ককপিটে সিগারেটের আগুন থেকেই বিধ্বস্ত হয় ইজিপ্টএয়ারের বিমান

মিশর এয়ারের একটি বিমান ২০১৬ সালে ৬৬ আরোহী নিয়ে ভূমধ্যসাগরে বিধ্বস্ত হয়েছিল। বুধবার প্রকাশিত ফরাসী বিশেষজ্ঞদের এক তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়, বিমানটির ককপিট থেকে শুরু হওয়া আগুনের কারনে এটি বিধ্বস্ত হয়।

মার্চে প্যারিসের আদালতে জমা দেয়া ১৩৪ পৃষ্ঠার এই তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়, দুর্ঘটনাগ্রস্ত ওই বিমানে কোনও যান্ত্রিক ত্রুটি ছিল না। উড্ডয়নের মাঝেই ককপিটের ভেতর সিগারেট জ্বালিয়েছিলেন পাইলট কিংবা কো পাইলট। তাতেই একটি আপদকালীন অক্সিজেন মাস্ক ফুট হয়ে যায়। এবং সেই অক্সিজেনের সংস্পর্শে এসেই সিগারেটের আগুন প্রথমে ককপিট এবং পরে তা পুরো বিমানেই ছড়িয়ে পড়ে। এরপর বিমানটি বিধ্বস্ত হয়।

বিমানটির ককপিট ভয়েস রেকর্ডার চালিয়ে তদন্তকারীরা একটি রহস্যজনক সূত্র পান। তাঁরা শুনতে পান, ককপিটের ভিতরেই হাওয়া বেরোনোর মতো খুব মৃদু শব্দ হচ্ছে। পরে তদন্তকারীরা বুঝতে পারেন, সেই সময় পাইলট কিংবা কো পাইলট ধূমপান করছিলেন। তাতেই অক্সিজেন মাস্ক ফুটো হয়ে গ্যাস বেরোতে শুরু করে। তারই শব্দ মাইক্রোফোনে রেকর্ড হয়ে যায়।

উল্লেখ্য, ২০১৬ সালের ১৯ মে ইজিপ্ট এয়ারের এমএস ৮০৪ কায়রোর উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করেছিল প্যারিস থেকে। কিন্তু গন্তব্যে পৌঁছনোর আগেই ভূমধ্যসাগরে এটি ভেঙে পড়ে। বিমান আরোহীর সকলেই প্রাণ হারায়।

৬ দিন ফেরিতে পণ্যবাহী গাড়ি পারাপার বন্ধ

ঢাকাঃ ঈদে ঘরমুখো মানুষের চলাচল নির্বিঘ্ন করতে ফেরিঘাটে পণ্যবাহী যানবাহন পারাপার বন্ধ থাকবে। ঈদের তিন দিন আগে এবং ঈদের দুই দিন পর পর্যন্ত মোট ৬ দিন এই নিষেধাজ্ঞা বলবৎ থাকবে বলে জানিয়েছে বিআইডব্লিউটিসি।

বিআইডব্লিউটিসি জানায়, ঈদ উপলক্ষে ফেরিঘাটের সবধরনের যানবাহনের ভিড় বেড়েছে। যাত্রীবাহী যানবাহনে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে পারাপার করা হবে। এ কারণে দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া, শিমুলিয়া-কাঁঠালবাড়ি ও মঙ্গল মাঝিরঘাট, দৌলতদিয়া কাজিরহাট, ভোলা-লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর-শরীয়তপুরসহ সবগুলো ফেরিঘাটে পণ্যবাহী যানবাহন পারাপার ঈদের তিন দিন আগে থেকে বন্ধ করা হবে এবং ঈদের দুই দিন পর পর্যন্ত এই নিষেধাজ্ঞা বলবৎ থাকবে। এ কারণে পণ্যবাহী ট্রাক, লরি, কাভার্ডভ্যান পারাপার করা হবে না।

তবে ওষুধবাহী গাড়ি, পচনশীল মালামাল রয়েছে এমন সব পণ্যবাহী যানবাহন পারাপার অব্যাহত থাকবে।

বাংলাদেশ চীনের ঋণের ফাঁদে পড়ার আশঙ্কা নেই : পররাষ্ট্রমন্ত্রী

বাংলাদেশ চীনের ‘ঋণের ফাঁদে’ পড়ার কোনো আশঙ্কা নেই উল্লেখ করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন আবারও বলেছেন, অর্থনীতিবিদদের যারা এ ধরনের কথা বলছেন, তারা হয়তো যুক্তরাষ্ট্রকে খুশি করতে চান।

গতকাল মঙ্গলবার পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশ জাপানের কাছ থেকে সবচেয়ে বেশি ঋণ নিয়েছে, তবে চীনের ঋণ নিয়ে তাদের একমাত্র মাথাব্যথা, কিন্তু জাপানের কথা কেউ বলে না।’

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেন, ‘ঋণ নেওয়ার সময় আমরা খুব সতর্ক থাকি। ঋণের ফাঁদে পড়ার কোনো সুযোগ নেই।’

পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রতিটি দিক সঠিকভাবে যাচাই-বাছাই করে সিদ্ধান্ত নেন এবং কোনোভাবেই শ্রীলঙ্কার সঙ্গে বাংলাদেশের তুলনা করা উচিত নয়।

এ ছাড়া পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা জানি না, তবে মাঝেমধ্যে আমরা আপনাদের কাছ থেকে শুনি, আপনারা লিখেন যে, বাংলাদেশ নাকি চীনের ঋণের ফাঁদে পড়ে যাচ্ছে। পরে দেখি যে, আপনারা সম্পূর্ণ অলীক কথা লিখেন।’

চীনের ঋণ নিয়ে অর্থনীতিবিদদের নেতিবাচক মন্তব্যের কথা বলতে গিয়ে মোমেন বলেন, ‘তারা হয়তো যুক্তরাষ্ট্রকে খুশি করতে চায়।

ঈদে বাড়ি ফেরা মানুষের ভোগান্তি কমাতে শরীয়তপুরে নতুন আরো একটি ফেরিঘাট চালু

ঈদুল ফিতরকে সামনে রেখে যানজট কমাতে মঙ্গলমাঝি, সাত্তার মাদবর-শিমুলিয়া নৌ-রুটে ফেরি চলাচল নির্বিঘœ রাখতে শরীয়তপুরের জাজিরার মঙ্গল মাঝির (সাত্তার মাদবর) ঘাটে নতুন আরেকটি ফেরিঘাট চালু হয়েছে। আজ বুধবার নতুন ঘাটটিতে ফেরি নোঙর ও যানবাহন ওঠানামা পুরোদমে শুরু হয়।

পরীক্ষামূলকভাবে কর্ণফুলী নামের একটি ছোট ফেরি শিমুলিয়া ঘাট থেকে ছেড়ে আসে জাজিরার সাত্তার মাদবর নতুন ফেরিঘাটে ।

বিআইডব্লিটিএ শিমুলিয়া নদী বন্দরের নৌ-সংরক্ষণ ও পরিচালন বিভাগের উপ-পরিচালক ওবায়দুল করিম খান বলেন, মঙ্গল মাঝির নতুন ঘাটটির কাজ শুরু হয় ১৯ এপ্রিল। সাতদিনে ঘাটের কাজ শেষ হয়। নতুন ঘাটটির ফলে এখন মঙ্গলমাঝি ঘাটে একসঙ্গে তিনটি ফেরি নোঙর ও যাত্রী-যানবাহন ওঠানামা করতে পারবে। আগে ঘাটটিতে দুটি ফেরি নোঙরের সুযোগ ছিল। মাঝেমধ্যেই আবার একটি নোঙর করলে আরেকটি নোঙরের করার জন্য অপেক্ষা করতে হতো। এতে যানবাহনকে বেশি সময় ঘাটে অপেক্ষা করতে হতো। আসন্ন ঈদে যানবাহনের সংখ্যা বাড়বে। তাই নতুন ঘাট স্থাপন করা হয়েছে। নতুন ঘাটটিতে মিডিয়াম, কে-টাইপ ও ডাম্প ফেরি নোঙর করছে। ফলে ফেরি চলাচলে আরও গতি আসবে। ঘাটে যানবাহন নিয়ে যাত্রীদের বেশি সময় অপেক্ষা করতে হবে না। এছাড়া এই রুটে দিনে-রাতে মোট ৮টি ফেরি চলাচল করছে। আরও দুটি ফেরি যুক্ত করার পরিকল্পনা চলছে। তিনি বলেন, পদ্মা সেতু এড়িয়ে শিমুলিয়া-মঙ্গল মাঝি ও বাংলাবাজার-শিমুলিয়া নৌ-রুটে ২৪ ঘণ্টা ফেরি সচল থাকবে।

ঘাট এলাকার বাসিন্দা কাজি মো. বাচ্চু ও জামাল হোসেন ফকির বলেন, আগে একটি ফেরি ঘাট ছিল। এতে আমাদের সড়কটিতে যানজট লেগেই থাকতো। নতুন আরেকটি ফেরি ঘাট হওয়া যানজট কমেছে। এতে যাত্রী, গাড়ির ড্রাইভার ও আমাদের জন্য ভালো হয়েছে।

এদিকে, ফেরির পাশাপাশি মঙ্গল মাঝির ঘাটে ২০টি লঞ্চ ও ২৩টি স্পিডবোট সচল রয়েছে বলে জানা গেছে।

শেষ দিনের টিকিট পেতে কমলাপুরে ঘরমুখো মানুষের ভিড়

ঢাকাঃ পবিত্র ঈদ-উল-ফিতর উপলক্ষে ঘরমুখো যাত্রীদের জন্য এবারের শেষ দিনের মতো রাজধানীর কমলাপুর রেলস্টেশনে অগ্রিম টিকিট বিক্রি চলছে। বুধবার (২৭ এপ্রিল) সকাল ৮টা থেকে টিকিট বিক্রি শুরু হয়। আজ পঞ্চম দিনে দেওয়া হচ্ছে আগামী ১ মের টিকিট।

আজও স্টেশনে রয়েছে টিকিট প্রত্যাশীদের উপচেপড়া ভিড়। শেষ দিনে টিকিট সংগ্রহের জন্য ঘরমুখো মানুষের আপ্রাণ প্রচেষ্টা। বুধবার ট্রেনের টিকিট না পেলে খুঁজতে হবে বিকল্প উপায়।

১ মের টিকিট পেতে কমলাপুরে গতকাল বিকাল থেকেই মানুষের লাইনে সিরিয়াল দেওয়া শুরু করে। প্রতিটি কাউন্টারের সামনে মানুষের দীর্ঘ লাইন। এই লাইনে কেউ দাঁড়িয়েছেন গতকাল বিকেলে, সন্ধ্যায়, রাতে, কেউবা আজ ভোরে এসে যুক্ত হয়েছেন। টিকিট বিক্রি শুরু হওয়ার সময় এই লাইন আরো দীর্ঘ হয়ে একে বেঁকে বাহিরের রাস্তায় চলে গেছে।

বুধবার (২৭ এপ্রিল) সকালে কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন এলাকা ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে।

স্টেশন ঘুরে দেখা যায়, আগে থেকেই যাত্রীরা নিজ উদ্যোগে লাইনে দাঁড়ানোর সিরিয়াল লিখে রেখেছেন। সবাই যাতে সিরিয়াল মেনে টিকিট নিতে পারেন এজন্যই তারা এমনটি করেছেন। এ কাজে তাদের সহযোগিতা করছেন রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনী বা আরএনবি। লাইনের বাইরে কেউ যেতে চাইলেই পেছন থেকে অন্যরা চিৎকার করে বাধা দিচ্ছেন। এতে কেউ লাইনের আগে যেতে সাহস করছেন না।

ঈদের আগে হঠাৎ বাড়তে শুরু করেছে পেঁয়াজের দাম

 এক সপ্তাহের ব্যবধানে দাম বেড়েছে কেজিতে ৮ থেকে ১০ টাকা। গত সপ্তাহে যে পেঁয়াজ ২৫ টাকা কেজি বিক্রি হয়েছে, এখন খুচরা বাজারে তা বিক্রি হচ্ছে ৩০ থেকে ৩৫ টাকা। সোমবার রাজধানীর খিলগাঁও, মুগদা, বাড্ডা ও কারওয়ান বাজার এলাকায় ঘুরে ক্রেতা-বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে এমন তথ্য পাওয়া গেছে। খিলগাঁও কাচাবাজারে পেঁয়াজ কিনতে আসা ফখরুল ইসলাম জানান, গত সপ্তাহে দুই কেজি পেঁয়াজ কিনেছিলাম ৫০ টাকা দিয়ে। কেজি পড়েছে ২৫ টাকা। আজকে কেজি চাচ্ছে ৩৫ টাকা। এমনকি সমস্যা হলো যে হঠাৎ করেই ১০ টাকা বেড়ে গেল? দুই-তিন দোকান ঘুরে দুই কেজি কিনলাম ৬৫ টাকা নিল। মুগদায় রাস্তায় ভ্যানে পেঁয়াজ বিক্রি করছে কুদ্দুস। তিনি জানান, চারদিন আগেও ঘাটে (পাইকারি বাজারে) পেঁয়াজের কেজি খরচসহ ২১ থেকে ২২ টাকা পড়ত। এনে ২৫/২৬ টাকায় বিক্রি করেছি। এখন খরচসহ ২৮ টাকার ওপর কেনা পড়ে। হঠাৎ দাম বাড়ায় বিক্রি কম। তাই ৩০ টাকায় বিক্রি করছি।

কিন্তু ৩০ টাকায় বিক্রি করলে এখন লাভ থাকে না। কারণ কাঁচামাল অনেক ঘাটতি হয়ে যায়। পেঁয়াজের বাজার একটু চড়া বলছেন কারওয়ান বাজারের পেঁয়াজ বিক্রেতা মোজাম্মেল। তিনি জানান, গত তিন-চারদিন ধরে পেঁয়াজের বাজার বাড়তির দিকে। আজকে পেঁয়াজ খুচরা দেশি ৩২ টাকা আর হাইব্রিড ৩০ টাকায় বিক্রি করছি। দাম বাড়ার কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা পাইকারারদের কাছ থেকে কিনে বিক্রি করি। তারা দাম বাড়িয়েছে, বলছে সরবরাহ কম। পাইকারিবাজার ও আড়তে দাম বাড়ার বিষয়টি স্বীকার করে রাজধানীর শ্যামবাজারের পেঁয়াজ ব্যবসায়ীদের নেতা মেসার্স আলী ট্রেডার্সের পরিচালক মো. শামসুর রহমান বলেন, কাঁচামাল সরবরাহ কম থাকলে দাম বাড়ে।

বেশি থাকলে দাম কমে। গত কয়েক দিন সরবরাহ কম ছিল তাই বাজার এখন বাড়তি। আজকে পেঁয়াজ ২৫ থেকে ২৬ টাকায় পাইকারি বিক্রি হচ্ছে। সরবরাহ বাড়লে দাম কমে যাবে। জাতীয় সংসদে কৃষিমন্ত্রী ডক্টর আব্দুর রাজ্জাকের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশে বছরে ৩৩ লাখ মেট্রিক টন পেঁয়াজের চাহিদা রয়েছে। এর মধ্যে ২৩ দশমিক ৩০ লাখ মেট্রিক টন পেঁয়াজ দেশে উৎপাদন হয়। ঘাটতিতে থাকা বাকি পেঁয়াজ আমদানি করতে হয়।

এদিকে বিভিন্ন জেলা থেকে পাওয়া তথ্য বলছে, এবার আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় পেঁয়াজের ফলন ভালো হয়েছে। তাই হঠাৎ দাম বাড়ার কোনো কারণ নেই বলছেন খাত সংশ্লিষ্টরা। জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের পরিচালক মনজুর মোহাম্মদ শাহরিয়ার বলেন, আমরা যতটুকু জেনেছি এবার পেঁয়াজের ফলন ভালো হয়েছে। তারপরও হঠাৎ দাম কেন বাড়ছে বিষয়টি দেখতে আমাদের তদারকি টিম মাঠে যাবে। কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের এসব পণ্যের দাম নির্ধারণ করে দেয়। যদি কেউ সরবরাহর কথা বলে নিয়মবহির্ভূত দাম বাড়িয়ে থাকে তাহলে তাদের বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

আজ প্রধানমন্ত্রীর ঈদ উপহারের ঘর পাচ্ছেন ৩৩ হাজার পরিবার

ঈদের আগেই ৩৩ হাজার পরিবারকে ঈদের আনন্দ উপহার দিচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আজ মঙ্গলবার (২৬ এপ্রিল) প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে দেশের চারটি উপজেলায় ভার্চুয়ালি যুক্ত হবেন তিনি। এ সময় আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের আওতায় তৃতীয় ধাপে আরও ৩২ হাজার ৯০৪টি বাড়ি‌ হস্তান্তর করা হবে গৃহহীন ও ভূমিহীন পরিবারের মধ্যে। এতে এ পর্যায়ে প্রায় দেড় লাখেরও বেশি মানুষ ঈদের আগেই প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া ঈদ আনন্দ পাবেন উপহার হিসেবে।

রোববার (২৪ এপ্রিল) প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সিনিয়র সচিব তোফাজ্জল হোসেন মিয়া এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ফরিদপুরের নগরকান্দা উপজেলার কাইচাইল ইউনিয়নের পোড়াদিয়া বালিয়া আশ্রয়ণ প্রকল্প, বরগুনা সদর উপজেলার গৌরিচন্না ইউনিয়নের খাজুরতলা আশ্রয়ণ প্রকল্প, সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার খোকশাবাড়ী ইউনিয়নের খোকশাবাড়ী আশ্রয়ণ প্রকল্প এবং চট্টগ্রামের আনোয়ারার বারখাইন ইউনিয়নের হাজিগাও আশ্রয়ণ প্রকল্পে সরাসরি গণভবন থেকে যুক্ত হবেন।

তোফাজ্জল হোসেন মিয়া জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মুজিববর্ষ উপলক্ষে ঘোষণা দিয়েছেন যে বাংলাদেশের কোনো মানুষ যাতে ভূমিহীন, গৃহহীন না থাকে। সেজন্য তিনি দুই শতক জমির ওপর দুই রুম বিশিষ্ট একটি ঘর উপহার দিচ্ছেন। এসব ঘরের ডিজাইন প্রধানমন্ত্রী নিজেই প্রণয়ন করেছেন।

তিনি আরও বলেন, প্রথম পর্যায়ে ২০২১ সালের ২৩ জানুয়ারি ৬০ হাজার ১৯১টি ঘর, ২০ জুন ৫৩ হাজার ৩০০টি ঘর হস্তান্তর করা হয়েছে। প্রথম ও দ্বিতীয় পর্যায়ে নির্মিত মোট ঘরের সংখ্যা ১ লাখ ১৭ হাজার ৩২৯টি। তৃতীয় পর্যায়ে নির্মাণাধীন একক ঘরের সংখ্যা ৬৫ হাজার ৬৭৪টি। এর মধ্যে ৩২ হাজার ৯০৪টি হস্তান্তর হবে।

সিনিয়র সচিব আরও জানান, যে ঘর দেওয়া হচ্ছে এগুলো স্বামী-স্ত্রীর যৌথ নামে দেওয়া হচ্ছে। যার স্বামী নেই সেক্ষেত্রে স্ত্রীর নামে দেওয়া হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী প্রায় ৩৩ হাজার ঘর হস্তান্তর করবেন তাতে প্রায় দেড় লাখ মানুষ যাদের একটি ঠিকানা ছিল না, দাঁড়ানোর জায়গা ছিল না, তারা একদিনে আশ্রয় পাবে।

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মহাপরিচালক (প্রশাসন) মো. আহসান কিবরিয়া সিদ্দিকি, আশ্রয়ণ প্রকল্প-২ এর প্রকল্প পরিচালক আবু ছালেহ মোহাম্মদ ফেরদৌস খান (যুগ্ম সচিব) প্রমুখ।

জানা গেছে, মুজিববর্ষ উপলক্ষে একটি পরিবারও গৃহহীন ও ভূমিহীন থাকবে না— প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এমন ঘোষণার পর থেকে যাদের নিজস্ব জমি নেই, ঘর নেই তাদের জমি ও ঘর দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হয়। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় আশ্রয়ণ প্রকল্প-২ অধীনে এই বাড়ি নির্মাণ করা হচ্ছে। এসব ঘর নির্মাণ করা হচ্ছে সরকারি খাস জায়গা কিংবা দখল হওয়া জায়গা দখলমুক্ত করে। ইতোমধ্যে দেশের আট বিভাগে বিপুল পরিমাণ বেদখল হওয়া সরকারি খাস জমি উদ্ধার করা হয়েছে। উদ্ধার করা এই জমির মূল্য প্রায় ২ হাজার ৯৬৭ কোটি টাকা। কয়েকটি আশ্রয়ণ প্রকল্প ঘুরে দেখা গেছে, ঘরগুলো বেশ মজবুতভাবে নির্মাণ করা হচ্ছে। ঘরসহ বাড়ি যাদের দেওয়া হবে, আগেই তাদের বলে দেওয়া হয়েছে। এতে করে ঘরগুলো সঠিক তদারকির সুযোগ পাচ্ছেন ভূমিহীনরা।

জাতি অদ্ভুত এক দুঃসময় পার করছে : জেবেল গাণি

 

জাতি অদ্ভুত এক দুঃসময় পার করছে বলে মন্তব্য করে বাংলাদেশ ন্যাপ চেয়ারম্যান জেবেল রহমান গানি বলেন, নতুন প্রজন্মের রাজনীতিবিমুখতা রাষ্ট্র ও সমাজের জন্য শুভ নয়। রাজনীতির প্রতি নতুন প্রজন্মের এই অনীহার অনেকটা দায় রাজনীতিবিদদেরও আছে।

সোমবার (২৫ এপ্রিল) গুলাশানের চেয়ারম্যানের কার্যালয়ে বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি-বাংলাদেশ ন্যাপ নীলফামারী জেলা নেতৃবৃন্দের সাথে মতবিনিময়কালে এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, বর্তমান প্রজন্মের দুর্ভাগ্য রাজনীতির জগতে তাদের এখন কোনো রোল মডেল নেই। আদর্শিক রাজনীতি এখন নির্বাসিত। দেশবাসীর কল্যাণ চিন্তার কোনো লেশ নেই আমাদের রাজনীতিকদের ক্ষমতার মসনদে পৌঁছার দৌড়ে। তার মধ্যে আমাদের নেতানেত্রীরা যেভাবে নিজেদের উন্মোচিত করছেন নতুন প্রজন্মের সামনে তাতে এই ভবিষ্যতের কান্ডরিরা কী শিক্ষা পাবে তা ভেবে শঙ্কিত জাতি।

তিনি আরো বলেন, রাজনীতি অনেকদিন ধরেই রাজনীতিবিদদের নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেছে। রাজনীতি এখন ব্যবসায়ী, মাস্তান, চাঁদাবাজ আর দুর্বৃত্তদের দখলে। রাজনীতিকে পরিচ্ছন্ন করার বদলে আমরা পরিত্যক্ত করে ফেলেছি। অথচ আমাদের স্বাধীনতা, অগ্রগতি, উন্নতি সবটাই এসেছে রাজনীতির হাত ধরে, রাজনীতিবিদদের নেতৃত্বে।

তিনি বলেন, শুরুতে যে রাজনীতি বিমুখতা, সে ভয়ংকর প্রবণতা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। নীতিনির্ধারণের দায়িত্ব কিন্তু রাজনীতিবিদদেরই। তাই আমাদের সবাইকে মিলে রাজনীতিকে দুর্বৃত্তমুক্ত করতে হবে, পরিচ্ছন্ন করতে হবে। রাজনীতিকে দূরে ঠেলে দেওয়া যাবে না, দুর্বৃত্তদের কাছে লিজ দেওয়া যাবে না। কারণ রাজনীতিই আমাদের ভাগ্য নিয়ন্ত্রণ করে, রাজনীতিই আমাদের শেষ ভরসা।

এসমসয় আরো উপস্থিত ছিলেন এনডিপি চেয়ারম্যান খোন্দকার গোলাম মোর্ত্তজা, বাংলাদেশ ন্যাপ মহাসচিব এম. গোলাম মোস্তফা ভুইয়া, প্রেসিডিয়াম সদস্য ব্যারিষ্টার মশিউর রহমান গানি, নীলফামারী জেলা নেতা আবদুর রহমান, আবদুল মান্নান মাষ্টার প্রমুখ।

শিল্প কলকারখানাসহ প্রতিটি ভবনে অগ্নি নির্বাপন ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে : প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, শিল্প কলকারখানাসহ প্রতিটি ভবন, যেখানে অফিস-আদালত, স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়,  বিভিন্ন ইনস্টিটিউশন, শপিং মল, বিনোদন কেন্দ্র, সিনেমা হল, প্রতিটি ক্ষেত্রেই অগ্নি নির্বাপন ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে।
তিনি বলেন, বর্তমান সরকার জনগণের ভাগ্যোন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছে। দেশ এগিয়ে যাচ্ছে। এ জন্য প্রতিটি ক্ষেত্রে অগ্নিনির্বাপন ব্যবস্থা থাকাটা অত্যন্ত জরুরী।
তিনি বলেন, অঅমাদেরকে জলাধারগুলো সংরক্ষণ করতে হবে। পাশাপাশি বৃষ্টির পানি সংরক্ষণেরও ব্যবস্থা নিতে হবে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ সকালে দেশের বিভিন্ন স্থানে ৪০টি নবনির্মিত ফায়ার স্টেশনের উদ্বোধনকালে দেয়া ভাষণে এসব কথা বলেন।
তিনি গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে রাজধানীর ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তর ভবনে অনুষ্ঠিত মূল অনুষ্ঠানে ভাচ্যুয়ালি অংশগ্রহণ করেন। উদ্বোধন হওয়া ৫টি বিভাগের ২৫টি জেলার ৩৯টি উপজেলার ৪০টি ফায়ার সার্ভিস স্টেশনও ভার্চ্যুয়ালি অনুষ্ঠানে সংযুক্ত ছিল।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিভিন্ন এলাকায় যে সব প্রতিষ্ঠান গড়ে ওঠে সেখানেও অগ্নিনির্বাপনের ব্যবস্থাটা থাকতে হবে।
তিনি বলেন, যারা আমাদের উন্নয়ন কতৃর্পক্ষ এবং যারা স্থাপত্যবিদ বা প্রকৌশলী যারা ডিজাইন বা সবকিছু করেন তাদেরকে লক্ষ্য রাখতে হবে নতুন কোন প্রকল্প গ্রহণ করলে সেখানে অগ্নিনির্বাপনের আধুনিক ব্যবস্থা যেমন নিশ্চিত করতে হবে পাশাপাশি কখনও আগুন লেগে গেলে সেটা নির্বাপনে পর্যাপ্ত পানির ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে, জলাধারগুলো সংরক্ষন করতে হবে।
জলাধার ভরাট করে বক্স কালভার্ট করাটা ঠিক নয় উল্লেখ করে তিনি ২০০৯ সালে বসুন্ধরা শপিং মলের টাওয়ার অংশে লাগা অগ্নিকান্ডের কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে বলেন,  এক সময় এই পাস্থপথের পুরো এলাকাটাই বিল ছিল, যেখানে বস্ন্ধুরা শপিং মল তৈরি হয়েছে। আজকে সেখানকার জলাধার ভরাট করে বক্স কালভার্ট করে পুরো এলাকার জলাধার বিলীন করে ফেলায় সেদিনের অগ্নিকান্ডে আগুন নেভানোর জন্য হোটেল সোনারগাঁও’র সুইমিং পুল থেকে  দমকল কর্মীদের পানি সরবরাহ নিশ্চিত করতে হয়েছে।
তিনি দুর্গত এলাকায় যেন দমকল বাহিনীর গাড়ি পৌঁছতে পারে, সেজন্য রাস্তার প্রশস্ততার পাশাপাশি পানির সহজ প্রাপ্যতা নিশ্চিত করার নির্দেশ দেন।
আমাদের দমকল বাহিনীর এখন ২০ তলা পর্যন্ত অগ্নিনির্বাপন সক্ষমতা রয়েছে এবং ক্রমেই এই সক্ষমতা বৃদ্ধি পাচ্ছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বহুতল ভবন নির্মাণের সময় দুর্ঘটনা ঘটলে সেখান থেকে উদ্ধার পাবার সম্ভাবনা সম্পর্কে সকলকে নিশ্চিত হয়েই নির্মাণ পরিকল্পনা করার পরামর্শ দেন। এজন্য নিয়মিত অগ্নি নির্বাপন মহড়ার আয়োজন এবং বহুতল ভবনে খোলা বারান্দা রাখার ওপরও গুরুত্বারোপ করেন তিনি।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান এবং স্বরাষ্ট্র মন্ত্রনালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগের সচিব মো. মোকাব্বির হোসেন অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন। ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো.সাজ্জাদ হোসাইন সূচনা বক্তব্য প্রদান করেন।
অনুষ্ঠানে দমকল বাহিনীর আধুনিকায়ন এবং নবনির্মিত ৪০টি ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের ওপর একটি ভিডিও চিত্রও প্রদর্শিত হয়।

ডিএমপির মাদক বিরোধী অভিযানে গ্রেফতার ৪৭

রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় মাদক বিরোধী অভিযান পরিচালনা করে মাদক বিক্রি ও সেবনের অভিযোগে ৪৭ জনকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) এর বিভিন্ন অপরাধ ও গোয়েন্দা বিভাগ।

গ্রেফতারের সময় তাদের হেফাজত থেকে ১০১৮৫ পিস ইয়াবা, ১৩ কেজি ৭১০ গ্রাম গাঁজা ও ১৭ গ্রাম হেরোইন উদ্ধারমূলে জব্দ করা হয়।

ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ এর নিয়মিত মাদক বিরোধী অভিযানের অংশ হিসেবে রবিবার (২৪ এপ্রিল ২০২২) সকাল ছয়টা থেকে আজ সকাল ছয়টা পর্যন্ত রাজধানীর বিভিন্ন থানা এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদেরকে গ্রেফতারসহ মাদকদ্রব্য উদ্ধার করা হয়।

গ্রেফতারকৃতদের বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট থানায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে ৩২টি মামলা রুজু হয়েছে।