মদিনায় আরও ২ বাংলাদেশি হজযাত্রীর মৃত্যু

সৌদি আরবের মদিনায় আরও দুই বাংলাদেশি হজযাত্রীর মৃত্যু হয়েছে। মঙ্গলবার (২১ জুন) তারা মারা যান। এ নিয়ে ৬ বাংলাদেশি হজযাত্রীর মৃত্যু হয়েছে।

ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের আইটি হেল্পডেস্কের হজের প্রতিদিনের বুলেটিনে এ তথ্য জানানো হয়েছে। বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় সৌদি আরবে যাওয়া রংপুর পীরগাছার মো. আব্দুল জলিল খান (৬২) মঙ্গলবার রাতে মদিনার মসজিদে নববীর ৩৮ নং গেটের কাছাকাছি রিয়াজুল জান্নাহ’য় প্রবেশের সময় ইন্তেকাল করেন। তার পাসপোর্ট নম্বর- BX0552614।

মারা যাওয়া ওপর হজযাত্রী বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় সৌদি আরবে যাওয়া ঢাকার কোতোয়ালির বিউটি বেগম (৪৭)। তার পাসপোর্ট নম্বর- EA0009584। বিউটি বেগম স্থানীয় সময় মঙ্গলবার ভোরে মদিনার কিং ফাহাদ হাসপাতালে ইন্তেকাল করেন।

বুলেটিনে জানানো হয়েছে, মঙ্গলবার পর্যন্ত ৭৮টি ফ্লাইটে সৌদি আরবে গেছেন ২৮ হাজার ৩০৯ জন হজযাত্রী। সৌদি আরব যাওয়া হজযাত্রীদের মধ্যে সরকারি ব্যবস্থাপনার ৩ হাজার ৩৮৫ জন ও বেসরকারি ব্যবস্থাপনার ২৪ হাজার ৯২৪ জন রয়েছেন।

বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স পরিচালিত ৪৩টি, সৌদিয়া এয়ারলাইন্স পরিচালিত ৩০টি এবং ফ্লাইনাস এয়ারলাইন্স পরিচালিত ৫টি ফ্লাইট রয়েছে। চুক্তি অনুযায়ী এবার হজে সৌদি এয়ারলাইন্স ২৩ হাজার ৫৪৫ জন এবং বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স ২৯ হজযাত্রী বহন করবে।

সৌদি আরবে চাঁদ দেখা সাপেক্ষে আগামী ৮ জুলাই হজ অনুষ্ঠিত হবে। এবার সরকারি ব্যবস্থাপনায় হজযাত্রীর কোটা ৪ হাজার জন। অন্যদিকে বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় কোটা ৫৩ হাজার ৫৮৫ জন।

হজযাত্রীদের সৌদি আরবে যাওয়ার ফ্লাইট গত ৫ জুন শুরু হয়েছে। সৌদি আরবে যাত্রার শেষ ফ্লাইট ৩ জুলাই। হজ শেষে ফিরতি ফ্লাইট শুরু আগামী ১৪ জুলাই, ফিরতি ফ্লাইট শেষ হবে ৪ আগস্ট।

স্বপ্নের পদ্মা সেতু: বাগেরহাটে উন্মোচিত হবে পর্যটনের স্বর্ণ দুয়ার

পদ্মা সেতু চালু হলে বাগেরহাটে উন্মোচিত হবে পর্যটনের স্বর্ণ দুয়ার। বাগেরহাট পর্যটনের অপার সম্ভাবনা সত্ত্বেও যোগাযোগ অবকাঠামোর অভাবে পিছিয়ে ছিল বাগেরহাট। তবে পদ্মা সেতু চালু হলে এ চিত্র বদলে যাবে। সহজে রাজধানীসহ সমগ্র বাংলাদেশে যাতায়াত সুবিধার কারণে দেশি বিদেশি পর্যটকের সমাগম বাড়বে। এসব পর্যটন এলাকা ঘিরে ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রসার ঘটবে এবং কর্মসংস্থানের নতুন দুয়ার খুলবে।

বাগেরহাট ষাটগম্বুজ যাদু ঘরের কাষ্টডিয়ান মোঃ যায়েদ বলেন, প্রতœ সম্পদ আর পুরাকির্ত্তীর শহর বাগেরহাট।এখানে রয়েছে বিশ্ব ঐতিহ্যের তালিকায় স্থান পাওয়া ষাটগম্বুজ মসজিদ ও বিশে^র^ জীববৈচিত্রের বৃহত্তম আধার ম্যানগ্রোভ সুন্দরবন । এখানে আরো রয়েছে খানজাহান আলী ( রঃ) মাজার ও দিঘি, অযোধ্যা মঠ, মোড়েল স্মৃতিসৌধের মত মধ্যযুগীয় অপূর্ব স্থাপত্যকলার নিদর্শন। এছাড়াও বাগেরহাটের বিভিন্ন স্থানে ঐতিহাসিক স্থাপত্য শিল্পকলার নিদর্শন রয়েছে। এগুলোর মধ্যে বিবি বেগমী মসজিদ, চুনখোলা মসজিদ, রেজাখোদা মসজিদ, ঘোড়া দীঘি, পচা দীঘি, পিসি রায়ের মুর্তি, জিন্দা পীরের মাজার, পগল পীরের মাজার, ঠান্ডা পীরের মাজার প্রভৃতি উলে¬খযোগ্য। অসংখ্য পুণ্যার্থী ও সৌন্দর্য পিপাসুদের কাছেটানে বাগেরহাটের ঐতিহাসিক স্থানসমূহ। এ বছরে প্রায় ১ লাখ ৮০ হাজার দেশি বিদেশি পর্যটকের আগমন ঘটে। ।্ পদ্মা সেতু চালু হলে যাতায়েত সুবিধার কারণে দেশি বিদেশি পর্যটকের সংখ্যা দ্বিগুন হবে বলে আশা করেন তিনি।তিনি আরো বলেন পদ্মা সেতু চালু হলে উন্মোচিত হবে পর্যটনের স্বর্ণ দুয়ার। এর ফলে বিপুল পরিমান রাজস্ব আয় হবে।

বাগেরহাট ষাটগম্বুজ যাদু ঘরের কাষ্টডিয়ান মোঃ যায়েদ আরো বলেন, প্রতœ সম্পদ আর পুরাকির্ত্তীর শহর বাগেরহাট।খান জাহান আলী (রঃ) সম্ভবত গৌড়ের সুলতান নাছির উদ্দিন শাহের ঘনিষ্ঠ বন্ধু ও সেনানায়ক ছিলেন। এ জ নপদ আবাদসহ এক রাজ্য বিস্তার করে তিনি ইসলাম প্রচার ও শাসন এর পাশাপাশি তিনি মানব প্রেমে উদ্ধুদ্ধ হয়ে যশোরের বারোবাজার থেকে শুরু করে এ অঞ্চল জুড়ে ৩৬০ টি মসজিদ ও ৩৬০ টি দীঘি খনন করেন। খান জাহান আলী (রঃ) দীঘির উত্তরপাড়ে এ পুণ্যাত্ম আল্লাহর ওলির মাজার শরীফ ও সমাধি সৌধ নির্মিত হয়। জাতি, ধর্ম, নির্বিশেষে দেশ-বিদেশের অসংখ্য ভক্ত ও পর্যটক ১৪৫৯ সালে তার মৃত্যুর পর থেকে এ মাজারে আসেন জিয়ারতে । হযরত খান জাহান আলী (রঃ) মাজার সংলগ্ন প্রায় ৬১.৭৫ একর জমি জুড়ে এ দীঘি অবস্থিত। এ দীঘিতে ‘ধলা পাহাড় ও ‘কালা পাহাড়’ নামক কুমির । ‘ধলা পাহাড় ও ‘কালা পাহাড়’ বলে ডাকলে আজও তারা দীঘির ঘাটে আসে।

খান জাহান আলী (রঃ) অমর কীর্তি ঐতিহাসিক ষাট গম্বুজ মসজিদ। লাল পোড়ামাটির ওপর লতাপাতায় অলংকরণে মধ্যযুগীয় স্থাপত্য শিল্পে এ মসজিদ বিশেষ স্থান দখল করে আছে। মসজিদের গম্বুজগুলো ইট ও পাথরের ৬০ টি খাম্বা বা পিলারের ওপর নির্মিত। এ কারণে এর নাম হয়েছে ষাট গম্বুজ মসজিদ। মসজিদটিতে গম্বুজ রয়েছে ৭৭ টি। ইমারতের গঠন ও বৈচিত্র্যে তুঘলক স্থাপত্যের বিশেষ প্রভাব পরিলক্ষিত হয়। এর দৈর্ঘ্য ১৬০ ফুট এবং প্রস্থ ১০৮ ফুট। ইউনেস্কো ষাট গম্বুজ মসজিদকে বিশ্ব ঐতিহ্য তালিকার অন্তর্ভূক্ত করেছে।

বাগেরহাট পূর্ব সুন্দরবন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) মোহাম্মদ বেলায়েত হোসেন জানান, বিশ্ব ঐতিহ্যের তালিকায় স্থান পাওয়া সুন্দরবনের প্রধান আকর্ষণ রয়েল বেঙ্গল টাইগার ও চিত্রল হরিণ। বনবিভাগসহ প্রশাসনের কঠোর নজরদারির কারনে সুন্দরবনে প্রচুর পরিমাণে হরিণের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। যা দেশী বিদেশী পর্যটকদের আকৃষ্ট করছে।কথিত আছে দিনরাত ২৪ ঘন্টা ৬ বার রূপ পাল্টানো সুন্দরবন । বন মোরগের ডাকে ঘুম ভাঙ্গছে বনের পর্যটক, কর্মকর্তাসহ বনরক্ষীদের। বিভিন্ন প্রজাতির পাখি কিচির-মিচির শব্দ করে গাছের এ ডাল থেকে ওডালে উড়ে ফিরছে। দেশি বিদেশি সৌন্দর্য পিপাসুদের কাছেটানে এ সুন্দরবন।মোহাম্মদ বেলায়েত হোসেন আরো জানান চলতি অর্থ বছরে ১ লাখ ২০ হাজার দেশি বিদেশি পর্যটকের আগমন ঘটে সুন্দরবনে। এতে রাজস্ব আয় হয়েছে ১ কোটি ২৫ লাখ টাকা। পদ্মা সেতু চালু হলে যা দ্বিগুন হবে বলে আশা করেন তিনি।

বন বিভাগের তথ্য মতে ,বঙ্গোপ সাগরের কোল ঘেঁষে দেশের বাগেরহাট,খুলনা ও সাতক্ষিরা জেলায় অবস্থিত পৃথীবির একক বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ সুন্দরবন। বর্তমানে সুন্দরবনের বাংলাদেশ অংশের আয়তন হচ্ছে ৬ লাখ ১ হাজার ৭০০হেক্টর । যা দেশের আয়তনের ৪ দশমিক ১৩ ভাগ। সংরক্ষিত এ বনের ৩টি অভ্যায়ারন্যের ১ লাখ ৩৯ হাজার ৭০০ হেক্টর বনাঞ্চলকে ১৯৯৭ সালের ৬ ডিসেম্বর জাতিসংঘের ইউনেস্কো ৭৯৮তম ওয়ার্ল্ড হ্যারিটেজ সাইড ঘোষণা করে। সুন্দরবন ওয়ার্ল্ড হ্যারিটেজ সাইডের পাশাপাশি বিশে^র বৃহৎ জলাভূমিও। ১৯৯২ সালে সমগ্র সুন্দরবনের এ জলভাগকে রামসার এলাকা হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে জাতিসংঘ।

সুুন্দরবনে ৪৫০টি ছোট-বড় নদী ও খালে রয়েছে বিলুপ্তপ্রায় প্রজাতির ইরাবতীসহ ৬ প্রজাতির ডলফিন, ২১০ প্রজাতির সাদা মাছ, ২৪ প্রজাতির চিংড়ি, ১৪ প্রজাতির কাঁকড়া, ৪৩ প্রজাতির মলাস্কা ও ১ প্রজাতির লবস্টার,কুমরি ইত্যাদি। সুন্দরবনের স্থল ভাগে সুন্দরী, গেওয়া,গরান, পশুরসহ ৩৩৪ প্রজাতির উদ্ভিদরাজি রয়েছে। এছাড়া ৩৭৫ প্রজাতির বন্য প্রাণীর মধ্যে রয়েল বেঙ্গল টাইগার ও হরিণসহ ৪২ প্রজাতির স্তন্যপায়ী, লোনা পানির কুমির, গুইসাপ, কচ্ছপ, ডলফিন, অজগর, কিংকোবরাসহ ৩৫ প্রজাতির সরীসৃপ ও ৩১৫ প্রজাতির পাখি রয়েছে। যা সৌন্দর্য পিপাসুদের হাতছানি দেয়।

ঈদে ট্রেনের অগ্রিম টিকিট বিক্রি শুরু হতে পারে ১ জুলাই

পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে আগামী ১ জুলাই থেকে ট্রেনের অগ্রিম টিকিট বিক্রি শুরু হতে পারে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ রেলওয়ে। ১০ জুলাই ঈদের সম্ভাব্য তারিখ ধরে এ টিকিট বিক্রি করা হবে।

সোমবার সন্ধ্যায় এ তথ্য জানিয়েছে রেলওয়ে সূত্র।

জানতে চাইলে রেলওয়ের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপারেশন) সরদার সাহাদাত আলী বলেন, ১ জুলাই টিকিট বিক্রি শুরু হবে, এটা এখনো চূড়ান্ত হয়নি। আমরা এখন টিকিট বিক্রি ও ট্রেন চলাচলের শিডিউল তৈরি করছি।
বুধবার (২২ জুন) রেল ভবনে সংবাদ সম্মেলন করে টিকিট বিক্রির আনুষ্ঠানিক তারিখ ঘোষণা করবেন রেলমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন।

এর আগে টিকিট বিক্রি বা শিডিউল নিয়ে কিছু বলা যাবে না। রেলওয়ে সূত্র জানায়, সাধারণত ঈদ যাত্রার পাঁচদিন আগের অগ্রিম টিকিট বিক্রি করা হয়। ফিরতি টিকিট বিক্রি শুরু হবে ৭ জুলাই থেকে। গত ১৪ জুন রেল ভবনে এক সভায় এমন সিদ্ধান্ত হয়েছে।
এ সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ট্রেনের ৫ জুলাইয়ের টিকিট ১ জুলাই, ৬ জুলাইয়ের টিকিট ২ জুলাই, ৭ জুলাইয়ের টিকিট ৩ জুলাই, ৮ জুলাইয়ের টিকিট ৪ জুলাই এবং ৯ জুলাইয়ের টিকিট ৫ জুলাই বিক্রি করা হবে।

 

বন্যায় দেশে ১৫ হাজার গরুর খামার ক্ষতিগ্রস্ত

চলমান বন্যায় এ পর্যন্ত সারাদেশে ১৫ হাজার গরুর খামার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে জানিয়েছে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর। তবে এটি প্রাথমিক হিসাব, ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ আরও বাড়তে পারে বলে জানিয়েছে অধিদপ্তর।

সোমবার প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের কন্ট্রোল রুম থেকে জানানো হয়, চলমান বন্যায় এ পর্যন্ত দেশের ১২টি জেলার ৭৪টি উপজেলার ৩১৬টি ইউনিয়নের ১৫ হাজার ৬০টি গরুর খামার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এতে খামারীদের সম্ভাব্য ক্ষতি ২৬১ কোটি ৮৩ লাখ টাকা।

এ বিষয়ে অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ডা. মনজুর মোহাম্মদ বলেন, এটি প্রাথমিক হিসাব। প্রতিদিনই ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ বাড়ছে।
আর ক্ষয়ক্ষতি যতটুকু সম্ভব কমাতে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর।

বন্যাকবলিতে এলাকা পরিদর্শন শেষে সিলেট সার্কিট হাউজে প্রধানমন্ত্রী

সিলেটঃ হেলিকপ্টারযোগে সিলেট, সুনামগঞ্জ ও নেত্রকোণার বন্যাকবলিতে এলাকা পরিদর্শন শেষে সিলেট সার্কিট হাউসে অবস্থান করছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

মঙ্গলবার (২১ জুন) সকাল ৯টা ৫৫ মিনিটে তাকে বহনকারী হেলিকপ্টার ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে। এরপর ৯টা ৫৮ মিনিটে তিনি লালগালিচা দিয়ে বিমানবন্দরের ভিআইপি লাউঞ্জে প্রবেশ করেন। এরপর সকাল সোয়া ১০টায় সিলেট সার্কিট হাউসে পৌঁছান।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সিলেট আওয়ামী লীগ ও বিমানবন্দরের একাধিক সূত্র।

জানা গেছে, সার্কিট হাউসে প্রধানমন্ত্রী বিভাগীয় ও জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে মতবিনিময় করবেন এবং দিকনির্দেশনা দেবেন। এরপর ত্রাণ ও দুর্যোগ মন্ত্রণালয়ের কর্মসূচিতে যোগ দেবেন তিনি। সফরসূচি অনুযায়ী দুপুর ১টায় সিলেট থেকে ঢাকার উদ্দেশে তিনি রওনা দেবেন।

এর আগে সকাল ৮টায় ঢাকার তেজগাঁওয়ের পুরাতন বিমানবন্দর থেকে হেলিকপ্টারযোগে তিনি বন্যা পরিস্থিতি দেখতে যাত্রা শুরু করেন। টানা দুই ঘণ্টার সফরে তিনি কিশোরগঞ্জ, সুনামগঞ্জ ও সিলেটের যেসব এলাকায় বন্যা উপদ্রুত হয়েছে, সেসব এলাকা তিনি পরিদর্শন করেছেন।

প্রধানমন্ত্রীর সফরসঙ্গীদের সূত্রে জানা গেছে, প্রধানমন্ত্রী দীর্ঘসময় ‘লো ফ্লাই’ করেছেন। অর্থাৎ যতটুকু সম্ভব নিচ দিয়ে যেতে যেতে হেলিকপ্টার থেকে এসব এলাকা দেখেছেন। এসব এলাকার মানুষ কতটা দুর্ভোগে আছেন, বিচ্ছিন্ন দ্বীপের মতো যেসব বাড়ি পানিবন্দি হয়ে আছে, সেসব তিনি অবলোকন করেছেন।

গতকাল সোমবার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় সূত্র থেকে জানানো হয়, দুটি হেলিকপ্টারে প্রধানমন্ত্রী ও তার সফরসঙ্গীরা বন্যাকবলিত অঞ্চল পরিদর্শন করবেন। একটি হেলিকপ্টারে প্রধানমন্ত্রী, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সিনিয়র সচিব, এসএসএফের মহাপরিচালক, প্রধানমন্ত্রীর সামরিক সচিব, একান্ত সচিব-১, ব্যক্তিগত চিকিৎসক, এডিসি ও বিটিভির ক্যামেরাম্যান যাওয়ার কথা রয়েছে।

আরেকটি হেলিকপ্টারে মন্ত্রিপরিষদের সদস্য, আওয়ামী লীগের কয়েকজন নেতা, সরকারি কর্মকর্তা ও মিডিয়া কর্মীরা প্রধানমন্ত্রীর সফরসঙ্গী হিসেবে ছিলেন।

পদ্মা সেতুর উদ্বোধনী দিন ২৫ জুনের জন্য তিন সেতুর টোল মওকুফ

পদ্মা সেতুর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যোগ দিতে আসা অতিথিদের যানবাহনসহ সাধারণ যানবাহনের যানজটবিহীন নির্বিঘ্ন চলাচল নিশ্চিত করতে আগামী ২৫ জুন মাওয়া রোডের বুড়িগঙ্গা, ধলেশ্বরী ও আড়িয়াল খাঁ সেতুর টোল মওকুফ করা হয়েছে।

সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ আজ সোমবার এক প্রজ্ঞাপনে এ তথ্য জানিয়েছে।

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, পদ্মা সেতু উদ্বোধনের দিন (কেবল ২৫ জুনের জন্য) অভ্যাগত অতিথিদের যানবাহনসহ সাধারণ যানবাহনের যানজটবিহীন নির্বিঘ্ন চলাচল নিশ্চিত করার স্বার্থে জাতির পিতা শেখ মুজিবুর রহমান মহাসড়কের একই করিডোরে অবস্থিত বুড়িগঙ্গা, ধলেশ্বরী ও আড়িয়াল খাঁ সেতুর টোল মওকুফ করা হলো।

চট্টগ্রাম ডুবল ৯ ঘণ্টার বৃষ্টিতে

চট্টগ্রামে মুষলধারে বৃষ্টিতে আবারও ডুবল নগর। শনিবার (১৮ জুন) সন্ধ্যা ৬টা থেকে রোববার (১৯ জুন) সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে ১৪৭ মিলিলিটার।

এরমধ্যে রোববার সকাল সাড়ে ৯টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত ৯ ঘণ্টার বৃষ্টির পরিমাণ ছিল ১১২ দশমিক ৩ মিলিলিটার। রোববার রাত ৯টায় এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত বৃষ্টি হচ্ছিল।

টানা বৃষ্টিতে নগরীর বাকলিয়ার তিন ওয়ার্ডের প্রায় সব এলাকা, দেওয়ানবাজার, বাদুরতলা, চকবাজার, কাপাসগোলা, বহদ্দারহাট, চান্দগাঁও, মুরাদপুর, শুলকবহর, বিবিরহাট, পাঁচলাইশ ও কাতালগঞ্জ আবাসিক এলাকা, আগ্রাবাদ সিডিএ আবাসিক এলাকা, হালিশহর ও পতেঙ্গার বিভিন্ন এলাকা পানিতে তলিয়ে গেছে।

কোথাও হাঁটু পানি আবার কোথাও কোমর পানিতে ডুবে গেছে এলাকাগুলো। অপেক্ষাকৃত নিচু এলাকায় জমে থাকা পানির উচ্চতা অস্বাভাবিক বেড়ে যাওয়ায় সড়ক দিয়ে মানুষ চলাচল করতে পোহাতে হচ্ছে সীমাহীন দুর্ভোগ। এরমধ্যে মরার ওপর খাঁড়ার ঘা হয়ে দাঁড়িয়েছে জোয়ারের পানি। জোয়ারের ফলে আগ্রাবাদ, বন্দর, ইপিজেডের বিভিন্ন এলাকায় পানির উচ্চতা বেড়ে গেছে।

সন্ধ্যা ৭টার দিকে নগরীর বিভিন্ন এলাকায় সরেজমিন দেখা যায়, চারদিকে থৈ থৈ করছে পানি। যেখানে আগে হাঁটু পানি উঠতো সেখানে এখন কোমর সমান পানি। বাসা-বাড়ি, দোকানপাটে পর্যন্ত পানি ঢুকে পড়েছে। দুই নম্বর গেট দিয়ে গাড়ি চলছে এক কোমরের ওপরের পানি মাড়িয়ে। এছাড়া মুরাদপুর ও চকবাজারে সেই পুরোনো দৃশ্যই দেখা গেছে। কোমর সমান পানির মধ্য দিয়ে চলাচল করছে মানুষ।

বৃষ্টির কারণে ড্রেনগুলোতে পানির স্রোত সৃষ্টি হয়েছে। নালা-নর্দমায় পলিথিন ও আর্বজনা জমে থাকায় পানি স্বাভাবিকভাবে চলাচল করতে পারছে না। ফলে দীর্ঘ সময় ধরে রাস্তায় জমে আছে পানি।

এদিকে রোববার বিকালের পর বিভিন্ন অফিস ও গার্মেন্টস ছুটির হলে দুর্ভোগে পড়েন কর্মজীবীরা। রাস্তায় গাড়ি কম থাকায় হেঁটেই বাড়ির রাস্তা ধরেছেন অনেকে।

চট্টগ্রামের পতেঙ্গা আবহাওয়া অফিসের পূর্বাভাস কর্মকর্তা মাজহারুল ইসলাম চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, ‘শনিবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে রোববার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত ১৪৭ দশমিক ৭ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। তবে সমুদ্রে কোনো সতর্ক সংকেত নেই।’

মৌসুমী বায়ুর সক্রিয় প্রভাবের কারণেই এ বৃষ্টিপাত হচ্ছে বলে জানান তিনি।

২১ জুন থেকে বৃষ্টির পরিমাণ কমার সম্ভাবনা আছে। তবে পাহাড়ধসের সম্ভবাবনা আছে বলেও জানান মাজহারুল ইসলাম।

পতেঙ্গাস্থ আবহাওয়া অফিসের সিনিয়র পূর্বাভাস কর্মকর্তা ওবায়েদুল্লাহ বলেন, ‘রোববার সকাল সাড়ে ৯টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত মুষলধারে বৃষ্টিপাত হয়েছে। বৃষ্টির পরিমাণ রেকর্ড করা হয়েছে ১১২ দশমিক ৩ মিলিমিটার। রাতেও মুষলধারে বৃষ্টিপাত হবে। সোমবার বিকাল থেকে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ কমে হালকা ও মাঝারিতে ঠেকবে।’

আজ থেকে রাত ৮টার পর সারাদেশে দোকান-মার্কেট বন্ধ

ঢাকা : আজ সোমবারম(২০ জুন) থেকে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সাশ্রয়ে রাত ৮টার পর সারাদেশে দোকান, বিপণিবিতান, মার্কেট বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছ সরকার।

রোববার, (১৯ জুন) শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ে এক বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তবে এ সময়ে সিনেমা হল, বিড়ি-সিগারেটের দোকান, কাঁচাবাজার, ওষুধের দোকানসহ বেশ কিছু প্রতিষ্ঠান খোলা রাখা যাবে।

শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী বেগম মন্নুজান সুফিয়ানের সভাপতিত্বে ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন, এমপ্লয়ার্স ফেডারেশন, এফবিসিসিআই, এমসিসিআই, বিজিএমইএ, বিকেএমইএ, বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতি, ঢাকা চেম্বারসহ বিভিন্ন ব্যবসায়ী মালিক সংগঠন এবং শ্রমিক সংগঠনের প্রতিনিধি এবং বাণিজ্য, বিদ্যুৎ, শিল্প মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধিরা বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।

বৈঠক শেষে শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী বেগম মন্নুজান সুফিয়ান বলেন, বৈঠকে বসে আমরা সবাই একমত পোষণ করেছি, প্রধানমন্ত্রী যে নির্দেশনা দিয়েছেন, তা আমাদের আইনেও আছে। এর প্রতিপালন কাল থেকেই শুরু হবে।

বৈঠকে ব্যবসায়ী প্রতিনিধিরা একটি দাবির কথা বলছেন উল্লেখ করে প্রতিমন্ত্রী বলেন, আগামী ১০ জুলাই কোরবানি ঈদ। এ জন্য ১ জুলাই থেকে ১০ জুলাই রাত ১০টা পর্যন্ত খোলা রাখার দাবি জানিয়েছেন। এ প্রস্তাব সামারি (সারাংশ) আকারে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে পাঠানো হবে।

সূত্র: চট্টগ্রাম প্রতিদিন

মঙ্গলবার সিলেটের বন্যা পরিস্থিতি পরিদর্শন করবেন প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মঙ্গলবার সিলেট, সুনামগঞ্জ ও নেত্রকোনা জেলার সার্বিক বন্যা পরিস্থিতি পরিদর্শন করবেন। প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম আজ সন্ধ্যায় বাসসকে বলেন, প্রধানমন্ত্রী মঙ্গলবার সিলেটের বন্যা পরিস্থিতি পরিদর্শন করবেন। তিনি সুনামগঞ্জ ও নেত্রকোনা জেলার সার্বিক বন্যা পরিস্থিতিও পরিদর্শন করবেন।

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা: মো: এনামুর রহমান ও সচিব মো: কামরুল হাসান আগামীকাল (সোমবার) সিলেট সফরে আসছেন। দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চল ও উত্তরাঞ্চলে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি অব্যাহত থাকায় সব প্রধান নদ-নদীর পানির উচ্চতা ধীরে ধীরে বৃদ্ধি পাচ্ছে।

বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের (এফএফডব্লিউসি) মুখপাত্র মো: আরিফুজ্জামান ভূঁইয়া বলেছেন, “দেশের চারটি প্রধান নদী অববাহিকার মধ্যে দুটিতে পানি এখন বিপদসীমার অনেক উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ২০০৪ সালের বন্যার পর থেকে এটি হচ্ছে সবচেয়ে খারাপ পরিস্থিতি।”

কর্তৃপক্ষ এর আগে বন্যা কবলিত লোকজনকে সরিয়ে নেয়ার জন্য বা অসহায় মানুষদের কাছে সাহায্য পৌঁছানোর কাজে বেসামরিক প্রশাসনকে সহায়তা দিতে সেনা সদস্যদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছিল। নৌবাহিনী এবং বিমান বাহিনীর ইউনিটগুলিকে পরবর্তীতে বিশেষ করে উত্তর-পূর্ব সিলেট অঞ্চলে সাহায্য প্রদানের জন্য ডাকা হয়েছে। কারণ এলাকাটি এখন সমুদ্রের মতো দেখা যাচ্ছে।

শনিবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, সরকার ১৫ থেকে ১৮ জুন বন্যা কবলিত জেলাগুলোর জেলা প্রশাসকদের তাৎক্ষণিক মানবিক সহায়তা হিসেবে নগদ ২.২৫ কোটি টাকা, ৪০০ মেট্রিক টন চাল এবং ৪১ হাজার প্যাকেট শুকনো ও অন্যান্য খাবার বরাদ্দ করেছে।

বাংলাদেশের বন্যা ব্যবস্থাপনায় সহায়তার প্রস্তাব ভারতের

নয়াদিল্লী, ভারত রোববার বন্যা ব্যবস্থাপনা ও ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের ভোগান্তি প্রশমনে ত্রাণ তৎপরতা চালাতে বাংলাদেশকে সহায়তার প্রস্তাব দিয়েছে।

প্রশমনে ত্রাণ তৎপরতা চালাতে বাংলাদেশকে সহায়তার প্রস্তাব দিয়েছে। ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এস জয়শঙ্কর রোববার সন্ধ্যায় এখানে বলেন, ‘এই সুযোগে আমি জানাতে চাই, বন্যা ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ তৎপরতার ক্ষেত্রে যে কোন ধরনের সুনির্দিষ্ট পন্থা থাকলে, আমরা আপনাদের সহায়তা করতে পারি।’

রোববার সন্ধ্যায় এখানে অনুষ্ঠিত বাংলাদেশ-ভারত যৌথ পরামর্শক কমিশন (জেসিসি)-র বৈঠকে উদ্বোধনী বক্তব্যে তিনি বলেন, দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক বজায় রাখায় সহায়ক হতে পারলে ভারত খুবই সন্তষ্ট হবে।

সূত্র জানায়, বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ. কে. আব্দুল মোমেন নগরীর হায়দারাবাদ হাউজে অনুষ্ঠিত জেসিসি’র সপ্তম দফার বৈঠকে যৌথভাবে সভাপতিত্ব করেন। সেখানে নিরাপত্তা, বাণিজ্য, ব্যবসা ও বিনিয়োগ এবং বিভিন্ন খাতে সহযোগিতা থেকে শুরু করে দ্বিপাক্ষিক বিভিন্ন বিষয় বিস্তারিতভাবে আলোচনা করা হয়।

বর্তমানে বাংলাদেশের সিলেট অঞ্চলের ব্যাপক বন্যার কথা উল্লেখ করে জয়শঙ্কর বলেন, ‘আমরা বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চলে নজিরবিহীন বন্যায় আমাদের সহায়তা ও সংহতির কথা জানাতে চাই।’

বিভিন্ন ক্ষেত্রে দ্বিপাক্ষিক কার্যক্রমের ব্যাপারে তিনি বলেন, ভারত বিভিন্ন নতুন খাত- কৃত্রিম মুদ্ধিমত্তা, সাইবার নিরাপত্তা, স্টার্ট-আপ ও ফিনটেকের ব্যাপারে এই দুই দেশের মধ্যে বন্ধন তৈরি করতে বাংলাদেশের সঙ্গে কাজ করার প্রত্যাশায় রয়েছে।
অভিন্ন ৫৪টি নদী এবং এসবের সংরক্ষণের সমন্বিত কার্যক্রমের ওপর গুরুত্ব আরো করে তিনি বলেন, এইগুলো হচ্ছে প্রকৃত ক্ষেত্র যা নিয়ে জলবায়ু সংক্রান্ত পদক্ষেপের ব্যাপারে আমাদের প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী একত্রে কাজ করা প্রয়োজন।