বিমানে বিড়ি খেয়ে ভাইরাল এক বাঙ্গালী। সোশ্যাল মিডিয়াতে ভেষে বেড়াচ্ছে এমনই এক ভিডিও। এমন অপ্রিতিকর ঘটনা নিয়ে দেশের মানুষের মধ্যে চলছে ব্যাপক আলোচনা সমালোচনা।
ধুমপান স্বাস্থের জন্য ক্ষতিকর। যেখানেই এই কথা সিগারেটের প্যাকেটেই লেখা থাকে, সেখানে মানূষ যেন এই বাক্যের তোয়াক্কা না করেই চলে। বাসা থেকে বের হয়ে কোঠাও যেতে নিলে আর কোন কিছু চোখে পড়ুক আর না পড়ুক, একটা দৃশ্য একই ভাবে প্রতিনিয়ত ধরা পড়ে, সেটা হচ্ছে মানুষের ধুমপান করা।
শুধু কিন্তু রাস্তাঘাতে এমন দৃশ্য দেখা যায় এমনটাও নয়। কিছু কিছু পরিবারের ক্ষেত্রে দেখা যায়, ঘড়ের মধ্যে অবলীলায় ধুমপান করে থাকে মানুষ। কিন্তু কিছু জায়গা আছে যেখানে ধুমপান নিষিদ্ধ। যেই সিদ্ধান্ত প্রশাসনিক ভাবে বেধে দেয়া আছে।
তার মধ্যে একটি স্তান হচ্ছে বিমানে। কঠোর নিয়ম বেধে দেয়া আছে এই বলে, বিমানে ধুমপান নিষিদ্ধ। সেই নিয়ম পালন হয়ে থাকে বিশ্বজুড়ে।
কিন্তু এই নিয়মের তোয়াক্কা না করে এখন ভাইরাল এক ব্যক্তি। তিনি অন্য কোন দেশের নন, বাংলাদেশের। বিমানে চরে ধুমপান করেছেন সে ব্যক্তি। কি ঘটেছিল সেই মুহুর্তে চলুন জেনে নেই বিস্তারিত।
ঘটনাটি ঘটেছে মালয়শিয়ান এয়ারলাইন্সের ভেতরে। বিমানের ভিতরে বসে ধুমপান করেছেন বাংলাদেশের এক লোক। বিষয়টি যখন আশেপাশের যাত্রীরা লক্ষ্য করেন তখনই তাকে থামিয়ে দেয়া হয়। এবং একটা সময়ে তাকে বিমান থেকে নামিয়ে দেয়া হয়।
গত ২৩ জুন মালয়েশিয়ার কুয়ালালামপুর থেকে ঢাকাগামী একটি প্লেনে ধূমপানের ঘটনাটি ঘটে। মালয়েশিয়ার মালিনদো এয়ারলাইন্সের OD-166 ফ্লাইটটি ঢাকার উদ্দেশ্যে ছেড়ে আসার ঠিক আগমুহূর্তে এ ঘটনা ঘটায় তৎক্ষণাৎ সেই ব্যক্তিকে নামিয়ে দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
বুকিংয়ে দেওয়া তার মালামাল খুঁজে পেতে দেরি হওয়ায় এক ঘণ্টা বিলম্বে ছাড়ে বিমানটি। তবুও তাকে সাথে নিয়ে বিমান চালনা শুরু করতে চাননি বিমান কর্তৃপক্ষরা।
বিষয়টি শুনে তাজ্জব হয়ে গেছেন নিশ্চয়ই।ভাবছেন কিভাবে এমন কাজ করে ফেললেন সেই ব্যক্তি। এই ঘটনার চেয়ে বেশি অবাক করার মতো দ্ররশ্য দেখা গেছে তাকে নামিয়ে দেয়ার সময়। যা শুনলে আপনি যাবেন চমকে।
ভাইরাল সেই ভিডিওতে দেখা গেছে, নিজের কর্মের জন্য বিন্দুমাত্র লজ্জিত নন সেই ব্যক্তি। বরং অনবরত হাসতে হাসতে সিট থেকে বের হচ্ছেন তিনি। যদিও এখন পর্যন্ত সেই ব্যক্তির নাম এবং পরিচয় প্রকাশ্যে আসেনি।
তবে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সেই ব্যক্তিকে নিয়ে চলছে তোড়জোড় সমালোচনা। এই ঘটনায় মজা নিচ্ছেন এমন নেটিজেনদের পোস্ট ভেষে বেড়াচ্ছে নেটদুনিয়াতে।
এখন অনেকের মধ্যে এই প্রশ্ন উঠে এসেছে, বিমানে কেন ধুমপান নিষিদ্ধ?
এয়ারলাইনসের আনুষ্ঠানিক বিবৃতি অনুসারে, বিমানে ধূমপান নিষিদ্ধ করার প্রধান দুটি কারণ রয়েছে। প্রথমটি অগ্নি নিরাপত্তা। জানা যায় যে সিগারেট প্রায়শই অ্যাপার্টমেন্ট এবং শিল্প প্রাঙ্গনে আগুনের কারণ হয় এবং বিপজ্জনক উত্পাদনে এ জাতীয় তদারকি এমনকি একটি সত্য বিপর্যয়ের দিকেও ডেকে আনতে পারে।
দ্বিতীয় কারণ হ’ল ধূমপায়ী তার আশেপাশের লোকদের স্বাচ্ছন্দ্যে হস্তক্ষেপ করে। গবেষণা অনুসারে মানবসৃষ্ট ধোঁয়া সক্রিয় ধোঁয়ার চেয়ে কম ক্ষতিকারক নয়।
এছাড়াও বিমান যেহেতু এক বদ্ধ ঘর হিসেবে তুলনীয় এবং সেখানে অক্সিজেনের পরিমান সীমিত থাকে, তাই সেখানে ধুমপান করা হলে অন্যান্য যাত্রীদের শ্বাসপ্রস্বাসে সমস্যা তৈরি করতে পারে। শুধু তাই নয়, সেখানে যেই ধোয়ার গন্ধ তৈরি হবে, তাতে অনেকে স্বাচ্ছাদ্যবোধ করবে না।
ইতিহাস ঘেটে জানা গেছে, ১৯৯৮ সালে আমেরিকান রাষ্ট্রপতি রোনাল্ড রেগান প্রথম ধূমপান নিষিদ্ধ করেছিলেন।
তিনি এমন একটি আইনে স্বাক্ষর করেছিলেন যা বিশ্বজুড়ে সমস্ত অভ্যন্তরীণ ফ্লাইটে ধূমপান নিষিদ্ধ করেছিল। একই বছর আমেরিকান এয়ারলাইনস তাদের বিমান ও আন্তর্জাতিক ফ্লাইটে ধূমপান নিষিদ্ধ করেছিল।
নির্দিষ্ট সংখ্যক মানুষ অসন্তুষ্ট থাকা সত্ত্বেও, বিপুল সংখ্যক যাত্রী এই আইনটি সহমত পোষন করেছেন এবং শীঘ্রই একে একে সকল বিমান সংস্থা ধূমপান নিষিদ্ধ করতে শুরু করে।
তবে বেশিরভাগ এয়ারলাইনস এই নিষেধাজ্ঞা লঙ্ঘনকারীদের খুঁজে পেলে তাদের শাস্তি দেয় এবং জরিমানার করে থাকে। যার পরিমাণ খুব বেশি। এমনকি কিছু দেশে, এই বিধি লঙ্ঘনকারিকে প্রশাসনিক দায়িত্বে আনা হয়ে থাকে। এখন দেখার পালা, ভাইরাল এই ধুমপায়ই ব্যক্তির জন্য কেমন সিদ্ধান্ত নিবেন বাংলাদেশের প্রসাশন। কারন তার কর্মকান্ডে দেশের সম্মান ক্ষুন্ন হয়েছে তা বলাই বাহুল্য।
Leave a Reply