একশ’র বেশি হ্রদ যে উদ্যানে

লেক বা হ্রদ প্রায় সব উদ্যানেই রয়েছে। কম আর বেশি। তবে ওয়েলসের স্নোডোনিয়া জাতীয় উদ্যানে হ্রদ রয়েছে একশ’র বেশি। দেশের বাইরে গেলে এখান থেকে ঘুরে আসতে পারেন।

 

গ্যারেথ বেলের দেশ ওয়েলেসের উত্তর-পশ্চিমে অবস্থিত সবচেয়ে বড় জাতীয় উদ্যান স্নোডোনিয়া। ওয়েলসের সর্বোচ্চ পাহাড় স্নোডোনিয়াও এখানেই অবস্থিত। আর এই পাহাড়ের নামেই এর নাম।

 

এখানে প্রায় একশ’রও বেশি হ্রদ রয়েছে। এছাড়াও পশ্চিমে রয়েছে সাগর। পুরো এলাকাজুড়ে রয়েছে বন, নদী আর জলপ্রপাত। পাহাড় আর উপত্যাকার সৌন্দর্যও কম নয় এখানে।

 

ওয়েলসের সবচেয়ে বড় প্রাকৃতিক হ্রদ ‘লিন টেজিগ’ এখানেই অবস্থিত। হাইকিং, মাউন্টেইন বাইকিং, সার্ফিং- অ্যাডভেঞ্চারের প্রায় সবগুলো করতে পারবেন এখানে।

ঘুরে আসুন ফয়’স লেক

চট্টগ্রামের ফয়’স লেকের নাম শোনেননি এমন মানুষ পাওয়া যাবে না নিশ্চয়ই। তবে ঘুরে দেখেছেন কি সবাই? হয়তো সবাই যেতে পারেননি। তাই সময় করে একবার ঘুরে আসুন ফয়’স লেক থেকে। জানা এবং দেখার সমন্বয়ে দারুণ অনুভূতি সৃষ্টি হবে আপনার।

নামকরণ
ফয়’স লেক কোনো প্রাকৃতিক হ্রদ নয়। ১৯২৪ সালে আসাম বেঙ্গল রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের তত্ত্বাবধানে খনন করা হয়। তখন এটি ‘পাহাড়তলি লেক’ নামে পরিচিত ছিল। পরে প্রকৌশলী মি. ফয়’র নামানুসারে ‘ফয়’স লেক’ রাখা হয়।

 

অবস্থান
লেকটি চট্টগ্রামের পাহাড়তলি রেলস্টেশনের অদূরে খুলশি এলাকায় অবস্থিত। ৩৩৬ একর জমির ওপর নির্মিত হ্রদটি পাহাড়ের একপ্রান্ত থেকে অন্যপ্রান্তের মধ্যবর্তী একটি সরু উপত্যকায় আড়াআড়িভাবে বাঁধ নির্মাণের মাধ্যমে সৃষ্ট।

বৈশিষ্ট্য
এখানে শিশুদের জন্য রাইডের ব্যবস্থা রয়েছে। বড়দের জন্য রয়েছে পাহাড় ও হ্রদের মনোমুগ্ধকর পরিবেশ। রয়েছে অরুণাময়ী, গোধূলি, আকাশমণি, মন্দাকিনী, দক্ষিণী এবং অলকানন্দা নামের হ্রদ। হ্রদের পাড়ে সারি সারি নৌকা। থাকার জন্য বিভিন্ন রিসোর্ট রয়েছে।

 

প্রবেশ মূল্য
ফয়’স লেকে প্রাপ্তবয়স্কদের প্রবেশ মূল্য ২০০ টাকা। আর প্রতি শিশু ১৮০ টাকা। তবে তিন ফুটের কম উচ্চতার শিশুদের জন্য ফ্রি।

খোলা
রবিবার থেকে বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত খোলা। এছাড়া শুক্রবার ও শনিবার সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত খোলা থাকে।

 

যেভাবে যাবেন
দেশের যেকোন অঞ্চল থেকে সড়ক, নৌ বা রেলপথে চট্টগ্রাম শহরে চলে আসুন। এরপর চট্টগ্রাম শহরের জিইসি মোড় থেকে সিএনজি বা রিক্শায় যাওয়া যায়। শহর থেকে রিকশা পেতে খুব বেগ পেতে হয় না।

যেখানে থাকবেন
হোটেল আগ্রাবাদে থাকতে পারেন। এছাড়া অনেক হোটেল ও রিসোর্ট রয়েছে। লেকের গেটেও রিসোর্টের ব্যবস্থা রয়েছে।

কানাডার ব্যানফ জাতীয় উদ্যান

প্রতিটি দেশেই জাতীয় উদ্যান রয়েছে। আর তাই তো কানাডার জাতীয় উদ্যান হচ্ছে ‘ব্যানফ জাতীয় উদ্যান’। কানাডায় ঘুরতে গেলে দেখে আসতে পারেন উদ্যানটি।

দেশটির রকি পর্বতমালার কোলে অবস্থিত ব্যানফ জাতীয় উদ্যান। কানাডার আলবার্টা নামক স্থানে অবস্থিত উদ্যানটি প্রতিষ্ঠিত হয় ১৮৮৫ সালে।

ছয় হাজার বর্গ কিলোমিটারেরও বেশি জায়গাজুড়ে থাকা উদ্যানে রয়েছে হ্রদ, পাহাড় ও হিমবাহ। উদ্যানটির উত্তরে লুইস হ্রদ থেকে জ্যাসপার জাতীয় উদ্যান পর্যন্ত রয়েছে বরফের বিশাল মাঠ। পশ্চিমে রয়েছে বন আর ইয়োহো জাতীয় উদ্যান। দক্ষিণে রয়েছে কোটেনি জাতীয় পার্ক।

 

সবচেয়ে বিখ্যাত হলো জাতীয় উদ্যানের ঠিক মাঝখানে থাকা বো নদীর তীরে অবস্থিত ব্যানফ গ্রাম। গ্রামটি দেখতে অনেক সুন্দর এবং মনোরম।

 

প্রতি বছর প্রায় ৫০ লাখ পর্যটক এখানে ঘুরতে আসেন। উদ্যানের বিভিন্ন স্থান ঘুরে দেখা যায় ১০-২০ ডলারের বিনিময়ে।

পর্বতশৃঙ্গে বাংলাদেশের নাম যার জন্য

কাজী বাহলুল মজনু বিপ্লব ‘পর্বতমানব’ হিসেবে সুপরিচিত। তাদের আগে কোন মানুষ কখনো আরোহণ করেননি, এমন এক শৃঙ্গে সফলভাবে অভিযান সম্পন্ন করেন তিনি। যে কারণে ‘চেকিগো’ নামের অ-বিজয়ী পর্বতশৃঙ্গের আনুষ্ঠানিক নাম দেওয়া হয় ‘নেপাল-বাংলাদেশ মৈত্রী শিখর’।

নেপালের রাজধানী কাঠমান্ডুর ইয়াক অ্যান্ড ইয়েতি হোটেলে এক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে এ ঘোষণা দেওয়া হয়। নেপাল মাউন্টেনিয়ারিং অ্যাসোসিয়েশন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় নেপাল-তিব্বত সীমান্তে অবস্থিত ২০,৫২৮ ফুট (৬,২৫৭ মিটার) উঁচু এ পর্বতের নতুন নামকরণ করেন।

চেকিগো নামের এ শৃঙ্গে বাংলাদেশ ও নেপালের পর্বতারোহীরা যৌথ অভিযান পরিচালনা করেন এবং তা সফল হয়। তাই পর্বতশৃঙ্গটির নাম হয় ‘নেপাল-বাংলাদেশ মৈত্রী শিখর’। হিমালয় পর্বতে চিরদিনের জন্য বাংলাদেশের নাম স্থাপিত হলো। যতদিন হিমালয় থাকবে; ততদিন বাংলাদেশের নাম এই পর্বতশৃঙ্গ থাকবে।

 

বাংলাদেশের প্রধান পর্বতারোহণ ক্লাব ‘বিএমটিসি’ এই ঐতিহাসিক অভিযান পরিচালনা করে। দু’বার এভারেস্ট বিজয়ী এম এ মুহিতের নেতৃত্বে অভিযানের সফল আরোহণকারী কাজী বাহলুল মজনু বিপ্লব। তিনি দেশের অভিজ্ঞ পর্বতারোহীদের একজন। তার ঝুলিতে ৫টি ৬ হাজার মিটার উঁচু পর্বত জয়ের সফলতা রয়েছে।

নামকরণ প্রসঙ্গে কাজী বাহলুল মজনু বিপ্লব জাগো নিউজকে বলেন, ‘যখন পর্বত অভিযানে থাকি; তখন আমি যুদ্ধের ময়দানে থাকি। একটাই চিন্তা মাথায় থাকে- দেশের জন্য যুদ্ধ করছি, পতাকার জন্য যুদ্ধ করছি।’

আজ এই পর্বতমানবের জন্মদিন। জাগো নিউজের পক্ষ থেকে তার জন্য রইলো শুভকামনা।

ঈদের ছুটিতে পান্থমাই

সামনেই তো ঈদুল আজহার ছুটি। ইচ্ছে করলে ঘুরে আসতে পারেন কোথাও থেকে। যেতে পারেন সিলেটে। সিলেটের অনেক স্থানের মধ্যে পান্থমাইও গুরুত্বপূর্ণ। জেনে নিন পান্থমাই সম্পর্কে-

পান্থমাই

পান্থমাই ঝরনা ভারতে অবস্থিত। তবে এর সৌন্দর্য পুরোটাই বাংলাদেশ থেকে দেখা যায়। এর অসম্ভব সৌন্দর্য দেখে আপনি অভিভূত হবেন।

 

বৈশিষ্ট্য

এ ঝরনার বৈশিষ্ট্য হচ্ছে- এটা পাহাড়ি ঢল বেয়ে পাথরের মধ্য দিয়ে সজোরে প্রবাহিত হয়। বেশ গর্জন করতে থাকে। এ ঝরনার পানি পুরোটাই বাংলাদেশে প্রবাহিত হয়। গড়িয়ে পড়া পানিতেই তৈরি হয়েছে ছোট নদী। স্থানীয়রা একে ছড়া বলে। আর পান্থমাই জলপ্রপাত এ দেশ থেকে বিচ্ছিন্ন বলে একে ফাটা ছড়া বা ঝরনা বলা হয়। এছাড়া পান্থমাই গ্রামের চারপাশ খুব চমৎকার। এখানে রয়েছে বড় একটি খেলার মাঠ।

যাতায়াত

রাজধানী ঢাকাসহ দেশের যেকোনো জেলা থেকে যেতে হবে সিলেট শহরে। বিমানবন্দর রোড দিয়ে অটোরিকশায় পান্থমাইয়ের পথ। ভাড়া করার সময় খেয়াল রাখবেন। তা না হলে অতিরিক্ত ভাড়া গুনতে হবে।

 

থাকা

পান্থমাই থাকার তেমন ভালো ব্যবস্থা নেই। তবে সিলেট শহরে অনেক হোটেল-মোটেল রয়েছে। ৩শ’ থেকে শুরু করে ৬ হাজার টাকা পর্যন্ত রুম ভাড়া পাওয়া যায় সিলেটে। নিরাপত্তাব্যবস্থাও ভালো।

খাওয়া

পান্থমাই যাওয়া সময় সিলেট থেকে খাবার নিয়ে যেতে পারেন। ওখানে বাজার থাকলেও দুপুরে খাওয়ার তেমন ব্যবস্থা নেই। তবে চাইলে স্থানীয়দের রান্না করা রেস্টুরেন্টে যেতে পারেন।

ইংল্যান্ডের রানির শোবার ঘর

সবার শোবার ঘর দেখার ইচ্ছা আমাদের সবসময় হয়তো জাগে না। তবে বিশেষ ব্যক্তির একান্ত সময়গুলো কিভাবে কাটে তা জানার আগ্রহ কমবেশি সবারই আছে। বিশ্বের ক্ষমতাধর একজন মানুষ ইংল্যান্ডের রানি। কেমন হতে পারে তার শোবার ঘর। বাস্তবে না দেখতে পারলেও দেখে নিতে পারি আলোকচিত্রে।

ইংল্যান্ডের রানির আবাসস্থল বাকিংহাম প্যালেস। বর্তমান রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথ সেখানেই থাকেন। রানি থাকেন বলে এ জায়গা অগণিত মানুষের কৌতূহলের কেন্দ্রবিন্দু। বছরের নির্দিষ্ট কিছু সময় এ প্রাসাদের বিভিন্ন অংশ সাধারণ মানুষের দেখার জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়।

 

> আরও পড়ুন- পৃথিবীর অদ্ভুত কিছু জাদুঘর

কিন্তু যে জায়গাটিতে কখনোই কোন সাধারণ মানুষ প্রবেশ করতে পারে না তা হলো, রানির নিজস্ব শোবার ঘর। সেখানে শুধু রানির একান্ত আপনজন ও দু’একজন চাকর ছাড়া আর কারও প্রবেশাধিকার নেই।

১৯৮২ সালে ম্যাইকেল ফ্যাগান নামক এক ব্যক্তি নিরাপত্তা বেষ্টনি ভেঙে ঢুকে পড়েছিল রানির ঘরে। সেটিই ছিলো সম্ভবত ইতিহাসের সবচেয়ে বড় অঘটন। নিরাপত্তা লঙ্ঘনের সবচেয়ে বড় ঘটনা।

 

সেই প্রথম এবং সম্ভবত শেষ ব্যক্তি সে রানির ঘনিষ্টজন না হয়েও রানির ঘরে ঢুকেছিল। কারণ এরপর থেকে সেখানকার নিরাপত্তা আরও নিশ্ছিদ্র করা হয়, যাতে এ ঘটনার আর পুনরাবৃত্তি না ঘটে।

 

> আরও পড়ুন- বিপজ্জনক প্রবালপ্রাচীরে ঘেরা দ্বীপ

তাই এমন অদ্ভুত শখ যদি কারো থেকে থাকে যে, রানি লোকচক্ষুর অন্তরালে নিজস্ব ভুবনে কেমন করে থাকেন সেটা দেখবেন, তা পাগলামি ছাড়া আর কিছুই নয়।

ভয়ংকর কে-২ : বিশ্বাসঘাতকতার এই দিনে

এডমুন্ড হিলারি এবং তেনজিং নোরগে ১৯৫৩ সালের ১৯ মে পৃথিবীর সর্বোচ্চ পর্বতশৃঙ্গ মাউন্ট এভারেস্ট স্পর্শ করে সারা দুনিয়াকে তাক লাগিয়ে দেন। সেই পর্বতজয়ের আনন্দে যখন সবাই ভাসছে, তার পরের বছর ১৯৫৪ সালের ৩১ জুলাই পৃথিবীর দ্বিতীয় পর্বতশৃঙ্গ মাউন্ট কে-২ জয়ের কথা ছড়িয়ে পরে চারদিকে। এবার কিন্তু এডমুন্ড হিলারি এবং তেনজিং নোরগে নয়। ইতালিয়ান পর্বতারোহী আচিলে কম্পাগননি এবং লিনো লাসেডেলি স্থানীয় সময় অনুসারে বিকেল ৬ টায় সর্বোচ্চ বিন্দুতে পৌঁছান।

 

সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে এর উচ্চতা ৮ হাজার ৬১১ মিটার বা ২৮ হাজার ২৫১ ফুট। ৮ হাজার ৮৪৮ মিটার বা ২৯ হাজার ০২৯ ফুট উচ্চতার মাউন্ট এভারেস্টের তুলনায় কে-২ মাত্র ২৩৭ মিটার বা ৭৭৮ ফুট ছোট। হিমালয় পর্বতমালার কারাকোরাম পর্বতমালার অন্তর্গত এই পর্বতশৃঙ্গটি পাকিস্তানের গিলগিত-বালতিস্তান ও চীনের জিংজিয়ানের তাক্সকোরগান সীমান্তে অবস্থিত।

 

এই পর্বতশৃঙ্গে প্রথম ১৯০২ সালে আরোহণের চেষ্টা করেন একটি অ্যাংলো-সুইস অভিযাত্রী দল এবং তাঁরা শৃঙ্গের উত্তর-পূর্ব ধার বরাবর ১৮ হাজার ৬শ’ ফুট বা ৫ হাজার ৬৭০ মিটার উচ্চতা পর্যন্ত আরোহণে সমর্থ হন। অন্য অসফল প্রচেষ্টাগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো- ১৯০৯ সালে লুইগি আমেদিও, ডিউক অব আবুরাজ্জির অভিযান এবং তাঁরা প্রায় ২০ হাজার ফুট বা ৬ হাজার ১শ’ মিটার উচ্চতা পর্যন্ত আরোহণ করেন। এরপর ১৯৩৮ সালে একটি আমেরিকান অভিযাত্রী দল চার্লস হাউস্টনের নেতৃত্বে প্রায় ২৬ হাজার ফুট বা ৭ হাজার ৯২৫ মিটার উচ্চতা পর্যন্ত আরোহণ করেন।

 

শেষপর্যন্ত ১৯৫৪ সালে একটি ইতালিয় অভিযাত্রী দল ভূ-তাত্ত্বিক আরদিতো দেসিওর নেতৃত্বে কে-২ জয় করেন আচিলে কম্পাগননি এবং লিনো লাসেডেলি। এই কঠিন পর্বত জয় করে বিশ্বাসঘাতক হিসেবেও পরিচিত আচিলে কম্পাগননি এবং লিনো লাসেডেলি। এর কারণ তাদের এই কে-২ অভিযান দলের সদস্য পাকিস্তানের আমির মেহদী ও ওয়াল্টার বোনাট্টিকে মাঝপথে মুমূর্ষু অবস্থায় ফেলে রেখে সামিটে যান। হয়তো সেদিন বিশ্বাসঘাতকতার কারণেই প্রথম কে-২ চূড়ায় পদচিহ্ন আঁকতে পেরেছিলেন তারা।

 

কে-২ পর্বতশৃঙ্গে আরোহণ করা অত্যন্ত দুর্গম ও বর্বর হওয়ায় এটি জংলি পর্বত নামেও পরিচিত। অন্নপূর্ণা পর্বতশৃঙ্গের পর আট-হাজারি পর্বতশৃঙ্গগুলোতে আরোহণে মৃত্যুর হারের দিক থেকেও কে-২ এর অবস্থান দ্বিতীয়। এর চূড়ায় আরোহণকারী প্রতি চার জনের মধ্যে মৃত্যুর হার একজন। ফলে বোঝাই যায় কে-২ কত ভয়ংকর পর্বত।

তিন রাজ্য নিয়ে এক উদ্যান

বিশ্বের প্রতিটি দেশেই একটি করে জাতীয় উদ্যান রয়েছে। এছাড়া কোনো কোনো দেশের অঙ্গরাজ্যগুলোতেও আলাদা করে জাতীয় উদ্যান রয়েছে। আমেরিকার তেমন একটি জাতীয় উদ্যান হচ্ছে ‘ইয়োলোস্টোন জাতীয় উদ্যান’।

 

আমেরিকার তিনটি রাজ্য নিয়ে এ উদ্যান অবস্থিত। সবচেয়ে মজার ব্যাপার হচ্ছে, উদ্যানটি একটি সুপ্ত আগ্নেয়গিরির উপরে অবস্থিত। এরপরও নজরকাড়া সৌন্দর্য নিয়ে টিকে আছে ইয়োলোস্টোন জাতীয় উদ্যান।

 

এখানে রয়েছে পৃথিবীর অন্যতম বিখ্যাত উষ্ণ প্রস্রবণ। এছাড়াও পাহাড়, ঝরনা, জলপ্রপাত এবং নদীর পাশাপাশি রয়েছে বিভিন্ন জাতের পশু এবং পাখি। এ দেশে ঘুরতে গেলে দেখে আসতে পারেন উদ্যানটি।

বিমানে যে কাজগুলো না করাই ভালো

বিমান ভ্রমণে কতগুলো নিয়ম মেনে চলা ভালো। কারণ একজন ফ্লাইট অ্যাটেনডেন্টের দৃষ্টিতে আপনি কেন খারাপ যাত্রীতে রূপান্তরিত হবেন। বিমানযাত্রীদের মধ্যে কারা ভালো যাত্রী তা একজন ফ্লাইট অ্যাটেনডেন্ট বলে দিতে পারেন। একজন ফ্লাইট অ্যাটেনডেন্টের দৃষ্টিতে ভালো যাত্রীর বৈশিষ্ট্য নিম্নরূপ-

ব্যাগ নিজ দায়িত্বে রাখুন

সব যাত্রীই যদি আশা করে যে, তাদের ব্যাগ একজন ফ্লাইট অ্যাটেনডেন্ট উঠিয়ে দেবে, তাহলে তা সত্যিই কঠিন। কারণ শত শত যাত্রীর ভারি ব্যাগ ওপরে তোলা যেমন কঠিন; তেমন এতে সময়ও নষ্ট হয়। আপনি যদি সুস্থ-সবল ব্যক্তি হন তাহলে নিজের কাজটি নিজেই করে নিন।

 

কম্পার্টমেন্ট বোঝাই ও সিট খোঁজা

ওভারহেড কম্পার্টমেন্ট নিজেই বোঝাই করুন, নিজের সিট নিজেই খুঁজে নিন। অনেক সময়েই যাত্রীরা তাদের ব্যাগ ঠিকঠাক ওভারহেড কম্পার্টমেন্টে ঢোকান না। অনেকেই যাতায়াতের রাস্তাতে ব্যাগ ফেলে রাখেন। ফলে অনেক সময়েই বিমানযাত্রায় সময় নষ্ট হয়।

ভদ্র ব্যবহার করুন

বিমানে ফ্লাইট অ্যাটেনডেন্টরা আপনার জন্য কোনো কাজ করলে ভাববেন না যে, এটি তার দায়িত্বের অংশ হিসেবেই করেছেন। সুতরাং ‘প্লিজ’ বা ‘ধন্যবাদ’ শব্দটি তাদের বলতে পারেন। কিন্তু অনেকের মধ্যে সাধারণ ভদ্রতাটুকুও দেখা যায় না। এক্ষেত্রে সবার জানা উচিত, কর্মক্ষেত্রে ভদ্র আচরণ পাওয়া প্রত্যেক কর্মীরই অধিকার।

দৃষ্টি সংযত রাখুন

বিমানের ফ্লাইট অ্যাটেনডেন্ট নারী বা পুরুষ হেঁটে যাওয়ার সময় অনেকেই তাদের দিকে এমনভাবে তাকিয়ে থাকেন যে, তাদের স্বাভাবিক কাজের বিঘ্ন ঘটে। এছাড়াও অনেকেই বিমানের ভেতর তাদের কাজের স্থানে উঁকি মেরে কার্যক্রম লক্ষ্য করার চেষ্টা করেন। তাদের এমন আচরণে বিমানের কর্মীদের কাজে যে শুধু ব্যাঘাত ঘটে তাই নয়, এতে অস্বস্তিতেও পড়েন তারা।

 

স্টিকার ব্যবহার করুন

অধিকাংশ বড় ফ্লাইটেই সিটের সঙ্গে একটি স্টিকার দেওয়া থাকে। এতে লেখা থাকে, ‘খাবারের সময় আমাকে ডেকে দিও।’ এমন স্টিকার থাকলে খাবার দেওয়ার সময় ফ্লাইট অ্যাটেনডেন্ট আপনাকে নিশ্চিন্তে ডেকে দেবেন।  এমন স্টিকার না থাকলে খাবারের সময় ডাকলে বা না ডাকলেও বিরক্ত হন। তাই আপনার প্রয়োজনে স্টিকারটি ব্যবহার করুন।

খাবারের জন্য ধন্যবাদ দিন

বিমানে প্রত্যেক যাত্রীর জন্যই পর্যাপ্ত খাবার মজুদ থাকে। ফলে খাবার গ্রহণে কোনো সমস্যা নেই, বরং তা প্রত্যাখ্যান করাই ঝামেলার। তাই খাবার গ্রহণ করার সময় সহায়তাকারীকে ধন্যবাদ দিন।

ট্রে অগোছালো নয়

খাবার খাওয়ার পর আপনার ট্রে অগোছালো থাকলে গোছাতে সময় লাগে। আর এভাবে ৬৪ জনের ট্রে গোছাতে দু’ মিনিট করে লাগলে তাতে অতিরিক্ত দু’ ঘণ্টা সময় ব্যয় হবে। তাই অন্য একজনের কথা চিন্তা করে হলেও এমনভাবে গুছিয়ে রাখুন, যেন তা সহজেই ফেরত দেওয়া যায়। যদি সময়মতো খাবার খাওয়া শেষ না করেন তাহলেও এটা খুবই ঝামেলাপূর্ণ হয়ে যায়।

 

গ্যালারিতে যান

অতিরিক্ত কোনো পানীয় কিংবা হালকা খাবার প্রয়োজন হলে বিমানের গ্যালারিতে যান। অধিকাংশ বিমানের পেছনের দিকেই এটি থাকে। যাতায়াতের সময় একজন ফ্লাইট অ্যাটেনডেন্টকে ডেকে কোনোকিছু চাওয়ার চেয়ে এটি অনেক ভদ্র পদ্ধতি।

হেডসেট ও কম্বল ফেরত দিন

বিমানযাত্রার শেষ দিকে বিমানের যাত্রীদের কাছ থেকে হেডসেট নেওয়ার দায়িত্বে একজন নিয়োজিত থাকেন। কারণ তার কাজ বিমানটি সময়মতো পরিষ্কার করে নতুন করে সাজিয়ে যাত্রী ওঠানো। এখানে আপনার সিনেমা দেখার চেয়ে অনেক গুরুত্বপূর্ণ তার কাজ। তাই সেগুলো তাড়াতাড়ি গুছিয়ে নেওয়ার বাধ্যবাধকতাও থাকে। অনুরূপ নিয়ম কম্বলের জন্যও প্রযোজ্য।

দেখে আসুন শ্রীমঙ্গলের বহুরূপ

শ্রীমঙ্গল ভ্রমণপিপাসুদের একটি প্রিয় নাম। এটি আধ্যাত্মিক রাজধানী ও পর্যটন নগরখ্যাত অঞ্চল। এখানে ঘুরে বেড়ানোর জন্য রয়েছে অজস্র স্থান। সবুজ প্রকৃতির মায়াবী রূপের কারণে শ্রীমঙ্গলের রয়েছে আলাদা পরিচিতি। ফলে পর্যটনকেন্দ্র হিসেবে শ্রীমঙ্গলের অবস্থান প্রথম সারিতে।

বাগান
Tea
শ্রীমঙ্গলে দেখার মতো অনেক কিছুই রয়েছে। পাহাড়ি এই এলাকায় মাইলের পর মাইল চা বাগান। বিশ্বের সবচেয়ে উন্নত মানের চায়ের একটি অংশ এই বাগানগুলো থেকেই পাওয়া যায়। যা বিদেশে রফতানি হয়। এখানে চা বাগানের পাশাপাশি রয়েছে রাবার, লেবু ও আনারসের বাগান।

চিড়িয়াখানা

শীতেশ নামক স্থানীয় এক প্রকৃতিপ্রেমী ব্যক্তিগত উদ্যোগে গড়ে তুলেছেন শীতেশ বাবুর চিড়িয়াখানা নামে মিনি চিড়িয়াখানা। তার সংগ্রহে যুক্ত হয়েছে অনেক প্রজাতির পশুপাখি। সাদা বাঘ, মুখপোড়া বানর, সজারু, হরিণ, উল্লুক, ধনেশ পাখি, একাধিক প্রজাতির কাঠবিড়ালি এর অন্যতম। শ্রীমঙ্গল রেল স্টেশন থেকে চিড়িয়াখানায় যেতে পনেরো টাকা রিকশা ভাড়া লাগে। ভেতরে প্রবেশ করতে দশ টাকার টিকিট কাটতে হয়।

চা কারখানা

শ্রীমঙ্গলে ‘টি রিসার্চ ইনস্টিটিউট’ হতে পারে পরিদর্শনের অন্যতম একটি স্থান। এখানে দেখতে পাবেন চা প্রস্তুত প্রণালি। বাগানের ভেতর শ্রমিকদের সঙ্গে খানিকটা সময়ও কাটানো যেতে পারে। টিলার উপর বিশাল জায়গা নিয়ে নির্মিত রিসোর্টে রয়েছে দশ-বারোটি কটেজ। বড় রেস্তোরাঁর সঙ্গে পুরনো আমলের সুইমিংপুল। পাশেই নেট দিয়ে ঘেরা জায়গায় বেশ কয়েকটি চিত্রল হরিণ ঘুরে বেড়ায়।

মাধবপুর লেক

বিকেলের সময়টা কাটাতে পারেন মাধবপুর লেকে। সমতল থেকে উঁচু পাহাড়ে লেকটির অবস্থান। সময় করে লেকের চারপাশ ঘুরতে পারলে নিঃসন্দেহে তা হবে এক দারুণ অভিজ্ঞতা।

লাউয়াছড়া উদ্যান

শ্রীমঙ্গল শহর থেকে ২০-৩০ মিনিট লাগবে সিএনজি অথবা অটোরিকশায় করে গেলে। উদ্যানে ঢুকতে টিকিট কাটতে হয়। জনপ্রতি বিশ থেকে ত্রিশ টাকা নিবে হয়তো। লাউয়াছড়ার ভেতর দিয়ে চলে ছেছে ট্রেন লাইন। দু’পাশে বন, মাঝখান দিয়ে আঁকাবাঁকা রাস্তা। এমন কয়েকটা বন্য ট্রেইল রয়েছে লাউয়াছড়ায়।

হামহাম জলপ্রপাত

এটিও শ্রীমঙ্গল উপজেলা থেকে ৩৫-৪০ কিলোমিটার দূরের খুব সুন্দর ঝরনা। যারা ট্র্যাকিং করতে পারবেন, একটানা ২-৩ ঘণ্টা পাহাড়ি পথে, ঝিরি পথে হাঁটতে পারবেন, তারা বর্ষা মৌসুমে একদিন সময় বাড়িয়ে যেতে পারেন। শহর থেকে প্রায় দেড়ঘণ্টা লাগে রাজকান্দি রিজার্ভ ফরেস্ট দিয়ে কলাবন পাড়ায় যেতে। সেখান থেকে প্রায় আড়াই ঘণ্টা ট্র্যাকিং করে যেতে হয় হামহাম ঝরনায়।

চা কেবিন

চায়ের রাজধানী শ্রীমঙ্গলে গিয়ে সাত রং চায়ের স্বাদ গ্রহণ করবেন না? একই গ্লাসের মধ্যে স্তরে স্তরে সাজানো সাত রং চা! অবশ্যই ৭০ থেকে ৯০ টাকা খরচ করে এই চা খাবেন।

খাবার

এখানে খাওয়ার জন্য পানসী রেস্টুরেন্ট, নূর ফুডস, কুটুমবাড়ি, পাঁচ ভাই রেস্টুরেন্ট, চ্যাপস্লী ইত্যাদি খুব জনপ্রিয়। শ্রীমঙ্গলে খাবারের দামও তুলনামূলক কম। খেতে মুখরোচকও বটে।

অবস্থান

শ্রীমঙ্গলে থাকার জন্য বেশ কিছু দারুণ কটেজ, রিসোর্ট গড়ে উঠেছে। যা অন্য এলাকায় দেখতে পাওয়া যায় না। শ্রীমঙ্গলে থাকার জায়গা হিসেবে টি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের ‘টি রিসোর্ট’ অত্যন্ত চমৎকার একটি জায়গা। এছাড়া যেকোন রিসোর্টে সুবিধামতো রুম ভাড়া নিয়ে নিতে পারেন।