মানুষ চাইলে এখন তিন বেলা মাংস থেতে পারে : প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী

ঢাকা : মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম বলেছেন, দেশে বিজ্ঞানীদের নিরলস প্রচেষ্টায় প্রাণিসম্পদ খাতে অভূতপূর্ব উন্নয়ন হয়েছে। প্রাণিসম্পদ খাতের বিকাশ সামনে নিয়ে আসার ক্ষেত্রে গণমাধ্যমের ভূমিকা রয়েছে।

এখন মানুষ চাইলে তিন বেলাও মাংস খেতে পারে।

শনিবার (২৮ মে) রাজধানীর ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির নসরুল হামিদ মিলনায়তনে ‘প্রাণিসম্পদ খাতে উন্নয়ন ও সম্ভাবনা: গণমাধ্যমের ভূমিকা’ শীর্ষক কর্মশালা ও ফেলো নির্বাচনের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর কর্তৃক বাস্তবায়নাধীন প্রাণিসম্পদ ও ডেইরি উন্নয়ন প্রকল্প এবং পরিপ্রেক্ষিতের যৌথ উদ্যোগে ও ফিশারিজ অ্যান্ড লাইভস্টক জার্নালিস্ট ফোরামের সহযোগিতায় এ কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়।

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম বলেন, বাংলাদেশের বড় একটি খাত প্রাণিসম্পদ খাত। এ খাতে অনেক সম্ভাবনা রয়েছে। এর উপকারভোগী আমরা সবাই। এ খাতে উৎপাদন না হলে দেশে খাদ্য ও পুষ্টির সংকট তৈরি হবে। এ খাত পুষ্টি ও আমিষের চাহিদা পূরণের মাধ্যমে মানুষের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। বেকারদের স্বাবলম্বী করে, উদ্যোক্তা তৈরি করে, গ্রামীণ অর্থনীতি সচল করে। খাবারের একটি বড় যোগান আসে মাংস, দুধ ও ডিম থেকে। তাই এ খাতকে সামনে এগিয়ে নেওয়া প্রয়োজন। সৃজনশীলতা নিয়ে এগিয়ে গেলে এ খাতে ভালো কিছু করা সম্ভব।

তিনি বলেন, প্রাণিসম্পদ খাতকে সম্ভাবনার দিকে এগিয়ে নেওয়ার জন্য গণমাধ্যম বড় সহায়ক শক্তি। গণমাধ্যমের সাংবাদিকদের একটি লেখা মানুষকে অনুপ্রাণিত করে, অপ্রতিরোধ্য গতিতে এগিয়ে যাওয়ার শক্তি ও সাহস যোগায়। একটি ভালো সংবাদ থেকে মানুষ উদ্দীপ্ত হয়, উৎসাহিত হয়, সামনে এগিয়ে যাওয়ার অভাবনীয় শক্তি সঞ্চার করে।

শ ম রেজাউল করিম বলেন, করোনা সংকটে প্রাণিসম্পদ খাতকে রক্ষার জন্য সরকার ভ্রাম্যমাণ বিক্রির ব্যবস্থা চালু করেছে। এতে উৎপাদনকারী ও ভোক্তা উভয়ে লাভবান হয়েছে। নয় হাজার কোটি টাকার ঊর্ধ্বে ভ্রাম্যমাণ ব্যবস্থায় দুধ, ডিম, মাছ, মাংস বিক্রি হয়েছে। গত রমজান মাসে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে দ্রব্যমূল্য স্থিতিশীল রাখার জন্য সুলভ মূল্যে দুধ, ডিম ও মাংস বিক্রি করা হয়েছে।

প্রাণিসম্পদ খাতের সম্ভাবনার পাশাপাশি ত্রুটির কথা গণমাধ্যম সামনে নিয়ে এলে সেটি সরকারের জন্য সহায়ক হবে বলেও জানান মন্ত্রী।

প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ডা. মনজুর মোহাম্মদ শাহজাদার সভাপতিত্বে ও পরিপ্রেক্ষিতের নির্বাহী পরিচালক সৈয়দ বোরহান কবীরের সঞ্চালনায় কর্মশালার উদ্বোধন অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের পরিচালক (সম্প্রসারণ) দীপক রঞ্জন রায়।

অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন গ্লোবাল টিভির এডিটর ইন চিফ ও সিইও সৈয়দ ইশতিয়াক রেজা ও ফিশারিজ অ্যান্ড লাভস্টক জার্নালিস্ট ফোরামের সভাপতি এম এ জলিল মুন্না।

কর্মশালায় উপস্থিত ছিলেন প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের পরিচালক (উৎপাদন) ডা. রেয়াজুল হক ও প্রাণিসম্পদ ও ডেইরি উন্নয়ন প্রকল্পের প্রধান কারিগরি সমন্বয়ক ডা. মো. গোলাম রব্বানীসহ অধিদপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। এছাড়া কর্মশালায় আরও উপস্থিত ছিলেন প্রাণিসম্পদ খাতে কর্মরত বিভিন্ন গণমাধ্যমের সাংবাদিকরা।

চট্টগ্রামে নানা অনিয়মে ৪ ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার বন্ধ

চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ ইলিয়াস চৌধুরী আজ আকস্মিক পরিদর্শনে গিয়ে নগরীর চারটি প্রাইভেট ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার বন্ধ করে দিয়েছেন। এ চারটিতে মানসম্মত পরিবেশ ও বৈধ কাগজপত্রের অভাবসহ বিভিন্ন অনিয়ম রয়েছে।

সিভিল সার্জন অফিস সূত্রে জানা যায়, সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ ইলিয়াস চৌধুরী আজ সকাল ১০টা থেকে সাড়ে ১২টা পর্যন্ত সময়ে ছয়টি ডায়াগনস্টিক সেন্টার পরিদর্শন করেন। সকাল ১০ টায় চট্টেশ্বরী রোডস্থ চট্টগ্রাম কসমোপলিটন হসপিটাল প্রাইভেট লিমিটেড পরিদর্শনে যান। এ সময়ে কর্তব্যরত মেডিকেল অফিসার ডা. রণি দেসহ সংশ্লিষ্টরা হাসপাতালের লাইসেন্সসহ বৈধতার কোনো কাগজপত্র প্রদর্শন করতে পারেননি। সিভিল সার্জন সকাল সাড়ে ১০ টায় ডবলমুরিং থানার ডিটি রোডের পপুলার মেডিকেল সেন্টারে যান।

এখানে রক্ত পরীক্ষার নমুনা সংগ্রহের জন্য পাশ করা কোনো মেডিকেল টেকনোলজিস্ট নেই। বাইরে থেকে প্যাথলজিস্ট দিয়ে রিপোর্ট করানো হয়। এক্স-রে রুম ও প্যাথলজি রুম মানসম্মত নয়। এক্স-রে রুমের দেয়াল ৫ ইঞ্চি পুরো, যা স্বাস্থ্যসম্মত নয়। ছাদে লিডশিট লাগানো নেই। লাইসেন্স বা ভ্যাট-ট্যাক্সের কাগজপত্র নেই। সকাল ১১ টায় দামপাড়া নিরুপণী প্যাথলজি ল্যাবরেটরি পরিদর্শনকালে তিনি অপরিচ্ছন্ন পরিবেশ লক্ষ্য করেন। ভ্যাট রেজিস্ট্রেশন ও টিন সার্টিফিকেট দেখতে চাইলেও তারা দেখাতে পারেননি। সকাল ১১ টা ২০ মিনিটে পাঁচলাইশ ট্রিটমেন্ট ভবনের ওপরে সিএসটিসি হসপিটালে যান। সেখানে ২০ মিনিট অপেক্ষা করেও দায়িত্বশীল কোনো কর্মকর্তা-কর্মচারীকে খুঁজে পাওয়া যায়নি। হাসপাতাল-সংশ্লিষ্ট কোনো কাগজপত্র কেউ দেখাতে পারেননি।

সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ ইলিয়াস চৌধুরী এ চারটি হাসপাতাল ও ডায়াগস্টিক সেন্টার বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছেন।
তবে পাঁচলাইশস্থ ট্রিটমেন্ট হাসপাতাল ও পলি হাসপাতাল লিমিটেডে গিয়ে ম্যানেজারসহ কর্মকর্তাদের পাওয়া যায়। এ দু’টিতে সেবার মূল্য প্রদর্শিত নেই। ট্রিটমেন্টে ২০২১ ও ২০২২ সালের অনলাইন আবেদন নেই। এ দুই প্রতিষ্ঠানকে সেবার মূল্য অভ্যর্থনা ও জরুরি বিভাগে প্রদর্শণের নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

অভিযানশেষে সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ ইলিয়াস চৌধুরী বাসস’কে জানান, ‘পপুলার মেডিকেল সেন্টার ও নিরুপণী প্যাথলজির অবস্থা অত্যন্ত নাজুক। পপুলারের এক্স-রে রুমের দেয়াল ৫ ইঞ্চি হওয়ায় রোগি, কর্মরত ও আগতরা রেডিয়েশনে প্রতিনিয়ত আক্রান্ত হচ্ছেন যা তাদের শরীরে দীর্ঘমেয়াদী ক্ষতিসাধন করবে। নিরুপণী’র পরিবেশ অত্যন্ত অস্বাস্থ্যকর। এ দু’টি প্রতিষ্ঠান স্থায়ীভাবে বন্ধ করে দেয়া হবে। অন্যগুলো কাগজপত্র নিয়ে এলে পরবর্তীতে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।’

তিনি বাসস’কে জানান, ‘সিএসটিসি’তে দালাল চক্রের মাধ্যমে রোগি আনা হয়। এখানে প্রসূতিদের অপারেশনে অস্বাভাবিক অংকের অর্থ আদায় করা হয়। হাসপাতালটি বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়ে আগত ও চিকিৎসারত রোগিদের অন্যত্র চিকিৎসা সেবা নিতে পরামর্শ দিয়েছি।’

১৪ কেজি গাঁজাসহ ২ মাদক কারবারিকে গ্রেফতার করেছে ডিবি

রাজধানীর মতিঝিল থানা এলাকা থেকে ১৪ কেজি গাঁজাসহ দুই মাদক কারবারিকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) এর গোয়েন্দা তেজগাঁও বিভাগ।

গ্রেফতারকৃতরা হলো শ্রী মনোরঞ্জন চন্দ্র রায় ও মোঃ নূর ইসলাম ।

বৃহস্পতিবার (২৬ মে ২০২২) সন্ধ্য ০৭:২০ টায় মতিঝিল থানার ৬৪/এ, উত্তর কমলাপুর, হোটেল সিটি প্যালেস ইন্টারন্যাশনাল(আবাসিক) এর সামনে থেকে তাদেরকে গ্রেফতার করে গোয়েন্দা তেজগাঁও বিভাগের সংঘবদ্ধ অপরাধ, গাড়ি চুরি প্রতিরোধ ও উদ্ধার টিম।

অভিযানে নেতৃত্ব দেয়া সহকারী পুলিশ কমিশনার হাসান মুহাম্মদ মুহতারিম ডিএমপি নিউজকে জানান, কতিপয় মাদক কারবারি কুমিল্লা জেলা হতে গাঁজা নিয়ে ঢাকার মতিঝিল এলাকায় বিক্রয়ের উদ্দেশ্যে অবস্থান করছে মর্মে তথ্য পাওয়া যায়। এমন তথ্যের ভিত্তিতে গোয়েন্দা পুলিশের একটি টিম মতিঝিল থানার ৬৪/এ, উত্তর কমলাপুর, হোটেল সিটি প্যালেস ইন্টারন্যাশনাল(আবাসিক) এর সামনে পাকা রাস্তার উপর উপস্থিত হয়ে সন্দেহভাজন দুইজনকে ঘিরে ফেলে। এসময় ‍দুইজনকে তল্লাশি করে শ্রী মনোরঞ্জন চন্দ্র রায় এর নিকট থেকে একটি প্লাস্টিকের বাজারের ব্যাগে ১০ কেজি গাঁজা এবং মোঃ নূর ইসলাম এর নিকট থেকে একটি প্লাস্টিকের বাজারের ব্যাগে ০৪ কেজি গাঁজা উদ্ধার করা হয়।

তিনি বলেন, গ্রেফতারকৃতরা কুমিল্লা জেলার সীমান্তবর্তী এলাকা হতে গাঁজা সংগ্রহ করে ঢাকা শহরসহ আশপাশ এলাকায় বিক্রয় করতো মর্মে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেছে।

গ্রেফতারকৃতদের বিরুদ্ধে মতিঝিল থানায় মামলা রুজু হয়েছে বলেও জানান পুলিশের এ কর্মকর্তা।

 

কালিয়াকৈর উপজেলার মৌচাক এলাকায় লাইনচ্যুত হওয়া পঞ্চগড় এক্সপ্রেস ট্রেনের দুটি বগি উদ্ধার করা হয়েছে। ১‌‌২ ঘণ্টা পর শনিবার (২৮ মে) সকাল ৯টা ৪৫ মিনিটে বগিগুলো উদ্ধার করা হয়। এরপর থেকে ঢাকা-উত্তরবঙ্গ ট্রেন চলাচল শুরু হয়েছে।

মৌচাক রেলওয়ে স্টেশনের সহকারী স্টেশন মাষ্টার শাহীনুর রহমান শাহীন জানান, ঢাকা থেকে রিলিফ ট্রেন ঘটনাস্থলে এসে বগি উদ্ধারে কার্যক্রম শুরু করে। বগিগুলো উদ্ধারের পর ট্রেন চলাচল শুরু হয়েছে।

এদিকে শনিবার (২৮ মে) সকালে পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের পাকশী বিভাগীয় ব্যবস্থাপক (ডিআরএম) শাহীদুল ইসলাম জানান, বগি লাইনচ্যুতির ঘটনায় চার সদস্যর তদন্ত কমটি গঠন করা হয়েছে।

জয়দেবপুর রেলওয়ে জংশন পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ উপ-পরিদর্শক (এসআই) শহিদুল ইসলাম বলেন, ‘ট্রেনটি দুর্ঘটনায় পড়ায় উত্তরবঙ্গ ও খুলনার পথে চলাচলকারী অনেক যাত্রী দুর্ভোগে পড়েছেন। তাদের দুর্ভোগ কমাতে রেল পুলিশের পক্ষ থেকে যাত্রীদের নিরাপত্তা ব্যবস্থা দেওয়া হয়েছে।’

জয়দেবপুর রেলওয়ে জংশনের ইনচার্জ রেজাউল ইসলাম জানান, ঢাকা থেকে উদ্ধারকারী ট্রেন রাত ১২টায় রওনা দিয়ে রাত ৩টায় দুর্ঘটনাস্থলে পৌঁছে উদ্ধার কাজ শুরু করে।

এর আগে শুক্রবার (২৭ মে) রাত সাড়ে ৯টায় পঞ্চগড় থেকে ছেড়ে আসা ঢাকাগামী পঞ্চগড় এক্সপ্রেস ট্রেন মৌচাক স্টেশন পার হওয়ার পরই ইঞ্জিনসহ দুটি বগি লাইনচ্যুত হয়। এতে ঢাকার সঙ্গে উত্তরবঙ্গ ও খুলনার পথে সব ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। ১‌‌২ ঘণ্টা বন্ধের পর সকাল ৯টা ৪৫ মিনিটে আবারও ট্রেন চলাচল শুরু হয়েছে।

দুই বাংলাদেশি শান্তিরক্ষী পেলেন মরনোত্তর দ্যাগ হ্যামারশোল্ড পদক

নিউ ইয়র্ক: ‘শান্তিরক্ষীদের আত্মত্যাগ শুধু শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য কাজ করে যেতে আমাদের সংকল্পকে শক্তিশালী করে’। স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার (২৬ মে) জাতিসংঘ সদরদপ্তরে আন্তর্জাতিক শান্তিরক্ষী দিবসে কর্তব্যরত অবস্থায় আত্মোৎসর্গকারী শান্তিরক্ষীদের মরনোত্তর দ্যাগ হ্যামারশোল্ড মেডেল প্রদান অনুষ্ঠানে একথা বলেন জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত রাবাব ফাতিমা। কর্তব্যরত অবস্থায় আত্মোৎসর্গকারী দুইজন বাংলাদেশী শান্তিরক্ষী মেজর এ কে এম মাহমুদুল হাসান ও ল্যান্সকর্পোরাল মোঃ রবিউল মোল্লা এ মেডেল পান।

মেজর এ কে এম মাহমুদুল হাসান সেন্ট্রাল আফ্রিকান রিপাবলিক-এ নিয়োজিত মিনুসকা (MINUSCA) মিশনে এবং ল্যান্স কর্পোরাল মোঃ রবিউল মোল্লা দক্ষিন সুদানে নিয়োজিত আনমিস (UNMISS) মিশনে কর্তব্যরত অবস্থায় নিহত হন। জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেজের কাজ থেকে বাংলাদেশের পক্ষে এ মেডেল গ্রহণ করেন জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত রাবাব ফাতিমা। বাংলাদেশ স্থায়ী মিশন এসকল মেডেল কর্তব্যরত অবস্থায় নিহত বাংলাদেশী শান্তিরক্ষীদের পরিবারের কাছে পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। এ খবর জানিয়েছে মার্কিন সংবাদমাধ্যম বাংলা প্রেস।

এবারের আন্তর্জাতিক শান্তিরক্ষী দিবসে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে কর্তব্যরত অবস্থায় আত্মোৎসর্গকারী ৪২টি দেশের ১১৭ জন শান্তিরক্ষীকে বিশ্ব শান্তিরক্ষায় সর্বোচ্চ ত্যাগের জন্য ‘দ্যাগহ্যামারশোল্ড’ মেডেল প্রদান করা হয়। জাতিসংঘ সদরদপ্তরে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তেনিও গুতেরেজ (Antonio Guterres) বাংলাদেশসহ ৪২টি দেশের স্থায়ী প্রতিনিধিদের হাতে স্ব স্ব দেশের মেডেল তুলে দেন।

দিবসটি উপলক্ষে জাতিসংঘ সদরদপ্তরে রক্ষিত শোক বইয়ে স্বাক্ষর করেন রাষ্ট্রদূত ফাতিমা। শোকবার্তায় তিনি উল্লেখ করেন, বিশ্ব শান্তির জন্য পবিত্র দায়িত্ব পালনে বাংলাদেশ তার অনেক সাহসী সন্তানকে হারিয়েছে। তিনি শান্তিরক্ষায় জীবনদানকারী সকল বীর শান্তিরক্ষীদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেন এবং অপূরণীয় এই ক্ষতির জন্য তাঁদের পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা প্রকাশ করেন।

মেডেল প্রদান অনুষ্ঠানের পর কর্তব্যরত অবস্থায় আত্মোৎসর্গকারী সকল শান্তিরক্ষীদের সম্মানে জাতিসংঘ সদরদপ্তরের উত্তর লনে অবস্থিত “শান্তিরক্ষী মেমোরিয়াল সাইট ” এ পুস্পস্তবক অর্পণ করেন রাষ্ট্রদূত ফাতিমা। এসময় জাতিসংঘে বাংলাদেশ স্থায়ী মিশনের কর্মকর্তাগণ ও জাতিসংঘ সদরদপ্তরে কর্মরত বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।

জাতিসংঘ মহাসচিব কর্তৃক জাতিসংঘ সদর দপ্তরের উত্তর লনে “শান্তিরক্ষী মেমোরিয়াল সাইট”-এ পুস্পস্তবক অর্পণের মধ্য দিয়ে দিবসটির কর্মসূচি শুরু হয়। এ বছর দিবসটির প্রতিপাদ্য হচ্ছে ‘জনগণ শান্তি অগ্রগতি: অংশীদারিত্বের শক্তি’। দিবসটিতে প্রতিবছর শান্তিরক্ষীদের পেশাদারিত্ব, নিষ্ঠা ও সাহসিকতার স্বীকৃতি এবং যাঁরা শান্তির জন্য জীবন হারিয়েছেন তাঁদের মরনোত্তর দ্যাগ হ্যামারশোল্ড মেডেল প্রদান করে পবিত্র স্মৃতির প্রতি সম্মান জানানো হয়।

বাংলাদেশ বর্তমানে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রম শীর্ষ শান্তিরক্ষী প্রেরণকারী দেশ। বাংলাদেশের ৬ হাজার ৮০২ জন শান্তিরক্ষী বিশ্বের ৯টি মিশনে কর্তব্যরত রয়েছেন। দায়িত্বরত অবস্থায় এ পর্যন্ত জীবন উৎসর্গ করেছেন ১৬১ জন বাংলাদেশী শান্তিরক্ষী।

করোনা অতিমারিজনিত কারণে দুই বছর পর আবার জাতিসংঘ সদরদপ্তরে স্বশরীরে আন্তর্জাতিক শান্তিরক্ষী দিবস পালন করা হলো।

বাংলাদেশের জিআইইউ এবং হার্ভার্ড কেনেডি স্কুলের সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর

মিনারা হেলেন ইতি-নিউ ইয়র্ক: গভর্নেন্স ইনোভেশন ইউনিট (জিআইইউ), প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় এবং হার্ভার্ড কেনেডি স্কুলের অ্যাশ সেন্টার ফর ডেমোক্রেটিক গভর্ন্যান্স অ্যান্ড ইনোভেশন-এর মধ্যে বাংলাদেশের জনপ্রশাসনের সক্ষমতা বৃদ্ধি ও শক্তিশালী করার লক্ষ্যে বুধবার (২৫ মে) হার্ভার্ড কেনেডি স্কুলে একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়েছে। স্মারকটিতে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের পক্ষে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ড. আহমদ কায়কাউস এবং হার্ভার্ড কেনেডি স্কুলের অ্যাশ সেন্টারের পক্ষ থেকে অধ্যাপক ডগলাস ডব্লিউ. এলম্যানডর্ফ স্বাক্ষর করেন। সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন জনাব আবদুর রউফ তালুকদার, সিনিয়র সচিব, অর্থ বিভাগ, অর্থ মন্ত্রণালয়; জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব জনাব কে এম আলী আজম; নিউইয়র্কে বাংলাদেশের কনস্যুলেট জেনারেলের কনসাল জেনারেল ড. মোহাম্মদ মনিরুল ইসলাম; ড. শামীমা নাসরিন, পরিচালক, গভর্নেন্স ইনোভেশন ইউনিট এবং জনাব আরিফুজ্জামান, উপ-পরিচালক, গভর্নেন্স ইনোভেশন ইউনিট। এ খবর জানিয়েছে মার্কিন সংবাদমাধ্যম বাংলা প্রেস।

চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে ড. কায়কাউস মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের অগ্রযাত্রাকে তুলে ধরেন এবং ‘এসডিজি ২০৩০’ ও ‘রূপকল্প-২০৪১’ বাস্তবায়নের মাধ্যমে বাংলাদেশকে একটি উন্নত, সমৃদ্ধ দেশে পরিণত করার লক্ষ্যে সরকারের প্রচেষ্টা এবং প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেন । তিনি আশা প্রকাশ করেন যে অ্যাশ সেন্টারের সাথে সহযোগিতা বাংলাদেশের জনপ্রশাসনে দক্ষ মানবসম্পদ তৈরিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে, যা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের ‘সোনার বাংলা’ বিনির্মাণে তাৎপর্যপূর্ণ অবদান রাখবে।

এ বছরটি বাংলাদেশ – মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫০তম বার্ষিকী উদযাপনের কথা উল্লেখ করে ড. কায়কাউস দুই দেশের মধ্যকার বিরাজমান সহযোগিতামূলক সম্পৃক্ততা আরো শক্তিশালী করার প্রয়োজনীয়তার উপর জোর দেন। বাংলাদেশ সরকার এবং হার্ভার্ড কেনেডি স্কুলের মধ্যকার সম্পৃক্ততা ভবিষ্যতে, বিশেষ করে শিক্ষা, গবেষণা ও উদ্ভাবনের ক্ষেত্রে, আরও প্রসারিত ও গভীর হবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

বাংলাদেশের উন্নয়ন অগ্রযাত্রার অংশীদার হওয়া অ্যাশ সেন্টারের জন্য বিশেষ গুরুত্ববহন করে উল্লেখ করে অধ্যাপক ডগলাস ডব্লিউ. এলম্যানডর্ফ এই সমঝোতা স্মারক বাস্তবায়নে বাংলাদেশ সরকারের সাথে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন। তিনি সাম্প্রতিককালে বাংলাদেশের অভূতপূর্ব আর্থ-সামাজিক অর্জন এবং এই সাফল্যের পেছনে বাংলাদেশের সক্রিয়, বাস্তববাদী নীতি ও কৌশলের পাশাপাশি দূরদর্শী নেতৃত্বের প্রশংসা করেন।

এই বিশেষ সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরের মাধ্যমে মানবসম্পদ উন্নয়নের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ সরকার এবং হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে সহযোগিতার একটি নতুন অধ্যায়ের সূচনা হয়েছে যার লক্ষ্য পাঠ্যক্রমের পুনর্মূল্যায়ন এবং জনপ্রশাসনের পর্যালোচনা, নীতি নির্ধারকদের প্রশিক্ষণ ও যৌথ গবেষণার সুযোগ অন্বেষণ করা। সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের দক্ষতা ও সক্ষমতা বৃদ্ধির মাধ্যমে গতিশীল জনসেবা প্রদানের জন্য বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক গৃহীত অনেক উদ্যোগের মধ্যে এই সমঝোতা স্বাক্ষর একটি বিশেষ উদ্যোগ হয়ে থাকবে।