রাখি থেকে ফাতিমা, এর স্থায়িত্ব কতদিন!

বলিউডের জন্য এখনও নাম রাখি সাওয়ান্ত হলেও, ব্যক্তি জীবনে এখন তিনি ফাতিমা। অমরাহ করে এসেই ঠিক এমনটা বলেছেন বলিউডের ড্রামা কুইন। শুধু তাই নয়, স্বামী আদিল খান দুরানিকে নিয়ে করেছেন একাধিক বিস্ফোরক মন্তব্য। 

এছাড়া ওমরাহ পালনের পর থেকে বোরখা পরেই ক্যামেরার সামনে আসছেন তিনি। কেউ বলছেন রাখি নিজেকে সুধরে নিতে চাইছেন কেউ আবার মজা নিচ্ছেন। 

কারন তিনি যে তার কর্মকান্ডেই ড্রামা কুইন নামে পরিচিত, তার যেকোন কথা কিংবা কাজকে ড্রামা কিংবা নাটকই মনে করে থাকেন অনেকেই। আর তাই এবার রাখিকে দেখে সন্দীহান অনেকেই। 

সোশ্যাল মিডিয়াতে প্রশ্ন ঘুরে বেড়াচ্ছে, রাখি থেকে ফাতিমা কতদিন থাকবে? কিছু সময়ের ব্যবধানে আবারও পরিবর্তন হবেন নাতো এই নায়িকা?

বলিউড পাড়ায় অন্যতম বিতর্কিত তারকা রাখি সাওয়ান্ত। আদিল দুরানি খানের সঙ্গে বিবাহবিচ্ছেদ সংক্রান্ত ঝামেলার কয়েক মাস কাটতে না কাটতেই আবার আলোচনায় এসেছেন এই ভারতীয় অভিনেত্রী।

গত জুলাই মাসে জেল থেকে ছাড়া পেয়েই রাখির বিরুদ্ধে একের পর এক অভিযোগ শানিয়েছেন আদিল।

চুপ করে বসে থাকেননি রাখিও। আদিলের বিরুদ্ধে তার নগ্ন ভিডিও মোটা অঙ্কের টাকায় বিক্রির অভিযোগ এনেছেনবিগ বসখ্যাত টেলিভিশন তারকা। 

শান্তির খোঁজে ওমরাহ করতে মক্কায় গিয়েছিলেন রাখি। সম্প্রতি ফিরলেন সেখান থেকে।

মক্কা থেকে ফিরেই একেবারে নতুন মানুষ তিনি! এবার নামও বদলে নিলেন ছোট পর্দারড্রামা কুইন

মক্কা থেকে দেশে ফিরে রাখি জানান, তিনি নাকি আর রাখি নামে সাড়া দেবেন না। এখন থেকে তিনি ফাতিমা। সাংবাদিকদের উদ্দেশে তাকে ফাতিমা নামেই ডাকার আবেদন করেন রাখি।

এছাড়াও তিনি কথা বলেছেন আদিল দুরানির নামে। ওমরাহতে যাওয়ার আগে আদিলের সাথে বিচ্ছেদের কথা বলে গেলেও, ওমরাহ শেষ তিনি জানিয়েছেন আদিল তার স্বামী। আদিল মুসলিম ধর্মের হওয়ায় রাখিও মুসলিম ধর্ম পালন করছেন। 

এতো গেল স্বামীর প্রতি ড্রামা কুইনের ভালোবাসার প্রকাশ। কিন্তু এতে যে ক্ষোভ ছাড়তে ভুলে যাবেন সেতো নয়। তাই রীতিমতো অভিযোগও ঠুকেছেন আদিলের নামে। সাথে জড়িয়েছেন আরও একজন নারীর নাম।

সে নারী একটা সময় পর্যন্ত ছিলেন রাখিরই প্রিয় বান্ধবি। কিন্তু সেই বান্ধুবিকে নিয়ে রাখি বলেছেন তার স্বামীকে নাকি চুরি করে নিয়ে গেছেন। সেই বান্ধবি হচ্ছেন, রাজশ্রী। 

এক অনুষ্ঠানে গণমাধ্যমের সামনে রাখি বলেছেন, রাজশ্রী তার স্বামীকে চুরি করে নিয়ে গেছেন। তাদের বন্ধুত্ব আর নেই। 

রাখি বলেন, আমাকে বললে আমি তাকে সতীন বানিয়ে নিতাম।কিন্তু তুমি সেটা না করে আমাকে ধোকা দিয়েছো। একজনকে নারী হয়ে আরেকজন নারীর সংসার ভাঙ্গার জন্য রাজশ্রীকে রীতিমতো দুশেছেন কন্ট্রোভার্সি কুইন রাখি।

 কিন্তু ঘটনায় চুপ নেই রাজশ্রী এবং আদিল। তারা গণমাধ্যমের সামনে পাল্টা অভিযোগ করেছেন, রাখির সব কথা মিথ্যা। রাখির আদিলকে ফাঁসানোর ঘটনায় রাখিকে সহযোগীতা না করায় এমন অপচার ছড়াচ্ছে বলে দাবি রাজশ্রীর। 

সব মিলিয়ে যেন জলা ঘলাটে করার মতো পরিস্থিতি। এরই মাঝে নেটিজেনদের একাংশ আবার এই ভেবে চিন্তিত যে, রাখি ওরফে ফাতিমার এই রূপ কতদিন স্থায়ী থাকে। 

লাইনে দাঁড়িয়ে আর টোল দিতে হবে না পদ্মা সেতুতে!

স্বপ্নের পদ্মা সেতু। বাঙ্গালীদের কাছে যেন এক অনন্য সফলতা। আর এই সেতু ব্যবহারকারীদের জন্য এসেছে সুখবর। কারন এখন আর লাইনে দাঁড়িয়ে টোল দিতে হবে না কোন যানবাহনের জন্য। এমন পরিকল্পনা গ্রহন করার কথা জানিয়েছেন সেতু কর্তৃপক্ষ। 

প্রশ্ন আসতে পারে, তবে কি ফ্রিতে চলাচল করবে যানবাহন? নাকি রয়েছে বিকল্প কোন উপায়? সেই বিস্তারিত জানাতেই আমাদের আজকের প্রতিবেদন। 

বাংলাদেশ ডিজিটাল পথে হাঁটছে, গেল বেশ কিছু বছর ধরে। যেখানে গোটা বিশ্বের দেশগুলো প্রযুক্তিকে কাজে বিভিন্ন কাজ সহজ থেকে সহজত্বর করে তুলছে। সেইদিক থেকে পিছিয়ে নেই বাংলাদেশও।

পদ্মা সেতুর টোল প্লাজায় যুক্ত হচ্ছে নতুন প্রযুক্তি। চালু হতে যাচ্ছে চলন্ত অবস্থায় গাড়ির টোল আদায় পদ্ধতিআরএফআইডি। অর্থাৎ, সহজ হচ্ছে পদ্মা সেতুর টোল দেওয়ার প্রক্রিয়া। 

নগদ টাকা দেওয়ার পাশাপাশি চালু হচ্ছে ইলেক্ট্রনিক টোল কালেকশন সিস্টেম (ইটিসিএস)  আর নতুন এই পদ্ধতির জন্যই সেতুর দুই পাড়ে থাকছে আলাদা বুথ। এছাড়াও প্রক্রিয়াধীন হাইব্রিডটাচ এন্ড গো পদ্ধতি।

নতুন দুই পদ্ধতি চালু হলে জটলামুক্ত থাকবে টোল প্লাজা। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এতে অর্থনীতিতে আরও গতি সঞ্চার হবে। চলুন জেনে নেই নতুন এই উদ্যোগের বিস্তারিত। 

এখন থেকে পদ্মা সেতুতে টোল দেওয়ার জন্য আর লাইনে দাঁড়াতে হবে না। সেই ধারাবাহিকতায় চলতি মাসেই চালু হচ্ছে কার্ড সিস্টেম। যাতে আগে থেকেই টাকা রিচার্জ করে রাখা যাবে। 

টোল প্লাজার কাছে পৌঁছালে রোবোটিক ক্যামেরা সেই গাড়িকে শনাক্ত করবে এবং কার্ড থেকে টোল কেটে নেবে। কোরিয়ান এক্সপ্রেসওয়ে করপোরেশন এই কারিগরি সহায়তা দিচ্ছে। সব ধরনের টোল আদায়ে প্রযুক্তি ব্যবহারের পরামর্শ তাদের।

জানা গেছে, স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতি চালু হলে একটি গাড়ি সর্বোচ্চ তিন সেকেন্ডে টোল দিতে পারবে। টোল আদায়ের দায়িত্বে থাকা কোরিয়ান কোম্পানি কেইসি জানিয়েছে, মাসেই চালু হবে নতুন প্রযুক্তি।

বিশ্বের বিভিন্ন দেশের এক্সপ্রেসওয়ে সেতুর টোলের জন্য এক কার্ড এক পেমেন্ট সিস্টেম চালু রয়েছে। এখন বাংলাদেশে সময় এসেছে পদ্ধতি চালুর। এতে একাধিক টোল কার্ড ব্যবহারের ভোগান্তি থেকে বাঁচবে গ্রাহকরা।

কেইসি প্রকল্প পরিচালক জিনউ পার্ক জানিয়েছেন, সেবা নিতে হলে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) আরএফআইডি ট্যাগ থাকতে হবে। যার মাধ্যমে ডিজিটাল পেমেন্ট দেওয়া যাবে। 

এদিকে পদ্মা সেতুর টোল আদায়ের জন্য আধুনিক ব্যবস্থার সবশেষ প্রস্তুতি দেখতে মাওয়ায় যান দক্ষিণ কোরিয়ার রাষ্ট্রদূত পার্ক ইয়ং সিক। সময় বাংলাদেশের উন্নয়নে পাশে থাকার আশ্বাস দেন তিনি। 

তিনি বলেন, স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে অংশিদার হতে চায় দক্ষিণ কোরিয়া। দেশের অগ্রযাত্রায় আমরা সব ধরনের সহযোগিতা করতে প্রস্তুত। আগে শুধু পোশাক শিল্পে অবদান রেখেছে দক্ষিণ কোরিয়া, এখন অবকাঠামো খাতেও বিনিয়োগে আগ্রহী আমরা।

টোলের কার্ড এবং রেজিস্ট্রেশনের জন্য পদ্মা সেতুর মাওয়া প্রান্তে কাউন্টার থাকছে। এই কার্ড টোল মেশিনে ছোঁয়ালেই টাকা কেটে নেবে। 

ছাড়া গাড়িটি পদ্মা সেতু পার হলে স্বয়ংক্রিয়ভাবেই টোল আদায় করে নেবে। সাথে সাথেই দেখা যাবে কার্ডের ব্যালেন্স।  

উল্লেখ্য, ২০১৪ সালের ২৬ নভেম্বর পদ্মা সেতুর নির্মাণকাজ শুরু করে চায়না মেজর ব্রিজ কোম্পানি। ২০২২ সালের ২৫ জুন পদ্মা সেতু উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। 

সেতু চালু হওয়ায় দেশের ২১ জেলার যাতায়াত সহজ হওয়ার পাশাপাশি গড়ে উঠছে নতুন শিল্পকারখানা। ফলে প্রসার ঘটছে ব্যবসাবাণিজ্যের, সৃষ্টি হচ্ছে নতুন কর্মসংস্থান।এরই সাথে গত বছর উদ্বোধনের পর থেকে গড়ে প্রতিদিন সেতু থেকে কোটি ১৮ লাখ ২৯ হাজার ২৭০ টাকা টোল আদায় করা হয়ে থাকে। 

মৃত্যুর পরেও ফিরছেন ‘নায়ক মান্না’!

ঢালিউডের এমন একজন অভিনেতা, যিনি এমন কোন দর্শক নেই যার ভালোবাসা পাননি। কিন্তু আচমকা তার চির বিদায়ে যেন নড়েচড়ে বসেছিল গোটা দেশবাসি। 

এমনকি তার মৃত্যু মেনে নিতে পারেননি অনেকেই। এখনও তাকে স্মরণ করে স্মৃতিচারন করে থাকেন এমন দর্শকদের সংখায় কিন্তু কম নয়। 

আর এই অভিনেতার ভক্ত যারা আছেন, তাদের জন্য রয়েছে সুখবর। কারন শেষবারের মতো নিজের পছন্দের নায়ককে ফের বড় পর্দায় দেখার দেখতে চলেছে অনুরাগীরা। অর্থাৎ মুক্তি পেতে চলেছে এই প্রয়াত অভিনেতার শেষ সিনেমা। 

দর্শক নিশ্চয়ই ভাবছেন কোন নায়কের কথা বলা হচ্ছে? যার কথা বলছি, তিনি আর কেউ নন, বাংলাদেশের জনপ্রিয় নায়ক আসলাম তালুকদার মান্না। তার মৃত্যুর প্রায় দেড় দশক পর মুক্তি পেতে চলেছে মান্নার অসমাপ্ত একটি সিনেমা। 

১৫ বছর আগে, হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে না ফেরার দেশে পাড়ি জমান চিত্রনায়ক মান্না। যাওয়ার আগে কাজ করছিলেনজীবন যন্ত্রণানামক সিনেমাটির। তখন অবশ্য এটির নাম ছিললীলামন্থন পরে সেন্সর বোর্ডের আপত্তির কারণে নাম পাল্টে ফেলা হয় মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক এই সিনেমাটির। 

সিনেমাটি নির্মাণ করেছেন জাহিদ হোসেন। জানা গেছে, সিনেমাটির কাজ শুরু হয়েছিল ২০০৫ সালে। তখন সিনেমাটির নাম ছিললীলামন্থন সিনেমার কিছু অংশের কাজ বাকি থাকতেই মারা যান নায়ক মান্না। 

 ছবিটির পরিচালক জাহিদ হোসেন জানান, সিনেমাটির শেষ দৃশ্য ডাবিংয়ের কাজ শেষ করে যেতে পারেননি মান্না। এর আগেই পৃথিবী থেকে চিরবিদায় হন তিনি। মূলত কারণে থমকে যায় সিনেমার কাজ। 

পরে ডামি ব্যবহার করে গ্রেনেড হামলায় তার শহিদ হওয়ার দৃশ্যধারণ করা হয়। মান্নার অংশের আংশিক ডাবিং করেন অভিনেতা রাতিন।

পরবর্তীতে সিনেমার কাজ শেষ করে ২০১১ সালে সেন্সর বোর্ডে জমা দেওয়া হয়। কিন্তুলীলামন্থননামের জন্য সিনেমাটি আটকে যায়। 

এছাড়াও বেশ কয়েকবার মুক্তি দিতে চাইলেও নানা জটিলতায় আলোর মুখ দেখেনি ছবিটি। মান্নার মৃত্যুর প্রায় এক দশক আটকে থাকার পর অবশেষে নাম পরিবর্তন করে ছাড়পত্র পেল এই সিনেমা।

জীবন যন্ত্রণাপ্রযোজনা করেছেন খোরশেদ আলম খসরু। তিনি বলেন, ২০২১ সালের অক্টোবরের শেষ সপ্তাহে সেন্সর বোর্ড সিনেমাটি দেখেছে। 

মুক্তিযুদ্ধের গল্পে নির্মিত এই সিনেমা মুক্তিতে এখন আর কোনো বাধা নেই। সবকিছু ঠিক থাকলে আগামী ১৫ ডিসেম্বর প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পাবে সিনেমাটি।

মুক্তিযুদ্ধের সময়ের একদল যৌনকর্মীর মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে অবস্থান নেওয়ার গল্প নিয়ে নির্মিত হয়েছেজীবন যন্ত্রণা এতে বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেছেন মৌসুমী, পপি, শাহনূর, মুক্তি, দীঘি, বাপ্পারাজ, আলীরাজ, আনোয়ারা, শহিদুল আলম সাচ্চু, মিশা সওদাগরসহ আরও অনেকে।

এর আগে অমর নায়ক সালমান শাহ মৃত্যুর আগে অসমাপ্ত কিছু সিনেমাতে কাজ করেছিল। তার মৃত্যুর ফলে অসমাপ্ত ছিল সিনেমার কাজ। 

সালমান শাহ অসমাপ্ত একটি ছবি ছিল উত্তম আকাশ পরিচালিতকে অপরাধী। ছবিতে সালমান কিছু অংশের কাজ করে গিয়েছিল। সালমানের মৃত্যুর পর ছবিটি নতুন করে শুরু করা হয় ওমর সানীকে নায়ক করে। 

এছাড়া মনতাজুর রহমান আকবর পরিচালিতকুলিছবিতেও সালমান কিছু কাজ করে গিয়েছিল। ছবিটিও পরে নতুন করে ওমর সানীকে দিয়ে করানো হয়। 

দুটি বাদে সালমানের কাজ করার কথা ছিল এমন দুটি ছবিমধুর মিলনঅধিকার চাই’-তেও ওমর সানী নায়ক ছিল পরে। বলা যায় সালমানের অসমাপ্ত কাজ করার কথা ছিল এমন ছবির বেশিরভাগ নায়কই ওমর সানী। 

কিন্তু প্র্যাত নায়ক মান্নার সিনেমাতে অন্য কোন অভিনেতাকে আর কাজ করতে হয়নি। কারন অভিনয়টা শেষ করে রেখে গিয়েছিলেন তিনি। তাই ডাবিংয়ের মধ্য দিয়েই শেষ হয়েছে অসমাপ্ত সিনেমার কাজ। সেই সিনেমাতে শেষবারের মতো নায়ক মান্নাকে দেখবেন ভক্তরা। 

এখন থেকে ফেসবুক চালাতে হলে পকেট হবে ফাঁকা!

গোটা বিশ্বজুড়ে মানুষ জড়িয়ে আছে এমনই একটি অ্যাপ ফেসবুক। বলা যায়, এই অ্যাপের মধ্য দিয়েই ঘন্টার পর ঘন্টা সময় কাটে মানুষের। অনেকেই আবার আছেন যারা এই ফেসবুকফ্রিক। অর্থা এই অ্যাপে আসক্ত। আর তাদের জন্যই চলে এসেছে দুঃসংবাদ। কারন এখন থেকে আর ফ্রিতে নয়, বরং টাকা দিয়ে চালাতে হবে ফেসবুক। 

শুধু ফেসবুকই নয়, পাশাপাশি ইনস্টাগ্রাম চালানোর জন্য টাকা দিতে হবে অ্যাপ ব্যবহারকারীদের। আর এমনই পেইড সিস্টেম পরিকল্পনা করেছে মেটা। 

প্রশ্ন আসতে পারে, হুট করেই কেন সামনে এসেছে এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে মেটা। এই পরিকল্পনায় বাংলাদেশের নাম নেইতো

আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, বিভিন্ন আইনি জটিলতার কারণে ইউরোপীয় ইউনিয়নে (ইইউ) ব্যবসা করা কঠিন হয়ে পড়েছে মেটার। সমস্যা সমাধানে নতুন এক উদ্যোগ নিতে যাচ্ছে প্রতিষ্ঠানটি। 

ইইউর দেশগুলোতে দুই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক ইনস্টাগ্রামে পেইড সিস্টেম চালু করার পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে মেটা। এক প্রতিবেদনে এমনটাই বলছে মার্কিন সংবাদমাধ্যম নিউইয়র্ক টাইমস।

বর্তমান সময়ে ফেসবুক ব্যবহারকারীদের চোখে যেই বিষয়টি সর্বাধিক চোখে পড়ে সেটি হচ্ছে বিজ্ঞাপন। যেকোন ভিডিও কিংবা রিলস দেখার ক্ষেত্রে কিংবা স্ক্রল করতে গেলেই হরহামেশাই ইচ্ছা থাকুক আর না থাকুন বিজ্ঞাপন দেখতে হচ্ছে। 

কিন্তু জানা গেছে, বিজ্ঞাপনের কারণে অনেকেই ফেসবুক ইনস্টাগ্রাম চালাতে গিয়ে বিরক্ত হন। আর এই কথা ভেবেইতো অনেক আগেই পেইড সিস্টেম চালু করেছিল ইউটিউব। এমনকি বাংলাদেশেও এই ফিচার যুক্ত হয়েছে। 

তাই এবার ইইউর দেশগুলোতে একই পথে হাঁটতে যাচ্ছে মেটা। অনেকদিন দরেই এমন চিন্তা থাকলেও অবশেষে এখন পরিকল্পনা করেই ফেলেছে সংস্থাটি। 

মেটার উচ্চপদস্থ তিনজন কর্মকর্তার বরাতে মার্কিন সংবাদমাধ্যম নিউইয়র্ক টাইমস বলছে, সরকারি বিভিন্ন নীতির কারণে বিভিন্ন দেশে বিভিন্ন উপায়ে ব্যবসা করতে হচ্ছে। আমেরিকায় যে নিয়মে সহজেই ব্যবসা করা যাচ্ছে, ইউরোপে তেমনভাবে করা যাচ্ছে না। 

আর তাই, নিজেদের ব্যবসাকে সফল রাখতেই পেইড সিস্টেম এর উদ্যোগ হাতে নিয়েছে মেটা। যার ফলে এখন থেকে ফেসবুক চালাতে গুনতে হবে টাকা। তবে কবে নাগাদ এই ফিচার যুক্ত হবে, বিষয়টি এখন পর্যন্ত মেটার কোন কর্মকর্তা জানাননি। 

এই ফিচার আনা হলে নতুন মাত্রা যুক্ত হবে মেটায়। নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ পরিশোধ করে এই ফিচার নিলে ফেসবুক ইনস্টাগ্রাম ব্যবহারকারীরা অ্যাপে আর কোনো ধরনের বিজ্ঞাপন দেখতে পাবেন না। 

পেইড সিস্টেম চালু থাকলেও ফ্রি ফেসবুক ইনস্টাগ্রাম চালানোর ব্যবস্থাও রাখবে মেটা। এছাড়া নতুন ফিচার পেতে কী পরিমাণ অর্থ খরচ করতে হবে, ব্যাপারেও মেটার এই তিন কর্মকর্তা তেমন কিছুই জানাননি। 

মূলত বিজ্ঞাপনের কারণেই ইউরোপে একের পর এক মামলা হচ্ছে মেটার নামে। ফলস্বরুপ, কোটি কোটি ডলার গচ্ছা যাচ্ছে সংস্থাটির।  তাই লোকসান থেকে ঘুরে উঠতেই নতুন পথে মেটা। 

কিন্তু ব্যবহারকারীরা যদি বিজ্ঞাপন দেখতে না চান, তবে অর্থ খরচ করে বা ফেসবুক সাবস্ক্রাইব করে ফেসবুক চালাতে হবে। কিন্তু রাজি হবেন কয়জন?

অনেকেই হয়তো টাকা খরচ করে ফেসবুক চালাতে রাজি হবে না। ফেসবুক কর্তৃপক্ষও সেটি জানে। তাই বিষয়টি নিয়েও পরীক্ষানিরীক্ষা শুরু করেছে ফেসবুক কর্তৃপক্ষ।

কারন এখন ফেসবুক ব্যবহার করতে টাকা লাগে না বলে ফেসবুক ব্যবহারকারী বাড়ছে। কিন্তু অর্থের বিনিময়ে ফেসবুকের বিশেষ সংস্করণ চালু হলে ব্যবহারকারী বাড়ানো যাবে কি না, সে বিষয়টিও বিবেচনা করছে ফেসবুক কর্তৃপক্ষ।

যান চলাচলের জন্য উন্মুক্ত ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে!

জল্পনাকল্পনা শেষে এবং অপেক্ষার প্রহর কাটিয়ে অবশেষে উদ্বোধন হল দেশের প্রথম এলিভেটেড এক্সপ্রেস। এরই মধ্য দিয়ে স্বস্তির মুখ দেখয়ার সুযোগ মিলেছে নগরবাসীর। 

২রা সেপ্টেম্বর, শনিবার এক্সপ্রেসওয়েটি উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এসময় উপস্থিত ছিলেন সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরসহ অন্যান্য নেতারা। 

বিকেল সাড়ে ৩টায় শেরেবাংলা নগরের পুরাতন বাণিজ্য মেলার মাঠে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে এক্সপ্রেসওয়েটির উদ্বোধন হয়েছে। উদ্বোধনের পর বিমানবন্দরফার্মগেট অংশটি যান চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হয়েছে। 

এখন আর ঘন্টার পর ঘন্টা জ্যামে বসে না থেকে স্বল্প সময়ের মধ্যে এক্সপ্রেস ওয়ে ব্যবহার করে যেতে পারবেন গন্তব্যে। আর এই পুরো সুযোগ কাজে লাগাতে পারবেন বিমানবন্দর , কুড়িল, বনানী, মহাখালীতে, বিজয় ফার্মগেটে যাতায়াতকারী জনসাধারণ।

তবে আপাতত দীর্ঘ প্রতীক্ষিত ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে আংশিকভাবে চালু হওয়ায় এখন থেকেই নগরবাসীর জন্য এই স্বস্তি বাড়ছে। বিমানবন্দর থেকে ফার্মগেট পর্যন্ত ১১. কিলোমিটার অংশটি উদ্বোধন হয়েছে ইতিমধ্যে, যা শহরের অন্যতম ব্যস্ততম বিমানবন্দর সড়কে বিকল্প রুট হিসাবে কাজ করবে।

এদিকে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এই অংশটি চালু হলে বিমানবন্দর থেকে ফার্মগেটে পৌঁছাতে ১০ মিনিটেরও কম সময় লাগবে, যা সাধারণত নিয়মিত রাস্তায় এক ঘণ্টারও বেশি সময় লাগে। গতিসীমা নির্ধারণ করা হয়েছে ঘণ্টায় ৬০ কিলোমিটার।

ঢাকাচট্টগ্রাম মহাসড়কের কাওলা, কুড়িল, বনানী, মহাখালী, তেজগাঁও, মগবাজার, কমলাপুর, সায়েদাবাদ, যাত্রাবাড়ী থেকে কুতুবখালী পর্যন্ত এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের মোট দৈর্ঘ্য ৪৬ দশমিক ৭৩ কিলোমিটার।

২০১১ সালের ১৯ জানুয়ারি প্রথম চুক্তি সইয়ের এক যুগ পর আলোর মুখ দেখছে ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে প্রকল্প। 

এক্সপ্রেসওয়ে সংশ্লিষ্ট সূত্র বলছে, বিমানবন্দর এলাকায় দুটি, কুড়িলে তিনটি, বনানীতে চারটি, মহাখালীতে তিনটি, বিজয় সরণিতে দুটি ফার্মগেটে তেজগাঁও কলেজের সামনে নামছে একটি র্যাম্প। 

এর মধ্যে বনানী মহাখালীর দুটি র্যাম্পের কাজ শেষ হয়নি। এজন্য আপাতত র্যাম্প দুটি বন্ধ থাকবে।

এদিকে বুয়েটের সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক হাদিউজ্জামান বলেন, ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েসহ দুটি এক্সপ্রেসওয়ের উদ্দেশ্য ছিল ঢাকা শহরের অভ্যন্তরে যানবাহন, বিশেষ করে ভারী যানবাহনের জন্য একটিভার্টিকাল বাইপাসতৈরি করা।

অর্থাৎ, ঢাকা আশুলিয়া এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েঢাকা ইপিজেড এলাকা থেকে আশুলিয়া আবদুল্লাহপুর হয়ে আসার পর বিমানবন্দর এলাকার কাছে ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের সাথে যুক্ত হবে। 

২০ কিলোমিটার এক্সপ্রেসওয়েটিও ২০২৬ সালের জুনের সময়সীমা নিয়ে নির্মাণাধীন রয়েছে। ঢাকা এক্সপ্রেসওয়ে উদ্বোধনের পাশাআপ্সহি বেধে দেয়া হয়েছে নিয়ম।

সেই অনুযায়ী, থ্রি হুইলার, সাইকেল এবং পথচারীদের এক্সপ্রেসওয়েতে চলাচল করতে দেওয়া হবে না।একই সাথে মোটরবাইক এখনই চলতে পারবে না।

এর আগে সড়ক পরিবহন সেতু মন্ত্রণালয় ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরফার্মগেট অংশের টোল রেট ৮০ টাকা থেকে ৪০০ টাকা নির্ধারণ করে।

ক্যাটাগরি এর অধীনে যে কোনো স্থান থেকে বিমানবন্দরফার্মগেট অংশ অতিক্রম করার জন্য গাড়ি, ট্যাক্সি, জীপ, স্পোর্টস ইউটিলিটি ভেহিকল, মাইক্রোবাস (১৬ আসনের নিচে) এবং হালকা ট্রাক ( টনের নিচে) টোল রেট ৮০ টাকা।

মাঝারি ট্রাকের জন্য (ছয় চাকা পর্যন্ত) যে কোনো পয়েন্ট থেকে রুট পার হওয়ার জন্য টোল রেট ক্যাটাগরি এর অধীনে ৩২০ টাকা।

ক্যাটাগরি এর অধীনে যে কোনো পয়েন্ট থেকে রুট পার হওয়ার জন্য ট্রাকের (ছয় চাকার বেশি) টোল রেট ৪০০ টাকা। 

যে কোনো পয়েন্ট থেকে রুট পার হওয়ার জন্য যে কোনো বাসের (১৬ সিটের বা তার বেশি) টোল রেট ক্যাটাগরির অধীনে ১৬০ টাকা।

তবে স্বস্তির মুখ দেখার পাশাপাশি, জনসাধারনের মনে অন্য প্রশ্নও ঘুরপাক খাচ্ছে, এই এক্সপ্রেসওয়ে ব্যবহারে যেমন স্বস্তির সুযোগ রয়েছে তেমনি নতুন ভোগান্তির কারন তৈরি হচ্ছে নাতো?

কারন প্রকল্পের শুরু থেকেই পরিকল্পনাবিদেরা বলছেন, শহরের মধ্যে নামার ্যাম্প বিশেষ করেবনানী, মহাখালী বিজয় সরণিতে গাড়ির চাপ তৈরি করবে।

পরিকল্পনাবিদ ইকবাল হাবীব বলেন, এক্সপ্রেসওয়েতে রাস্তা ভাগ হচ্ছে, কিন্তু গাড়ির পরিমাণ সেই একই আছে। ঢাকায় যে গাড়িগুলো এক্সপ্রেসওয়েতে উঠবে, সেগুলো সুবিধা পাবে। যে গাড়িগুলো নগরের বিভিন্ন ্যাম্পে নামবে, সেখানে তো আগে থেকেই গাড়ির একটা জট থাকবে। ফলে আরও জট হতে পারে।

ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে ৭ দিনের ব্যবধানে দুই ভাই-বোনের মৃত্যু!

বছরের সেপ্টেম্বর মাস। এখন পর্যন্ত যেন নগরবাসীর জন্য সবচেয়ে বড় আতংকের নাম ডেঙ্গু। যেই আতংকের সাথে লড়াই করে কেউ পার পেয়ে যায়, কেউ আবার জীবন হারায়। 

আর সেই তালিকায় যোগ হয়েছে দুই ভাইবোনের নাম। দেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে দিনের ব্যবধানে বিদায় নিয়েছেন একই পরিবারের ফুটফুটে দুই সন্তান। 

ডেঙ্গু! যা এবছর যেন দেশবাসীর কাছে কোন মহামারীর থেকে কম নয়। কারন বনছর বেড়েছে ডেঙ্গুর প্রকোপ এবং মৃত্যুর সংখ্যা। শহরের পাশাপাশিপাশি পার্বত্য এলাকা এবং গ্রামেও রয়েছে এর বিস্তার। 

ফলাফলস্বরুপ ডেঙ্গুর ভয়াবহতা এতই ভয়ানক হয়ে দাড়িয়েছে, যা গেল কয়েক বছরের মধ্যে মানুষ কখনও দেখেননি। আর তাইতো এর প্রকোপ থেকে বাঁচতে জনসাধারণ মরিয়া হয়ে আছেন। কিন্তু তবুও যেন মিলছে না নিস্তার।  

আব্বু ঢাকায় অনেক মশা, ঢাকায় থাকবো না’-এমনই কথা ভেষে বেড়াচ্ছে গণমাধ্যমে। কথাটি বলেছিল এক অসহায় বাবার ফুটফুটে সন্তান। কারন মশার কামড়েই যে ভাইকে হারিয়েছিল এক সপ্তহ আগে। 

তাই বারংবার বাবার কাছে সন্তানের আবদার, থাকবে না নগরে। কিন্তু সেই আবদার রাখতে পারলেন না মাবাবা কেউই। কারন এর আগেই যে সেই সন্তান ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে বিদায় নিয়েছে দুনিয়া থেকে। 

দুই সন্তানকে হারিয়ে এখন নিঃস্ব বাবামা। জীবন থেকে যেন বেঁচে থাকার আশা ফুরিয়ে গেছে মোহাম্মদ ইব্রাহিম রাবেয়া আক্তার দম্পত্তির। গত ১৬ আগস্ট প্রথমে বছরের ছেলে আরাফাত জাহান রাউফের ডেঙ্গু ধরা পড়ে।

গত১৪ আগস্ট আরাফাতের হালকা জ্বর আসে। ১৫ আগস্ট এলাকার এক চিকিৎসকের কাছে নেওয়া হয়। ১৬ আগস্ট রক্তের পরীক্ষায় ডেঙ্গু পজিটিভ আসে। 

 ডেঙ্গু ধরা পড়ার পর থেকে দ্রুত প্লাটিলেট কমতে থাকে তাদের বড় সন্তানের। কিন্তু  চিকিৎসক বলেছিলেন, হাসপাতালে নেওয়ার দরকার নেই। কিন্তু পরের দিন ১৭ আগস্ট প্লাটিলেট দ্রুত কমতে থাকে। 

১৮ আগস্ট হাসপাতালে ভর্তি করার আগেই আরাফাত মারা যায়। হাসপাতালে নেওয়ার পর চিকিৎসকেরা জানান, ছেলে মারা গেছে। ভাইয়ের মৃত্যুর পর অসুস্থ হয়ে পড়ে বোন ইসনাত জাহান রাইদা। 

জ্বর আসার পরেই বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয় তাকে। রেন্টকার ব্যবসায়ী মোহাম্মদ ইব্রাহিম জানালেন, ধানমন্ডির একটি হাসপাতালের পিআইসিইউতে মেয়েকে পাঁচ দিন রেখে মেয়ে ভালো আছে বলে বাসায় আনতে বলে। 

তবে মেয়েকে বাসায় আনার পরই আবার অসুস্থ হয়ে পড়ে। তখন মহাখালীর আরেকটি বেসরকারি হাসপাতালের পিআইসিইউতে ভর্তি করা হয়। ওই হাসপাতাল তিন লাখ টাকা দিয়ে সাতটি ইনজেকশন দেওয়ার কথা বলেছিল। দুটি ইনজেকশন দেওয়াও হয়। কিন্তু বাবামার শেষ সম্বল বছর বয়সের রাইদাও ২৫ আগস্ট সকালে না ফেরার দেশে চলে যায়।

দুই সন্তানের আকস্মিক মৃত্যু কোনোভাবেই মানতে পারছেন না বাবামা। সাজানো গোছানো সংসারজুড়ে শুধু সন্তানদের স্মৃতি। তাই রাজধানীর মিরপুরের মধ্য পাইকপাড়ার বাসা ছেড়েছেন তারা।

জানা গেছে, রাজধানীর আইকন একাডেমি নামে একটি স্কুলে রাউফ কেজি আর রাইদা নার্সারিতে পড়ত। শ্রেণি শিক্ষকদেরও চোখের মণি ছিলো দুইভাইবোন। স্কুলের দুই শিক্ষার্থীর এমন মৃত্যুতে শিক্ষকরাও শোকাহত।

দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ মৃত্যু আর আক্রান্তের রেকর্ড হয়েছে চলতি আগস্ট মাসে। মাসে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে ৩৪২ জন। আর চলতি বছর ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে মোট মারা গেছে ৫৯৩ জন।

এদিকে ডেঙ্গুতে জ্বর ছেড়ে গেলেও মৃত্যুর দিকে ধাবিত হচ্ছেন আক্রান্তরা। বিশেষজ্ঞদের ধারনা, একাধিক স্ট্রেইন দ্বারা যারা আক্রান্ত হচ্ছে তাদের মধ্যে জটিলতাটা বেশি হচ্ছে।

জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. বেনজির আহমেদ বলেন, এটা শুধু বয়স্ক মানুষ, যাদের আগে থেকেই রোগ আছে তাদের হচ্ছে এমনটা না। ইয়াং মানুষ যাদের অন্য রোগ নেই তাদেরও হচ্ছে। এতে আমার ধারনা, একধিক স্ট্রেইন দ্বারা যারা আক্রান্ত হচ্ছে তাদের মধ্যে জটিলতাটা বেশি হচ্ছে।

ডেঙ্গু থেকে সহসাই মুক্তি মিলছে না জানিয়ে বেনজির আহমেদ বলেন, জনসচেতনতায় সরকারি সংস্থাগুলোকে আরও সক্রিয় ভূমিকা পালন করতে হবে।

 

ইতিহাসের অন্যতম ভয়াবহ দাবানলে পুড়ছে যুক্তরাষ্ট্রের অঙ্গরাজ্য!

হৃদয় বিদারক পরিস্থিতি যুক্তরাষ্ট্রের। পুড়ছে দেশটির বেশ কিছু অঙ্গরাজ্য। প্রায় এক সপ্তাহ ধরে চলা দাবানলের থাবায় সব পুড়ে ছাই। সহায় সম্বল হারিয়ে নিঃস্ব ক্ষতিগ্রস্থ অঙ্গরাজ্যের বাসিন্দারা। এর মধ্যে সর্বাধিক বিপাকে হাওয়াই দ্বীপের মাউই কাউন্টিই অঙ্গরাজ্যটি। 

ইতিহাসের সবচেয়ে ভয়াবহ দাবানলের সামনে বনে যাচ্ছে সাধারন মানুষ। বাড়ছে মৃতের সংখ্যা এবং বাস্তুচ্যুত হয়ে পড়ছে হাজার হাজার মানুষ। বলা হচ্ছে বিগত ১০০ বছরের মধ্যে সবচেয়ে ভয়ানক দাবানলের স্বাক্ষী হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। 

ইতিহাসের অন্যতম ভয়াবহ এই দাবানলে নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাড়িয়েছে ৯৩ জনে। এখনও নিখোঁজ আছে শত শত মানুষ। ইতিমধ্যে পুড়ে গেছে মাউই দ্বীপের ৮০ শতাংশের বেশি অঞ্চল। জানা গেছে, মাউইতে কমপক্ষে আরো দুটি দাবানল জ্বলছে। যদিও এখন পর্যন্ত সেখান থেকে কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি। 

এরই সাথে ঐতিহাসিক লাহাইনা শহর পুরোপুরি পুড়ে এখন শুধু ছাই। লাহাইনার উত্তরে পশ্চিম মাউইএর উপকূলীয় এলাকা কানাপালিতে শুক্রবার সন্ধ্যায় আগুনের চতুর্থ দফা শুরু হয়। এক পর্যায়ে আগুন নেভানো গেলেও, ছাই ছাড়া কিছু বাকি নেই সেখানে। 

স্থানীয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে সময় বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বাড়তে পারে নিহতের সংখ্যা। আর তাই ঘরবাড়ি ছেড়ে নিরাপদ স্থানে যেতে বলা হয়েছে হাজার হাজার বাসিন্দাদের। 

জানা গেছে, এই দাবানল এতটাই ছড়িয়ে পড়েছে, যার ফলে ঘর বাড়ি এবং অন্যান্য স্থাপনা মিলিয়ে প্রায় ১৭০০ ভবন ধ্বংস হয়েছে। এরই সাথে, ক্ষয়ক্ষতির পরিমান এখন পর্যন্ত ১০০ কোটি ডলার ছাড়িয়েছে। 

গত মঙ্গলবার ৮ই আগস্ট এই দাবানলের সূত্রপাত হয়েছিল। পরে হারিকেনডোরারপ্রভাবে তৈরি হওয়া প্রচণ্ড বাতাসের কারণে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ে। এই দাবানলের ভয়াবহতা বিবেচনা করে গভর্নর জোস গ্রিন সূত্রপাতের দিনটিকেহৃদয়বিদারক দিনহিসেবে উল্লেখ করেছেন।

 ধ্বংযজ্ঞ চালানো এই দাবানলের সূত্রপাত কিভাবে হয়েছিল তা এখন পর্যন্ত জানা যায়নি। তবে যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় আবহাওয়া সংস্থা কয়েকদিন ধরে হাওয়াইয়ে দমকা হাওয়া এবং শুষ্ক আবহাওয়ার ব্যাপারে সতর্কতা দিয়ে আসছিল। যা ধরনের আবহাওয়া একটি দাবানলের জন্য পূর্ব লক্ষন।

বার্তাসংস্থা রয়টার্স রোববার (১৩ আগস্ট) এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের বন বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, দেশটিতে যত দাবানলের সূত্রপাত হয় তার ৮৫ শতাংশের জন্যই দায়ী থাকেন মানুষ। অপরদিকে প্রাকৃতিকভাবে মাঝে মাঝে দাবানলের সূত্রপাত হয়। প্রাকৃতিক কারণের মধ্যে রয়েছে বজ্রপাত আগ্নেয়গিরি।

এদিকে সংবাদমাধ্যম সিএনএনকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে, ইয়েল স্কুল অব এনভায়রনমেন্টের গবেষক এবং  বিজ্ঞানী জেনিফার লোপেজ জানিয়েছেন, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে ধরনের অস্বাভাবিক ঘটনা ঘটছে যুক্তরাষ্ট্রে।

তিনি বলেছেন, ‘হাওয়াইয়ে এত ভয়াবহ দাবানল, বিষয়টি শুনতেই অস্বাভাবিককারন এই অঙ্গরাজ্যটি একটি ভেজা এবং গ্রীষ্মমণ্ডলীয় দ্বীপ। কিন্তু জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে অস্বাভাবিক বিষয় স্বাভাবিক হয়ে যাচ্ছে।

তার মতে, হাওয়াইয়ের দাবানল এত ভয়াবহ হয়েছে শক্তিশালী বাতাস এবং শুষ্ক পরিবেশের কারণে। দ্বীপটির ভৌগলিক অবস্থানের কারণে এটি আরও শক্তিশালী হয়েছে।

এদিকে মাউইএর বনবিভাগ জানিয়েছে, টানা এক সপ্তাহ ধরে চলা দাবানলের আগ্রাসনে বনাঞ্চলের শত শত একর বনভূমি পুড়ে গেছে। অনেক জায়গায় ছোট ছোট আকারে আগুন জ্বলছে। পরিস্থিতি এখনো বিপজ্জনক। পরিস্থিতি বিবেচনায়, সেখানকার বাসিন্দাদেরফায়ার জোনথেকে দূরে থাকার পরামর্শ দিয়েছে মাউই বনবিভাগের প্রধান ব্রাড ভেনচুরা।

এক শতাব্দী আগে, ১৯১৮ সালের ক্লোকেট শহরের আগুন খরাপীড়িত উত্তর মিনেসোটায় ছড়িয়ে পড়ে এবং বেশ কয়েকটি গ্রামীণ সম্প্রদায়ের হাজার হাজার বাড়িঘর ধ্বংস হয়ে শত শত লোক মারা যায়। সেই ধ্বংসলীলার ১০০ বছর পর এবার ভয়াবহ দাবানলের থাবায় পড়তে হয়েছে দেশটিকে।  

 

নায়িকা থেকে সংবাদ পাঠিকা সানাই মাহবুব!

এবার অভিনেত্রী থেকে সংবাদ পাঠিকা সানাই মাহবুব! কিন্তু কেন? নতুন কোন সমালোচনার জন্ম দিতে, নাকি এর পেছনে রয়েছে অন্য কোন কারন? 

প্রায়ই দেখা যায়, সংবাদ পাঠিকা থেকে মডেল কিংবা নায়িকা হতে। কিন্তু সানাই মাহবুবের ক্ষেত্রে ঘটলো উল্টো ঘটনা। অভিনয়ের বদলে খবর পাঠ করতে দেখা মিলল তার। 

এই মডেল এবং অভিনেত্রীর নাম মিডিয়া পাড়ায় বেশ আলোচিত। কারন তিনি যে কন্ট্রোভার্সাল একজন অভিনেত্রীও বটে। নানান বিতর্ক রয়েছে তাকে ঘিরে। 

পেশাগত জীবনের চেয়ে ব্যক্তিগত বিভিন্ন কর্মকাণ্ডের জন্য সর্বদাই সোশ্যাল মিডিয়ার চর্চার কেন্দ্রে ছিলেন সানাই। কারন শরীরে একাধিক সার্জারি করিয়ে ব্যাপক সমালোচিত হয়েছিলেন এই মডেল। 

এরই সাথে অন্যান্য তারকাদের নিয়ে কটুক্তিকর মন্তব্য করা ছিলই তার নিয়মিত কাজ। আর তাইতো তার নাম আসতেই শুরু হয়ে যায় আলোচনা সমালোচনা।

তবে কিছুদিন আগে এক সাক্ষাৎকারের জানিয়েছিলেন, তার জীবনের সকল বিতর্ক ভুলে এখন নতুনভাবে জীবন পার করতে চান তিনি। সেই কথাই রেখেছেন সানাই।  

এবার নতুন এক আঙ্গিকে ধরা দিয়েছেন অভিনেত্রী সানাই মাহবুব। ফেসবুক স্ক্রোল করতে করতে হঠাত সামনে চলে আসে একটি নিউজ ভিডিও। সেই ভিডিওতে দেখা যায় সংবাদ পাঠ করছেন আলোচিত নায়িকা সানাই মাহবুব।  

সংবাদের শিরোনামনারী কিসে আটকায়”? যেই প্রশ্নটি এখন ট্রেন্ডিং রয়েছে বটে। আর এই প্রশ্নকে ঘিরে সংবাদ পাঠ করে যাচ্ছেন সানাই। 

তার পড়নে দেখা মেলে লাল রঙের সিল্ক শাড়ি এবং গাঢ় আকাশী ক্রপটপ। টকটকে মেরুন লিপস্টিক এবং খোলা চুলে নায়িকার ভঙ্গিতে খবর পড়ছেন তিনি। 

ভিডিওটি দেখে বেশ চমকে যান নেটিজেনরা। নায়িকাকে সংবাদ পাঠিকা হিসেবে দেখে ভ্যাবাচেকা খেয়ে যান অনেকেই। আর তাই বিষয়টি খুটিয়ে দেখতে সেই অনলাইন নিউজ পেইজ ঘুরে দেখতে শুরু করেন নেটজনতারা। 

সেই পেজে দেখা যায়, সানাই মাহবুবের আরও একটি সংবাদ পাঠ করা ভিডিও রয়েছে সেখানে। যা পাবলিশ করা হয়েছিল শুক্রবার ১১ই আগস্ট। সেই ভিডিওটি সকলের চোখে ধরা না পড়লেও ধরা পড়ে যায় ১৩ই আগস্ট প্রকাশিত নিউহ ভিডিও। 

সানাই মাহবুবের এই ভিডিও রীতিমতো নেটদুনিয়ায় ভাইরাল। জানা গেছে, সেই অনলাইন নিউজ পেজে নিয়মিতই সংবাদ পাঠ করবেন তিনি। আর সেই বিষয়ের জানানও সানাই নিজেই দিয়েছেন। 

একই পেজে ১০ই আগস্ট একটি ১১ সেকেন্ডের ভিডিও বার্তায় সানাই মাহবুব জানান, আলোচিত সকল ঘটনার আপডেট নিয়ে থাকবেন তিনি। এরই সাথে, বিনোদনসহ যেকোন ঘটনার আপডেট পেতে চোখ রাখতে আমন্ত্রন জানিয়েছেন তিনি। 

তার এই ভিডিও পাবলিশ হবার পর থেকে, পেজটি সার্চ করে দেখছেন নেটিজেনরা। ফলস্বরুপ, সেই নিউজ পেজটি এখন রয়েছে ট্রেন্ডিংএ। 

সানাই মাহবুব, বাংলাদেশের মিডিয়ায় আলোচিত তার কর্মকান্ডের জন্য। কারন তিনি যে বাংলাদেশের প্রথম নায়িকা যিনি স্তন সার্জারি করে আলোচনা এসেছিলেন। যদিও ভালো কাজ পেতে এবং আলোচনায় আসতে এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু নিজের নেয়ার সিদ্ধান্তের আশানুরূপ ফল পাননি। 

মূলত মডেল হিসেবেই শোবিজে কাজ শুরু করেন সানাই মাহবুব। একই সাথে উপস্থাপনাও করেছেন এরপর ২০১৬ সালেভালোবাসা ২৪×নামে একটি সিনেমার মাধ্যমে ঢালিউডে পা রাখেন তিনি। পরবর্তীতে আরও কয়েকটি সিনেমায় চুক্তিবদ্ধ হলেও তার কোনো সিনেমাই মুক্তি পায়নি।

এর মাঝেই সার্জারির মাধ্যমে শারিরিক ঘঠন পরিবর্তন করে ফেলেন তিনি। কিছুদিন আলোচনায় থাকলেও, আবারও আড়ালে চলে যায় এই মডেলের নাম। এরপর ২০২২ সালে বিয়ে করেন সানাই। যদিও বিয়ের বছরের মাথায় বিচ্ছেদের ইঙ্গিতও দিয়েছেন তিনি নিজেই। 

বিয়ের পর মিডিয়া থেকে দূরে থাকলেও, বিচ্ছেদের ঘোষণা দিতেই জানিয়েছিলেন আবারও কাজে ফিরবেন তিনি। যেই কথা সেই কাজ। কাজে ফিরেছছেন সানাই। তবে এবার অভিনয়ে নয়, বরং সংবাদ পাঠিকা হিসেবে। এখন দেখার পালা, সংবাদ পাঠের মধ্য দিয়ে এই অভিনেত্রীকাম ব্যাককতটা সফল হবে।

পশ্চিমবঙ্গের আদালতে মমতাজের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি!

মমতাজের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা! ১৫ লক্ষ টাকা নিয়ে গায়েব! মামলা পশ্চিমবঙ্গের আদালতে! সংসদ সদস্য এবং দুই বাংলার তুমুল জনপ্রিয় সঙ্গীত শিল্পী মমতাজ রীতিমতো অস্বস্তিকর অবস্থায়!

বাংলাদেশের এই ক্ষমতাসীন দলের সংসদ সদস্যের বিরুদ্ধে রয়েছে চুক্তিভঙ্গের অভিযোগ ।কথা দিয়ে নাকি কথা রাখেননি মমতাজ। পারফর্ম্যান্সের জন্য টাকা নিয়েও অনুষ্ঠানে যোগ দেননি তিনি। 

গত ১৫ বছর ধরেই পশ্চিম বঙ্গের আদালতে চলছিলো এই মামলা। জানা যায়, প্রায় চৌদ্দ বছর আগে পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে নিয়মিত অংশ নিতেন মমতাজ। 

২০০৪ সাল থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত বিভিন্ন অনুষ্ঠানে গান গাওয়ার জন্য সেখানকার শক্তিশঙ্কর বাগচী নামে এক ইভেন্ট অর্গানাইজারের সাথে গায়িকার লিখিত চুক্তি হয়। 

সে অনুযায়ী ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে বহরমপুরের একটি অনুষ্ঠানে প্রধান শিল্পী হিসেবে মমতাজের সাথে ১৪ লক্ষ রূপীর বিনিময়ে চুক্তি হয়েছিলো। 

কিন্তু চুক্তি মোতাবেক অর্থ অগ্রিম নিয়ে কনসার্টে হাজিরই হননি মমতাজ। আর এজন্য ভেন্যুতে ব্যাপক ভাঙচুর হয়।  এতে করে চরম হেনস্তার মুখে পড়তে হয় অনুষ্ঠানের আয়োজক শক্তিশঙ্কর বাগচীকে।

অভিযোগ উঠেছে, সেই টাকা ফেরত চাইলে তা দিতে সরাসরি অস্বীকার করেন মমতাজ। এরপর চুক্তিভঙ্গের অভিযোগ নিয়ে স্থানীয় থানার দ্বারস্থ হন শক্তি বাগচি।  

কিন্তু থানা অভিযোগ গ্রহণ করতে অস্বীকৃতি জানায়। এরপরই এক প্রকারের বাধ্য হয়েই সরাসরি আদালতে মামলা ঠুকে দেন মুর্শিদাবাদের একটি আদালতে। 

দীর্ঘদিন পর গত ৯ই অগস্ট মুর্শিবাদবাদের মুখ্য বিচার বিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেট অলক দাস মমতাজের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির নির্দেশ দিয়েছেন

তবে এই ঘটনা এবারই প্রথম নয়, এর আগেও তিন তিনবার গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হয়েছিল মমতাজের নামে, প্রত্যেকবারই নানান টালবাহানা করে সেই পরোয়ানা এড়িয়েছেন মমতাজ।

জানা গিয়েছে, গত ৯ই অগস্ট মুর্শিদাবাদের মুখ্য বিচার বিভাগীয় আদালতে হাজির হওয়ার কথা ছিল গায়িকার। বিচারক আগেই জানিয়েছিলেন ওইদিন চার্জ  গঠন করা হবে মমতাজের নামে। উপস্থিত না হলে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির কথাও জানানো হয়েছিল, তা সত্ত্বেও হাজির হননি মমতাজ বেগম।

মমতাজের বিরুদ্ধে বিশ্বাসভঙ্গ, প্রতারণাসহ একাধিক ধারায় মামলা হয়েছে। সেই সূত্রে ২০০৯ সালে মমতাজের বিরুদ্ধে সমন জারি করে আদালত। 

পরে সমন কার্যকর না করায় তার বিরুদ্ধে জারি হয় গ্রেপ্তারি পরোয়ানা। এরই মধ্যে আগাম জামিন নিয়ে নিম্ন আদালতের নির্দেশ চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন শক্তিশঙ্কর বাগচী। 

২০১০ সালে নিম্ন আদালতের নির্দেশ খারিজ করে মমতাজের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি রাখে কলকাতা হাইকোর্ট। 

তবে মামলায় সহযোগিতার প্রতিশ্রুতি দিয়ে একে একে তিনবার আগাম জামিন পেয়ে যান গায়িকা। আর গত ১৫ বছর ধরে আদলতের মারপ্যাচে একরকম নাজেহাল অবস্থা আয়োজকের! 

এ বিষয়ে বাংলাদেশের একটি গণমাধ্যমকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে আয়োজক বলেন,  ‘এই মামলায় আজ আমি নিঃস্ব হয়ে গেছি। আমার সেদিনের ১৪ লাখ রুপি অগ্রিম নিয়ে অনুষ্ঠান না করায় বহু আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছি। আমি ন্যায়বিচার চাই। আমার অগ্রিম অর্থ সুদসহ এবং মামলার সব খরচসহ আমার ১৫ বছরের হয়রানির ক্ষতিপূরণের টাকা চাই।

এর আগে মামলায় সহযোগিতা করার কথা বলেই তিনবার জামিন পান মমতাজ। কিন্তু গত ৯ই অগস্ট হাজিরা ফের এড়িয়ে যান তিনি। তারপরেই আবার গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে। এখন দেখার বিষয় হচ্ছে, বিতর্কের জল কতদূর গড়ায়।

আল-কায়দার নতুন টার্গেট বাংলাদেশ এবং ভারত!

আলকায়দার নতুন টার্গেট বাংলাদেশ। সাথে রয়েছে ভারত। এই দুই দেশে পুনরায় সংগঠিত হবার চেষ্টায় মরিয়া আল কায়দা গোষ্ঠীটি। এমন তথ্য বেড়িয়ে এসেছে আন্তর্জাতিক মহলে। চলুন জেনে নেই বিস্তারিত।

সংবাদ সংস্থা ইন্ডিয়া টুডে জানিয়েছে, গত সপ্তাহে প্রকাশিত দ্য অ্যানালিটিকাল সাপোর্ট অ্যান্ড স্যাংশন্স মনিটরিং টিম অব দ্য ১২৬৭ আইএসআইএল (দায়েশ) এবং জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের আল-কায়েদা স্যাংশন্স কমিটির ৩২তম প্রতিবেদনে ওই সতর্কবার্তা এসেছে।

মূলত ভারতের জম্মু ও কাশ্মীর, বাংলাদেশ ও মিয়ানমারে সক্রিয় হওয়ার লক্ষ্য নিয়ে আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসী দল আল কায়েদা তাদের আঞ্চলিক মিত্রদলগুলোকে আবারও ‘সংগঠিত’ করছে বলে সতর্কবার্তা এসেছে জাতিসংঘের সেই প্রতিবেদনে।

জাতিসংঘের একটি সদস্য রাষ্ট্রের পর্যবেক্ষণ তুলে ধরে ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আল কায়েদা এখন একিউআইএসকে (আল-কায়েদা ইন দ্য ইন্ডিয়ান সাবকন্টিনেন্ট) সংগঠিত করছে, তাদের লক্ষ্য বাংলাদেশ, জম্মু ও কাশ্মীর এবং মিয়ানমারে কার্যক্রম বিস্তৃত করা।

আল-কায়েদার মূল ঘাঁটি আফগানিস্তানে এখনো তাদের ৩০ থেকে ৬০ জন সদস্য এবং প্রায় ৪০০ যোদ্ধা রয়েছে। পরিবারের সদস্য ও সমর্থক মিলিয়ে এ সংখ্যা দুই হাজারে পৌঁছাতে পারে বলে ধারণা দেওয়া হয়েছে প্রতিবেদনে।

সেখানে বলা হয়েছে, ভারতীয় উপমহাদেশে আল-কায়েদার প্রায় ২০০ যোদ্ধা ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছে, যাদের নেতা ওসামা মেহমুদ।

এছাড়া আফগানিস্তানে সক্রিয় আরেক জঙ্গি দল আইএসআইএল-কে কে এখন ওই অঞ্চলের জন্য সবচেয়ে বড় হুমকি হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে জাতিসংঘের প্রতিবেদনে। পরিবারের সদস্যদের মিলিয়ে আইএসআইএল-কে এর ৪ থেকে ৬ হাজার সদস্য আফগানিস্তানে রয়েছে।

সানাউল্লাহ গাফারিকে আইএসআইএল-কে এর সবচেয়ে উচ্চাভিলাষী নেতা ধরা হয়। যদিও একটি সদস্য রাষ্ট্র বলেছে, সানাউল্লাহ গত জুনে আফগানিস্তানে নিহত হয়েছেন। তবে ওই তথ্যের সত্যতা এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি বলে জাতিসংঘের প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।

জাতিসংঘের প্রকাশিত প্রতিবেদনটির মাধ্যমে আর জানা গেছে, “আইএসআইএল-কে আফগানিস্তানে তালেবান এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় উভয়ের উপরই হামলা করছে এবং দিন দিন তাদের হামলার সক্ষমতা এবং সফলতা বাড়ছে। তারা ‘হাই প্রোফাইল টার্গেটে’ হামলার কৌশল নিয়েছে, যাতে দেখানো যায় দেশটির বর্তমান তালেবান প্রশাসন নিরাপত্তা দিতে কতটা ব্যর্থ।”

বলাই বাহুল্য আফগানিস্তান এখনো সন্ত্রাসী এবং জঙ্গি দলগুলোর চারণভূমি হয়ে আছে। দেশটিতে প্রায় ২০টি জঙ্গি দল সক্রিয়। তারা ওই অঞ্চলের পুরোটা জুড়ে নিজেদের প্রভাব বিস্তার করতে এবং ধর্মভিত্তিক রাষ্ট্র ব্যবস্থা গড়ে তুলতে চাইছে।

আফগানিস্তানের কুনার ও নুরিস্তান প্রদেশে নতুন নতুন প্রশিক্ষণ সেন্টার বানিয়ে আল-কায়েদা নিজেদের ‘পুনর্গঠন’ করছে বলেও ওই প্রতিবেদনে সতর্ক করা হয়েছে।

প্রসঙ্গত ২০০১ সালে নিউ ইয়র্কের বিশ্ব বাণিজ্য কেন্দ্র (টুইন টাওয়ার), পেন্টাগন আর পেনসিলভানিয়ায় আত্মঘাতী হামলা চালিয়ে ৩ হাজারের বেশি মানুষকে হত্যার ঘটনায় পর ধীরে ধীরে পুরা বিশ্বে জঙ্গিবাদের বিস্তার ঘটায় আল-কায়েদা।

এ দলের নেতা ওসামা বিন লাদেন ২০১১ সালে পাকিস্তানে নিহত হওয়ার পর আল-কায়েদার প্রভাব কিছুটা কমে আসে। আরেক সন্ত্রাসী দল আইএস এর উত্থানও আল-কায়েদার প্রভাব কমাতে ভূমিকা রাখে।

লাদেনের মৃত্যুর পর আল-কায়েদার নেতৃত্ব দিচ্ছিলেন আয়মান আল-জাওয়াহিরি । ২০২২ সালের অগাস্টে আফগানিস্তানে সিআইএ-এর ড্রোন হামলায় তিনিও নিহত হন।

এরপরই বাংলাদেশে ২০১৩ সালের পর থেকে একের পর এক জঙ্গি হামলা ও হত্যার মধ্যে বেশ কিছু ঘটনার দায় স্বীকার করা হয়েছিল আল-কায়েদার তরফ থেকে। বাংলাদেশের আইন শৃঙ্খলা বাহিনী অবশ্য দাবি করে আসছে, ওইসব ঘটনা ঘটিয়েছে দেশীয় উগ্রবাদীরাই।

২০১৪ সালে এক অডিও বার্তায় বাংলাদেশ সৃষ্টির উদ্দেশ্য নিয়ে প্রশ্ন তুলে ‘ইসলামবিরোধী ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে জিহাদের’ ডাক দিয়েছিলেন জাওয়াহিরি। ওই বছরই আরেক অডিও বার্তায় আল-কায়েদার ভারতীয় শাখা গড়ে বাংলাদেশেও কাজ করার ঘোষণা দেন তিনি।

শুধু তাই নয়, আন্তর্জাতিক আরেক সন্ত্রাসী দল আইএসও গুলশান হামলাসহ বেশ কিছু জঙ্গি হামলার ‘কৃতিত্ব’ দাবি করেছিল। তারাও বাংলাদেশে আলাদা ‘খিলাফত’ ঘোষণা করে তাদের নেতার নাম ঘোষণা করেছিল। তবে গুলশান হামলার পর কয়েক বছর ধরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সাঁড়াশি অভিযানের মধ্যে দেশে জঙ্গি দলগুলোর তৎপরতা স্তিমিত হয়ে আসে।

বিশ্লেষকদের মতে আল কায়দার পুঃসঙ্গঠিত হওয়ার খবরে শংকিত আন্তর্জাতিক মহল। কারন দলটি বর্তমান বাংলাদেশ এবং ভারতে নজর দিয়ে রাখলেও, শংকায় আচ্ছান্ন কিন্তু অন্যান্য দেশ। কারন অতীতের ঘটনা থেকে বলাই যায়, অত্যন্ত লুকিয়ে লুকিয়ে নিজেদের গোষ্ঠী সংঘঠন করে থাকে দলটি। এরপরই নিজের মিশন কার্যকর করে থাকে। তাই এই দুই দেশের পর তাদের পরবর্তী টার্গেট কোন দেশে আটকায় তা ভাবতেই সন্দীহান অন্যান্য দেশ।