আল-কায়দার নতুন টার্গেট বাংলাদেশ এবং ভারত!

আলকায়দার নতুন টার্গেট বাংলাদেশ। সাথে রয়েছে ভারত। এই দুই দেশে পুনরায় সংগঠিত হবার চেষ্টায় মরিয়া আল কায়দা গোষ্ঠীটি। এমন তথ্য বেড়িয়ে এসেছে আন্তর্জাতিক মহলে। চলুন জেনে নেই বিস্তারিত।

সংবাদ সংস্থা ইন্ডিয়া টুডে জানিয়েছে, গত সপ্তাহে প্রকাশিত দ্য অ্যানালিটিকাল সাপোর্ট অ্যান্ড স্যাংশন্স মনিটরিং টিম অব দ্য ১২৬৭ আইএসআইএল (দায়েশ) এবং জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের আল-কায়েদা স্যাংশন্স কমিটির ৩২তম প্রতিবেদনে ওই সতর্কবার্তা এসেছে।

মূলত ভারতের জম্মু ও কাশ্মীর, বাংলাদেশ ও মিয়ানমারে সক্রিয় হওয়ার লক্ষ্য নিয়ে আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসী দল আল কায়েদা তাদের আঞ্চলিক মিত্রদলগুলোকে আবারও ‘সংগঠিত’ করছে বলে সতর্কবার্তা এসেছে জাতিসংঘের সেই প্রতিবেদনে।

জাতিসংঘের একটি সদস্য রাষ্ট্রের পর্যবেক্ষণ তুলে ধরে ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আল কায়েদা এখন একিউআইএসকে (আল-কায়েদা ইন দ্য ইন্ডিয়ান সাবকন্টিনেন্ট) সংগঠিত করছে, তাদের লক্ষ্য বাংলাদেশ, জম্মু ও কাশ্মীর এবং মিয়ানমারে কার্যক্রম বিস্তৃত করা।

আল-কায়েদার মূল ঘাঁটি আফগানিস্তানে এখনো তাদের ৩০ থেকে ৬০ জন সদস্য এবং প্রায় ৪০০ যোদ্ধা রয়েছে। পরিবারের সদস্য ও সমর্থক মিলিয়ে এ সংখ্যা দুই হাজারে পৌঁছাতে পারে বলে ধারণা দেওয়া হয়েছে প্রতিবেদনে।

সেখানে বলা হয়েছে, ভারতীয় উপমহাদেশে আল-কায়েদার প্রায় ২০০ যোদ্ধা ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছে, যাদের নেতা ওসামা মেহমুদ।

এছাড়া আফগানিস্তানে সক্রিয় আরেক জঙ্গি দল আইএসআইএল-কে কে এখন ওই অঞ্চলের জন্য সবচেয়ে বড় হুমকি হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে জাতিসংঘের প্রতিবেদনে। পরিবারের সদস্যদের মিলিয়ে আইএসআইএল-কে এর ৪ থেকে ৬ হাজার সদস্য আফগানিস্তানে রয়েছে।

সানাউল্লাহ গাফারিকে আইএসআইএল-কে এর সবচেয়ে উচ্চাভিলাষী নেতা ধরা হয়। যদিও একটি সদস্য রাষ্ট্র বলেছে, সানাউল্লাহ গত জুনে আফগানিস্তানে নিহত হয়েছেন। তবে ওই তথ্যের সত্যতা এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি বলে জাতিসংঘের প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।

জাতিসংঘের প্রকাশিত প্রতিবেদনটির মাধ্যমে আর জানা গেছে, “আইএসআইএল-কে আফগানিস্তানে তালেবান এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় উভয়ের উপরই হামলা করছে এবং দিন দিন তাদের হামলার সক্ষমতা এবং সফলতা বাড়ছে। তারা ‘হাই প্রোফাইল টার্গেটে’ হামলার কৌশল নিয়েছে, যাতে দেখানো যায় দেশটির বর্তমান তালেবান প্রশাসন নিরাপত্তা দিতে কতটা ব্যর্থ।”

বলাই বাহুল্য আফগানিস্তান এখনো সন্ত্রাসী এবং জঙ্গি দলগুলোর চারণভূমি হয়ে আছে। দেশটিতে প্রায় ২০টি জঙ্গি দল সক্রিয়। তারা ওই অঞ্চলের পুরোটা জুড়ে নিজেদের প্রভাব বিস্তার করতে এবং ধর্মভিত্তিক রাষ্ট্র ব্যবস্থা গড়ে তুলতে চাইছে।

আফগানিস্তানের কুনার ও নুরিস্তান প্রদেশে নতুন নতুন প্রশিক্ষণ সেন্টার বানিয়ে আল-কায়েদা নিজেদের ‘পুনর্গঠন’ করছে বলেও ওই প্রতিবেদনে সতর্ক করা হয়েছে।

প্রসঙ্গত ২০০১ সালে নিউ ইয়র্কের বিশ্ব বাণিজ্য কেন্দ্র (টুইন টাওয়ার), পেন্টাগন আর পেনসিলভানিয়ায় আত্মঘাতী হামলা চালিয়ে ৩ হাজারের বেশি মানুষকে হত্যার ঘটনায় পর ধীরে ধীরে পুরা বিশ্বে জঙ্গিবাদের বিস্তার ঘটায় আল-কায়েদা।

এ দলের নেতা ওসামা বিন লাদেন ২০১১ সালে পাকিস্তানে নিহত হওয়ার পর আল-কায়েদার প্রভাব কিছুটা কমে আসে। আরেক সন্ত্রাসী দল আইএস এর উত্থানও আল-কায়েদার প্রভাব কমাতে ভূমিকা রাখে।

লাদেনের মৃত্যুর পর আল-কায়েদার নেতৃত্ব দিচ্ছিলেন আয়মান আল-জাওয়াহিরি । ২০২২ সালের অগাস্টে আফগানিস্তানে সিআইএ-এর ড্রোন হামলায় তিনিও নিহত হন।

এরপরই বাংলাদেশে ২০১৩ সালের পর থেকে একের পর এক জঙ্গি হামলা ও হত্যার মধ্যে বেশ কিছু ঘটনার দায় স্বীকার করা হয়েছিল আল-কায়েদার তরফ থেকে। বাংলাদেশের আইন শৃঙ্খলা বাহিনী অবশ্য দাবি করে আসছে, ওইসব ঘটনা ঘটিয়েছে দেশীয় উগ্রবাদীরাই।

২০১৪ সালে এক অডিও বার্তায় বাংলাদেশ সৃষ্টির উদ্দেশ্য নিয়ে প্রশ্ন তুলে ‘ইসলামবিরোধী ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে জিহাদের’ ডাক দিয়েছিলেন জাওয়াহিরি। ওই বছরই আরেক অডিও বার্তায় আল-কায়েদার ভারতীয় শাখা গড়ে বাংলাদেশেও কাজ করার ঘোষণা দেন তিনি।

শুধু তাই নয়, আন্তর্জাতিক আরেক সন্ত্রাসী দল আইএসও গুলশান হামলাসহ বেশ কিছু জঙ্গি হামলার ‘কৃতিত্ব’ দাবি করেছিল। তারাও বাংলাদেশে আলাদা ‘খিলাফত’ ঘোষণা করে তাদের নেতার নাম ঘোষণা করেছিল। তবে গুলশান হামলার পর কয়েক বছর ধরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সাঁড়াশি অভিযানের মধ্যে দেশে জঙ্গি দলগুলোর তৎপরতা স্তিমিত হয়ে আসে।

বিশ্লেষকদের মতে আল কায়দার পুঃসঙ্গঠিত হওয়ার খবরে শংকিত আন্তর্জাতিক মহল। কারন দলটি বর্তমান বাংলাদেশ এবং ভারতে নজর দিয়ে রাখলেও, শংকায় আচ্ছান্ন কিন্তু অন্যান্য দেশ। কারন অতীতের ঘটনা থেকে বলাই যায়, অত্যন্ত লুকিয়ে লুকিয়ে নিজেদের গোষ্ঠী সংঘঠন করে থাকে দলটি। এরপরই নিজের মিশন কার্যকর করে থাকে। তাই এই দুই দেশের পর তাদের পরবর্তী টার্গেট কোন দেশে আটকায় তা ভাবতেই সন্দীহান অন্যান্য দেশ।

বিমানে বিড়ি খেয়ে ভাইরাল এক বাঙ্গালী!

বিমানে বিড়ি খেয়ে ভাইরাল এক বাঙ্গালী। সোশ্যাল মিডিয়াতে ভেষে বেড়াচ্ছে এমনই এক ভিডিও। এমন অপ্রিতিকর ঘটনা নিয়ে দেশের মানুষের মধ্যে চলছে ব্যাপক আলোচনা সমালোচনা।

ধুমপান স্বাস্থের জন্য ক্ষতিকর। যেখানেই এই কথা সিগারেটের প্যাকেটেই লেখা থাকে, সেখানে মানূষ যেন এই বাক্যের তোয়াক্কা না করেই চলে। বাসা থেকে বের হয়ে কোঠাও যেতে নিলে আর কোন কিছু চোখে পড়ুক আর না পড়ুক, একটা দৃশ্য একই ভাবে প্রতিনিয়ত ধরা পড়ে, সেটা হচ্ছে মানুষের ধুমপান করা।

শুধু কিন্তু রাস্তাঘাতে এমন দৃশ্য দেখা যায় এমনটাও নয়। কিছু কিছু পরিবারের ক্ষেত্রে দেখা যায়, ঘড়ের মধ্যে অবলীলায় ধুমপান করে থাকে মানুষ। কিন্তু কিছু জায়গা আছে যেখানে ধুমপান নিষিদ্ধ। যেই সিদ্ধান্ত প্রশাসনিক ভাবে বেধে দেয়া আছে।

তার মধ্যে একটি স্তান হচ্ছে বিমানে। কঠোর নিয়ম বেধে দেয়া আছে এই বলে, বিমানে ধুমপান নিষিদ্ধ। সেই নিয়ম পালন হয়ে থাকে বিশ্বজুড়ে।

কিন্তু এই নিয়মের তোয়াক্কা না করে এখন ভাইরাল এক ব্যক্তি। তিনি অন্য কোন দেশের নন, বাংলাদেশের। বিমানে চরে ধুমপান করেছেন সে ব্যক্তি। কি ঘটেছিল সেই মুহুর্তে চলুন জেনে নেই বিস্তারিত।

ঘটনাটি ঘটেছে মালয়শিয়ান এয়ারলাইন্সের ভেতরে। বিমানের ভিতরে বসে ধুমপান করেছেন বাংলাদেশের এক লোক। বিষয়টি যখন আশেপাশের যাত্রীরা লক্ষ্য করেন তখনই তাকে থামিয়ে দেয়া হয়। এবং একটা সময়ে তাকে বিমান থেকে নামিয়ে দেয়া হয়।

গত ২৩ জুন মালয়েশিয়ার কুয়ালালামপুর থেকে ঢাকাগামী একটি প্লেনে ধূমপানের ঘটনাটি ঘটে। মালয়েশিয়ার মালিনদো এয়ারলাইন্সের OD-166 ফ্লাইটটি ঢাকার উদ্দেশ্যে ছেড়ে আসার ঠিক আগমুহূর্তে এ ঘটনা ঘটায় তৎক্ষণাৎ সেই ব্যক্তিকে নামিয়ে দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।

বুকিংয়ে দেওয়া তার মালামাল খুঁজে পেতে দেরি হওয়ায় এক ঘণ্টা বিলম্বে ছাড়ে বিমানটি। তবুও তাকে সাথে নিয়ে বিমান চালনা শুরু করতে চাননি বিমান কর্তৃপক্ষরা।

বিষয়টি শুনে তাজ্জব হয়ে গেছেন নিশ্চয়ই।ভাবছেন কিভাবে এমন কাজ করে ফেললেন সেই ব্যক্তি। এই ঘটনার চেয়ে বেশি অবাক করার মতো দ্ররশ্য দেখা গেছে তাকে নামিয়ে দেয়ার সময়। যা শুনলে আপনি যাবেন চমকে।

ভাইরাল সেই ভিডিওতে দেখা গেছে, নিজের কর্মের জন্য বিন্দুমাত্র লজ্জিত নন সেই ব্যক্তি। বরং অনবরত হাসতে হাসতে সিট থেকে বের হচ্ছেন তিনি।  যদিও এখন পর্যন্ত সেই ব্যক্তির নাম এবং পরিচয় প্রকাশ্যে আসেনি।

তবে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সেই ব্যক্তিকে নিয়ে চলছে তোড়জোড় সমালোচনা। এই ঘটনায় মজা নিচ্ছেন এমন নেটিজেনদের পোস্ট ভেষে বেড়াচ্ছে নেটদুনিয়াতে।

এখন অনেকের মধ্যে এই প্রশ্ন উঠে এসেছে, বিমানে কেন ধুমপান নিষিদ্ধ?

এয়ারলাইনসের আনুষ্ঠানিক বিবৃতি অনুসারে, বিমানে ধূমপান নিষিদ্ধ করার প্রধান দুটি কারণ রয়েছে। প্রথমটি অগ্নি নিরাপত্তা। জানা যায় যে সিগারেট প্রায়শই অ্যাপার্টমেন্ট এবং শিল্প প্রাঙ্গনে আগুনের কারণ হয় এবং বিপজ্জনক উত্পাদনে এ জাতীয় তদারকি এমনকি একটি সত্য বিপর্যয়ের দিকেও ডেকে আনতে পারে।

দ্বিতীয় কারণ হ’ল ধূমপায়ী তার আশেপাশের লোকদের স্বাচ্ছন্দ্যে হস্তক্ষেপ করে। গবেষণা অনুসারে মানবসৃষ্ট ধোঁয়া সক্রিয় ধোঁয়ার চেয়ে কম ক্ষতিকারক নয়।

এছাড়াও বিমান যেহেতু এক বদ্ধ ঘর হিসেবে তুলনীয় এবং সেখানে অক্সিজেনের পরিমান সীমিত থাকে, তাই সেখানে ধুমপান করা হলে অন্যান্য যাত্রীদের শ্বাসপ্রস্বাসে সমস্যা তৈরি করতে পারে। শুধু তাই নয়, সেখানে যেই ধোয়ার গন্ধ তৈরি হবে, তাতে অনেকে স্বাচ্ছাদ্যবোধ করবে না।

ইতিহাস ঘেটে জানা গেছে, ১৯৯৮ সালে আমেরিকান রাষ্ট্রপতি রোনাল্ড রেগান প্রথম ধূমপান নিষিদ্ধ করেছিলেন।

তিনি এমন একটি আইনে স্বাক্ষর করেছিলেন যা বিশ্বজুড়ে সমস্ত অভ্যন্তরীণ ফ্লাইটে ধূমপান নিষিদ্ধ করেছিল। একই বছর আমেরিকান এয়ারলাইনস তাদের বিমান ও আন্তর্জাতিক ফ্লাইটে ধূমপান নিষিদ্ধ করেছিল।

নির্দিষ্ট সংখ্যক মানুষ অসন্তুষ্ট থাকা সত্ত্বেও, বিপুল সংখ্যক যাত্রী এই আইনটি সহমত পোষন করেছেন এবং শীঘ্রই একে একে সকল বিমান সংস্থা ধূমপান নিষিদ্ধ করতে শুরু করে।

তবে বেশিরভাগ এয়ারলাইনস এই নিষেধাজ্ঞা লঙ্ঘনকারীদের খুঁজে পেলে তাদের শাস্তি দেয় এবং জরিমানার করে থাকে। যার পরিমাণ খুব বেশি। এমনকি কিছু দেশে, এই বিধি লঙ্ঘনকারিকে প্রশাসনিক দায়িত্বে আনা হয়ে থাকে। এখন দেখার পালা, ভাইরাল এই ধুমপায়ই ব্যক্তির জন্য কেমন সিদ্ধান্ত নিবেন বাংলাদেশের প্রসাশন। কারন তার কর্মকান্ডে দেশের সম্মান ক্ষুন্ন হয়েছে তা বলাই বাহুল্য।