ঢালিউডের এমন একজন অভিনেতা, যিনি এমন কোন দর্শক নেই যার ভালোবাসা পাননি। কিন্তু আচমকা তার চির বিদায়ে যেন নড়েচড়ে বসেছিল গোটা দেশবাসি।
এমনকি তার মৃত্যু মেনে নিতে পারেননি অনেকেই। এখনও তাকে স্মরণ করে স্মৃতিচারন করে থাকেন এমন দর্শকদের সংখায় কিন্তু কম নয়।
আর এই অভিনেতার ভক্ত যারা আছেন, তাদের জন্য রয়েছে সুখবর। কারন শেষবারের মতো নিজের পছন্দের নায়ককে ফের বড় পর্দায় দেখার দেখতে চলেছে অনুরাগীরা। অর্থাৎ মুক্তি পেতে চলেছে এই প্রয়াত অভিনেতার শেষ সিনেমা।
দর্শক নিশ্চয়ই ভাবছেন কোন নায়কের কথা বলা হচ্ছে? যার কথা বলছি, তিনি আর কেউ নন, বাংলাদেশের জনপ্রিয় নায়ক আসলাম তালুকদার মান্না। তার মৃত্যুর প্রায় দেড় দশক পর মুক্তি পেতে চলেছে মান্নার অসমাপ্ত একটি সিনেমা।
১৫ বছর আগে, হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে না ফেরার দেশে পাড়ি জমান চিত্রনায়ক মান্না। যাওয়ার আগে কাজ করছিলেন ‘জীবন যন্ত্রণা’ নামক সিনেমাটির। তখন অবশ্য এটির নাম ছিল ‘লীলামন্থন’। পরে সেন্সর বোর্ডের আপত্তির কারণে নাম পাল্টে ফেলা হয় মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক এই সিনেমাটির।
সিনেমাটি নির্মাণ করেছেন জাহিদ হোসেন। জানা গেছে, সিনেমাটির কাজ শুরু হয়েছিল ২০০৫ সালে। তখন সিনেমাটির নাম ছিল ‘লীলামন্থন’। সিনেমার কিছু অংশের কাজ বাকি থাকতেই মারা যান নায়ক মান্না।
ছবিটির পরিচালক জাহিদ হোসেন জানান, সিনেমাটির শেষ দৃশ্য ও ডাবিংয়ের কাজ শেষ করে যেতে পারেননি মান্না। এর আগেই পৃথিবী থেকে চিরবিদায় হন তিনি। মূলত এ কারণে থমকে যায় সিনেমার কাজ।
পরে ডামি ব্যবহার করে গ্রেনেড হামলায় তার শহিদ হওয়ার দৃশ্যধারণ করা হয়। মান্নার অংশের আংশিক ডাবিং করেন অভিনেতা রাতিন।
পরবর্তীতে সিনেমার কাজ শেষ করে ২০১১ সালে সেন্সর বোর্ডে জমা দেওয়া হয়। কিন্তু ‘লীলামন্থন’ নামের জন্য সিনেমাটি আটকে যায়।
এছাড়াও বেশ কয়েকবার মুক্তি দিতে চাইলেও নানা জটিলতায় আলোর মুখ দেখেনি ছবিটি। মান্নার মৃত্যুর প্রায় এক দশক আটকে থাকার পর অবশেষে নাম পরিবর্তন করে ছাড়পত্র পেল এই সিনেমা।
‘জীবন যন্ত্রণা’ প্রযোজনা করেছেন খোরশেদ আলম খসরু। তিনি বলেন, ২০২১ সালের অক্টোবরের শেষ সপ্তাহে সেন্সর বোর্ড সিনেমাটি দেখেছে।
মুক্তিযুদ্ধের গল্পে নির্মিত এই সিনেমা মুক্তিতে এখন আর কোনো বাধা নেই। সবকিছু ঠিক থাকলে আগামী ১৫ ডিসেম্বর প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পাবে সিনেমাটি।
মুক্তিযুদ্ধের সময়ের একদল যৌনকর্মীর মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে অবস্থান নেওয়ার গল্প নিয়ে নির্মিত হয়েছে ‘জীবন যন্ত্রণা’। এতে বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেছেন মৌসুমী, পপি, শাহনূর, মুক্তি, দীঘি, বাপ্পারাজ, আলীরাজ, আনোয়ারা, শহিদুল আলম সাচ্চু, মিশা সওদাগরসহ আরও অনেকে।
এর আগে অমর নায়ক সালমান শাহ মৃত্যুর আগে অসমাপ্ত কিছু সিনেমাতে কাজ করেছিল। তার মৃত্যুর ফলে অসমাপ্ত ছিল সিনেমার কাজ।
সালমান শাহ–র অসমাপ্ত একটি ছবি ছিল উত্তম আকাশ পরিচালিত ‘কে অপরাধী।’ এ ছবিতে সালমান কিছু অংশের কাজ করে গিয়েছিল। সালমানের মৃত্যুর পর ছবিটি নতুন করে শুরু করা হয় ওমর সানী–কে নায়ক করে।
এছাড়া মনতাজুর রহমান আকবর পরিচালিত ‘কুলি’ ছবিতেও সালমান কিছু কাজ করে গিয়েছিল। এ ছবিটিও পরে নতুন করে ওমর সানীকে দিয়ে করানো হয়।
এ দুটি বাদে সালমানের কাজ করার কথা ছিল এমন দুটি ছবি ‘মধুর মিলন’ ও ‘অধিকার চাই’-তেও ওমর সানী নায়ক ছিল পরে। বলা যায় সালমানের অসমাপ্ত ও কাজ করার কথা ছিল এমন ছবির বেশিরভাগ নায়কই ওমর সানী।
কিন্তু প্র্যাত নায়ক মান্নার সিনেমাতে অন্য কোন অভিনেতাকে আর কাজ করতে হয়নি। কারন অভিনয়টা শেষ করে রেখে গিয়েছিলেন তিনি। তাই ডাবিংয়ের মধ্য দিয়েই শেষ হয়েছে অসমাপ্ত সিনেমার কাজ। সেই সিনেমাতে শেষবারের মতো নায়ক মান্নাকে দেখবেন ভক্তরা।
Leave a Reply