সমুদ্র বন্দরসমূহে বহাল রয়েছে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত

চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্র বন্দরসমূহকে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত আজও বহাল রয়েছে।
আবহাওয়া অফিস জানায়, উত্তর বঙ্গোপসাগর এবং এর কাছাকাছি বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকায় গভীর সঞ্চালনশীল মেঘমালার সৃষ্টি অব্যাহত রয়েছে৷ সমুদ্র বন্দরসমূহ, উত্তর বঙ্গোপসাগর এবং এর আশপাশের বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকায় ঝড়ো হাওয়া বয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এর প্রভাবে দেশের কোথাও কোথাও মাঝারী ধরনের ভারী থেকে ভারী বর্ষণ হতে পারে।

আজ সকাল থেকে পরবর্তী ২৪ ঘন্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, ঢাকা, ময়মনসিংহ, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের অনেক জায়গায়, রাজশাহী ও রংপুর বিভাগের দু-এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়ার সাথে বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে । সেইসাথে দেশের কোথাও কোথাও মাঝারী ধরনের ভারী থেকে ভারী বর্ষণ হতে পারে।

আজ সকাল ৬টা পর্যন্ত গত ২৪ ঘন্টায় মাইজদীকোর্টে সর্বোচ্চ ৪৩ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। এছাড়া সিলেটে ৩৫, কক্সবাজারে ৩১ ও ঈশ্বরদীতে ২১ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়। এ সময় ঢাকায় কোন বৃষ্টি হয়নি বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অফিস।

আজ সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত দেশের অভ্যন্তরীণ নদীবন্দর জন্য আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, ঢাকা, ফরিদপুর, মাদারীপুর, খুলনা, বরিশাল, পটুয়াখালী, নোয়াখালী, কুমিল্লা, চট্টগ্রাম, ময়মনসিংহ এবং সিলেট অঞ্চলসমূহের উপর দিয়ে পশ্চিম অথবা উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে ঘন্টায় ৪৫ থেকে ৬০ কিলোমিটার বেগে বৃষ্টি অথবা বজ্রবৃষ্টিসহ অস্থায়ীভাবে দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে । এসব এলাকার নদীবন্দর সমূহকে ১ নম্বর নৌ হুশিয়ারী সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।

এছাড়া সারাদেশে দিন এবং রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে । আজ সীতাকুন্ডে সর্বনি¤œ তাপমাত্রা ২৩ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে। গতকালের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল রাজশাহীতে ৩৬ দশমিক ০ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এ সময় ঢাকায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৪ দমমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

পূর্বাভাসে আরও বলা হয, লঘুচাপের বাড়তি অংশ বিহার হতে উড়িষ্যা, গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গ ও এর কাছাকাছি এলাকা হয়ে উত্তর বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে। দক্ষিণপশ্চিম মৌসুমী বায়ূ টেকনাফ উপকূল পর্যন্ত অগ্রসর হয়েছে। এটি আরও অগ্রসর হওয়ার জন্য আবহাওয়াগত পরিস্থিতি অনুকূলে রয়েছে। পরবর্তী তিন দিনে দক্ষিণপশ্চিম মৌসুমী বায়ূ চট্টগ্রাম উপকূল পর্যন্ত অগ্রসর হতে পারে।

আজ সকাল থেকে ঢাকায় দক্ষিণ অথবা দক্ষিণপূর্ব দিক থেকে ঘন্টায় ১০ থেকে ১৫ কিলোমিটার বেগে বাতাস প্রবাহিত হচ্ছে, যা অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়ার আকারে ৩০ থেকে ৪০ কিলোমিটার পর্যন্ত বাড়ছে। সকালে ঢাকায় বাতাসের আপেক্ষিক আর্দ্রতা ছিল ৯৩ শতাংশ।
ঢাকায় আজ সূর্যাস্ত সন্ধ্যা ৬ টা ৪২ মিনিটে এবং আগামিকাল সূর্যোদয় ভোর ৫ টা ১১ মিনিটে ।

‘ধাক্কা লাগায়’গরম তেলে শিশুর হাত ঝলসে দিলেন বাবুর্চি

ধাক্কা লাগাকে কেন্দ্র করে ক্ষিপ্ত হয়ে এক শিশুর হাত গরম তেল দিয়ে ঝলসে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে হোটেলের এক বাবুর্চির বিরুদ্ধে।

মঙ্গলবার (৩১ মে) রাত ৯টার দিকে যশোরের ভৈরব হোটেলে এ ঘটনা ঘটে। পরে স্থানীয়রা ওই শিশুকে যশোর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করে।

আহত শিশুর নাম আইমান রাহাত। তার বয়স ১০ বছর। সে অভয়নগর চেঙ্গুটিয়া বাজারের জামাল মোল্লার ছেলে।

এই ঘটনায় অভিযুক্ত হোটেলের বাবুর্চি ইব্রাহিম বিশ্বাসকে আটক করেছে পুলিশ। ইব্রাহিম বিশ্বাস যশোরের কেশবপুর উপজেলার মঙ্গলকোট গ্রামের বাসিন্দা।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, শিশুটির মা ইবনে সিনা ডায়াগনস্টিক সেন্টারে চিকিৎসা নিতে এসে রাতে খাবার খেতে ভৈরব হোটেলে যান। খাওয়া শেষে হোটেল থেকে বের হওয়ার সময় হোটেলের সামনে বাবুর্চি ইব্রাহিমের সাথে শিশুটির অসাবধানতা-বসত ধাক্কা লাগে। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে শিশু রাহাতের শরীরে গরম তেল ছুড়ে দেন বাবুর্চি ইব্রাহিম বিশ্বাস। গরম তেলে ঝলসে যায় শিশুটির বাম হাত। তাকে দ্রুত ইবনে সিনা ডায়াগনস্টিক সেন্টারে জরুরি চিকিৎসা দিয়ে যশোর ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।

যশোর জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক আব্দুর রশিদ সাংবাদিকদের বলেন, রাতে আইমান নামে এক শিশুকে হাসপাতালের জরুরি বিভাগে আনা হয়। তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তার বাম হাত গরম তেলে ঝলসে গেছে।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বেলাল হোসেন বলেন, শিশুর হাতে গরম তেল ঢেলে নির্যাতনের ঘটনায় হোটেলের এক কর্মচারীকে আটক করা হয়েছে।

জনপ্রিয় সংগীতশিল্পী কেকে আর নেই

ঢাকা : ভারতের জনপ্রিয় সংগীতশিল্পী কৃষ্ণকুমার কুন্দন ওপফে কেকে মারা গেছেন। মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে কলকাতার একটি হাসপাতালে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

আনন্দবাজার পত্রিকা লিখেছে, কলকাতায় গানের অনুষ্ঠান ছিল কেকের। মঞ্চে গান গাওয়ার পর হঠাৎ অসুস্থ বোধ করেন। তড়িঘড়ি তাকে নিয়ে যাওয়া হয় শহরের প্রথম সারির একটি বেসরকারি হাসপাতালে। সেখানেই রাত সাড়ে ৯টায় চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

মৃত্যুকালে কেকের বয়স ছিল ৫৪ বছর। চিকিৎসকদের প্রাথমিক ধারণা হৃদরোগে আক্রান্ত হয়েই মৃত্যু হয়েছে তার। আকস্মিক মৃত্যুর কারণ জানতে মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো দেওয়া হয়েছে।

একটি সূত্র জানিয়েছে, অনুষ্ঠানের পর কলকাতার পাঁচতারা হোটেলে গিয়েছিলেন তিনি। সেই সময় অনুরাগীরা তাকে ছবি তোলার অনুরোধ জানান। তখনই অসুস্থ বোধ করায় এ দিন ভক্তদের নিরাশ করেন তিনি। অসুস্থতা বাড়তেই হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।

শিল্পীকে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে ইতিমধ্যেই হাসপাতালের উদ্দেশে রওনা দিয়েছেন সুরকার জিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। অনু্ষ্ঠানের আয়োজক তোচন ঘোষ কেকে-কে কলকাতায় নিয়ে আসেন। বুধবার তার আরও একটি শো করার কথা ছিল।

কেকের মৃত্যুর খবর ফেসবুকে প্রথম জানান অমিত কুমারের স্ত্রী রিমা গঙ্গোপাধ্যায়। সঙ্গে সঙ্গে শোকের ছায়া নেমে আসে অনুরাগী মহলে। সুরের শহর কলকাতা শিল্পীর গানের শেষ সাক্ষী হয়ে রইল।

বাংলা, হিন্দি, তামিল, কণ্ণড়, মালয়ালাম, মারাঠি, অসমীয়া ভাষায় গান গেয়েছেন কেকে । ৯০ এর দশক থেকে শুরু করে এ পর্যন্ত অনেক জনপ্রিয় গান রয়েছে তার।

সরকারের চাল মজুদদারদের বিরুদ্ধে দেশব্যাপী অভিযান শুরু

ভোক্তাদের জন্য সুষ্ঠু খাদ্য সরবরাহ চেইন বজায় রাখার লক্ষ্যে এবং কতিপয় অসাধু বিক্রেতার কারসাজি রোধ করতে সরকার অবৈধ ধান-চাল মজুতকারীদের বিরুদ্ধে দেশব্যাপী অভিযান শুরু করেছে।

অবৈধ ধান মজুতকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে এবং চলমান ধান কাটার পূর্ণ মৌসুমে চালের দাম বৃদ্ধির কারণ খুঁজে বের করতে মন্ত্রিসভার সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেওয়ার একদিন পর এই অভিযান শুরু হয়। মঙ্গলবার সচিবালয়ে খাদ্য মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদারের সভাপতিত্বে এক বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

অভিযানের বিষয়ে খাদ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব এম. মজিবুর রহমান বাসসকে বলেন, এটা আমাদের রুটিন ওয়ার্ক এবং খাদ্য অধিদপ্তরের বৈধ লাইসেন্সধারী চাল ব্যবসায়ী, রাইস মিলারদের কেউই চলমান ফসল কাটার মৌসুমে তাদেও জন্য নির্দিষ্ট সর্বোচ্চ সীমার অতিরিক্ত চাল বা ধান মজুদ করতে পারবেন না।

ব্যবসায়ীদের দৃষ্টিভঙ্গির সমালোচনা করে এই কর্মকর্তা বলেন, কিছু ব্যবসায়ী ধান কাটার মৌসুমে প্রচুর পরিমাণে ধান মজুদ করে যা কঠোরভাবে নিষিদ্ধ এবং সম্পূর্ণ বেআইনি। যারা ফসল কাটার  মৌসুমে অবৈধভাবে চাল বা ধান মজুদ করার চেষ্টা করবে তাদের শাস্তির আওতায় আনতে হবে।

এই সিদ্ধান্তের আওতায়, খাদ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের নিয়ে তিনটি এবং খাদ্য অধিদপ্তরের অন্য পাঁচটি নিয়ে মোট আটটি টিম আজ থেকে অবৈধ খাদ্য মজুদকারীদের বিরুদ্ধে অভিযান শুরু করেছে।একজন খাদ্য কর্মকর্তা জানান, সিদ্ধান্তের অংশ হিসেবে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় নগরীর বাবুবাজার পাইকারি চালের বাজারে অভিযান পরিচালনা করে খাদ্য মন্ত্রণালয়ের টিম। এসময় বেশির ভাগ ব্যবসায়ী তাদের দোকান বন্ধ করে পালিয়ে যায়।

চাল ব্যবসায়ীদের খাদ্য অধিদপ্তরের লাইসেন্স ও তাদের গোডাউনের খাদ্য মজুদ যাচাই করেছে দলটি। দলটি দেখেছে যে খাদ্য অধিদপ্তর কর্তৃক জারি করা বেশিরভাগ ট্রেডিং লাইসেন্সের মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে। এই অভিযান সারা বছরই চলবে উল্লেখ করে রহমান বলেন, ভোক্তাদের জন্য চাল ও ধানের সরবরাহ নির্বিঘœ রাখার লক্ষ্যে সরকার মজুতদারদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেবে।

সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাসহ জাতীয় নিরাপত্তা  গোয়েন্দা (এনএসআই) ও জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরও সারাদেশে অভিযানে অংশ নেবেন।

এ ছাড়াও খাদ্য মন্ত্রণালয়ে একটি কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে এবং ৮৮০২২২৩৩৮০২১১৩, ০১৭৯০৪৯৯৯৪২ এবং ০১৭১৩০০৩৫০৬ নম্বরে ডায়াল করে অবৈধ মজুদদারদের সম্পর্কে কন্ট্রোল রুমে জানানোর জন্য জনগণকে অনুরোধ করা হয়েছে।

খাদ্যমন্ত্রী শিগগিরইই কৃষি, খাদ্য ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে সমন্বিত বৈঠকের ব্যবস্থা করার নির্দেশ দিয়েছেন।
ভারপ্রাপ্ত খাদ্য সচিব ড. নাজমানারা খানম, অতিরিক্ত সচিব, খাদ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালকসহ খাদ্য অধিদপ্তরের অন্যান্য কর্মকর্তারা বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।