মমতাজের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা! ১৫ লক্ষ টাকা নিয়ে গায়েব! মামলা পশ্চিমবঙ্গের আদালতে! সংসদ সদস্য এবং দুই বাংলার তুমুল জনপ্রিয় সঙ্গীত শিল্পী মমতাজ রীতিমতো অস্বস্তিকর অবস্থায়!
বাংলাদেশের এই ক্ষমতাসীন দলের সংসদ সদস্যের বিরুদ্ধে রয়েছে চুক্তিভঙ্গের অভিযোগ ।কথা দিয়ে নাকি কথা রাখেননি মমতাজ। পারফর্ম্যান্সের জন্য টাকা নিয়েও অনুষ্ঠানে যোগ দেননি তিনি।
গত ১৫ বছর ধরেই পশ্চিম বঙ্গের আদালতে চলছিলো এই মামলা। জানা যায়, প্রায় চৌদ্দ বছর আগে পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে নিয়মিত অংশ নিতেন মমতাজ।
২০০৪ সাল থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত বিভিন্ন অনুষ্ঠানে গান গাওয়ার জন্য সেখানকার শক্তিশঙ্কর বাগচী নামে এক ইভেন্ট অর্গানাইজারের সাথে গায়িকার লিখিত চুক্তি হয়।
সে অনুযায়ী ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে বহরমপুরের একটি অনুষ্ঠানে প্রধান শিল্পী হিসেবে মমতাজের সাথে ১৪ লক্ষ রূপীর বিনিময়ে চুক্তি হয়েছিলো।
কিন্তু চুক্তি মোতাবেক অর্থ অগ্রিম নিয়ে কনসার্টে হাজিরই হননি মমতাজ। আর এজন্য ভেন্যুতে ব্যাপক ভাঙচুর হয়। এতে করে চরম হেনস্তার মুখে পড়তে হয় অনুষ্ঠানের আয়োজক শক্তিশঙ্কর বাগচীকে।
অভিযোগ উঠেছে, সেই টাকা ফেরত চাইলে তা দিতে সরাসরি অস্বীকার করেন মমতাজ। এরপর চুক্তিভঙ্গের অভিযোগ নিয়ে স্থানীয় থানার দ্বারস্থ হন শক্তি বাগচি।
কিন্তু থানা অভিযোগ গ্রহণ করতে অস্বীকৃতি জানায়। এরপরই এক প্রকারের বাধ্য হয়েই সরাসরি আদালতে মামলা ঠুকে দেন মুর্শিদাবাদের একটি আদালতে।
দীর্ঘদিন পর গত ৯ই অগস্ট মুর্শিবাদবাদের মুখ্য বিচার বিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেট অলক দাস মমতাজের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির নির্দেশ দিয়েছেন।
তবে এই ঘটনা এবারই প্রথম নয়, এর আগেও তিন তিনবার গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হয়েছিল মমতাজের নামে, প্রত্যেকবারই নানান টাল–বাহানা করে সেই পরোয়ানা এড়িয়েছেন মমতাজ।
জানা গিয়েছে, গত ৯ই অগস্ট মুর্শিদাবাদের মুখ্য বিচার বিভাগীয় আদালতে হাজির হওয়ার কথা ছিল গায়িকার। বিচারক আগেই জানিয়েছিলেন ওইদিন চার্জ গঠন করা হবে মমতাজের নামে। উপস্থিত না হলে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির কথাও জানানো হয়েছিল, তা সত্ত্বেও হাজির হননি মমতাজ বেগম।
মমতাজের বিরুদ্ধে বিশ্বাসভঙ্গ, প্রতারণাসহ একাধিক ধারায় মামলা হয়েছে। সেই সূত্রে ২০০৯ সালে মমতাজের বিরুদ্ধে সমন জারি করে আদালত।
পরে সমন কার্যকর না করায় তার বিরুদ্ধে জারি হয় গ্রেপ্তারি পরোয়ানা। এরই মধ্যে আগাম জামিন নিয়ে নিম্ন আদালতের নির্দেশ চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন শক্তিশঙ্কর বাগচী।
২০১০ সালে নিম্ন আদালতের নির্দেশ খারিজ করে মমতাজের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি রাখে কলকাতা হাইকোর্ট।
তবে মামলায় সহযোগিতার প্রতিশ্রুতি দিয়ে একে একে তিনবার আগাম জামিন পেয়ে যান গায়িকা। আর গত ১৫ বছর ধরে আদলতের মারপ্যাচে একরকম নাজেহাল অবস্থা আয়োজকের!
এ বিষয়ে বাংলাদেশের একটি গণমাধ্যমকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে আয়োজক বলেন, ‘এই মামলায় আজ আমি নিঃস্ব হয়ে গেছি। আমার সেদিনের ১৪ লাখ রুপি অগ্রিম নিয়ে অনুষ্ঠান না করায় বহু আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছি। আমি ন্যায়বিচার চাই। আমার অগ্রিম অর্থ সুদসহ এবং মামলার সব খরচসহ আমার ১৫ বছরের হয়রানির ক্ষতিপূরণের টাকা চাই।’
এর আগে মামলায় সহযোগিতা করার কথা বলেই তিনবার জামিন পান মমতাজ। কিন্তু গত ৯ই অগস্ট হাজিরা ফের এড়িয়ে যান তিনি। তারপরেই আবার গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে। এখন দেখার বিষয় হচ্ছে, বিতর্কের জল কতদূর গড়ায়।
Leave a Reply