এই রোগে মৃত্যুর হার ৯৭ শতাংশের বেশি। এ ক্ষেত্রে ১৯৬২ সাল থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত ১৪৫ জন আক্রান্তের মধ্যে দেখা গিয়েছে যে মাত্র চারজন সুস্থ হয়েছেন।
৮ সেপ্টেম্বর শিশুর মৃত্যুর পর থেকেই নড়েচড়ে বসেছে টেক্সাসের সরকার। এই ব্যাধি নিয়ে সচেতনতা প্রচারও শুরু হয়েছে। সংক্রমণের সন্ধান করতে গিয়ে দেখা গেছে, জল থেকেই আক্রান্ত হয়েছিল ওই শিশু। বাগানের একটি জলের ট্যাপে পাওয়া গেছে এই মারণ অ্যামিবার সন্ধান। কিন্তু কী এই রোগ ? আসুন জেনে নেওয়া যাক।
এই মারণ ব্যাকটেরিয়ার উপসর্গগুলি কী কী:
এই ব্যাকটেরিয়ায় আক্রান্ত হলে প্রথমের দিকে অর্থাৎ আক্রান্ত হওয়ার প্রথম সপ্তাহে সাধারণত মাথাব্যথা, জ্বর, সর্দি-কাশি, বমি-বমি ভাব, ঘাড় শক্ত হয়ে যাওয়া এই ধরনের উপসর্গ দেখা যায়। এর পর ধীরে ধীরে শরীরের ভারসাম্য হারানো, চোখ ধাঁধিয়ে যাওয়া এই রকম নানা সমস্যা শুরু হয়। চিকিৎসকরা জানাচ্ছেন এই ব্যাকটেরিয়ায় আক্রান্ত হলে ১২ দিনের মধ্যেই মৃত্যু হয় আক্রান্তের।
এই ব্যাকটেরিয়া কি ছড়াতে পারে?
গবেষকরা জানাচ্ছেন, ন্যাগ্লেরিয়া ফাওলেরি সে ভাবে সংক্রমিত হতে পারে না। এটি মানুষ থেকে অন্য মানুষে ছড়াতে পারে না। এই অ্যামিবা সাধারণত জলাশয় যেমন নদী, লেক, কোনও বদ্ধ জলাশয় যেমন সুইমিং পুল, ফোয়ারা, দীর্ঘ দিনের সঞ্চিত জলাধারে দেখা যায়। তবে লবণাক্ত জলে অর্থাৎ সমুদ্রে এদের দেখা যায় না।
শরীরে কী ভাবে এই ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ ঘটে ?
মানুষ যখন কোনও নদী, জলাশয় বা লেকে সাঁতার কাটতে যায়, তখনই এই ব্যাকটেরিয়া মানবশরীরকে আক্রমণ করে। জলের মধ্যে থাকা সূক্ষ্ম সূক্ষ্ম অ্যামিবা প্রথমে আমাদের নাক দিয়ে শরীরে প্রবেশ করে। তার পর মাথার মধ্যে গিয়ে মাথার কলা ও কোষগুলিকে ধ্বংস করে। শুধুমাত্র জলাশয় বা নদীর জল নয়, যে কোনও দূষিত জল থেকেও এটা হতে পারে বলে জানাচ্ছেন গবেষকরা। এ ছাড়াও অনেক সময় অনেক ধর্মীয় স্থানে পুণ্যস্নানের সময় প্রচুর মানুষকে একটি জলাশয়ে স্নান করতে দেখা যায়। এ ক্ষেত্রেও নাক-মুখের মাধ্যমে এই অ্যামিবা-সংক্রমিত জল আমাদের শরীরে প্রবেশ করে।
এই রোগে মৃত্যুর হার কী?
গবেষকরা জানাচ্ছেন, বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই দেখা গেছে আক্রান্তদের মৃত্যু হয়েছে। এই রোগে মৃত্যুর হার ৯৭ শতাংশের বেশি। এ ক্ষেত্রে ১৯৬২ সাল থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত ১৪৫ জন আক্রান্তের মধ্যে দেখা গিয়েছে যে মাত্র চারজন সুস্থ হয়েছেন।
এই রোগের নিরাময় কী?
এ নিয়ে বিস্তর গবেষণা চলছে। কয়েকটি ল্যাবে এখনও পর্যন্ত পরীক্ষামূলকভাবে এই ন্যাগ্লেরিয়া ফাওলেরির বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য কিছু ড্রাগস প্রয়োগ করা হয়েছে। তবে মানবশরীরে এ গুলি কাজ করে কি না, তা এখনও স্পষ্ট নয়।
Source: news18.com