লাইনে দাঁড়িয়ে আর টোল দিতে হবে না পদ্মা সেতুতে!

স্বপ্নের পদ্মা সেতু। বাঙ্গালীদের কাছে যেন এক অনন্য সফলতা। আর এই সেতু ব্যবহারকারীদের জন্য এসেছে সুখবর। কারন এখন আর লাইনে দাঁড়িয়ে টোল দিতে হবে না কোন যানবাহনের জন্য। এমন পরিকল্পনা গ্রহন করার কথা জানিয়েছেন সেতু কর্তৃপক্ষ। 

প্রশ্ন আসতে পারে, তবে কি ফ্রিতে চলাচল করবে যানবাহন? নাকি রয়েছে বিকল্প কোন উপায়? সেই বিস্তারিত জানাতেই আমাদের আজকের প্রতিবেদন। 

বাংলাদেশ ডিজিটাল পথে হাঁটছে, গেল বেশ কিছু বছর ধরে। যেখানে গোটা বিশ্বের দেশগুলো প্রযুক্তিকে কাজে বিভিন্ন কাজ সহজ থেকে সহজত্বর করে তুলছে। সেইদিক থেকে পিছিয়ে নেই বাংলাদেশও।

পদ্মা সেতুর টোল প্লাজায় যুক্ত হচ্ছে নতুন প্রযুক্তি। চালু হতে যাচ্ছে চলন্ত অবস্থায় গাড়ির টোল আদায় পদ্ধতিআরএফআইডি। অর্থাৎ, সহজ হচ্ছে পদ্মা সেতুর টোল দেওয়ার প্রক্রিয়া। 

নগদ টাকা দেওয়ার পাশাপাশি চালু হচ্ছে ইলেক্ট্রনিক টোল কালেকশন সিস্টেম (ইটিসিএস)  আর নতুন এই পদ্ধতির জন্যই সেতুর দুই পাড়ে থাকছে আলাদা বুথ। এছাড়াও প্রক্রিয়াধীন হাইব্রিডটাচ এন্ড গো পদ্ধতি।

নতুন দুই পদ্ধতি চালু হলে জটলামুক্ত থাকবে টোল প্লাজা। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এতে অর্থনীতিতে আরও গতি সঞ্চার হবে। চলুন জেনে নেই নতুন এই উদ্যোগের বিস্তারিত। 

এখন থেকে পদ্মা সেতুতে টোল দেওয়ার জন্য আর লাইনে দাঁড়াতে হবে না। সেই ধারাবাহিকতায় চলতি মাসেই চালু হচ্ছে কার্ড সিস্টেম। যাতে আগে থেকেই টাকা রিচার্জ করে রাখা যাবে। 

টোল প্লাজার কাছে পৌঁছালে রোবোটিক ক্যামেরা সেই গাড়িকে শনাক্ত করবে এবং কার্ড থেকে টোল কেটে নেবে। কোরিয়ান এক্সপ্রেসওয়ে করপোরেশন এই কারিগরি সহায়তা দিচ্ছে। সব ধরনের টোল আদায়ে প্রযুক্তি ব্যবহারের পরামর্শ তাদের।

জানা গেছে, স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতি চালু হলে একটি গাড়ি সর্বোচ্চ তিন সেকেন্ডে টোল দিতে পারবে। টোল আদায়ের দায়িত্বে থাকা কোরিয়ান কোম্পানি কেইসি জানিয়েছে, মাসেই চালু হবে নতুন প্রযুক্তি।

বিশ্বের বিভিন্ন দেশের এক্সপ্রেসওয়ে সেতুর টোলের জন্য এক কার্ড এক পেমেন্ট সিস্টেম চালু রয়েছে। এখন বাংলাদেশে সময় এসেছে পদ্ধতি চালুর। এতে একাধিক টোল কার্ড ব্যবহারের ভোগান্তি থেকে বাঁচবে গ্রাহকরা।

কেইসি প্রকল্প পরিচালক জিনউ পার্ক জানিয়েছেন, সেবা নিতে হলে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) আরএফআইডি ট্যাগ থাকতে হবে। যার মাধ্যমে ডিজিটাল পেমেন্ট দেওয়া যাবে। 

এদিকে পদ্মা সেতুর টোল আদায়ের জন্য আধুনিক ব্যবস্থার সবশেষ প্রস্তুতি দেখতে মাওয়ায় যান দক্ষিণ কোরিয়ার রাষ্ট্রদূত পার্ক ইয়ং সিক। সময় বাংলাদেশের উন্নয়নে পাশে থাকার আশ্বাস দেন তিনি। 

তিনি বলেন, স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে অংশিদার হতে চায় দক্ষিণ কোরিয়া। দেশের অগ্রযাত্রায় আমরা সব ধরনের সহযোগিতা করতে প্রস্তুত। আগে শুধু পোশাক শিল্পে অবদান রেখেছে দক্ষিণ কোরিয়া, এখন অবকাঠামো খাতেও বিনিয়োগে আগ্রহী আমরা।

টোলের কার্ড এবং রেজিস্ট্রেশনের জন্য পদ্মা সেতুর মাওয়া প্রান্তে কাউন্টার থাকছে। এই কার্ড টোল মেশিনে ছোঁয়ালেই টাকা কেটে নেবে। 

ছাড়া গাড়িটি পদ্মা সেতু পার হলে স্বয়ংক্রিয়ভাবেই টোল আদায় করে নেবে। সাথে সাথেই দেখা যাবে কার্ডের ব্যালেন্স।  

উল্লেখ্য, ২০১৪ সালের ২৬ নভেম্বর পদ্মা সেতুর নির্মাণকাজ শুরু করে চায়না মেজর ব্রিজ কোম্পানি। ২০২২ সালের ২৫ জুন পদ্মা সেতু উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। 

সেতু চালু হওয়ায় দেশের ২১ জেলার যাতায়াত সহজ হওয়ার পাশাপাশি গড়ে উঠছে নতুন শিল্পকারখানা। ফলে প্রসার ঘটছে ব্যবসাবাণিজ্যের, সৃষ্টি হচ্ছে নতুন কর্মসংস্থান।এরই সাথে গত বছর উদ্বোধনের পর থেকে গড়ে প্রতিদিন সেতু থেকে কোটি ১৮ লাখ ২৯ হাজার ২৭০ টাকা টোল আদায় করা হয়ে থাকে। 

এখন থেকে ফেসবুক চালাতে হলে পকেট হবে ফাঁকা!

গোটা বিশ্বজুড়ে মানুষ জড়িয়ে আছে এমনই একটি অ্যাপ ফেসবুক। বলা যায়, এই অ্যাপের মধ্য দিয়েই ঘন্টার পর ঘন্টা সময় কাটে মানুষের। অনেকেই আবার আছেন যারা এই ফেসবুকফ্রিক। অর্থা এই অ্যাপে আসক্ত। আর তাদের জন্যই চলে এসেছে দুঃসংবাদ। কারন এখন থেকে আর ফ্রিতে নয়, বরং টাকা দিয়ে চালাতে হবে ফেসবুক। 

শুধু ফেসবুকই নয়, পাশাপাশি ইনস্টাগ্রাম চালানোর জন্য টাকা দিতে হবে অ্যাপ ব্যবহারকারীদের। আর এমনই পেইড সিস্টেম পরিকল্পনা করেছে মেটা। 

প্রশ্ন আসতে পারে, হুট করেই কেন সামনে এসেছে এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে মেটা। এই পরিকল্পনায় বাংলাদেশের নাম নেইতো

আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, বিভিন্ন আইনি জটিলতার কারণে ইউরোপীয় ইউনিয়নে (ইইউ) ব্যবসা করা কঠিন হয়ে পড়েছে মেটার। সমস্যা সমাধানে নতুন এক উদ্যোগ নিতে যাচ্ছে প্রতিষ্ঠানটি। 

ইইউর দেশগুলোতে দুই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক ইনস্টাগ্রামে পেইড সিস্টেম চালু করার পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে মেটা। এক প্রতিবেদনে এমনটাই বলছে মার্কিন সংবাদমাধ্যম নিউইয়র্ক টাইমস।

বর্তমান সময়ে ফেসবুক ব্যবহারকারীদের চোখে যেই বিষয়টি সর্বাধিক চোখে পড়ে সেটি হচ্ছে বিজ্ঞাপন। যেকোন ভিডিও কিংবা রিলস দেখার ক্ষেত্রে কিংবা স্ক্রল করতে গেলেই হরহামেশাই ইচ্ছা থাকুক আর না থাকুন বিজ্ঞাপন দেখতে হচ্ছে। 

কিন্তু জানা গেছে, বিজ্ঞাপনের কারণে অনেকেই ফেসবুক ইনস্টাগ্রাম চালাতে গিয়ে বিরক্ত হন। আর এই কথা ভেবেইতো অনেক আগেই পেইড সিস্টেম চালু করেছিল ইউটিউব। এমনকি বাংলাদেশেও এই ফিচার যুক্ত হয়েছে। 

তাই এবার ইইউর দেশগুলোতে একই পথে হাঁটতে যাচ্ছে মেটা। অনেকদিন দরেই এমন চিন্তা থাকলেও অবশেষে এখন পরিকল্পনা করেই ফেলেছে সংস্থাটি। 

মেটার উচ্চপদস্থ তিনজন কর্মকর্তার বরাতে মার্কিন সংবাদমাধ্যম নিউইয়র্ক টাইমস বলছে, সরকারি বিভিন্ন নীতির কারণে বিভিন্ন দেশে বিভিন্ন উপায়ে ব্যবসা করতে হচ্ছে। আমেরিকায় যে নিয়মে সহজেই ব্যবসা করা যাচ্ছে, ইউরোপে তেমনভাবে করা যাচ্ছে না। 

আর তাই, নিজেদের ব্যবসাকে সফল রাখতেই পেইড সিস্টেম এর উদ্যোগ হাতে নিয়েছে মেটা। যার ফলে এখন থেকে ফেসবুক চালাতে গুনতে হবে টাকা। তবে কবে নাগাদ এই ফিচার যুক্ত হবে, বিষয়টি এখন পর্যন্ত মেটার কোন কর্মকর্তা জানাননি। 

এই ফিচার আনা হলে নতুন মাত্রা যুক্ত হবে মেটায়। নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ পরিশোধ করে এই ফিচার নিলে ফেসবুক ইনস্টাগ্রাম ব্যবহারকারীরা অ্যাপে আর কোনো ধরনের বিজ্ঞাপন দেখতে পাবেন না। 

পেইড সিস্টেম চালু থাকলেও ফ্রি ফেসবুক ইনস্টাগ্রাম চালানোর ব্যবস্থাও রাখবে মেটা। এছাড়া নতুন ফিচার পেতে কী পরিমাণ অর্থ খরচ করতে হবে, ব্যাপারেও মেটার এই তিন কর্মকর্তা তেমন কিছুই জানাননি। 

মূলত বিজ্ঞাপনের কারণেই ইউরোপে একের পর এক মামলা হচ্ছে মেটার নামে। ফলস্বরুপ, কোটি কোটি ডলার গচ্ছা যাচ্ছে সংস্থাটির।  তাই লোকসান থেকে ঘুরে উঠতেই নতুন পথে মেটা। 

কিন্তু ব্যবহারকারীরা যদি বিজ্ঞাপন দেখতে না চান, তবে অর্থ খরচ করে বা ফেসবুক সাবস্ক্রাইব করে ফেসবুক চালাতে হবে। কিন্তু রাজি হবেন কয়জন?

অনেকেই হয়তো টাকা খরচ করে ফেসবুক চালাতে রাজি হবে না। ফেসবুক কর্তৃপক্ষও সেটি জানে। তাই বিষয়টি নিয়েও পরীক্ষানিরীক্ষা শুরু করেছে ফেসবুক কর্তৃপক্ষ।

কারন এখন ফেসবুক ব্যবহার করতে টাকা লাগে না বলে ফেসবুক ব্যবহারকারী বাড়ছে। কিন্তু অর্থের বিনিময়ে ফেসবুকের বিশেষ সংস্করণ চালু হলে ব্যবহারকারী বাড়ানো যাবে কি না, সে বিষয়টিও বিবেচনা করছে ফেসবুক কর্তৃপক্ষ।

যান চলাচলের জন্য উন্মুক্ত ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে!

জল্পনাকল্পনা শেষে এবং অপেক্ষার প্রহর কাটিয়ে অবশেষে উদ্বোধন হল দেশের প্রথম এলিভেটেড এক্সপ্রেস। এরই মধ্য দিয়ে স্বস্তির মুখ দেখয়ার সুযোগ মিলেছে নগরবাসীর। 

২রা সেপ্টেম্বর, শনিবার এক্সপ্রেসওয়েটি উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এসময় উপস্থিত ছিলেন সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরসহ অন্যান্য নেতারা। 

বিকেল সাড়ে ৩টায় শেরেবাংলা নগরের পুরাতন বাণিজ্য মেলার মাঠে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে এক্সপ্রেসওয়েটির উদ্বোধন হয়েছে। উদ্বোধনের পর বিমানবন্দরফার্মগেট অংশটি যান চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হয়েছে। 

এখন আর ঘন্টার পর ঘন্টা জ্যামে বসে না থেকে স্বল্প সময়ের মধ্যে এক্সপ্রেস ওয়ে ব্যবহার করে যেতে পারবেন গন্তব্যে। আর এই পুরো সুযোগ কাজে লাগাতে পারবেন বিমানবন্দর , কুড়িল, বনানী, মহাখালীতে, বিজয় ফার্মগেটে যাতায়াতকারী জনসাধারণ।

তবে আপাতত দীর্ঘ প্রতীক্ষিত ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে আংশিকভাবে চালু হওয়ায় এখন থেকেই নগরবাসীর জন্য এই স্বস্তি বাড়ছে। বিমানবন্দর থেকে ফার্মগেট পর্যন্ত ১১. কিলোমিটার অংশটি উদ্বোধন হয়েছে ইতিমধ্যে, যা শহরের অন্যতম ব্যস্ততম বিমানবন্দর সড়কে বিকল্প রুট হিসাবে কাজ করবে।

এদিকে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এই অংশটি চালু হলে বিমানবন্দর থেকে ফার্মগেটে পৌঁছাতে ১০ মিনিটেরও কম সময় লাগবে, যা সাধারণত নিয়মিত রাস্তায় এক ঘণ্টারও বেশি সময় লাগে। গতিসীমা নির্ধারণ করা হয়েছে ঘণ্টায় ৬০ কিলোমিটার।

ঢাকাচট্টগ্রাম মহাসড়কের কাওলা, কুড়িল, বনানী, মহাখালী, তেজগাঁও, মগবাজার, কমলাপুর, সায়েদাবাদ, যাত্রাবাড়ী থেকে কুতুবখালী পর্যন্ত এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের মোট দৈর্ঘ্য ৪৬ দশমিক ৭৩ কিলোমিটার।

২০১১ সালের ১৯ জানুয়ারি প্রথম চুক্তি সইয়ের এক যুগ পর আলোর মুখ দেখছে ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে প্রকল্প। 

এক্সপ্রেসওয়ে সংশ্লিষ্ট সূত্র বলছে, বিমানবন্দর এলাকায় দুটি, কুড়িলে তিনটি, বনানীতে চারটি, মহাখালীতে তিনটি, বিজয় সরণিতে দুটি ফার্মগেটে তেজগাঁও কলেজের সামনে নামছে একটি র্যাম্প। 

এর মধ্যে বনানী মহাখালীর দুটি র্যাম্পের কাজ শেষ হয়নি। এজন্য আপাতত র্যাম্প দুটি বন্ধ থাকবে।

এদিকে বুয়েটের সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক হাদিউজ্জামান বলেন, ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েসহ দুটি এক্সপ্রেসওয়ের উদ্দেশ্য ছিল ঢাকা শহরের অভ্যন্তরে যানবাহন, বিশেষ করে ভারী যানবাহনের জন্য একটিভার্টিকাল বাইপাসতৈরি করা।

অর্থাৎ, ঢাকা আশুলিয়া এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েঢাকা ইপিজেড এলাকা থেকে আশুলিয়া আবদুল্লাহপুর হয়ে আসার পর বিমানবন্দর এলাকার কাছে ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের সাথে যুক্ত হবে। 

২০ কিলোমিটার এক্সপ্রেসওয়েটিও ২০২৬ সালের জুনের সময়সীমা নিয়ে নির্মাণাধীন রয়েছে। ঢাকা এক্সপ্রেসওয়ে উদ্বোধনের পাশাআপ্সহি বেধে দেয়া হয়েছে নিয়ম।

সেই অনুযায়ী, থ্রি হুইলার, সাইকেল এবং পথচারীদের এক্সপ্রেসওয়েতে চলাচল করতে দেওয়া হবে না।একই সাথে মোটরবাইক এখনই চলতে পারবে না।

এর আগে সড়ক পরিবহন সেতু মন্ত্রণালয় ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরফার্মগেট অংশের টোল রেট ৮০ টাকা থেকে ৪০০ টাকা নির্ধারণ করে।

ক্যাটাগরি এর অধীনে যে কোনো স্থান থেকে বিমানবন্দরফার্মগেট অংশ অতিক্রম করার জন্য গাড়ি, ট্যাক্সি, জীপ, স্পোর্টস ইউটিলিটি ভেহিকল, মাইক্রোবাস (১৬ আসনের নিচে) এবং হালকা ট্রাক ( টনের নিচে) টোল রেট ৮০ টাকা।

মাঝারি ট্রাকের জন্য (ছয় চাকা পর্যন্ত) যে কোনো পয়েন্ট থেকে রুট পার হওয়ার জন্য টোল রেট ক্যাটাগরি এর অধীনে ৩২০ টাকা।

ক্যাটাগরি এর অধীনে যে কোনো পয়েন্ট থেকে রুট পার হওয়ার জন্য ট্রাকের (ছয় চাকার বেশি) টোল রেট ৪০০ টাকা। 

যে কোনো পয়েন্ট থেকে রুট পার হওয়ার জন্য যে কোনো বাসের (১৬ সিটের বা তার বেশি) টোল রেট ক্যাটাগরির অধীনে ১৬০ টাকা।

তবে স্বস্তির মুখ দেখার পাশাপাশি, জনসাধারনের মনে অন্য প্রশ্নও ঘুরপাক খাচ্ছে, এই এক্সপ্রেসওয়ে ব্যবহারে যেমন স্বস্তির সুযোগ রয়েছে তেমনি নতুন ভোগান্তির কারন তৈরি হচ্ছে নাতো?

কারন প্রকল্পের শুরু থেকেই পরিকল্পনাবিদেরা বলছেন, শহরের মধ্যে নামার ্যাম্প বিশেষ করেবনানী, মহাখালী বিজয় সরণিতে গাড়ির চাপ তৈরি করবে।

পরিকল্পনাবিদ ইকবাল হাবীব বলেন, এক্সপ্রেসওয়েতে রাস্তা ভাগ হচ্ছে, কিন্তু গাড়ির পরিমাণ সেই একই আছে। ঢাকায় যে গাড়িগুলো এক্সপ্রেসওয়েতে উঠবে, সেগুলো সুবিধা পাবে। যে গাড়িগুলো নগরের বিভিন্ন ্যাম্পে নামবে, সেখানে তো আগে থেকেই গাড়ির একটা জট থাকবে। ফলে আরও জট হতে পারে।

ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে ৭ দিনের ব্যবধানে দুই ভাই-বোনের মৃত্যু!

বছরের সেপ্টেম্বর মাস। এখন পর্যন্ত যেন নগরবাসীর জন্য সবচেয়ে বড় আতংকের নাম ডেঙ্গু। যেই আতংকের সাথে লড়াই করে কেউ পার পেয়ে যায়, কেউ আবার জীবন হারায়। 

আর সেই তালিকায় যোগ হয়েছে দুই ভাইবোনের নাম। দেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে দিনের ব্যবধানে বিদায় নিয়েছেন একই পরিবারের ফুটফুটে দুই সন্তান। 

ডেঙ্গু! যা এবছর যেন দেশবাসীর কাছে কোন মহামারীর থেকে কম নয়। কারন বনছর বেড়েছে ডেঙ্গুর প্রকোপ এবং মৃত্যুর সংখ্যা। শহরের পাশাপাশিপাশি পার্বত্য এলাকা এবং গ্রামেও রয়েছে এর বিস্তার। 

ফলাফলস্বরুপ ডেঙ্গুর ভয়াবহতা এতই ভয়ানক হয়ে দাড়িয়েছে, যা গেল কয়েক বছরের মধ্যে মানুষ কখনও দেখেননি। আর তাইতো এর প্রকোপ থেকে বাঁচতে জনসাধারণ মরিয়া হয়ে আছেন। কিন্তু তবুও যেন মিলছে না নিস্তার।  

আব্বু ঢাকায় অনেক মশা, ঢাকায় থাকবো না’-এমনই কথা ভেষে বেড়াচ্ছে গণমাধ্যমে। কথাটি বলেছিল এক অসহায় বাবার ফুটফুটে সন্তান। কারন মশার কামড়েই যে ভাইকে হারিয়েছিল এক সপ্তহ আগে। 

তাই বারংবার বাবার কাছে সন্তানের আবদার, থাকবে না নগরে। কিন্তু সেই আবদার রাখতে পারলেন না মাবাবা কেউই। কারন এর আগেই যে সেই সন্তান ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে বিদায় নিয়েছে দুনিয়া থেকে। 

দুই সন্তানকে হারিয়ে এখন নিঃস্ব বাবামা। জীবন থেকে যেন বেঁচে থাকার আশা ফুরিয়ে গেছে মোহাম্মদ ইব্রাহিম রাবেয়া আক্তার দম্পত্তির। গত ১৬ আগস্ট প্রথমে বছরের ছেলে আরাফাত জাহান রাউফের ডেঙ্গু ধরা পড়ে।

গত১৪ আগস্ট আরাফাতের হালকা জ্বর আসে। ১৫ আগস্ট এলাকার এক চিকিৎসকের কাছে নেওয়া হয়। ১৬ আগস্ট রক্তের পরীক্ষায় ডেঙ্গু পজিটিভ আসে। 

 ডেঙ্গু ধরা পড়ার পর থেকে দ্রুত প্লাটিলেট কমতে থাকে তাদের বড় সন্তানের। কিন্তু  চিকিৎসক বলেছিলেন, হাসপাতালে নেওয়ার দরকার নেই। কিন্তু পরের দিন ১৭ আগস্ট প্লাটিলেট দ্রুত কমতে থাকে। 

১৮ আগস্ট হাসপাতালে ভর্তি করার আগেই আরাফাত মারা যায়। হাসপাতালে নেওয়ার পর চিকিৎসকেরা জানান, ছেলে মারা গেছে। ভাইয়ের মৃত্যুর পর অসুস্থ হয়ে পড়ে বোন ইসনাত জাহান রাইদা। 

জ্বর আসার পরেই বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয় তাকে। রেন্টকার ব্যবসায়ী মোহাম্মদ ইব্রাহিম জানালেন, ধানমন্ডির একটি হাসপাতালের পিআইসিইউতে মেয়েকে পাঁচ দিন রেখে মেয়ে ভালো আছে বলে বাসায় আনতে বলে। 

তবে মেয়েকে বাসায় আনার পরই আবার অসুস্থ হয়ে পড়ে। তখন মহাখালীর আরেকটি বেসরকারি হাসপাতালের পিআইসিইউতে ভর্তি করা হয়। ওই হাসপাতাল তিন লাখ টাকা দিয়ে সাতটি ইনজেকশন দেওয়ার কথা বলেছিল। দুটি ইনজেকশন দেওয়াও হয়। কিন্তু বাবামার শেষ সম্বল বছর বয়সের রাইদাও ২৫ আগস্ট সকালে না ফেরার দেশে চলে যায়।

দুই সন্তানের আকস্মিক মৃত্যু কোনোভাবেই মানতে পারছেন না বাবামা। সাজানো গোছানো সংসারজুড়ে শুধু সন্তানদের স্মৃতি। তাই রাজধানীর মিরপুরের মধ্য পাইকপাড়ার বাসা ছেড়েছেন তারা।

জানা গেছে, রাজধানীর আইকন একাডেমি নামে একটি স্কুলে রাউফ কেজি আর রাইদা নার্সারিতে পড়ত। শ্রেণি শিক্ষকদেরও চোখের মণি ছিলো দুইভাইবোন। স্কুলের দুই শিক্ষার্থীর এমন মৃত্যুতে শিক্ষকরাও শোকাহত।

দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ মৃত্যু আর আক্রান্তের রেকর্ড হয়েছে চলতি আগস্ট মাসে। মাসে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে ৩৪২ জন। আর চলতি বছর ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে মোট মারা গেছে ৫৯৩ জন।

এদিকে ডেঙ্গুতে জ্বর ছেড়ে গেলেও মৃত্যুর দিকে ধাবিত হচ্ছেন আক্রান্তরা। বিশেষজ্ঞদের ধারনা, একাধিক স্ট্রেইন দ্বারা যারা আক্রান্ত হচ্ছে তাদের মধ্যে জটিলতাটা বেশি হচ্ছে।

জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. বেনজির আহমেদ বলেন, এটা শুধু বয়স্ক মানুষ, যাদের আগে থেকেই রোগ আছে তাদের হচ্ছে এমনটা না। ইয়াং মানুষ যাদের অন্য রোগ নেই তাদেরও হচ্ছে। এতে আমার ধারনা, একধিক স্ট্রেইন দ্বারা যারা আক্রান্ত হচ্ছে তাদের মধ্যে জটিলতাটা বেশি হচ্ছে।

ডেঙ্গু থেকে সহসাই মুক্তি মিলছে না জানিয়ে বেনজির আহমেদ বলেন, জনসচেতনতায় সরকারি সংস্থাগুলোকে আরও সক্রিয় ভূমিকা পালন করতে হবে।

 

পূর্ণাঙ্গ সম্প্রচারে গ্লোবাল টেলিভিশন

‘বিশ্বময় প্রতিদিন’ এই স্লোগানকে সামনে রেখে স্যাটেলাইট টেলিভিশন চ্যানেল হিসেবে পূর্ণাঙ্গ সম্প্রচারে এলো গ্লোবাল টেলিভিশন। আজ বৃহস্পতিবার (৩০ জুন) বিকাল চারটায় গ্লোব মাল্টিমিডিয়া লিমিটেড ও গ্লোব ফার্মা গ্রুপ গ্রুপের চেয়ারম্যান মো. হারুনুর রশিদ গ্লোবাল টেলিভিশনের বাণিজ্যিক সম্প্রচারের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন।

এ উপলক্ষে রাজধানীর তেজগাঁওস্থ অফিসে আয়োজিত এক দোয়া অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে নোয়াখালীর চৌমুহনী পৌরসভার মেয়র মো. খালিদ সাইফুল্লাহ, ও গ্লোব মাল্টিমিডিয়া লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আহমেদ হোসেন ও সিইও সৈয়দ ইশতিয়াক রেজাসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা ও কলাকুশলীরা উপস্থিত ছিলেন।

গ্লোব মাল্টিমিডিয়া লিমিটেড ও গ্লোব ফার্মা গ্রুপ গ্রুপের চেয়ারম্যান মো. হরুনুর রশিদ গ্লোবালটিভি.কমকে বলেন, গ্লোবাল টিভি মাটি ও মানুষের কথা বলবে। গ্লোবাল টিভি মানুষের সমস্যা, সম্ভাবনা ও উন্নয়নের কথা বলবে।  গ্লোবাল টিভি সুন্দর ও রুচিশীল অনুষ্ঠান উপহার দেবে।  আশা করি, সম্মানিত দর্শকরা আমাদের সাথে থাকবেন এবং সহযোগিতা করবেন।

মানববন্ধনে নেতৃবৃন্দ : লুটেরা মন্ত্রী ও ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট তেলের মূল্যবৃদ্ধি করেছে

দেশে সয়াবিন তেলের কোনো সংকট ছিল না। কৃত্রিম সংকট তৈরীর মাধ্যমে লুটেরা মন্ত্রী ও ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট তেলের মুল্য ২৫ শতাংশ বৃদ্ধি করেছে বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি-বাংলাদেশ ন্যাপ মহাসচিব ও জাতীয় প্রতিরোধ আন্দোলনের সমন্বয়কারী এম. গোলাম মোস্তফা ভুইয়া।

তিনি বলেন, মন্ত্রী ও মন্ত্রণালয়ের দুর্নীতিবাজ আমলাদের সঙ্গে অসৎ ও লুটেরা ব্যবসায়ীদের যোগসাজশ রয়েছে। যার ফলে ঈদের আগে ভোজ্য তেলের সঙ্কট তৈরী করে যে সিন্ডিকেট জনগণের সঙ্গে প্রতারণা করেছে সরকার তাদের শাস্তি প্রদান না করে তেলের মূল্যবৃদ্ধির মাধ্যমে পুরস্কৃত করা হয়েছে।

মঙ্গলবার (১০ মে) জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে “ভোজ্য তেলের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে” ‘জাতীয় প্রতিরোধ আন্দোলন’ আয়োজিত মানববন্ধন কর্মসূচীতে সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, ঈদের আগে থেকেই সিন্ডিকেট ব্যবসায়ীরা বাজারে ভোজ্যতেলের কৃত্রিম সংকট তৈরি করে। দোকানে কোনও তেল না পাওয়ার চিত্র দেখা যায়। ঈদের পর সংকট আরও তীব্র হতে থাকে। বাজারে এমন সঙ্কটের মাধেই সরকার দেশের মানুষের স্বার্থের কথা বিবেচনা না করে এক লাফে বোতলজাত সয়াবিন তেল ৩৮ টাকা, খোলা সয়াবিন তেল ৪৪ টাকা লিটার প্রতি বৃদ্ধির ঘোষণা দিয়ে জনগনের বিরুদ্ধে অবস্থান গ্রহন করেছেন। এতে জনজীবনে দুর্ভোগ নিমে আসবে তার দায় বাণিজ্য মন্ত্রনালয়, বাণিজ্যমন্ত্রী-সচিবও এড়াতে পারবেন না।

তিনি বলেন, সরকারের অব্যবস্থাপনা ও লুটেরা ব্যাবসায়ী সিন্ডিকেটের কারণে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে জনগণের যখন নাভিশ্বাস উঠেছে তখন তেলের মূল্যবৃদ্ধির মাধ্যমে সরকার নিজেই প্রমান করলো দেশের বাজার আজ মুনাফালোভী সিন্ডিকেটের হাতে বন্দি।

হামদুল্লাহ আল মেহেদী বলেন, যেখানে লুটেরাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করার কথা, তা না করে সরকার মুল্যবৃদ্ধি করে জনগণের সঙ্গে প্রহসন করা হয়েছে। এটি জনগণের সঙ্গে চরম প্রতারণা ছাড়া অন্যকিছুই নয়।

মো. মঞ্জুর হোসেন ঈসা বলেন, সরকার জনগণকে স্বস্তি দিতে যেখানে আমদানি ও উৎপাদন পর্যায়ে আমদানি শুল্ক প্রত্যাহার করল, সেই সুবিধা তো জনগণ পেলই না, উল্টো আরও মুল্যবৃদ্ধি করে জনগণের পকেট কাটার সঙ্গে সঙ্গে বাজার থেকে হঠাৎ করে তেল উধাও করে দেওয়া হলো।

এবিএম খালিদ হোসেন বলেন, দ্রব্যমূল্য এখন মধ্যবিত্তের ক্রয় ক্ষমতার বাইরে চলে গেছে। ঈদের আগে সরকার অনেক নাটক করেছে। সরকার ব্যবসায়ী সিন্ডিকেটের ওপর দায় চাপানোর চেষ্টা করেছে। অথচ এ কথা দিবালোকের মত স্পষ্ট এসব সিন্ডিকেট সরকারী দলের নেতারাই তৈরী করেছেন।

বাংলাদেশ ন্যাপ মহাসচিব ও জাতীয় প্রতিরোধ আন্দোলনের সমন্বয়কারী এম. গোলাম মোস্তফা ভুইয়া’র সভাপতিত্বে প্রধান বক্তা হিসাবে বক্তব্য রাখেন এনডিপি মহাসচিব ও জাতীয় প্রতিরোধ আন্দোলনের সদস্য সচিব মো. মঞ্জুর হোসেন ঈসা। বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ লেবার পার্টি চেয়ারম্যান হামদুল্লাহ আল মেহেদী, এবি পার্টির সিনিয়র সহকারী সদস্য সচিব এবিএম খালিদ হোসেন, জাগপা প্রেসিডিয়াম সদস্য আসাদুর রহমান খান, নাগরিক সমাজের সভাপতি মহিউদ্দিন আহমেদ, সোনার বাংলা পার্টির সাধারন সম্পাদক সৈয়দ হারুন-অর-রশীদ, লেবার পার্টি মহাসচিব আবদুল্লাহ আল মামুন, বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি অতিরিক্ত মহাসচিব এডভোকেট জাফর আহমেদ জয়, জাগ্রত জনতা ফোরামের সভাপতি মুহম্মদ ওয়ালিদ সিদ্দিকী তালুকদার,বাংলাদেশ ন্যাপ ভাইস চেয়ারম্যান স্বপন কুমার সাহা, জাতীয় কৃষক-শ্রমিক মুক্তি আন্দোলনের সমন্বয়কারী মো. মহসীন ভুইয়া, জাতীয় নারী আন্দোলনের সভাপতি মিতা রহমান, এবি পার্টির সহকারী সদস্য সচিব এম ইলিয়াস আলী, বাংলাদেশ জাস্টিজ পার্টির চেয়ারম্যান আবুল কাশেম মজুমদার, মানবাধিকার প্রতিষ্ঠা ও বাস্তবায়ন সংস্থা মো. নুরুল ইসলাম, নারী নেত্রী সাদিয়া সূচি প্রমুখ।

বগি লাইনচ্যুত হয়ে ঢাকা-চট্টগ্রাম ট্রেন যোগাযোগ বন্ধ

মালবাহী ট্রেনের তিন বগি লাইনচ্যুত হয়েছে। এতে ঢাকা-চট্টগ্রাম, কুমিল্লা-সিলেট, ঢাকা-নোয়াখালী রুটে ট্রেন চলাচল বন্ধ রয়েছে। সোমবার (০৯ মে) রাত ৩টা ৪০ মিনিটে বুড়িচং উপজেলার রাজাপুর রেলষ্টেশন এ ঘটনা ঘঠে। খবর পেয়ে আখাউড়া রেলওয়ে জংশন তেকে একটি উদ্ধারকারী ট্রেন ঘটনাস্থলে পৌঁছে কাজ শুরু করেছে।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন লাকসাম রেলওয়ে থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্তমর্তা (ওসি) জসিম উদ্দিন খন্দকার। তিনি বলেন, চট্টগ্রাম থেকে ঢাকামুখী মালবাহী ট্রেন রাজপুর ষ্টেশন এলাকায় পৌঁছালে তিনটি বগি লাইনচ্যুত হয়। যার ফলে এই রুটে ট্রেন চলাচল বন্ধ রয়েছে।

তিনি আরও বলেন ,রেলওয়ের একাধিক টিম লাইন মেরামতের কাজ করছে। যেহেতু লাইন বাঁকা হয়ে গেছে, স্বাভাবিক হতে কতক্ষণ লাগবে বলা যাচ্ছনা।

কর্মস্থলে ফিরছে মানুষ দৌলতদিয়া ফেরিঘাটে ৯ কিলোমিটার যানজন

ঢাকাঃ ঈদ শেষে কর্মস্থলে ফিরতে শুরু করেছে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মানুষ। এতে রাজবাড়ীর দৌলতদিয়া ফেরিঘাটে যাত্রী ও যানবাহনের চাপ বেড়েছে। এর ফলে ৯ কিলোমিটার এলাকার সড়কে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। মূলত শুক্রবার রাত থেকে যানবাহনের চাপ বেড়েছে। ফলে প্রায় ৮-৯ ঘণ্টা অপেক্ষা করে ফেরির নাগাল পেতে হচ্ছে যানবাহনকে।

শনিবার (০৭ মে) সকালে দৌলতদিয়া ঘাট এলাকায় দেখা যায়, ফেরিঘাটের জিরো পয়েন্ট থেকে ঢাকা-খুলনা মহাসড়কে যানবাহনের সারি প্রায় ৯ কিলোমিটারের বেশি। অপেক্ষমাণ এসব যানবাহনের মধ্যে যাত্রীবাহী বাস, ব্যক্তিগত গাড়ি রয়েছে বেশি।

অপরদিকে ঘাট এলাকায় যানজট এড়াতে ঘাট থেকে সাড়ে ১৩ কিলোমিটার পেছনে গোয়ালন্দ মোড় থেকে রাজবাড়ীর দিকে আরও ৩ কিলোমিটার অংশজুড়ে পচনশীল পণ্য পরিবহনকারী ট্রাকের সারি রয়েছে।

সময় বাড়বে ততই যাত্রী ও যানবাহনের চাপ বাড়বে বলে ধারণা করা হচ্ছে। দীর্ঘ সময় সিরিয়ালে আটকে থেকে খাবার, বাথরুমসহ নানা সমসায় পড়ছেন যাত্রীরা। সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়ছেন শিশু, নারী ও বৃদ্ধরা।

ঝিনাইদহ থেকে আসা শ্যামলী পরিবহনের বাসের যাত্রী ইমরান জানান, রোববার থেকে তার অফিস। তাই পরিবার নিয়ে গতকাল রাতেই চুয়াডাঙ্গা থেকে দিগন্ত পরিবহনের বাসে উঠেন। রাতে এসে তিনি ঘাটে আটকে গেছেন। সকাল হলেও তিনি ঘাট থেকে ৩ কিলোমিটার দূরে রয়েছেন।

গ্রিন লাইন পরিবহনের চালক রিপন বলেন, রাত দেড়টা থেকে ঘাটে এসে আটকা আছি।

ট্রাকচালক নান্নু বলেন, বরগুনা থে‌কে তরমুজ নি‌য়ে ঢাকায় যা‌চ্ছেন। রাত ১টা থে‌কে দৌলত‌দিয়া প্রা‌ন্তে সি‌রিয়া‌লে আটকা প‌ড়ে‌ছেন। তরমু‌জের অবস্থাতো খারাপ। তরমুজ দি‌য়ে পা‌নি পড়ছে।

বিআইডাব্লিউটিসির দৌলতদিয়া ঘাটের ব্যবস্থাপক মো.শিহাব উদ্দিন জানান, আজ ছুটির শেষ দিন হওয়ায় দৌলতদিয়া ঘাটে যাত্রী ও যানবাহনে চাপ বেড়েছে। বর্তমানে এই রুটে ২১টি ফেরি দিয়ে যানবাহন পারাপার করা হচ্ছে। আশা করছি বিকেলের মধ্যে এই জট কেটে যাবে।

যেসব জেলায় ৬০ কিলোমিটার বেগে ঝড়ের আভাস

দেশের ৮টি জেলার ওপর দিয়ে সর্বোচ্চ ৬০ কিলোমিটার বেগে ঝড়ের আভাস রয়েছে। এক্ষেত্রে তাপমাত্রা ১ থেকে ২ ডিগ্রি কমে গিয়ে তাপপ্রবাহ কিছুটা প্রশমিত হতে পারে। মঙ্গলবার (১৯ এপ্রিল) সন্ধ্যায় এমন পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া অফিস।

বুধবার (২০ এপ্রিল) সকাল সাড়ে ৬টার দিকে আকাশ মেঘাচ্ছন্ন হয়ে আসে। এরপর পৌনে ৭টার দিকে শুরু হয় ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি। সঙ্গে ছিল বজ্রপাত। হঠাৎ এ বৃষ্টিতে যেন আচমকাই থমকে যায় রাজধানীবাসীর স্বাভাবিক জীবনযাত্রা।

আবহাওয়াবিদ মো. বজলুর রশিদ জানিয়েছেন, পশ্চিমা লঘুচাপের বর্ধিতাংশ হিমালয়ের পাদদেশীয় পশ্চিমবঙ্গ এবং তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করছে। মৌসুমের স্বাভাবিক লঘুচাপ অবস্থান করছে দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে।

এই অবস্থায় রংপুর, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় এবং কুমিল্লা অঞ্চলসহ রাজশাহী, ঢাকা ও খুলনা বিভাগের দুই/এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা/ঝড়ো হাওয়ার সঙ্গে প্রবল বিজলী চমকানোসহ বৃষ্টি/বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেসঙ্গে দেশের কোথাও কোথাও বিক্ষিপ্তভাবে শিলাবৃষ্টি হতে পারে। এছাড়া দেশের অন্যত্র আংশিক মেঘলা আকাশসহ আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকবে।

ঢাকায় দক্ষিণ দক্ষিণ-পশ্চিম দিক থেকে ঘণ্টায় বাতাসের গতিবেগ থাকবে ১০-১৫ কিলোমিটার, যা অস্থায়ীভাবে দমকা আকারে পশ্চিম উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে ঘণ্টায় ৩০-৪০ কিলোমিটার পর্যন্ত ওঠে যেতে পারে।

বৃহস্পতিবার নাগাদ আবহাওয়ার সামান্য পরিবর্তন হতে পারে। বর্ধিত ৫ দিনের আবহাওয়ায় তাপমাত্রা ফের বাড়বে।

অন্য এক পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, দিনাজপুর, রংপুর, পাবনা, বগুড়া, রাজশাহী, টাঙ্গাইল, ময়মনসিংহ এবং সিলেট অঞ্চলসমূহের ওপর দিয়ে পশ্চিম/উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে ঘণ্টায় ৪৫-৬০ কি.মি. বেগে বৃষ্টি/বজ্রসহ বৃষ্টি অস্থায়ীভাবে দমকা/ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। তাই এসব এলাকার নদীবন্দরসমূহকে ১ নম্বর (পুনঃ) ১ নম্বর সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।

মঙ্গলবার দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে রাজশাহীতে, ৩৬ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ঢাকার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৫ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত হয়েছে সৈয়দপুরে, ৪১ মিলিমিটার।

বিভীষিকার সাক্ষী মিরপুরের জল্লাদখানা

মুক্তিযুদ্ধের নয় মাসে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষকে ধরে এনে নির্যাতনের পর শিরশ্ছেদ করে পাম্প হাউজের কূপে ফেলে দেয়া হতো। স্থানীয় বিহারীদের সহযোগিতায় এখানে ইতিহাসের বর্বরতম হত্যাযজ্ঞ চালায় পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী। ৭১’এর বিভীষিকাময় হত্যাযজ্ঞের সেই স্মৃতি বহন করছে মিরপুর জল্লাদখানা বধ্যভূমি।

মিরপুর-১০ নম্বর গোল চত্বর পেরিয়ে বেনারসি পল্লী ধরে কিছুটা এগিয়ে যেতেই এ বধ্যভূমি। এর প্রবেশপথের ছোট্ট ফটকের গায়ে লেখা ‘কী বলতে চায় মিরপুর জল্লাদখানা বধ্যভূমি, শুনতে কি পাও?’

 

ভেতরে প্রবেশ করতেই প্রথমে নজরে আসে প্রায় চৌকোনা মাটির স্মারক। সবুজ বিস্তীর্ণ এ ঘাসের নিচে শায়িত রয়েছেন এক মা ও তার দুই সন্তান এমন ভাবনা থেকেই এটি তৈরি। ‘শূন্য হৃদয়’ নামে এ স্মারকটির স্থপতি কবি রবিউল হুসাইন। প্রতিবছর ১৪ ডিসেস্বর থেকে টানা তিনদিন এই স্থানটিকে ঘিরে নানা কর্মসূচি পালন করা হয়।

বুধবার সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, জল্লাদখানা বধ্যভূমি ধুয়ে মুছে পরিষ্কার করা হয়েছে। বধ্যভূমির সামনে সামিয়ানা (প্যান্ডেল) করা হয়েছে। নেয়া হয়েছে তিনদিনের কর্মসূচি।

বধ্যভূমির ভিতরে ঘুরে দেখা গেল নানা তথ্য। রয়েছে সারাদেশে ছড়িয়ে থাকা ৪৭৭টি বধ্যভূমির তালিকা। বিভাগওয়ারি করা এ তালিকার মাঝে কাচের ভেতরে মাটির পাত্রে রাখা আছে দেশের অন্যতম ছয়টি বধ্যভূমির মাটি। এসব বধ্যভূমি হলো কিশোরগঞ্জের বড়ইতলা, রাজশাহীর বাবলাবন, জয়পুরহাটের পাগলা দেওয়ান, চট্টগ্রামের ফয়’স লেক, খুলনার চুকনগর এবং সিলেটের আদিত্যপুর।

প্রতিটি বিভাগের মাটির পৃথক রঙ মনে করিয়ে দেয় ষড়ঋতুর এ দেশের বৈচিত্র্যময়তা। এর মাঝ বরাবর দেয়ালে রয়েছে একটি ফলকচিত্র। শিল্পী রফিকুন নবী ও মনিরুজ্জামানের যৌথ এ চিত্রের শিরোনাম ‘জীবন অবিনশ্বর’। যাতে তুলে ধরা হয়েছে, একাত্তরে মিরপুরের এই জায়গাটির গণহত্যার প্রতীকী দৃশ্য। এরপর নজরে আসে ছোট্ট একটি ঘর। এটিই সংগ্রহশালা। যার প্রবেশমুখে ঝুলছে একটি ঘণ্টা। এর নাম ‘সেন্টিমেন্ট বেল’। দর্শনার্থীকে এ ঘণ্টা বাজিয়ে ভেতরে প্রবেশ করতে হয়। এ শব্দ শহীদদের কাছে নিজের আগমনের বার্তা জানান দেয়।

জুতা খুলে ভেতরে প্রবেশ করতেই দেয়ালে দেখা মেলে মিরপুরে শহীদদের নামের একটি তালিকা। ইতোমধ্যেই সেখানে সন্নিবেশিত হয়েছে ৭০টি নাম। আরও নতুন নতুন নাম যুক্ত। এরপর দেখা মেলে সেই কুয়ার। হত্যার পর যেখানে ছুড়ে ফেলা হয়েছিল শহীদদের। এর সামনে একটি কাচের সেলফের ভেতরে রয়েছে এখানকার বধ্যভূমির মাটি। আর তিনটি বক্সে রাখা হয়েছে শহীদ হওয়া মানুষগুলোর ব্যবহৃত নানা জিনিসপত্র। এ ছাড়াও এখানে তৈরি করা হয়েছে ‘স্মৃতি টাওয়ার’। মুক্তিযুদ্ধের চার দশক পূর্তির এ স্মারকটি একজন তরুণের হাতে জাতীয় পতাকা দেখানো হয়েছে। এটির নির্মাতাও স্থপতি রবিউল হুসাইন।

 

জল্লাদখানার বধ্যভূমির তত্ত্বাবধায়ক কে এম নাসিরউদ্দীন জানান, মিরপুরবাসীর তথ্য অনুযায়ী, মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর ১৯৯৯ সালে সেনাবাহিনীর সহযোগিতায় ওয়াসার পরিত্যক্ত পাম্প হাউজে খননকাজ চালায়। এখান থেকে পাওয়া যায় ৭০টি মাথার খুলি, পাঁচ হাজার ৩৯২টি অস্থিখণ্ড ও শহীদদের ব্যবহার্য নানা সামগ্রী। ২০০৭ সালের ২১ জুন মিরপুরের শহীদ পরিবারের সদস্যদের হাত ধরে এই স্থাপনাটির দ্বার উন্মোচন করা হয়।

তিনি জানান, প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত এ জল্লাদখানা সবার জন্য উন্মুক্ত থাকে। এখানে প্রবেশের জন্য কোনো টিকিট লাগে না। একটি বাক্স আছে, যার যা ইচ্ছা, সে সেখানে দিয়ে যায়। প্রতিদিনই গড়ে ১৫০-২০০ দর্শনার্থী আসেন। উদ্বোধনের পর থেকে এ পর্যন্ত এ সংগ্রহশালা পরিদর্শন করেছেন প্রায় সাড়ে ছয় লাখ মানুষ। এ ছাড়াও প্রতি শনিবার বিকেল সাড়ে ৪টায় এখানে নতুন প্রজন্মের কাছে মিরপুরের মুক্তিযুদ্ধের গল্প শোনান শহীদ পরিবারের সন্তানরা।