চট্টগ্রামে নানা অনিয়মে ৪ ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার বন্ধ

চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ ইলিয়াস চৌধুরী আজ আকস্মিক পরিদর্শনে গিয়ে নগরীর চারটি প্রাইভেট ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার বন্ধ করে দিয়েছেন। এ চারটিতে মানসম্মত পরিবেশ ও বৈধ কাগজপত্রের অভাবসহ বিভিন্ন অনিয়ম রয়েছে।

সিভিল সার্জন অফিস সূত্রে জানা যায়, সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ ইলিয়াস চৌধুরী আজ সকাল ১০টা থেকে সাড়ে ১২টা পর্যন্ত সময়ে ছয়টি ডায়াগনস্টিক সেন্টার পরিদর্শন করেন। সকাল ১০ টায় চট্টেশ্বরী রোডস্থ চট্টগ্রাম কসমোপলিটন হসপিটাল প্রাইভেট লিমিটেড পরিদর্শনে যান। এ সময়ে কর্তব্যরত মেডিকেল অফিসার ডা. রণি দেসহ সংশ্লিষ্টরা হাসপাতালের লাইসেন্সসহ বৈধতার কোনো কাগজপত্র প্রদর্শন করতে পারেননি। সিভিল সার্জন সকাল সাড়ে ১০ টায় ডবলমুরিং থানার ডিটি রোডের পপুলার মেডিকেল সেন্টারে যান।

এখানে রক্ত পরীক্ষার নমুনা সংগ্রহের জন্য পাশ করা কোনো মেডিকেল টেকনোলজিস্ট নেই। বাইরে থেকে প্যাথলজিস্ট দিয়ে রিপোর্ট করানো হয়। এক্স-রে রুম ও প্যাথলজি রুম মানসম্মত নয়। এক্স-রে রুমের দেয়াল ৫ ইঞ্চি পুরো, যা স্বাস্থ্যসম্মত নয়। ছাদে লিডশিট লাগানো নেই। লাইসেন্স বা ভ্যাট-ট্যাক্সের কাগজপত্র নেই। সকাল ১১ টায় দামপাড়া নিরুপণী প্যাথলজি ল্যাবরেটরি পরিদর্শনকালে তিনি অপরিচ্ছন্ন পরিবেশ লক্ষ্য করেন। ভ্যাট রেজিস্ট্রেশন ও টিন সার্টিফিকেট দেখতে চাইলেও তারা দেখাতে পারেননি। সকাল ১১ টা ২০ মিনিটে পাঁচলাইশ ট্রিটমেন্ট ভবনের ওপরে সিএসটিসি হসপিটালে যান। সেখানে ২০ মিনিট অপেক্ষা করেও দায়িত্বশীল কোনো কর্মকর্তা-কর্মচারীকে খুঁজে পাওয়া যায়নি। হাসপাতাল-সংশ্লিষ্ট কোনো কাগজপত্র কেউ দেখাতে পারেননি।

সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ ইলিয়াস চৌধুরী এ চারটি হাসপাতাল ও ডায়াগস্টিক সেন্টার বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছেন।
তবে পাঁচলাইশস্থ ট্রিটমেন্ট হাসপাতাল ও পলি হাসপাতাল লিমিটেডে গিয়ে ম্যানেজারসহ কর্মকর্তাদের পাওয়া যায়। এ দু’টিতে সেবার মূল্য প্রদর্শিত নেই। ট্রিটমেন্টে ২০২১ ও ২০২২ সালের অনলাইন আবেদন নেই। এ দুই প্রতিষ্ঠানকে সেবার মূল্য অভ্যর্থনা ও জরুরি বিভাগে প্রদর্শণের নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

অভিযানশেষে সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ ইলিয়াস চৌধুরী বাসস’কে জানান, ‘পপুলার মেডিকেল সেন্টার ও নিরুপণী প্যাথলজির অবস্থা অত্যন্ত নাজুক। পপুলারের এক্স-রে রুমের দেয়াল ৫ ইঞ্চি হওয়ায় রোগি, কর্মরত ও আগতরা রেডিয়েশনে প্রতিনিয়ত আক্রান্ত হচ্ছেন যা তাদের শরীরে দীর্ঘমেয়াদী ক্ষতিসাধন করবে। নিরুপণী’র পরিবেশ অত্যন্ত অস্বাস্থ্যকর। এ দু’টি প্রতিষ্ঠান স্থায়ীভাবে বন্ধ করে দেয়া হবে। অন্যগুলো কাগজপত্র নিয়ে এলে পরবর্তীতে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।’

তিনি বাসস’কে জানান, ‘সিএসটিসি’তে দালাল চক্রের মাধ্যমে রোগি আনা হয়। এখানে প্রসূতিদের অপারেশনে অস্বাভাবিক অংকের অর্থ আদায় করা হয়। হাসপাতালটি বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়ে আগত ও চিকিৎসারত রোগিদের অন্যত্র চিকিৎসা সেবা নিতে পরামর্শ দিয়েছি।’

Author

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *