এক সপ্তাহের ব্যবধানে দাম বেড়েছে কেজিতে ৮ থেকে ১০ টাকা। গত সপ্তাহে যে পেঁয়াজ ২৫ টাকা কেজি বিক্রি হয়েছে, এখন খুচরা বাজারে তা বিক্রি হচ্ছে ৩০ থেকে ৩৫ টাকা। সোমবার রাজধানীর খিলগাঁও, মুগদা, বাড্ডা ও কারওয়ান বাজার এলাকায় ঘুরে ক্রেতা-বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে এমন তথ্য পাওয়া গেছে। খিলগাঁও কাচাবাজারে পেঁয়াজ কিনতে আসা ফখরুল ইসলাম জানান, গত সপ্তাহে দুই কেজি পেঁয়াজ কিনেছিলাম ৫০ টাকা দিয়ে। কেজি পড়েছে ২৫ টাকা। আজকে কেজি চাচ্ছে ৩৫ টাকা। এমনকি সমস্যা হলো যে হঠাৎ করেই ১০ টাকা বেড়ে গেল? দুই-তিন দোকান ঘুরে দুই কেজি কিনলাম ৬৫ টাকা নিল। মুগদায় রাস্তায় ভ্যানে পেঁয়াজ বিক্রি করছে কুদ্দুস। তিনি জানান, চারদিন আগেও ঘাটে (পাইকারি বাজারে) পেঁয়াজের কেজি খরচসহ ২১ থেকে ২২ টাকা পড়ত। এনে ২৫/২৬ টাকায় বিক্রি করেছি। এখন খরচসহ ২৮ টাকার ওপর কেনা পড়ে। হঠাৎ দাম বাড়ায় বিক্রি কম। তাই ৩০ টাকায় বিক্রি করছি।
কিন্তু ৩০ টাকায় বিক্রি করলে এখন লাভ থাকে না। কারণ কাঁচামাল অনেক ঘাটতি হয়ে যায়। পেঁয়াজের বাজার একটু চড়া বলছেন কারওয়ান বাজারের পেঁয়াজ বিক্রেতা মোজাম্মেল। তিনি জানান, গত তিন-চারদিন ধরে পেঁয়াজের বাজার বাড়তির দিকে। আজকে পেঁয়াজ খুচরা দেশি ৩২ টাকা আর হাইব্রিড ৩০ টাকায় বিক্রি করছি। দাম বাড়ার কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা পাইকারারদের কাছ থেকে কিনে বিক্রি করি। তারা দাম বাড়িয়েছে, বলছে সরবরাহ কম। পাইকারিবাজার ও আড়তে দাম বাড়ার বিষয়টি স্বীকার করে রাজধানীর শ্যামবাজারের পেঁয়াজ ব্যবসায়ীদের নেতা মেসার্স আলী ট্রেডার্সের পরিচালক মো. শামসুর রহমান বলেন, কাঁচামাল সরবরাহ কম থাকলে দাম বাড়ে।
বেশি থাকলে দাম কমে। গত কয়েক দিন সরবরাহ কম ছিল তাই বাজার এখন বাড়তি। আজকে পেঁয়াজ ২৫ থেকে ২৬ টাকায় পাইকারি বিক্রি হচ্ছে। সরবরাহ বাড়লে দাম কমে যাবে। জাতীয় সংসদে কৃষিমন্ত্রী ডক্টর আব্দুর রাজ্জাকের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশে বছরে ৩৩ লাখ মেট্রিক টন পেঁয়াজের চাহিদা রয়েছে। এর মধ্যে ২৩ দশমিক ৩০ লাখ মেট্রিক টন পেঁয়াজ দেশে উৎপাদন হয়। ঘাটতিতে থাকা বাকি পেঁয়াজ আমদানি করতে হয়।
এদিকে বিভিন্ন জেলা থেকে পাওয়া তথ্য বলছে, এবার আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় পেঁয়াজের ফলন ভালো হয়েছে। তাই হঠাৎ দাম বাড়ার কোনো কারণ নেই বলছেন খাত সংশ্লিষ্টরা। জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের পরিচালক মনজুর মোহাম্মদ শাহরিয়ার বলেন, আমরা যতটুকু জেনেছি এবার পেঁয়াজের ফলন ভালো হয়েছে। তারপরও হঠাৎ দাম কেন বাড়ছে বিষয়টি দেখতে আমাদের তদারকি টিম মাঠে যাবে। কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের এসব পণ্যের দাম নির্ধারণ করে দেয়। যদি কেউ সরবরাহর কথা বলে নিয়মবহির্ভূত দাম বাড়িয়ে থাকে তাহলে তাদের বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
Leave a Reply