্রথমে সরকারের সর্বোচ্চ মহল থেকে সাশ্রয়ী ব্যবহার, এসির ব্যবহার বন্ধ করে দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে হবে। সর্বত্র এসির ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। সাধারণ মানুষ, কৃষি-শিল্পের অগ্রাধিকার বিবেচনায় নিয়ে বিদ্যুৎ বণ্টন নিশ্চিত করতে হবে। একই সাথে বিদুৎ খাতে চুরি, দূর্নীতি, অব্যবস্থাপনা ও সিস্টেম লস কমাতে জরুরি ভিত্তিতে পরিকল্পিত পদক্ষেপ গ্রহণ, চুক্তি অনুযায়ী বিদ্যুৎ দিতে না পারলে কুইক রেন্টাল বিদ্যুৎ প্রকল্পসমূহ বন্ধ করে দিয়ে বিশাল অংকের অর্থ সাশ্রয় করা এবং সে অর্থ বিদ্যুৎ পেতে অন্যত্র ব্যয় করা উচিত।

নেতৃদ্বয় বলেন, জরুরি ভিত্তিতে নবায়নযোগ্য বিদ্যুৎ উৎপাদনের উদ্যোগ গ্রহণ করা এবং তার জন্য এই খাতে প্রয়োজনীয় বিনিয়োগ নিশ্চিত করা। দেশের বৃহৎ বিদ্যুৎ কেন্দ্র সমূহের দ্রুত সংস্কার করে উৎপাদন সক্ষমতা বাড়িয়ে তুলতে হবে। গ্যাস ও তেল উত্তলনে জরুরি ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা এবং এক্ষেত্রে জাতীয় সক্ষমতা বৃদ্ধিকে অগ্রাধিকার প্রদান করা প্রয়োজন। শিল্প উৎপাদন, হাসপাতালসহ জরুরি পরিসেবাসমূহ লোডশেডিং এর বাইরে রাখার ব্যাবস্থা করতে হবে এবং বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সংকট মোকাবিলায় আশু, মধ্যমেয়াদী ও দীর্ঘমেয়াদী সমন্বিত পদক্ষেপ নিতে বিশেষজ্ঞদের নিয়ে অবিলম্বে জাতীয় কমিশন গঠন করা প্রয়োজন।

৫৮ দেশে ৬ হাজারের বেশি মাঙ্কিপক্স রোগী, জরুরি বৈঠকে বসবে ডব্লিউ এইচও

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) জানিয়েছে, বিশ্বের ৫৮টি দেশে ৬ হাজারের বেশি জনের মাঙ্কিপক্স শনাক্ত হয়েছে।

আগামী ১৮ জুলাই থেকে শুরু হতে যাওয়া সপ্তাহে বা তারও আগে এ বিষয়ে আবারও জরুরি বৈঠকে বসবে ডব্লিউএইচওর একটি কমিটি।

মাঙ্কিপক্সের প্রাদুর্ভাবকে জনস্বাস্থ্যের জন্য বৈশ্বিক জরুরি অবস্থা হিসেবে ঘোষণা করা হবে কি না, বৈঠকে সে বিষয়ে পরামর্শ দেওয়া হবে।
জনস্বাস্থ্যের জন্য বৈশ্বিক জরুরি অবস্থা ঘোষণা ডব্লিউএইচওর সর্বোচ্চ স্তরের সতর্কবার্তা।
ডব্লিউএইচওর মহাপরিচালক তেদরোস আধানম গেব্রেয়াসুস এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানিয়েছেন বলে বুধবার রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।

প্রতারকের খপ্পরে পড়ে হজে যেতে পারলেন না ৩০০ জন

প্রতারকের খপ্পরে পড়ে ৩০০ জন এবার হজে যেতে পারলেন না। শেষ ফ্লাইট চলে গেছে গত মঙ্গলবার। কোটা পূরণ হওয়ার পরও তাদের হজে পাঠানোর নামে টাকা হাতিয়ে নেওয়া হয়েছে।এই প্রতারক এজেন্সিগুলো ধর্ম মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে ৩০০ জনের ভিসা করানোর চেষ্টা করলেও সৌদি সরকারের কোটা শেষ হওয়ায় ভিসা পায়নি।

ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, হজে যাওয়ার জন্য টাকা দিয়ে প্রতারণার শিকার হয়েছেন ৩০০-এর মতো হজযাত্রী।

যারা প্রতারণা করেছেন তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। সেই সঙ্গে হজযাত্রীদের কাছ থেকে তথ্য নিয়ে ট্রাভেলস কোম্পানিসহ অন্য যারা জড়িত তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য হজযাত্রীদের হয়ে কাজ করবে ধর্ম মন্ত্রণালয়।

নোয়াখালীতে মায়ের শাড়ি দিয়ে ফাঁস দিল যুবক

নোয়াখালী প্রতিনিধি : নোয়াখালীর সোনাইমুড়ী উপজেলায় মায়ের শাড়ি দিয়ে ফাঁস দিয়ে এক যুবক আত্মহত্যা করেছে। তাৎক্ষণিক নিহতের পরিবার ও পুলিশ এ আত্মহত্যার কোন কারণ জানাতে পারে নি।

নিহত যুবকের নাম টিটু চন্দ্র দাস (১৯)। সে কুমিল্লা জেলার মনোহরগঞ্জ উপজেলার নাওতলা গ্রামের জীবন চন্দ্র দাসের ছেলে।

বৃহস্পতিবার (৭ জুলাই) সকাল মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট নোয়াখালী জেনারলে হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হবে। এর আগে গতকাল বুধবার বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে উপজেলার জয়াগ ইউনিয়নের ছোট কেগনা গ্রামের মোহাম্মদ উল্যার বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে।

বিষয়টি নিশ্চিত করেন সোনাইমুড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো.হারুন অর রশিদ। তিনি বলেন, নিহত যুবকের মা-বোন সোনাইমুড়ী উপজেলায় বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে চাকরি করে। সে মায়ের সঙ্গে উপজেলার ছোট কেগনা গ্রামের মোহাম্মদ উল্যার বাড়ির ভাড়া বাসায় থাকত। প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে বুধবার বিকেলের দিকে নিহত টিটুর পরিবারের কোন সদস্য ঘরে ছিল না । ওই সময় সে বসত ঘরের সিলিং ফ্যানের সঙ্গে মায়ের শাড়ি দিয়ে গলায় ফাঁস দেয়। খবর পেয়ে বসত ঘরের দরজা ভেঙ্গে রাত ৮টার দিকে পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে থানায় এনে রাখে। বৃহস্পতিবার সকালে ময়নাতদন্তের জন্য ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।

ওসি আরো জানায়, এখন পর্যন্ত এই আত্মহত্যার কোন কারণ জানা যায় নি। তবে পুলিশ বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে খতিয়ে দেখছে। এ ঘটনায় সোনাইমুড়ী থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা দায়ের করা হয়েছে।

আজ থেকে হজের আনুষ্ঠানিকতা শুরু

বৈশ্বিক মহামারি করোনার পর আজ বুধবার থেকে বৃহত্তম পবিত্র হজের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়েছে। লাখ লাখ ধর্মপ্রাণ মুসলমান সৌদি আরবের পবিত্র মক্কায় কা’বা তওয়াফের মাধ্যমে হজ কার্যক্রম শুরু করেছেন। এবার করোনার বিধি নিষেধের কড়াকড়ি না থাকায় তাদের বেশীর ভাগই মাস্কবিহীন অবস্থায় হজ কার্যক্রমে যোগ দিয়েছেন।

সম্পূর্ণ টিকাপ্রাপ্ত ১০ লাখ মুসলিম হজ পালনে মক্কায় সমবেত হয়েছেন। তাদের মধ্যে ৮ লাখ ৫০ হাজার বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে এসেছেন। বাকিরা সৌদি আরবের নাগরিক।  মহামারির কারণে দুই বছর সীমিত সংখ্যক লোকের হজ পালনের মাধ্যমে বৃহত্তম হজ অনুষ্ঠানের বিরতির পর এবার ১০ লাখ লোক হজ পালনের সুযোগ পেল।

মক্কায় মসজিদুল হারাম চত্বরে স্বর্ণালী হরফ খচিত কালো কাপড়ে আবৃত পবিত্র কাবাগৃহের ‘তওয়াফ’ এবং অল্লাহর কাছে ক্ষমা ও দোয়া চাওয়ার মাধ্যমে হজের প্রথম আনুষ্ঠানিক কার্যক্রম শুরু হচ্ছে। গোটা বিশ্বের মুসলমানরা এই পবিত্র কা’বার দিকে মুখ করে নামাজ আদায় করেন।

মঙ্গলবার বিকেলে সাদা এহরামের পোশাক পরিহিত নারী ও পুরুষরা কা’বা চত্বরে পাশাপাশি হেঁটে কা’বা শরীফ তওয়াফ করেছেন। তাদের বেশীর ভাগেরই মাস্ক ছিল না, যদিও কর্তৃপক্ষ গত মাসে বলেছিল কা’বা চত্বরে মাস্ক পড়া বাধ্যতামূলক।
গত ২০২০ এবং ২০২১ সালের চেয়ে এবারের হজের সমাবেশ অনেক বড় তবে করোনা পূর্ববর্তী স্বাভাবিক হজের চেয়ে ছোট।
২০১৯ সালে হজে প্রায় ২৫ লাখ লোকের সমাবেশ হয়েছে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে মুসলমানরা এই বার্ষিক হজ অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছেন। সামর্থ্যবান প্রত্যেক মুসলিমের জন্য জীবনে একবার হজ পালন করা ইসলামের অবশ্য পালনীয় পাঁচটি স্তম্ভের একটি অন্যতম ভিত্তি।

কিন্তু, করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে নাটকীয়ভাবে হজ যাত্রীদের সংখ্যা হ্রাস করতে বাধ্য হয় সৌদি সরকার। ২০২১ সালে সম্পূর্ণ ভ্যাকসিন নেয়া মাত্র ৬০ হাজার সৌদি নাগরিক এবং সৌদিতে বসবাসকারী লোকদের হজ পালনের সুযোগ দেয়া হয়। যা ২০২০ সালের চেয়ে কয়েক হাজার বেশী।

পবিত্র মক্কা নগরী এবং আশপাশের এলাকায় পাঁচদিনের বেশী সময়ে নিয়ম অনুযায়ী হজ পালন অনুষ্ঠান সম্পন্ন হবে।
আরাফাত ময়দানে সমবেত হওয়ার মূল অনুষ্ঠানের আগে বৃহস্পতিবার হাজীগণ মসজিদুল হারাম থেকে পাঁচ কিলোমিটার দূরে মিনায় যাবেন। আরাফাত ময়দানে সমবেত অনুসারীদের সামনে হযরত মোহাম্মদ (সা:) তাঁর বিদায় হজের ভাষণ দিয়েছিলেন।
মঙ্গলবার মক্কায় তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছাড়িয়েছে। মসজিদুল হারামের ভেতরে চিকিৎসা সেবাদানকারীরা বিভিন্ন জায়গায় সার্বক্ষণিক প্রস্তুত রয়েছেন এবং হাজীদের প্রয়োজনীয় সেবা দিতে স্বেচ্ছাসেবকরা হুইল চেয়ার নিয়ে দীর্ঘ লাইনে অপেক্ষমান দেখা যায়।

কর্তৃপক্ষ অনেকগুলো স্বাস্থ্য সেবা দান ব্যবস্থা প্রস্তুত রেখেছে। ভ্রাম্যমান ক্লিনিক এবং অ্যাম্বুলেন্স প্রস্তুত রেখেছে।

বিদ্যুৎ সাশ্রয়ে আলোকসজ্জা না করার জন্য দেশবাসীর প্রতি আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিদ্যুৎ সাশ্রয়ের লক্ষ্যে সারা দেশে বিভিন্ন সামাজিক অনুষ্ঠান, কমিউনিটি সেন্টার, শপিং মল, দোকানপাট, অফিস ও বাসাবাড়িতে আলোকসজ্জা না করার জন্য দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।

তিনি আজ গণভবনে বাংলাদেশ হাই-টেক পার্ক পরিচালনা পর্ষদের সঙ্গে দ্বিতীয় বৈঠক শুরু করার আগে সেখানে উপস্থিত উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের সাথে আলোচনাকালে এ আহ্বান জানান।

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ এবং এর প্রেক্ষিতে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপ কর্তৃক রাশিয়ার ওপর অবরোধ আরোপের কারণে বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য প্রয়োজনীয় জ্বালানীর দাম বৃদ্ধির ফলে তিনি বিদ্যুৎ সাশ্রয়ের লক্ষ্যে আলোকসজ্জা না করার আহ্বান জানিয়েছেন।

প্রধানমন্ত্রীর সহকারী প্রেস সচিব এমএম ইমরুল কায়েস বাসসকে একথা নিশ্চিত করেছেন।

ঈদের ছুটির পূর্বে শ্রমিকদের বেতন-ভাতা পরিশোধ করুন : বাংলাদেশ ন্যাপ

পবিত্র ঈদুল আযহার ছুটির পূর্বে শ্রমিকদের বেতন ও উৎসব ভাতা পরিশোধের জন্য মালিকদের প্রতি আহ্বান এবং অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতে কর্মরত শ্রমিকদের জন্য রাষ্ট্রের পক্ষ থেকে বিশেষ ঈদ ভাতা প্রদানের জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি-বাংলাদেশ ন্যাপ চেয়ারম্যান জেবেল রহমান গানি ও মহাসচিব এম. গোলাম মোস্তফা ভুইয়া।

বুধবার (৬ জুলাই) গণমাধ্যমে প্রেরিত এক বিবৃতিতে নেতৃদ্বয় এ আহ্বান জানান।
তারা বলেন, দেশের অধিকাংশ মানুষ শ্রমজীবী। তারা খুব সামান্য আয়ে দৈনন্দিন জীবন-যাপন করে। বর্তমান বাজারের তুলনায় শ্রমিকের শ্রমমূল্য অতি নগণ্য। ফলে শ্রমজীবী মানুষদের সঞ্চয় বলে কিছু থাকে না। ঈদের সময় সন্তান ও পরিবার-পরিজনের জন্য ভালো খাবার তুলে দেওয়ার জন্য শ্রমিকদেরকে উৎসব ভাতার ওপর নির্ভর করতে হয়। শ্রমিকরা যে উৎসব ভাতার দিকে সারা বছর চেয়ে থাকে সেই উৎসব ভাতা নিয়ে মালিকরা প্রতি বছর টালবাহানা করে। যা দেশের জন্য যেমন লজ্জার ঠিক তেমনিভাবে প্রতিটি শ্রমিকের জন্য কষ্টদায়ক।

নেতৃদ্বয় বলেন, দেশের একটি বৃহৎ অংশ শ্রমিকরা অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতে কর্মরত রয়েছে। এই সকল শ্রমিক উৎসব ভাতা বঞ্চিত। রাষ্ট্রের অর্থনৈতিক চাকা সচল রাখতে প্রাতিষ্ঠানিক খাতে কর্মরত শ্রমিকদের পাশাপাশি অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতে কর্মরত শ্রমিকদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতে কর্মরত শ্রমিক তালিকা প্রণয়নপূর্বক তাদের জন্য রাষ্ট্রীয় কোষাগার থেকে উৎসব ভাতা প্রদান করতে হবে। ভুলে গেলে চলবে না দেশের প্রতিটি শ্রমিকের মুখে হাসি ফোটানো রাষ্ট্রের অন্যতম দায়িত্ব।

তারা বলেন, সিলেট ও উত্তরবঙ্গসহ দেশের একটি বৃহৎ অংশে এখনো ভয়াবহ বন্যা চলছে। বন্যার কারণে অসংখ্য শ্রমিক কর্মহীন অবস্থায় আছে। এই সকল শ্রমিকের জন্য রাষ্ট্রীয় কোষাগার থেকে বিশেষ বরাদ্দ দিতে হবে। বন্যাদুর্গত মানুষের জন্য ত্রাণ কার্যক্রম জোরদার করতে হবে। যতদিন না কর্মহীন শ্রমিক তার কর্মক্ষেত্রে ফিরতে পারছে ততদিন পর্যন্ত তাদের দৈন্দদিন খাবার, ওষুধ ও যাবতীয় খরচের ব্যয়ভার সরকারকেই বহন করতে হবে।

দেশের প্রথম ক্যাম্পাস-ভিত্তিক স্বপ্নের ইনকিউবেটর উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ নির্মাণের অংশ হিসেবে চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (চুয়েট) দেশের প্রথম বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস ভিত্তিক আইটি বিজনেস ইনকিউবেটর উদ্বোধন করেছেন। প্রধানমন্ত্রী চুয়েট ক্যাম্পাসে এক অনুষ্ঠানে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জ্যেষ্ঠ পুত্র শেখ কামালের নামানুসারে ‘চুয়েট শেখ কামাল আইটি বিজনেস ইনকিউবেটর’ উদ্বোধন করেন।

শেখ হাসিনা আজ সকালে তাঁর সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি অনুষ্ঠানে যোগ দেন।অনুষ্ঠানকে কেন্দ্র করে চুয়েট ক্যাম্পাস উৎসবের আমেজ সৃষ্টি হয়। চারদিকে রঙিন আলো জ্বলে ওঠে এবং বিভিন্ন রঙের ব্যানার, ফেস্টুন ও বেলুনও প্রদর্শন করা হয়। এ ছাড়াও, এই ইনকিউবেটর শিল্প এবং শিক্ষার্থীদের মধ্যে সেতুবন্ধন তৈরি করবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা তাদের উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন।

ইনকিউবেটরের লক্ষ্য আইটি উদ্যোক্তাদের বিকাশ এবং ২০৪১ সালের মধ্যে ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ গড়ে তোলার জন্য জ্ঞান-ভিত্তিক অর্থনীতি সম্প্রসারণ করা। কারণ, দেশটি ইতোমধ্যেই ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ ক্যাম্পেইনকে বাস্তবায়ন করেছে।
বিজনেস ইনকিউবেটর, যার স্টার্ট আপ এবং ব্যবসার জন্য একটি সম্পূর্ণ উদ্ভাবনী ইকো-সিস্টেম রয়েছে, যা প্রায় ২২০ উদ্যোক্তা, প্রশিক্ষণার্থী, ফ্রিল্যান্সার এবং সম্ভাব্য স্টার্টআপকে মেন্টরশিপের পাশাপাশি আর্থিক ও লজিস্টিক পরিষেবা প্রদান করবে।

শিল্পের অভ্যন্তরীণ ব্যক্তিরা অভিমত ব্যক্ত করেছেন যে, আইটি বিজনেস ইনকিউবেটর ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ বাস্তবায়নের অন্যতম চাবিকাঠি হবে। কারণ, এটি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী এবং স্নাতকদের দ্বারা উদ্ভাবিত নতুন ধারণাগুলোকে বাস্তবায়িত করার কেন্দ্র এবং সেই সাথে মেধা, বুদ্ধি এবং জ্ঞানের বিবর্তন কেন্দ্র হবে।

ইনকিউবেটরটি বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতকদের নিজেদের উদ্যোক্তা হিসেবে গড়ে তুলতে, বিশ্ববিদ্যালয় এবং আইটি শিল্পের মধ্যে কার্যকর যোগসূত্র স্থাপনের পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুষদ ও শিক্ষার্থীদের জন্য গবেষণা ও উদ্ভাবনী কার্যক্রমের সুযোগ তৈরি করতে সহায়তা প্রদানের দিকেও মনোযোগ দেয়।

চুয়েট ক্যাম্পাসে ১১৩ কোটি টাকা ব্যয়ে ৪ দশমিক ৭ একর জায়গার উপর নির্মিত এটি হবে ডিজিটাল বাংলাদেশ প্রচারাভিযান থেকে দেশকে ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’-এ রূপান্তর করার নতুন ধাপ, যা ২০০৮ সালে বর্তমান সরকারের নির্বাচনী ইশতেহারে প্রথম উন্মোচন করা হয়েছিল।

ইনকিউবেটরে বিটিসিএলের মাধ্যমে উচ্চ গতির ইন্টারনেট সংযোগ রয়েছে। জুলাই ২০১৭ থেকে জুন ২০২২ পর্যন্ত বাস্তবায়িত এই অনন্য প্রকল্পে ৫০ হাজার বর্গফুট  জায়গাসহ ১০ তলা পর্যন্ত একটি ডিম্বাকৃতি ইনকিউবেশন বিল্ডিং অন্তর্ভুক্ত। প্রতিটি ফ্লোরে ৫ হাজার বর্গফুট আছে। এ ছাড়া প্রধানমন্ত্রী শেখ জামাল ও রোজী জামালের নামে দু’টি পৃথক চারতলা ডরমেটরিও উদ্বোধন করেন। ভবন দ’ুটির মোট আয়তন ৪০ হাজার বর্গফুট এবং প্রতিটি ডরমেটরিতে ৪০টি কক্ষ রয়েছে।

এ ছাড়াও, একটি ৬ তলা বহুমুখী প্রশিক্ষণ ভবন রয়েছে, যার মোট ফ্লোর এলাকা ৩৬ হাজার বর্গফুট। প্রতিটি ফ্লোর ৬ হাজার বর্গফুটের।

ইনকিউবেশন ভবনটিতে একটি স্টার্টআপ জোন, ইনোভেশন জোন, ইন্ডাস্ট্রি-একাডেমিক জোন, ব্রেনস্টর্মিং জোন, একটি এক্সিবিশন সেন্টার, একটি ই-লাইব্রেরি জোন, একটি ডেটা সেন্টার, রিসার্চ ল্যাব, ভিডিও কনফারেন্সিং রুম এবং একটি কনফারেন্স রুম রয়েছে।

এছাড়াও ব্যাংক এবং আইটি ফার্ম, সাইবার ক্যাফে, ফুড কোর্ট, ক্যাফেটেরিয়া, রিক্রিয়েশন জোন, ডিসপ্লে জোন এবং মিডিয়া রুমগুলোর জন্য আলাদা কর্নার থাকবে।

অতিরিক্তভাবে, বহুমুখী প্রশিক্ষণ ভবনে ২৫০ জন ধারণ ক্ষমতার একটি অত্যাধুনিক অডিটোরিয়াম এবং ৫০ জন ধারণ ক্ষমতার চারটি কম্পিউটার/সেমিনার কক্ষ রয়েছে। একটি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ল্যাব, একটি মেশিন লার্নিং ল্যাব, একটি অপটিক্যাল ফাইবার ব্যাকবোন, একটি সাবস্টেশন এবং একটি সোলার প্যানেলও স্থাপন করা হচ্ছে।