গোটা বিশ্বজুড়ে মানুষ জড়িয়ে আছে এমনই একটি অ্যাপ ফেসবুক। বলা যায়, এই অ্যাপের মধ্য দিয়েই ঘন্টার পর ঘন্টা সময় কাটে মানুষের। অনেকেই আবার আছেন যারা এই ফেসবুকফ্রিক। অর্থা এই অ্যাপে আসক্ত। আর তাদের জন্যই চলে এসেছে দুঃসংবাদ। কারন এখন থেকে আর ফ্রিতে নয়, বরং টাকা দিয়ে চালাতে হবে ফেসবুক।
শুধু ফেসবুকই নয়, পাশাপাশি ইনস্টাগ্রাম চালানোর জন্য টাকা দিতে হবে অ্যাপ ব্যবহারকারীদের। আর এমনই পেইড সিস্টেম পরিকল্পনা করেছে মেটা।
প্রশ্ন আসতে পারে, হুট করেই কেন সামনে এসেছে এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে মেটা। এই পরিকল্পনায় বাংলাদেশের নাম নেইতো?
আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, বিভিন্ন আইনি জটিলতার কারণে ইউরোপীয় ইউনিয়নে (ইইউ) ব্যবসা করা কঠিন হয়ে পড়েছে মেটার। এ সমস্যা সমাধানে নতুন এক উদ্যোগ নিতে যাচ্ছে প্রতিষ্ঠানটি।
ইইউর দেশগুলোতে দুই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক ও ইনস্টাগ্রামে পেইড সিস্টেম চালু করার পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে মেটা। এক প্রতিবেদনে এমনটাই বলছে মার্কিন সংবাদমাধ্যম নিউইয়র্ক টাইমস।
বর্তমান সময়ে ফেসবুক ব্যবহারকারীদের চোখে যেই বিষয়টি সর্বাধিক চোখে পড়ে সেটি হচ্ছে বিজ্ঞাপন। যেকোন ভিডিও কিংবা রিলস দেখার ক্ষেত্রে কিংবা স্ক্রল করতে গেলেই হরহামেশাই ইচ্ছা থাকুক আর না থাকুন বিজ্ঞাপন দেখতে হচ্ছে।
কিন্তু জানা গেছে, বিজ্ঞাপনের কারণে অনেকেই ফেসবুক ও ইনস্টাগ্রাম চালাতে গিয়ে বিরক্ত হন। আর এই কথা ভেবেইতো অনেক আগেই পেইড সিস্টেম চালু করেছিল ইউটিউব। এমনকি বাংলাদেশেও এই ফিচার যুক্ত হয়েছে।
তাই এবার ইইউর দেশগুলোতে একই পথে হাঁটতে যাচ্ছে মেটা। অনেকদিন দরেই এমন চিন্তা থাকলেও অবশেষে এখন পরিকল্পনা করেই ফেলেছে সংস্থাটি।
মেটার উচ্চপদস্থ তিনজন কর্মকর্তার বরাতে মার্কিন সংবাদমাধ্যম নিউইয়র্ক টাইমস বলছে, সরকারি বিভিন্ন নীতির কারণে বিভিন্ন দেশে বিভিন্ন উপায়ে ব্যবসা করতে হচ্ছে। আমেরিকায় যে নিয়মে সহজেই ব্যবসা করা যাচ্ছে, ইউরোপে তেমনভাবে করা যাচ্ছে না।
আর তাই, নিজেদের ব্যবসাকে সফল রাখতেই পেইড সিস্টেম এর উদ্যোগ হাতে নিয়েছে মেটা। যার ফলে এখন থেকে ফেসবুক চালাতে গুনতে হবে টাকা। তবে কবে নাগাদ এই ফিচার যুক্ত হবে, বিষয়টি এখন পর্যন্ত মেটার কোন কর্মকর্তা জানাননি।
এই ফিচার আনা হলে নতুন মাত্রা যুক্ত হবে মেটায়। নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ পরিশোধ করে এই ফিচার নিলে ফেসবুক ও ইনস্টাগ্রাম ব্যবহারকারীরা অ্যাপে আর কোনো ধরনের বিজ্ঞাপন দেখতে পাবেন না।
পেইড সিস্টেম চালু থাকলেও ফ্রি ফেসবুক ও ইনস্টাগ্রাম চালানোর ব্যবস্থাও রাখবে মেটা। এছাড়া নতুন ফিচার পেতে কী পরিমাণ অর্থ খরচ করতে হবে, এ ব্যাপারেও মেটার এই তিন কর্মকর্তা তেমন কিছুই জানাননি।
মূলত বিজ্ঞাপনের কারণেই ইউরোপে একের পর এক মামলা হচ্ছে মেটার নামে। ফলস্বরুপ, কোটি কোটি ডলার গচ্ছা যাচ্ছে সংস্থাটির। তাই লোকসান থেকে ঘুরে উঠতেই নতুন পথে মেটা।
কিন্তু ব্যবহারকারীরা যদি বিজ্ঞাপন দেখতে না চান, তবে অর্থ খরচ করে বা ফেসবুক সাবস্ক্রাইব করে ফেসবুক চালাতে হবে। কিন্তু রাজি হবেন কয়জন?
অনেকেই হয়তো টাকা খরচ করে ফেসবুক চালাতে রাজি হবে না। ফেসবুক কর্তৃপক্ষও সেটি জানে। তাই বিষয়টি নিয়েও পরীক্ষা–নিরীক্ষা শুরু করেছে ফেসবুক কর্তৃপক্ষ।
কারন এখন ফেসবুক ব্যবহার করতে টাকা লাগে না বলে ফেসবুক ব্যবহারকারী বাড়ছে। কিন্তু অর্থের বিনিময়ে ফেসবুকের বিশেষ সংস্করণ চালু হলে ব্যবহারকারী বাড়ানো যাবে কি না, সে বিষয়টিও বিবেচনা করছে ফেসবুক কর্তৃপক্ষ।
Leave a Reply