রুটিন চূড়ান্ত হলে ১৩ দিনে শেষ হবে এসএসসি

শিক্ষা ডেস্ক : চলতি বছরের মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট (এসএসসি) ও সমমানের পরীক্ষার সময়সূচী প্রস্তুত করেছেন আন্তঃ-শিক্ষা বোর্ড। এই সময়সূচী শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে।

আন্তঃ-শিক্ষা বোর্ড জানিয়েছে, সময়সূচীতে ১৩ দিনের মধ্যে পরীক্ষা শেষ করার প্রস্তাব করা হয়েছে। ১৫ সেপ্টেম্বর শুরু হয়ে ১ অক্টোবর লিখিত পরীক্ষা শেষ করার প্রস্তাব করা হয়। পরীক্ষাগুলো সকাল ১০টা থেকে ১টা পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হবে।

বোর্ডের কর্মকর্তারা বলছেন, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুসারে গ্যাপ কমিয়ে স্বল্প সময়ে পরীক্ষা শেষ করতে সূচি তৈরি করা হয়েছে। এখন মন্ত্রণালয় অনুমোদন দিলেই চূড়ান্ত হবে।

সাধারণ ফেব্রুয়ারির শুরুর দিকে এসএসসি এবং এপ্রিলের শুরুতে এইচএসসি পরীক্ষা নেওয়া হতো। তবে এ বছর করোনার কারণে প্রথম দফা এবং বন্যার কারণে দ্বিতীয় দফা এই দুই পাবলিক পরীক্ষা পিছিয়ে যায়। গত ১৯ জুন থেকে এসএসসি শুরু হওয়ার কথা ছিল ।

শুধুমাত্র পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়া শিক্ষার লক্ষ্য নয় : শিক্ষামন্ত্রী

শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেছেন, শুধুমাত্র বই মুখস্ত করে পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়া শিক্ষার লক্ষ্য নয়। গ্রন্থগত বিদ্যা শিক্ষার্থীকে জ্ঞান পিপাসু, কৌতুহলদ্দীপক ও জানতে আগ্রহী করে তোলে না বরং এটি শিক্ষার্থীর মনন ও বোধে এক ধরণের দৈন্যের উদ্ভব ঘটায় যা তাকে সামনে এগুবার পথ রুদ্ধ করে দেয়। এ জন্য শিক্ষার্থীর মনে অনুসন্ধিৎসা জাগ্রত করতে হবে, পাঠ্যপুস্তকের বাইরের জগতের সৌন্দর্যকে তার সামনে মেলে ধরতে হবে, শুনতে ও শোনাতে, জানতে ও জানাতে আগ্রহী করে তুলতে হবে। এ জন্য শিক্ষার্থীকে জ্ঞানার্জনে উৎসাহী করে তুলতে হবে; যা একটি জ্ঞানভিত্তিক সমাজ সৃষ্টির দুয়ার খুলে দেবে।

মঙ্গলবার রাজধানীর হোটেল শেরাটনে এথিকস এডভান্স টেকনোলজি লি. (ইএটিএল) আয়োজিত মাধ্যমিক পর্যায়ের স্কুল শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে এডুটিউব কুইজ কনটেস্ট ২০২২-এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এ কথা বলেন।
ইএটিএল ব্যবস্থাপনা পরিচালক এমএ মুবিন খানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন রেগুলেটরি কমিশনের (বিটিআরসি) চেয়ারম্যান শ্যাম সুন্দর সিকদার এবং জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মোঃ মশিউর রহমান, বিশ্বব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর ড. মারসি এম. টেম্বন বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তৃতা করেন।

এডুটিউব কুইজ কনটেস্টে দেশের যে কোন প্রান্ত থেকে শিক্ষার্থীরা মোবাইল অথবা ইন্টারনেটের মাধ্যমে প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে জিততে পারবে অনেক আকর্ষণীয় পুরষ্কার। দেশের বিভিন্ন থানা, উপজেলা, জেলা ও বিভাগীয় পর্যায়ে প্রতিযোগিতা শেষ করে উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের জাতীয় পর্যায়ে রাজধানীতে চূড়ান্ত পর্যায়ের প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণের অনন্য সুযোগ থাকবে। এই প্রতিযোগিতায় একদিকে যেমন জ্ঞান আহরণের পথ খোলা থাকবে তেমনি থাকবে বিভিন্ন পর্যায়ে অনেক পুরষ্কার জয়ের সুযোগ।
প্রতিযোগিতার রেজিস্ট্রেশন চলবে ১০ মে থেকে ৯ জুন ২০২২ সাল পর্যন্ত। রেজিস্ট্রেশনের লিংক হচ্ছে https://contest.edutubebd.com/|

প্রতিযোগিতার প্রতিটি পর্যায়ে থাকবে আকর্ষণীয় পুরষ্কার এবং চূড়ান্ত পর্বে বিজয়ী দল পাবে ৫ লক্ষ টাকার প্রথম পুরষ্কার এবং রানার আপ দল পাবে ৩ লক্ষ টাকার ২য় পুরষ্কার। সবমিলিয়ে রয়েছে ২৬ লাখ টাকার পুরস্কার।

শনিবার না হলে রোববার ডেন্টালের ভর্তি পরীক্ষার ফল

সরকারি ও বেসরকারি ডেন্টাল কলেজে ব্যাচেলর অব ডেন্টাল সার্জন (বিডিএস) প্রথম বর্ষে ভর্তি পরীক্ষার ফলাফল শনিবার রাতে প্রকাশিত হতে পারে।

শনিবার রাতে ফল প্রকাশিত না হলে রোববার দিনের যেকোনো সময় ফলাফল প্রকাশিত হবে। স্বাস্থ্য অধিদফতরের চিকিৎসা শিক্ষা ও স্বাস্থ্য জনশক্তি উন্নয়ন শাখার দায়িত্বশীল কর্মকর্তা সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

সূত্র জানায়, শুক্রবার অনুষ্ঠিত ভর্তি পরীক্ষার উত্তরপত্র শনিবার সকাল ৯টা থেকে স্ক্যানিং শুরু হয়েছে। এমবিবিএসের তুলনায় বিডিএসের পরীক্ষার্থী সংখ্যা অনেক কম হওযায় স্ক্যানিং দ্রুত শেষ হবে। তাই আজও ফল প্রকাশের সম্ভাবনা রয়েছে।

জানা গেছে ঢাকা ডেন্টাল কলেজ, চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ, রাজশাহী মেডিকেল কলেজ, সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ ও স্যার সলিমুল্লাহ মিটফোর্ড মেডিকেল কলেজসহ মোট ৫টি কেন্দ্রের নয়টি ভেন্যুর ২৮৬টি কক্ষে শুক্রবার ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়।

এতে মোট আবেদনকারীর সংখ্যা ছিল ২২ হাজার ৫০৯ জন। তবে সহস্রাধিক পরীক্ষার্থী অনুপস্থিত ছিলেন।

সরকারি ৯টি ডেন্টাল কলেজ ও ইউনিটে ৫২৫ ও ২৫টি বেসরকারি ডেন্টাল কলেজ ও ইউনিটে ১ হাজার ৩৮৫টিসহ মোট ১হাজার ৯১৭টি আসন রয়েছে।

স্বাস্থ্য অধিদফতরের পরিচালক চিকিৎসা শিক্ষা ও স্বাস্থ্য জনশক্তি উন্নয়ন অধ্যাপক ডা. মো.আবদুর রশীদ শনিবার সকালে জাগো নিউজকে বলেন, পরীক্ষার উত্তরপত্র স্ক্যানিং আজ সকাল থেকে শুরু হয়েছে। দ্রুততম সময়ে পরীক্ষার ফল প্রকাশিত হবে। আজ ফলাফল প্রকাশ হবে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, এমবিবিএসের তুলনায় পরীক্ষার্থী সংখ্যা কম হওয়ায় আজও ফল প্রকাশের সম্ভাবনা রয়েছে। তবে আজ না হলেও আগামীকাল ফল প্রকাশ করা নিশ্চয়ই হবে।

জেএসসি গণিতের প্রশ্ন ফাঁস, ভুলের অভিযোগ

জেএসসি পরীক্ষায় গণিতের প্রশ্নপত্র ফাঁসের অভিযোগ উঠেছে। রোববার রাজধানীর মিরপুরসহ বিভিন্ন এলাকায় পরীক্ষা শুরুর আগে কেন্দ্রের সামনে শিক্ষার্থীদের মোবাইলে প্রশ্নপত্র পাওয়া গেছে। ফেসবুকের মাধ্যমে এ প্রশ্ন পরীক্ষার্থীরা পায় বলে অভিযোগ। তাই প্রশ্ন না পাওয়া শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মধ্যে হতাশা ও ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। এছাড়া গণিতের প্রশ্নপত্রেও ভুল ধরা পড়েছে।

জানা গেছে, বীজগণিত, ত্রিকোণমিতি ইত্যাদি চারটি অংশ আলাদাভাবে ‘ক’ ‘খ’ ‘গ’ এবং ‘ঘ’ অংশ থাকে প্রশ্নে। কিন্তু ‘ঘ’ অংশ ছিল না। এর পরিবর্তে দুটি অংশই ‘গ’ হিসেবে ছিল। এ কারণে অনেকেই প্রশ্নের উত্তর লিখতে বিভ্রান্ত হয়। এর ফলে কেউ প্রথম ‘গ’ থেকেই দুটি প্রশ্নের উত্তর লেখে। আবার কেউ উভয় ‘গ’ থেকে আলাদা দুটি উত্তর লিখেছে।

এসব বিষয়ে জানতে চাইলে ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক তপন কুমার সরকার বলেন, ‘প্রশ্ন ফাঁসের অভিযোগ আমাদের কাছেও এসেছে। কিন্তু পরীক্ষা শুরুর আগে প্রশ্নপত্রের ওপর আমাদের কোনো আর নিয়ন্ত্রণ থাকে না। পরীক্ষা নিতে তা আমরা শিক্ষকদের কাছে দেই। এরপর প্রশ্নফাঁস হলে আমাদের হতাশ ও ক্ষুব্ধই হওয়া ছাড়া কিছু করার থাকে না।’

তিনি বলেন, ‘তবে আমরা এ ধরনের অপকর্মে জড়িত সন্দেহে কিছু লিঙ্ক (ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠান) পেয়েছি। গোয়েন্দা সংস্থা এবং বিটিআরসিকে (বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন রেগুলেটরি কমিশন) তথ্য দিয়েছি। আশা করি, আগের মতোই দুষ্কৃতকারীরা ধরা পড়বে।’

গণিত প্রশ্নপত্র ভুলের ব্যাপারে ঢাকা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক বলেন, মুদ্রণজনিত কারণে ‘ঘ’ এর স্থলে ‘গ’ এসেছে। তবে এ জন্য শিক্ষার্থীরা কোনো ক্ষতির শিকার হবে না। যে যেখান থেকেই দুটি প্রশ্নের উত্তর দিক নম্বর পাবে। সেভাবে নির্দেশনা দেয়া হবে।

এবারের জেএসসি পরীক্ষায় দু-একটি বিষয় শেষ হওয়ার পরই প্রশ্নফাঁসের অভিযোগ উঠতে থাকে। প্রশ্নফাঁসের ক্ষেত্রে এবার সবচেয়ে বেশি অভিযোগ আসছে মিরপুর এলাকা থেকে। রাজধানীর যাত্রাবাড়ী এবং ডেমরা এলাকার দু-একটি ব্যবসায়িক স্কুলের ব্যাপারেও অভিযোগ কমবেশি আসছে।

রোববার জেএসসিতে ছিল গণিত বিষয়ের পরীক্ষা। জেডিসিতে ছিল কর্ম ও জীবনমুখী শিক্ষা এবং শারীরিক শিক্ষা ও স্বাস্থ্যবিজ্ঞান বিষয়ের পরীক্ষা।

রাজধানীর মিরপুরের আদর্শ স্কুলে আসন পড়েছে মণিপুর স্কুলের শিক্ষার্থীদের। ওই কেন্দ্রের একজন পরীক্ষার্থীর বাবা গোলাম মোস্তফা টেলিফোনে বলেন, ‘পরীক্ষা শেষে আমার মেয়ে কান্না শুরু করেছে। তার কান্না থামানো যাচ্ছে না। সকালে স্কুল গেটে গিয়ে সে দেখে, তার বান্ধবীরা মোবাইল ফোনে পরীক্ষার প্রশ্নপত্র দেখছে। কাছে গিয়ে একনজরে প্রশ্নপত্র দেখে নেয় সে। পরীক্ষার হলে গিয়ে দেখে, প্রশ্নগুলো ক্রমিক নম্বরও পর্যন্ত মিলে গেছে। পরীক্ষা শেষে বেরিয়ে এটা আমাকে জানায়। এরপর থেকে তার মন খারাপ।’

গোলাম মোস্তফা বলেন, ‘আমার মেয়ের প্রশ্ন- তাহলে লেখাপড়া করে তার কী লাভ হলো? আমি এ প্রশ্নের জবাব দিতে পারিনি। আপনার মাধ্যমে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কাছে প্রশ্নটি রাখলাম।’

উল্লেখ্য, এ বছর এখন পর্যন্ত অন্তত পাঁচটি বিষয়ের প্রশ্ন ফাঁসের অভিযোগ উঠেছে। এ নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে একাধিক প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। আজকের পরীক্ষায় সারাদেশে একজন শিক্ষকসহ ৬৩ জন বহিষ্কার হয়েছে। আজ সারাদেশে ৪২ হাজার সাতজন পরীক্ষার্থী অনুপস্থিত ছিল।

সরকারের নিয়ন্ত্রণে এলো ইংলিশ মিডিয়াম স্কুল

এখন থেকে বিদেশি কারিকুলামে পরিচালিত ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলগুলো নিয়মিত মনিটরিং করবে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতর (মাউশি)। মঙ্গলবার রাজধানীর ৩০টি স্কুলের প্রধানদের নিয়ে বৈঠকে প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক উপদেষ্টা এইচ টি ইমাম এ নির্দেশ দিয়েছেন। স্কুলগুলোকে বাংলাদেশের মূল ধারার শিক্ষা ব্যবস্থার সঙ্গে যুক্ত করতে এ উদ্যোগ নেয়া হয়েছে বলে বৈঠক সূত্রে জানা গেছে।

বৈঠকের বিষয় জানতে চাইলে মাউশির পরিচালক (স্কুল) অধ্যাপক ড. আবদুল মান্নান সরকার বলেন, ‘মূলত সরকারের সঙ্গে ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলগুলোর প্রশাসনিক সমন্বয় স্থাপনের অংশ হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ স্কুল প্রধানদের জন্য বৈঠক করা হয়েছে। এক্ষেত্রে স্কুল প্রতিনিধি যারা এসেছেন, তারা সবাই চাচ্ছেন সরকারের সঙ্গে তাদের সমন্বয় তৈরি করা। শিগগিরই তাদের সঙ্গে আরও একটি ওয়ার্কশপ করা হবে। সেখানেও বিস্তারিত বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘ইংলিশ মিডিয়াম শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে ডিগ্রি অর্জন করা শিক্ষার্থীরা যাতে বাংলাদেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখতে পারে, সে বিষয়টি নিশ্চিত করতে প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা এইচ টি ইমাম নির্দেশনা দিয়েছেন।’

মাউশির মহাপরিচালক অধ্যাপক ড. এস এম ওয়াহিদুজ্জামান বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন। বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, সভায় স্কুল পরিচালনার গেজেট, বিধি-বিধান, সিলেবাস, কারিকুলাম, পরিচালনা পর্ষদ ও নীতি-নৈতিকতাসহ বিভিন্ন বিষয়ে নিয়ে আলোচনা হয়।

বৈঠকে ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলের প্রধানরা জানান, ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলের নির্দিষ্ট কারিকুলামের বাইরে বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের ইতিহাস ও বাংলা ভাষার পাঠ্যবই পড়ানো হয়। ছাত্র-ছাত্রীদের নৈতিকতা ও মূল্যবোধ শেখানো হয়, জঙ্গিবাদবিরোধী কোনো কর্মকাণ্ড পরিচালনা হয় না।

দেশের সবগুলো জাতীয় দিবস উদযাপন করা হয়। শিক্ষার্থীদের সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদসহ নানা অপকর্মের কুফল সম্পর্কে ধারণা দেয়া হয়। দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) নির্দেশের অংশ হিসেবে সব ইংরেজি মাধ্যম স্কুলে সততা স্টোর চালু করা হয়েছে। যাতে নতুন প্রজন্ম সুনাগরিক হিসেবে গড়ে উঠে এবং অল্প বয়স থেকেই দুর্নীতি বিরোধী নৈতিকতায় উদ্বুদ্ধ হয়। কোনো বিক্রেতা ছাড়াই সসতা স্টোর থেকে শিক্ষার্থীরা তাদের প্রয়োজনীয় বই, খাতা, পেন্সিল কিনছেন। ছাত্রছাত্রীরা নিজেদের পছন্দমতো প্রয়োজনীয় পণ্য কিনে ক্যাশ বাক্সে দাম রেখে যাচ্ছেন। শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা একে ভালো উদ্যোগ বলে স্বাগত জানিয়েছেন বলে দাবি করেছেন স্কুল প্রধানরা।

এর বাইরে পরীক্ষার কক্ষে যদি নকল কিংবা অসদুপায় অবলম্বন করা হয়, তাতে শিক্ষার্থীর নিজের ক্যারিয়ারের জন্য ক্ষতি- এমন বিষয় নিয়ে শিক্ষার্থীদের প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে। এরফলে পরীক্ষার হলে পরিদর্শক ছাড়াই ছাত্র-ছাত্রীরা পরীক্ষা দিচ্ছে।

সভার বক্তব্য শুনে প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক উপদেষ্টা এইচ টি ইমাম বলেন, শিক্ষার্থীদের ব্যক্তিগত গাড়ি ব্যবহারের কারণে রাজধানীতে যানজট হচ্ছে। যানজট নিরাসনে স্কুল কর্তৃপক্ষকে নিজস্ব স্কুলবাস সার্ভিস চালুর নির্দেশ দেন তিনি। সেইসঙ্গে ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলের ম্যাপিং জোন, স্কুলগুলোর প্রধানদের নিয়ে সভা ও মাউশির কর্মকর্তাদের নিয়মিত মনিটরিং করতেও নির্দেশনা দিয়েছেন।

সভায় স্কলাস্টিকা, ব্রিটিশ স্ট্যান্ডার্ড স্কুল, অক্সফোর্ড ইন্টারন্যাশনাল স্কুল, বাংলাদেশ ইন্টারন্যাশনাল স্কুল ও কলেজ, জন ইন্টারন্যাশনাল ইংলিশ মিডিয়াম স্কুল, অ্যাপল ট্রি ইন্টারন্যাশনাল স্কুল, কানাডিয়ান টিলিনিয়াম স্কুল, সেন্টমেরি ইন্টারন্যাশনাল স্কুল, রিভারভিউ ইন্টারন্যাশনাল স্কুল অ্যান্ড কলেজ, অস্ট্রেলিয়ান স্কুল, গ্রিন ডেল ইন্টারন্যাশনাল স্কুল, লন্ডন ইন্টান্যাশনাল স্কুল, সাউথ পয়েন্ট স্কুল অ্যান্ড কলেজ, সেন্ট পিটার্স স্কুল অব লন্ডন, ব্রিটিশ আমেরিকান কলেজ, ব্রিটিশ কলোম্বিয়া স্কুল, ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল স্কুল, গ্রিনফিল্ড স্কুল, লরেটো স্কুল এবং লাইসিয়াম ইন্টারন্যাশনাল স্কুলের প্রধান বা পরিচালকরা অংশ নেন।

প্রসঙ্গত, ইংলিশ মিডিয়াস স্কুলগুলো কি শেখাচ্ছে, কারা শিক্ষক, কত টিউশন ফি তা সঠিকভাবে জানে না কোনো মন্ত্রণালয় বা সরকারের কোনো সংস্থা। অথচ এখানে যারা পড়াশোনা করছে তাদের শতকরা ৯৯ শতাংশ বাংলাদেশি। বিগত দিনে কয়েকটি স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের জঙ্গিবাদে জড়িয়ে পড়ার অভিযোগ রয়েছে। এ বাস্তবতায় সরকার নতুন এ উদ্যোগ নিয়েছে।

মেডিকেলের উত্তরপত্র পুনঃনিরীক্ষণ শুধুই সান্ত্বনার!

আশায় বুক বেঁধে নির্দিষ্ট পরিমাণ ফি দিয়ে উত্তরপত্র পুনঃনিরীক্ষণের আবেদন করেছিলেন মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারী ৯৬২ শিক্ষার্থী। উত্তরপত্র দেখার সময় হয়তো অনিচ্ছাকৃত কোনো ভুলে তাদের মেধাতালিকায় ঠাঁই হয়নি ভেবেছিলেন। তবে তাদের জন্য দ্বিতীয়বারও নতুন কোনো সুখবর আসেনি। ৯৬২ ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীর উত্তরপত্র পুনঃনিরীক্ষণে আগের নম্বরই রয়ে গেছে।

স্বাস্থ্য অধিদফতরের পরিচালক (চিকিৎসা শিক্ষা ও স্বাস্থ্য জনশক্তি উন্নয়ন) অধ্যাপক ডা. মো. আবদুর রশীদ জাগো নিউজকে বলেন, উত্তরপত্রে কোনো ধরনের ভুল পাওয়া যায়নি। আবেদনকারী প্রত্যেকের উত্তরপত্র মেশিনে পুনঃনিরীক্ষা ছাড়াও হাতেকলমে দেখা হয়েছে। চলতি মাসের প্রথম সপ্তাহ জুড়ে ৯৬২ আবেদনকারীর খাতা দেখার কাজ শেষ হয়েছে। ইতোমধ্যেই ফলাফলে কোনো পরিবর্তন নেই মর্মে মোবাইলে ক্ষুদেবার্তায় সকলকে জানিয়ে দেয়া হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, শিক্ষার্থীদের সান্ত্বনার জন্যই খাতা পুনঃনিরীক্ষণের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। বিশেষজ্ঞ কমিটির সদস্যদের উপস্থিতিতে যেভাবে পৃথক দুই মেশিনে ভর্তি পরীক্ষার খাতা দেখা হয় সেখানে ভুল হওয়ার সুযোগ থাকে না বললেই চলে।

জানা গেছে, স্বাস্থ্য অধিদফতরের নির্দেশনা অনুসারে গত ১৭ অক্টোবর ২৬ অক্টোবর (মোট ৯ দিন) ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থী অফেরতযোগ্য এক হাজার টাকা জমা দিয়ে উত্তরপত্র পুনঃনিরীক্ষণের আবেদন করেন। এ সময়ে মোট ৯৬২ জন ছাত্রছাত্রীর আবেদনপত্র জমা পড়ে।

উল্লেখ্য, চলতি বছর অনুষ্ঠিত মেডিকেলের ভর্তি পরীক্ষায় ৮০ হাজার ৮১৮ পরীক্ষার্থী অংশগ্রহণ করেন। তাদের মধ্যে ন্যূনতম ৪০ নম্বর পেয়ে ৪১ হাজার ১৩২ জন পাস করেছেন।

‘মাধ্যমিকে ইংরেজি পাঠ্যবইয়ের ৭০ শতাংশ পড়ানো হয় না’

মাধ্যমিক স্কুলে ইংরেজি পাঠ্যবইয়ের ৭০ ভাগ পাঠ্যক্রম পড়ানো হয় না। এভাবেই বছর শেষ করে নতুন ক্লাসে যাচ্ছে শিক্ষার্থীরা। ফলে ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত নির্ধারিত পাঠের বেশিরভাগ সম্পর্কে শিক্ষার্থীদের কোনো ধারণা থাকে না। এতে করে ইংরেজি বিষয়ে তারা দুর্বল থেকে যাচ্ছে। আর উচ্চশিক্ষা যেমন, পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তিতে বা অন্য সেক্টরে ভালো করতে পারছে না। তেমনি চাকরিবাজারেও হোঁচট খাচ্ছে।

বুধবার বেসরকারি ইউনিভার্সিটি অব লিবারেল আর্টসে (ইউল্যাব) আয়োজিত এক ব্রেইনস্ট্রমিং (ধারণা তৈরি) অনুষ্ঠানে বক্তারা এ কথা বলেন।

তারা জানান, পাঠ্যবইয়ের বাকি ৭০ শতাংশ পাঠ না হওয়ার পেছনে শিক্ষক, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, প্রতিষ্ঠান প্রধান এবং শিক্ষার্থীরা দায়ী। পাঠ্যবইয়ের কনটেন্টের (পাঠ্যবিষয়) দায়ও কম নয়। বক্তারা দক্ষ জনশক্তি তৈরির লক্ষ্যে বাংলাদেশের মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষাব্যবস্থা ঢেলে সাজানোর পরামর্শ দিয়েছেন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের অধ্যাপক ড. সৈয়দ মনজুরুল ইসলামের সভাপতিত্ব ও সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে উচ্চশিক্ষা মানোন্নয়ন প্রকল্পের (হেকেপ) পরিচালক ড. গৌরাঙ্গ চন্দ্র মোহন্ত, ইউল্যাবের অধ্যাপক ড. এইচএম জহিরুল হক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আধুনিক ভাষা ইনস্টিটিউটের ইংরেজি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক শায়লা সুলতানা, ভিকারুন নিসার সাবেক ইংরেজির শিক্ষক শায়লা আহমেদ, বাংলাদেশ ইংরেজি ভাষা শিক্ষক সমিতির (বেলটা) হারুন-অর-রশিদ, কারিকুলাম ও পাঠ্যবই বিশেষজ্ঞ আবদুর রহিম, জাহিদ বিন মতিন, মাদরাসা শিক্ষা বোর্ডের কর্মকর্তা ড. জাহিদ, ইউল্যাবের ইংলিশ অ্যান্ড হিউম্যানিটিজ বিভাগের চেয়ারম্যান অ্যধ্যাপক ড. শামসাদ মর্তুজাসহ বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা এবং গণমাধ্যম প্রতিনিধিরা বক্তৃতা করেন।

‘মাধ্যমিক স্কুলের ইংরেজি ভাষা শিক্ষণ ও শিখন মূল্যায়ন’ শীর্ষক এ অনুষ্ঠানে অধ্যাপক ইসলাম বলেন, আমরা চতুর্থ শিল্পযুগে প্রবেশ করেছি। এই যুগে দেশকে বিশ্বের বুকে গৌরবের সঙ্গে তুলে রাখতে দক্ষ জনসম্পদ প্রয়োজন। সেজন্য আগামীতে যারা দেশ ও জাতিকে নেতৃত্ব দেবেন তাদের ইংরেজি ভাষার ওপর দখল থাকা জরুরি।

তিনি বলেন, উচ্চশিক্ষা স্তরে শিক্ষার্থীদের ইংরেজির দখল হতাশাজনক পর্যায়ে আছে। এটির কারণ অনুসন্ধানের প্রয়াস এটি। পর্যায়ক্রমে আমরা আরও কর্মসূচি বাস্তবায়ন করবও। সর্বশেষে এ বিষয়ে সরকারের কাছে সুপারিশ পেশ করা হবে।

ড. গৌরাঙ্গ চন্দ্র মোহন্ত শিক্ষাথীদের ইংরেজি দক্ষতার অর্জনের জন্য শিক্ষণ ও শিখন প্রক্রিয়ায় সংশ্লিষ্ট ১৯টি পর্যবেক্ষণ ও সুপারিশ তুলে ধরেন।

তিনি বলেন, শিক্ষার্থীদের পাঠবইয়ের বাইয়ে অন্য কোনো সোর্স থেকে ইংরেজি শেখার সুযোগ নেই। শিক্ষকদের শেখানোর ব্যাপারে আবশ্যিকভাবে নিবেদিতপ্রাণ হতে হবে। ইংরেজি শিক্ষকদের মধ্যে একটি নেটওয়ার্ক তৈরির ব্যবস্থা প্রবর্তন করতে হবে। বিদ্যমান ব্যবস্থায় শিক্ষার্থীরা তাদের সমস্যা বা অভিজ্ঞতা বিনিময় করতে পারেন না। শিক্ষক মূল্যায়নের ব্যবস্থা নেই। পিছিয়ে পড়া শিক্ষার্থীর প্রতি বিশেষ নজর নেয়া হয় না ক্লাসরুমে।

 

ইউল্যাবের উপাচার্য ড. জহিরুল হক বলেন, বিদ্যমান ব্যবস্থায় যে ত্রুটি থেকে যায় তা প্রমাণিত হয়েছে। তাই ইংরেজিতে মাধ্যমিক পর্যায়ে উপযুক্ত পাঠদানের মাধ্যমে দক্ষতা দিতে শুধু শিক্ষক বা শিক্ষার্থীকে নিয়ে কাজ করলে হবে না। গোটা ব্যবস্থা নিয়ে কাজ করতে হবে।

অন্ষ্ঠুানে একজন সাংবাদিক শিক্ষক-অভিভাবক এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মধ্যে সমন্বয়ের ঘাটতির চিত্র তুলে ধরে বলেন, পাঠ্যবই এবং শিক্ষক ও ক্লাসরুম অ্যাকটিভিটির বাইরে উপযুক্ত শিক্ষণ-শিখনের জন্য এটাও জরুরি। যেহেতু পাঠদানে ঘাটতি থাকে এবং ৩০ শতাংশ মাত্র পাঠদানে আসে, তাই বাকিটা নিশ্চিতে প্রতিষ্ঠানে নিয়মিত অভিভাবক সমাবেশ করতে হবে। ষষ্ঠ থেকে অষ্টম শ্রেণিতে ১০০ নম্বরের ইংরেজি দ্বিতীয়পত্র চালু করতে হবে। কমিউনিকেটিভ ইংরেজিতে গ্রামারের প্রত্যক্ষ পাঠ উপেক্ষিত। নবম শ্রেণি পর্যন্ত গোটা গ্রামারের পাঠ ঢেলে সাজাতে হবে। এক্ষেত্রে সহজ থেকে ক্রমান্বয়ে কঠিন পাঠ সাজাতে হবে। প্রতিষ্ঠানের ভেতরে-বাইরে মনিটরিং নিশ্চিত করতে হবে। সর্বোপরি ক্লাসরুমে পাঠদান নিশ্চিত করতে হবে। নইলে যত আধুনিক পাঠ্যবই, দক্ষ শিক্ষক আর কৌশল প্রবর্তণ করা হোক কোনো লাভ হবে না।

বেলটার হারুন অর রশিদ বলেন, মাদরাসায় মাধ্যমিক পর্যায়ে মাত্র ২৯ শতাংশ শিক্ষক প্রশিক্ষিত। মাদরাসাগুলোর ৯৪ শতাংশই গ্রামাঞ্চলে অবস্থিত। এই ধারায় ইংরেজি শিক্ষায় প্রধান বাধা কমযোগ্য বা অদক্ষ শিক্ষক। সরকারি টিচার্স ট্রেনিং কলেজে মাদরাসা শিক্ষকের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা নেই। এরজন্য একমাত্র প্রতিষ্ঠান মাদরাসা শিক্ষক প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের (বিএমটিটিআই) দিকেই তাকিয়ে থাকতে হয়।

হারুন অর রশিদের এ কথার সমর্থন করে মাদরাসা বোর্ডের ড. জাহিদ বলেন, বিএমটিটিআইতে যে প্রশিক্ষণের সুবিধা আছে তাও অপ্রতুল। মাত্র একমাসের একটি ট্রেনিং হয়। আসন সংখ্যা এতই কম যে, বিদ্যমান শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ শেষ করতে ৪০ বছর লাগবে। এই স্তরে প্রশিক্ষিত শিক্ষকের পাশাপাশি শিক্ষক সংকটও অন্যতম সমস্যা বলে মনে করেন তিনি।

ড. শায়লা সুলতানা বলেন, আমাদের গবেষণায় মাধ্যমিকে ইংরেজি শিক্ষার ক্ষেত্রে প্রধান দুই সমস্যা চিহ্নিত হয়েছে। তা হচ্ছে, পাঠ্যবই এবং শিক্ষকের দক্ষতার ঘাটতি। কোনো প্রশিক্ষণই পাঠদানে প্রয়োগ হয় না। শিক্ষকরা গতানুগতিক পদ্ধতিতেই পাঠদান করেন। যেহেতু পরীক্ষায় পাস করাতে হবে তাই তারা এই পস্থা বেছে নেন।

একজন কারিকুলাম বিশেষজ্ঞ বলেন, যেহেতু সমস্যা চিহ্নিত করার জন্য এই অনুষ্ঠান। তাই খোলামেলাভাবে কথা বলতেই হবে। শিক্ষকদের প্রশিক্ষণের ঘাটতি নেই। বরং প্রশিক্ষণে তারা এই ভারাক্রান্ত যে, এক-একজন দশটি প্রশিক্ষণও পেয়েছেন।

তিনি বলেন, বিভিন্ন সময়ে পাঠদানের নিদের্শনা ও গাইডলাইন দেয়া হয়। অনেক শিক্ষক তা দেখেন না। এমনকি পাঠ্যবইয়ে দিয়েও দেখানো যায়নি। তারা এর চেয়ে গাইড বইয়ে কী নির্দেশনা আছে সেটি দেখতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন।

আরেকজন বিশেষজ্ঞ বলেন, ইংলিশ ভার্সনের বইয়ের খুবই দুরবস্থা। দক্ষ বিশেষজ্ঞরা বাংলা ভার্সনের বই অনুবাদ করেছেন। তারপরও ওই পরিস্থিতি। বাংলাদেশের মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষাব্যবস্থা ঢেলে সাজাতে হবে।

কারিকুলাম বিশেষজ্ঞ আবদুর রহীম বলেন, মাধ্যমিকের ইংরেজি বইয়ের কিছু সংশোধনী আনা হয়েছে। এর ফলে এটি আরও সহজবোধ্য ও পাঠোপযোগী হবে। নতুন শিক্ষাবর্ষে নবম-দশম শ্রেণির যে ইংরেজি বই যাচ্ছে সেটিও সুখপাঠ্য হবে।

শিক্ষাব্যবস্থায় মৌলিক পরিবর্তন আনতে চাই : নাহিদ

শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ বলেছেন, শিক্ষাব্যবস্থায় মৌলিক পরিবর্তন আনতে চাই। শিক্ষার্থীদের উন্নত নাগরিক হিসেবে গড়ে তোলার জন্য দরকার বিশ্বমানের শিক্ষা। শুধু প্রযুক্তি দিয়ে শিক্ষার্থীদের মাথা ভর্তি করতে চাই না। তাদেরকে সততা ও ন্যায়পরায়ণতার শিক্ষা দেয়া জরুরি।

বৃহস্পতিবার ঢাকা বিশ্ববিদালয়ের নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবনে ‘শিক্ষা ক্ষেত্রে আওয়ামী লীগ সরকারের অর্জন’ শীর্ষক এক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

আওয়ামী লীগের শিক্ষা ও মানবসম্পদবিষয়ক উপ-কমিটি এ সেমিনারের আয়োজন করে।

মন্ত্রী বলেন, জাতীয় লক্ষ্যের সঙ্গে সম্পৃক্ত করে শিক্ষার লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। সে লক্ষ্য হচ্ছে জাতীয় পরিবর্তন। শুধু শিক্ষা ক্ষেত্রে নয় বরং সামাজিক, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সব ক্ষেত্রেই উন্নতি অর্জন করা। সে লক্ষ্যে নতুন প্রজন্মকে আধুনিক শিক্ষায় শিক্ষিত করে গড়ে তুলতে হবে।

তিনি আরো বলেন, নতুন প্রজন্মের জন্য আধুনিক ও গুণগত শিক্ষা নিশ্চিত করার মাধ্যমে তাদেরকে আগামী দিনের বাংলাদেশের নির্মাতা হিসেবে গড়ে তুলতে হবে। তাই শিক্ষায় গুণগত পরিবর্তন চাই। আমরা চাই আমাদের নতুন প্রজন্মের জন্য যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে বিশ্বমানের শিক্ষা নিশ্চিত করা।

নুরুল ইসলাম নাহিদ বলেন, বাংলাদেশ অর্থনৈতিক দিক থেকে দরিদ্র হলেও নতুন প্রজন্ম মেধার দিক থেকে দরিদ্র নয়। বাংলাদেশ হলো উন্নয়নশীল দেশগুলোর মধ্যে শিক্ষার ক্ষেত্রে অনুকরণীয়।

ইউজিসি চেয়ারম্যান অধ্যাপক মান্নান বলেন, দেশের তরুণ সমাজকে যদি আক্ষরিক অর্থে শিক্ষিত করে তুলতে পারি, তাহলে বিশ্বের উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে নিজেদের অবস্থার আরও উন্নতি করা সম্ভব।

সংগঠনটির চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. আবদুল খালেকের সভাপতিত্বে এতে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. আব্দুল মান্নান, ঢাকা বিশ্ববিদালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ কে আজাদ চৌধুরী, বর্তমান উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান, উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. নাসরীন আহমাদ প্রমুখ। সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন রাজশাহী বিশ্ববিদলয়ের ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. আবুল কাসেম।

উন্নীত বেতন স্কেলে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধানদের বেতন

সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকদের বেতন-ভাতা উন্নীত বেতন স্কেলে নির্ধারণ হতে যাচ্ছে। সম্প্রতি এ সংক্রান্ত একটি জিও অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগের বাস্তবায়ন অনুবিভাগ থেকে জারি করা হয়েছে।

ফলে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকরা এখন থেকে প্রধান শিক্ষক পদের উন্নীত বেতন স্কেলে বেতন-ভাতা পাবেন। এটি ৯ মার্চ ২০১৪ থেকেই কার্যকর হবে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।

অর্থ বিভাগের বাস্তবায়ন অনুবিভাগের সহকারী সচিব মো. সামীম আহসান স্বাক্ষরিত সরকারি ওই আদেশে বলা হয়েছে, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক পদের বেতন স্কেল উন্নীতকরণের ফলে উন্নীত বেতন স্কেলে বেতন নির্ধারণের জটিলতা নিরসনের লক্ষ্যে সরকার নিম্নরূপ নীতিমালা অনুসরণের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে।

ক) বেতন স্কেল উন্নীত হওয়ার পূর্বে সরাসরি নিয়োগপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকরা যিনি যে সংখ্যক টাইমস্কেল পেয়েছেন/প্রাপ্য হয়েছেন, উন্নীত বেতন স্কেলের ওপরে সেই সংখ্যক টাইমস্কেল গণনা করে বেতনস্কেল উন্নীত করার অব্যবহিত পূর্বে তার সর্বশেষ আহরিত/প্রাপ্য মূল বেতনের ভিত্তিতে বেতনস্কেল উন্নীতকরণের তারিখে সরাসরি নির্ণীত সর্বশেষ স্কেলের কোনো ধাপে মিললে ওই ধাপে, ধাপে না মিললে বিএসআর প্রথম খণ্ডের ৪২(ও)(রর) বিধি অনুসরণে নিম্নধাপে বেতন নির্ধারণ করে অবশিষ্ট টাকা পিপি হিসেবে প্রদান করতে হবে এবং ওই পিপি পরবর্তী বার্ষিক বেতন বৃদ্ধিতে তা সমন্বয়যোগ্য হবে।

খ) বেতনস্কেল উন্নীত হওয়ার পূর্বে পদোন্নতি প্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকরা প্রধান শিক্ষক পদে যিনি যে সংখ্যক টাইমস্কেল পেয়েছে/প্রাপ্য হয়েছেন, উন্নীত বেতনস্কেলের ওপরে সেই সংখ্যক টাইমস্কেল গণনা করে বেতনস্কেল উন্নীত করার অব্যবহিত পূর্বে তার সর্বশেষ আহরিত/প্রাপ্য মূল বেতনের ভিত্তিতে বেতনস্কেল উন্নীতকরণের তারিখে সরাসরি নির্ণীত সর্বশেষ স্কেলের কোন ধাপে মিললে ঐ ধাপে, ধাপে না মিললে বিএসআর ১ম খণ্ডের ৪২(ও)(রর) বিধি অনুসরণে নিম্নধাপে বেতন নির্ধারণ করে অবশিষ্ট টাকা পিপি হিসেবে প্রদান করতে হবে এবং উক্ত পিপি পরবর্তী বার্ষিক বেতন বৃদ্ধিতে তা সমন্বয়যোগ্য হবে।

গ) ওই পদ্ধতিতে বেতন নির্ধারণকালে মাঝখানে কোনো বেতনস্কেল/গ্রেডে বেতন নির্ধারণ করা যাবে না। উল্লেখ্য, ২০১৪ সালের ৯ মার্চ প্রধানমন্ত্রী শিক্ষা সপ্তাহের অনুষ্ঠানে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকদের বেতন স্কেল দুই ধাপ উন্নীত করে দ্বিতীয় শ্রেণির পদ মর্যাদা ঘোষণা দেন।

সহকারী শিক্ষকদের ১ ধাপ বেতন স্কেল উন্নীত করার ঘোষণা দেন। কিন্তু প্রধান শিক্ষকদের দ্বিতীয় শ্রেণির পদ মর্যাদার ভিত্তিতে বেতন স্কেল নিয়ে জটিলতার সৃষ্টি হয়। এ নিয়ে দীর্ঘ প্রায় তিন বছরের দাবি ও আন্দোলন এবং দফায় দফায় অর্থ মন্ত্রণালয় এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ে শিক্ষক নেতাদের বৈঠকের পর আজ এ আদেশ জারি করেছে বলে জানান সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির মহাসম্পাদক আমিনুল ইসলাম চৌধুরী।

তিনি বলেন, এখন থেকে সিনিয়র প্রধান শিক্ষকরা উন্নীত পদ্ধতিতে বেতন নির্ধারণ করে ৯ মার্চ ২০১৪ থেকেই আর্থিক সুবিধাদি প্রাপ্য হবেন। তিনি এ ব্যাপারে সরকারের সদিচ্ছার জন্য অর্থমন্ত্রী এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানান।

রোববার থেকে শুরু পিইসি-সমাপনী পরীক্ষা

রোববার থেকে শুরু হচ্ছে প্রাথমিক শিক্ষা ও ইবতেদায়ি শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষা। আগামী ২৬ নভেম্বর পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হবে। এ পরীক্ষা বেলা ১১টা থেকে শুরু হয়ে দুপুর দেড়টায় শেষ হবে। বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন পরীক্ষার্থীদের জন্য সময় ২০ মিনিট অতিরিক্ত রাখা হয়েছে। মোট ৬টি বিষয়ে প্রতিটিতে ১০০ করে মোট ৬০০ নম্বরের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে।

পরীক্ষার প্রথম দিনে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রী মোস্তাফিজুর রহমান রাজধানীর মতিঝিলে আইডিয়াল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় পরীক্ষা কেন্দ্র পরিদর্শন করবেন বলে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে জানানো হয়েছে। জানা গেছে, প্রাথমিক শিক্ষা ও ইবতেদায়ি পরীক্ষায় এবার ৩০ লাখ ৯৬ হাজার ৭৫ জন পরীক্ষার্থী অংশগ্রহণ করবে। প্রাথমিক শিক্ষায় ২৮ লাখ ৪ হাজার ৫০৯ জন ছাত্র-ছাত্রী অংশ নেবে। এর মধ্যে ১২ লাখ ৯৯ হাজার ৯৮৫ জন ও ছাত্রী সংখ্যা ১৫ লাখ ৪ হাজার ৫২৪ জন। ইবতেদায়ি শিক্ষায় ২ লাখ ৯১ হাজার ৫৬৬ জন পরীক্ষার্থী অংশ নেবে। যার মধ্যে ছাত্রসংখ্যা ১ লাখ ৫৩ হাজার ১৫২ জন এবং ছাত্রীর সংখ্যা ১ লাখ ৩৮ হাজার ৪১৪ জন। প্রাথমিক শিক্ষায় ২ হাজার ৯৫৩ জন এবং ইবতেদায়ি শিক্ষায় ৩৭৯ জনসহ মোট ৩ হাজার ৩৩২ জন বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন পরীক্ষার্থী এ পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করবে। সারাদেশে ৭ হাজার ২৭৯টি কেন্দ্রে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। এর মধ্যে দেশের অভ্যন্তরে ৭ হাজার ২৬৭টি এবং দেশের বাইরে রয়েছে ১২টি কেন্দ্র।পরীক্ষা সুষ্ঠু ও স্বচ্ছতার সঙ্গে সম্পন্নের জন্য ইতোমধ্যে যাবতীয় প্রস্তুতি শেষ করা হয়েছে। দুর্গম এলাকায় ২০৪টি কেন্দ্রে বিশেষ ব্যবস্থাপনায় প্রশ্নপত্র পাঠানো হয়েছে।

প্রতি বছরের মতো প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরের কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে প্রতি জেলায় পরীক্ষা কার্যক্রম পরিদর্শনের জন্য ভিজিলেন্স টিম গঠন করা হয়েছে।