ডায়াবেটিসে ভুগছেন ৩৫ লাখ নারী!

দেশের ৩৫ লাখ নারী ডায়াবেটিসে ভুগছেন। আন্তজার্তিক ডায়াবেটিস ফেডারেশন (আইডিএফ) এর অনুমিত পরিসংখ্যান অনুসারে বর্তমানে দেশে ৭১ লাখ নারী, পুরুষ ও শিশু ডায়াবেটিসে আক্রান্ত। আক্রান্তদের অর্ধেকই মহিলা।

ডায়াবেটিস বিশেষজ্ঞরা জানান, বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশে ১০০ জনের মধ্যে ২০ জন মহিলাই গর্ভকালীন ডায়াবেটিসে আক্রান্ত, যাদের অর্ধেকের বেশি পরবর্তীকালে টাইপ-২ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হন।

তারা বলেন, যেসব মায়ের গর্ভকালীন ডায়াবেটিস থাকে তাদের শিশুদেরও পরবর্তী সময়ে টাইপ-২ ডায়াবেটিস হবার ঝুঁকি অনেক বেশি। এসব বিবেচনায় রেখে এবার আন্তর্জাতিক ডায়াবেটিস ফেডারেশন মহিলা ডায়াবেটিক রোগীদের ওপর গুরুত্বারোপ করেছে।

নারীদের ডায়াবেটিস ব্যবস্থাপনায় বিশেষ উদ্যোগ নেয়ার পাশাপাশি গর্ভকালীন ডায়াবেটিসের ঝুঁকি কমাতে পরিকল্পিত গর্ভধারণের ওপর এবার বিশেষভাবে গুরুত্বারোপ করা হয়েছে।

আগামীকাল (মঙ্গলবার) বিশ্ব ডায়াবেটিস দিবস। বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশও দিবসটি যথাযথভাবে পালন করতে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা, আলোচনাসভাসহ বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে।

বিশ্ব ডায়াবেটিস দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ ডায়াবেটিস সমিতি (বাডাস) সোমবার রাজধানীর শাহবাগে বারডেম মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে। অনুষ্ঠানে প্রধান আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাডাস সভাপতি অধ্যাপক ডা. এ কে আজাদ।

‘বিশ্ব ডায়াবেটিস দিবস’র এবারের প্রতিপাদ্য ‘সকল গর্ভধারণ হোক পরিকল্পিত’।

ডা. আজাদ জানান, গর্ভকালীন ডায়াবেটিস প্রতিরোধে ‘গর্ভধারণ-পূর্ব সেবা’ দিতে বিশেষ প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছে। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সহায়তায় গর্ভধারণ-পূর্ব সেবা দিতে সারাদেশে এরই মধ্যে ৫০টি ‘গর্ভধারণ-পূর্ব সেবা কেন্দ্র’ খোলা হয়েছে, যেখানে চলতি বছরের ১৪ নভেম্বর থেকে ২০১৮ সালের ১৪ এপ্রিল পর্যন্ত বিনামূল্যে গর্ভকালীন ডায়াবেটিস পরীক্ষা করা হবে।

১৪ নভেম্বর থেকে এসব কেন্দ্রে মাত্র ৬০০ টাকায় ‘গর্ভধারণ-পূর্ব সেবা’ অব্যাহত থাকবে। এসব সেবার মধ্যে রয়েছে- গর্ভধারণ সম্পর্কিত স্বাস্থ্যঝুঁকি পরীক্ষার পাশাপাশি যথাযথ চিকিৎসা ও পুষ্টিবিষয়ক পরামর্শ, বিনামূল্যে মোবাইল হেল্পলাইনের মাধ্যমে পরামর্শ গ্রহণের সুযোগ, ফেসবুকসহ বিভিন্ন সামাজিক নেটওয়ার্কের মাধ্যমে অন্যান্য সেবাগ্রহণকারীর সঙ্গে অভিজ্ঞতা বিনিময় ও স্বাস্থ্যকর্মীদের পরামর্শ গ্রহণের সুযোগ।

ইতোমধ্যে প্রায় ৪০০ কাজি ও ৩০০ চিকিৎসককে প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়েছে।

ডা. আজাদ আরও বলেন, গর্ভবতী মায়েদের অপুষ্টি থাকলে তাদের সন্তানদের ভবিষ্যতে ডায়াবেটিস হবার ঝুঁকি অনেক বেশি থাকে। সে-কারণে বিয়ের সময় মেয়েদের এ ব্যাপারে সচেতন করতে পারলে ডায়াবেটিস প্রতিরোধে অনেক ভালো ফল পাওয়া যাবে। সরকারের গৃহীত কর্মসূচির মাধ্যমে প্রয়োজনীয় সচেতনতা সৃষ্টির পাশাপাশি ‘গর্ভধারণ-পূর্ব সেবা’ নিশ্চিত করতে পারলে প্রসবকালীন নারী ও শিশুমৃত্যুর হার কমানো এবং নারীসহ আগামী প্রজন্মকেও ডায়াবেটিসের ভয়াবহ প্রকোপ থেকে অনেকটা রক্ষা করা সম্ভব হবে।

এছাড়া মসজিদে খুতবার মাধ্যমে এবং অন্যান্য ধর্মশালায়ে ধর্মীয় নেতাদের মাধ্যমে ডায়াবেটিস প্রতিরোধের বাণী ছড়িয়ে দেয়ার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। ডায়াবেটিস সারা জীবনের রোগ। এ রোগ কখনো সম্পূর্ণভাবে সারে না। কিন্তু চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে নির্ধারিত নিয়ম-শৃঙ্খলা মেনে চললে এবং প্রয়োজনে পরিমাণ মতো ওষুধ গ্রহণ করলে এ রোগ নিয়ন্ত্রণে রেখে সুস্থ ও প্রায় স্বাভাবিক জীবনযাপন সম্ভব। ডায়াবেটিসজনিত জটিলতা থেকেও রক্ষা পাওয়া সম্ভব।

ডায়াবেটিস আছে এমন রোগীদের অন্তত শতকরা ৫০ ভাগই জানেন না যে, তাদের ডায়াবেটিস আছে- সংবাদ সম্মেলন থেকে জানানো হয়।

আজ বিশ্ব ডায়াবেটিস দিবস

আজ বিশ্ব ডায়াবেটিস দিবস। এ বছর দিবসের প্রতিপাদ্য- ‘ডায়াবেটিসের ঝুঁকি এড়াতে গর্ভধারণ হোক পরিকল্পিত’। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মতো বাংলাদেশও জনগণের মধ্যে ডায়াবেটিস সম্পর্কে সচেতনতা বাড়াতে এবার বাংলাদেশ ডায়াবেটিক সমিতিসহ (বাডাস) বিভিন্ন সংগঠন নানা কর্মসূচি গ্রহণ করেছে।

এ উপলক্ষে দেশব্যাপী ডায়াবেটিস সম্পর্কিত সচেতনতামূলক পোস্টার, লিফলেট বিতরণ ছাড়াও আজ সকাল সাড়ে ৮টায় শাহবাগ থেকে র‌্যালি বা পদযাত্রার আয়োজন করা হয়েছে। সকাল সাড়ে ১০টায় বারডেম অডিটোরিয়ামে অনুষ্ঠিত হবে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ও রোগীদের নিয়ে আলোচনা ও প্রশ্নোত্তর পর্ব।

দুপুর ১২টায় একই অডিটোরিয়ামে একটি আলোচনাসভা অনুষ্ঠিত হবে। মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী মেহের আফরোজ চুমকি প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন রোটারি জেলা ৩২৮১-এর গভর্নর রোটারিয়ান ফজলুল হক আরিফ। তারা ‘ডায়াবেটিসের ঝুঁকি এড়াতে গর্ভধারণ হোক পরিকল্পিত’ শীর্ষক রচনা প্রতিযোগিতার বিজয়ীদের মধ্যে পুরস্কার বিতরণ করবেন।

দিনের অন্যান্য কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে- সকাল ৮টা থেকে বেলা ১১টা পর্যন্ত সমিতি, বারডেম, এনএইচএন ও এইচসিডিপর উদ্যোগে শাহবাগ (জাতীয় জাদুঘরের সামনে), প্রেসক্লাব ও ধানমন্ডি রবীন্দ্র সরোবরসহ রাজধানীর বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় বিনামূল্যে ডায়াবেটিস নির্ণয়।

১৪ নভেম্বর সকাল ৮টায় বিআইএইচএস-এর উদ্যোগে মিরপুর বাংলা কলেজের সামনে থেকে মিরপুর-১ নম্বর গোল চত্বর পর্যন্ত এবং এনএইএচ-এর উদ্যোগে ধানমন্ডি রোড ১০ থেকে রবীন্দ্র সরোবর থেকে আলাদা শোভাযাত্রা বের করা হবে। ১৫, ১৬ ও ১৭ নভেম্বরও এনএইচএন-এর উদ্যোগে শহরের বিভিন্ন এলাকায় আলাদা তিনটি পদযাত্রা অনুষ্ঠিত হবে।

একই দিন সকাল ৯টায় ইব্রাহিম কার্ডিয়াক হাসপাতালে দিবসটি উপলক্ষে ফ্রি হার্ট ক্যাম্পের উদ্যোগ নিয়েছে। এতে রোগীরা বিনামূল্যে নিবন্ধন, চিকিৎসা পরামর্শ ও ওষুধ ছাড়াও ১৫ শতাংশ কমিশনে হাসপাতালের অন্যান্য পরীক্ষা করাতে পারবেন।

১৭ নভেম্বর শুক্রবার সকাল ১০টায় শাহবাগস্থ চারুকলা ইনস্টিটিউটে শিশু চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতারও আয়োজন করা হয়েছে।

যক্ষ্মা নির্মূলে বাংলাদেশকে সহায়তা দেবে রাশিয়া-ভারত-মালদ্বীপ

২০৩০ সালের মধ্যে যক্ষ্মা নির্মূলের লক্ষ্যে বাংলাদেশকে সহায়তার আশ্বাস দিয়েছে রাশিয়া, ভারত ও মালদ্বীপ। বৃহস্পতিবার রাশিয়ার মস্কোর ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারে বাংলাদেশের স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিমের সঙ্গে প্রাতঃরাশ বৈঠকে ভারতের স্বাস্থ্যমন্ত্রী জগত প্রকাশ নাড্ডা, মালদ্বীপের স্বাস্থ্যমন্ত্রী আবদুল্লাহ নাজিম ইব্রাহিম এবং রাশিয়ার স্বাস্থ্য উপমন্ত্রী তাতিয়ানা ইয়াকোভলেভা এই আশ্বাস দেন।

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য কর্মকর্তা পরীক্ষিৎ চৌধুরী স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

স্বাস্থ্যখাতে বাংলাদেশের সাম্প্রতিক সাফল্যের চিত্র তুলে ধরে বৈঠকে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জানান, স্বাস্থ্যখাতে বাংলাদেশের শহরগুলোতে বিশেষায়িত বিশ্বমানের হাসপাতাল গড়ে তোলার পাশাপাশি তৃণমূল পর্যায়ের দরিদ্র মানুষের জন্য মৌলিক চিকিৎসা নিশ্চিত করা হয়েছে।

দেশের গ্রাম পর্যায়ে প্রায় ১৪ হাজার কমিউনিটি ক্লিনিকে জনগণের জন্য বিনামূল্যে চিকিৎসা ও ওষুধের ব্যবস্থা করেছে সরকার। শিশু মৃত্যু হার হ্রাস এবং কমিউনিটি ক্লিনিকের সাফল্য বাংলাদেশকে আজ উন্নয়নশীল বিশ্বের কাছে উদাহরণ হিসেবে দেখানো হয়।

‘২০৩০ সালের মধ্যে বাংলাদেশ থেকে যক্ষ্মা নির্মূলের লক্ষ্যে বাংলাদেশ তার অঙ্গীকার অনুযায়ী কর্মসূচি গ্রহণ করছে’ একথা জানিয়ে মোহাম্মদ নাসিম রাশিয়া, ভারত এবং মালদ্বীপের মন্ত্রীদের বাংলাদেশের সাম্প্রতিক অর্জন এবং গৃহীত কর্মসূচির বিস্তারিত অবহিত করেন।

তিনি বলেন, বাংলাদেশে শহরাঞ্চলের ঘনবসতিপূর্ণ বস্তিগুলোতে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ ও জীবনাচরণের কারণে যক্ষার প্রকোপ বেশি ঘটছে। তাই শহরের বস্তিগুলোতে যক্ষা নির্মূলের জন্যে আমরা অতি সম্প্রতি ‘জিরো টিবি’ কর্মসূচি গ্রহণ করেছি। সরকারের পাশাপাশি বিভিন্ন দেশি ও বিদেশি সংস্থাও জোরদার কার্যক্রম গ্রহণ করেছে।

মন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ আজ পোলিও এবং ধনুষ্টংকারমুক্ত। কলেরা ও ম্যালেরিয়া এখন দেশ থেকে বিলুপ্তির পথে। এইডস সংক্রমণের হার অতি নগণ্য। সরকারের দৃঢ় সদিচ্ছার কারণে বাংলাদেশ থেকে যক্ষ্মাও ২০৩০ সালের মধ্যে নির্মূল হবে। এসময় বাংলাদেশের কর্মসূচির সফল বাস্তবায়নের লক্ষ্যে তিনি দেশগুলোর সরকারের কাছে সহায়তা কামনা করেন।

বৈঠকে রাশিয়া, ভারত ও মালদ্বীপের স্বাস্থ্যমন্ত্রীরা বাংলাদেশের সাফল্যে সন্তোষ প্রকাশ করেন। মস্কোয় চলমান ‘এন্ডিং টিউবারকিউলসিস ইন দ্য সাসটেইনেবল ডেভেলপমেন্ট ইরা : এ মাল্টিসেক্টরাল অ্যাপ্রোচ’ শীর্ষক সম্মেলনে যোগ দিতে স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম বর্তমানে রাশিয়ায় অবস্থান করছেন। গত ১৪ নভেম্বর রাতে তিনি ঢাকা ত্যাগ করেন।

বৃহস্পতিবার সকালে মস্কোর ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারে সম্মেলনের উদ্বোধনী অধিবেশনে মন্ত্রী যোগদান করেন। রাশিয়ার রাষ্ট্রপতি ভ্লাদিমির পুতিন সম্মেলনের উদ্বোধন করেন।

সেই দুই নার্সকে গ্রেফতার দেখাল ডিবি

বাংলাদেশ পাবলিক সার্ভিস কমিশনের (পিএসসি) নার্স নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁসে জড়িত থাকার অভিযোগে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের সেই দুই সিনিয়র নার্স মো. আরিফুল ইসলাম ও মো. সাইফুল ইসলামকে গ্রেফতার দেখাল গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।

মহানগর গোয়েন্দা ও অপরাধ তথ্য বিভাগ (উত্তর) এর মাদকদ্রব্য উদ্ধার ও প্রতিরোধ টিমের বিশেষ দল বৃহস্পতিবার রাত পৌনে ১১টায় এ দুজনকে ফাঁসকৃত ১১ সেট প্রশ্নসহ রাজধানীর শাহবাগের স্মৃতি চিরন্তনের পূর্ব পাশ থেকে গ্রেফতার করে। ডিবি পুলিশের ক্ষুদে বার্তায় এ তথ্য জানানো হয়।

সূত্র জানায়, ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা ও অপরাধ তথ্য বিভাগ (উত্তর) এর উপ-পুলিশ কমিশনার (অতিরিক্ত ডিআইজি) শেখ নাজমুল আলমের নির্দেশনায় অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার মো. শাহজাহান (পিপিএম) এর তত্ত্বাবধানে ও সিনিয়র সহকারী পুলিশ কমিশনার মো. শাহ নূর আলম পাটওয়ারী এর নেতৃত্বে মাদকদ্রব্য উদ্ধার ও প্রতিরোধ টিম দ্বারা এ অভিযানটি পরিচালিত হয়। তাদের বিরুদ্ধে শাহবাগ থানায় মামলা দায়ের হয়েছে।

নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা গেছে, মঙ্গলবার দিবাগত রাতে এ দুজনকে গ্রেফতার করা হলেও তদন্তের স্বার্থে তা গোপন রাখা হয়। গোয়েন্দা পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে ওই দুজন প্রশ্ন ফাঁসের সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন এবং পাশাপাশি একাধিক নার্স নেতার নাম বলেছে। গোয়েন্দা পুলিশ তাদের সংশ্লিষ্টতা খতিয়ে দেখছে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে গোয়েন্দা পুলিশের কর্মকর্তা জানান, গত ৬ অক্টোবর অনুষ্ঠিত পরীক্ষার আগে পরে বিভিন্ন নার্স নেতা ও পিএসসির কয়েকজন মাঝারি ও নিম্ন পদস্থ কর্মকর্তারও মোবাইল কললিস্ট পরীক্ষা করে দেখছেন। কললিস্ট পরীক্ষার মাধ্যমেই প্রশ্ন জালিয়াত চক্রের সব সদস্যদের গ্রেফতার করার দৃঢ় আশাবাদ ব্যক্ত করেন ওই গোয়েন্দা কর্মকর্তা।

গ্রেফতারকৃত দুজনের মধ্যে সাইফুল ইসলাম বাংলাদেশ নার্সেস অ্যাসোসিয়েশন (বিএনএ) ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) শাখার নির্বাচিত ছাত্রবিষয়ক সম্পাদক ও আরিফুল ইসলাম স্বাধীনতা নার্সেস পরিষদের (স্বানাপ আনিস গ্রুপ) যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক। এদের একজন ঢামেক জরুরি বিভাগে ও অপরজন মেডিসিন ওয়ার্ডে কর্মরত ছিলেন বলে জানা গেছে।

গত ৬ অক্টোবর রাজধানীর ১০টি কেন্দ্রে মোট চার হাজার ছয়শ সিনিয়র স্টাফ নার্স (ডিপ্লোমা ইন নার্সিং সায়েন্স অ্যান্ড মিডওয়াইফারি তিন হাজার ছয়শ ও মিডওয়াইফ এক হাজার) নিয়োগ পরীক্ষার বিপরীতে ১৬ হাজার নয়শ’ জন নার্স অংশগ্রহণ করেন।

শিউলি, হাসনাহেনা, রজনীগন্ধা, কামিনী নামে চার সেটের প্রশ্নপত্র ছাপে পিএসসি। কিন্তু সব সেটের প্রশ্ন ফাঁস হয়ে যায়। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ফাঁস হওয়া প্রশ্ন পরীক্ষার আগে পাওয়া যায়।

একাধিক পরীক্ষার্থী অভিযোগ করেন, পরীক্ষা শুরুর আগে ফেসবুক, ভাইবার, হোয়াটসঅ্যাপে প্রশ্ন পাওয়া যায়। পরীক্ষার হলে গিয়ে তারা দেখেন, ফাঁস হওয়া প্রশ্নেই পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হচ্ছে।

পরীক্ষার পর প্রশ্নপত্র ফাঁসের বিষয়ে জানতে পিএসসির চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মদ সাদিকের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি প্রথমে বিষয়টি গুজব বলে উড়িয়ে দেন। পরবর্তীতে প্রশ্নপত্র ফাঁসের প্রমাণ পেয়ে অনিবার্য কারণে পরীক্ষা বাতিল করে পিএসসি কর্তৃপক্ষ। এ ঘটনায় পৃথক দুটি তদন্ত কমিটিও গঠিত হয়।

রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিয়ে চিকিৎসাসেবা দেবে মিয়ানমার

মিয়ানমার সরকার রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিয়ে দ্রুত তাদের স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা সেবার পদক্ষেপ নেবে বলে জানিয়েছেন মিয়ানমারের স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. মায়িন্ত হাতুই। এজন্য তারা ইতোমধ্যে প্রস্তুতি গ্রহণ করছেন বলেও তিনি জানান। শনিবার রাশিয়ার মস্কোতে ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিমের সঙ্গে সাক্ষাৎকালে তিনি এ কথা জানান। স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের তথ্য কর্মকর্তা পরীক্ষিৎ চৌধুরী প্রেরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সাক্ষাৎকালে মোহাম্মদ নাসিম মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে সহিংসতা বন্ধ করার পদক্ষেপ নিতে সে দেশের মন্ত্রীকে অনুরোধ করেন। পাশাপাশি বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া সব রোহিঙ্গাদের দ্রুত ফিরিয়ে নিয়ে তাদের বাসস্থানসহ খাদ্য ও চিকিৎসা সহায়তা নিশ্চিত করার আহ্বান জানান।

তিনি বলেন, রোহিঙ্গারা দীর্ঘদিন যাবত নিজ দেশেই স্বাস্থ্যসেবা থেকে বঞ্চিত থেকে অপুষ্টিজনিত বিভিন্ন রোগে ভূগছে। পরিবার পরিকল্পনা সম্পর্কে ন্যূনতম ধারণাই তাদের নাই সে দেশের সরকারের অবহেলার কারণে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মানবিকতায় তারা বাংলাদেশে আশ্রয়, খাদ্য ও স্বাস্থ্যসেবা পাচ্ছে। কিন্তু দীর্ঘদিন অন্য দেশের প্রায় আট লাখ নাগরিকদের জন্য এভাবে সাহায্য চালিয়ে যাওয়া বাংলাদেশের মতো সীমিত সম্পদের দেশের সম্ভব না। তাই অবিলম্বে তাদের নাগরিকদের ফিরিয়ে নেয়ার কাজ শুরু করার জন্য তিনি মিয়ানমারের মন্ত্রীকে অনুরোধ করেন।

এর আগে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মহাপরিচালক ডা. টেডরোস এডহানম গেব্রেইসাস এর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। তিনি বাংলাদেশের স্বাস্থ্যখাতের অর্জনগুলো তুলে ধরে এক্ষেত্রে সহায়তা করায় সংস্থার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান। আগামীতে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের লক্ষ্যে সরকারের গৃহীত কর্মসূচি সম্পর্কেও অবহিত করে সংস্থার অব্যাহত সহযোগিতা কামনা করেন তিনি।

এ সময় মোহাম্মদ নাসিম বলেন, স্বাস্থ্যখাতে বাংলাদেশের সাফল্য যেমন বিশ্বের অনেক দেশের জন্য অনুকরণীয়, তেমনি মানসিক বৈকল্য ও অটিজম বিষয়ে বিশ্বনেতাদের মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টিতে বাংলাদেশের অগ্রণী ভূমিকাও উল্লেখযোগ্য। বিশেষ করে জাতিসংঘে অটিজমবিষয়ক কয়েকটি প্রস্তাবনা পাসসহ আন্তর্জাতিক অঙ্গনে অটিস্টিকদের পুনর্বাসন ও অধিকার নিশ্চিত করতে প্রধানমন্ত্রী কন্যা, জাতিসংঘের মানসিক স্বাস্থ্যবিষয়ক প্যানেলের সদস্য সায়মা ওয়াজেদ হোসেনের অবদান অন্যদের জন্য অনুপ্রেরণাদায়ক।

রাশিয়ার মস্কোতে চলমান ‘টেকসই উন্নয়নের যুগে টিবি নির্মূলে করণীয়’ বিষয়কমন্ত্রী পর্যায়ের আন্তর্জাতিক সম্মেলনে যোগ দিতে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বর্তমানে সেখানে অবস্থান করছেন। গত ১৬ নভেম্বর সম্মেলন শুরু হয়। একশ’রও বেশি দেশের মন্ত্রী ছাড়াও সরকারি কর্মকর্তা, বেসরকারি সংস্থা, সুশীল সমাজ এবং আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রতিনিধিরা সম্মেলনে অংশ নিয়েছেন।

ওষুধ প্রতিনিধিদের অবাধ প্রবেশ, সাংবাদিকে ‘না’

বাবাকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) চিকিৎসক দেখাতে নিয়ে এসেছেন যাত্রাবাড়ির সুফিয়া খাতুন। প্রায় দুই ঘণ্টা অপেক্ষা শেষে চিকিৎসকের কক্ষে প্রবেশ করলেন। চিকিৎসক দেখাতে পারলেও শেষ হলো না তার ভোগান্তি।

চিকিৎসকের চেম্বার থেকে বের হতেই তাদের ঘিরে ধরলেন কয়েকটি ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধি (মেডিকেল রিপ্রেজেন্টেটিভ)। তার বাবাকে দেয়া চিকিৎসকের ব্যবস্থাপত্র (প্রেসক্রিপশন) নিয়ে শুরু হলো মেডিকেল রিপ্রেজেন্টেটিভদের টানাটানি। তারা দ্রুত নিজেদের মোবাইল ফোনের ক্যামেরায় প্রেসক্রিপশনের ছবি তুলে নিলেন।

মেডিকেল রিপ্রেজেন্টেটিভদের এমন আচরণে বেশ বিরক্তি প্রকাশ করলেন সুফিয়া। কিন্তু এর প্রতিকারের কোনো উপায় তার জানা নেই। ফলে বিরক্তি নিয়েই বাবাকে নিয়ে বিএসএমএমইউয়ের বহির্বিভাগ (আউটডোর) থেকে বেরিয়ে গেলেন তিনি।

শুধু সুফিয়া খাতুন নয়, বিএসএমএমইউতে চিকিৎসাসেবা নিতে প্রায় প্রত্যেককেই এমন হয়রানিকর পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হয়। রোগী ও তাদের স্বজনদের সময় সংকট ও দুর্ভোগ অগ্রাহ্য করেই রোগীদের দেয়া প্রেসক্রিপশন দেখতে রীতিমতো ঘিরে ধরেন মেডিকেল রিপ্রেজেন্টেটিভরা।

বিএসএমএমইউতে মেডিকেল রিপ্রেজেন্টেটিভদের এমন আনাগোনা ও দৌরাত্ম্য হরহামেশাই চোখে পড়ে। কিন্তু তাদের চলাচল নিয়ন্ত্রণের কোনো ব্যবস্থা এখানে কার্যত নেই। তবে উল্টো চিত্র গণমাধ্যমের ক্ষেত্রে, এ হাসপাতালে সাংবাদিকদের প্রবেশে রয়েছে ‘বিধি-নিষেধ’।

গত শনিবার সকালে সরেজমিনে বিএসএমএমইউয়ের আউটডোরের দ্বিতীয় তলায় গিয়ে দেখা যায়, বেশ কয়েকজন রোগী চিকিৎসক দেখানোর জন্য অপেক্ষা করছেন। টিকিটের ক্রম অনুযায়ী নির্ধারিত বিভাগে চিকিৎসকের কক্ষে প্রবেশ করছেন তারা। চিকিৎসকের পরামর্শ ও প্রেসক্রিপশন নিয়ে বের হতেই সেখানেই, চিকিৎসকের দরজার সামনে রোগীকে ঘিরে ধরছেন মেডিকেল রিপ্রেজেন্টেটিভরা।

এ দৃশ্য দেখার পর একটি ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধির সঙ্গে কথা হয়। জানতে চাইলে তিনি জাগো নিউজকে বলেন, ‘কোম্পানি থেকে আমাদের পাঠানো হয়, ডাক্তার আমাদের ওষুধ লিখছে কিনা তা পরীক্ষা করার জন্য। শুধু আমি নই, প্রতিটি কোম্পানির প্রতিনিধিদের এখানে পাবেন। সবার একই দায়িত্ব, প্রেসক্রিপশন পরীক্ষা করা। কারণ এর ওপর আমাদের পদোন্নতিও নির্ভর করে।’

এভাবে রোগীদের ঘিরে প্রেসক্রিপশন দেখা ও ছবি তুলতে কেউ বাধা দেয় না-এমন প্রশ্নে ওই মেডিকেল রিপ্রেজেন্টেটিভ বলেন, ‘কেন বাধা দেবে? আমরা আসি সবাই জানে। কোম্পানি থেকে ডাক্তারদের বিভিন্ন সুবিধা দেয়া হয়। তবে ঊর্ধ্বতন কর্তারা পরিদর্শনে আসলে তখন সমস্যা হয়। সে সময় আমরা বাইরে থাকি।’

তার সঙ্গে কথা শেষ করে মেডিকেল রিপ্রেজেন্টেটিভদের এভাবে একের পর এক রোগী বের হতেই ঘিরে ধরে প্রেসক্রিপশন পরীক্ষা করা এবং সেটার ছবি তোলার দৃশ্য ক্যামেরাবন্দি করতে গেলেই বাঁধে বিপত্তি। ছবি তুললেই এ প্রতিবেদকের কাছে ছুটে আসেন বিএসএমএমইউয়ের এক কর্মী।

নিজেকে নিপ্পন পরিচয় দিয়ে তিনি এ প্রতিবেদককে বলেন, ‘আপনি ছবি তুলছেন কেন? আপনি কি সাংবাদিক? জানেন না এখানে সাংবাদিকদের ছবি তোলা নিষেধ। আপনি স্যারের রুমে আসেন।’

এরপর তিনি সহযোগী অধ্যাপক ডা. হাসান ইমামের কক্ষে এই প্রতিবেদককে নিয়ে যান। মেডিকেল রিপ্রেজেন্টেটিভদের ছবি তোলার কথা হাসান ইমামকে জানাতেই তিনি এ প্রতিবেদককে বলেন, ‘আপনি এখানে কীভাবে প্রবেশ করলেন? কার অনুমতি নিয়েছেন? এখানে সাংবাদিক প্রবেশ নিষেধ। এখানে ছবি তুলতে হলে ডিরেক্টর স্যারের অনুমতি লাগবে। আপনি অনুমতি নিয়ে এসেছেন?’

জবাবে হাসান ইমামকে উদ্দেশ্য করে এই প্রতিবেদক বলেন, ‘সাংবাদিক আসতে অনুমতি লাগবে, আর মেডিকেল রিপ্রেজেন্টেটিভ আসতে অনুমতি লাগবে না? মেডিকেল রিপ্রেজেন্টেটিভরা কার অনুমতি নিয়ে রোগীদের প্রেসক্রিপশন নিয়ে টানাটানি করছেন এবং ছবি তুলছেন? তারা প্রেসক্রিপশনের ছবি তুলতে পারলে, আমি কেন তাদের ছবি তুলতে পারব না?’

এ সময় হাসান ইমাম বলেন, ‘ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধিরা প্রেসক্রিপশনের ছবি তুললে অন্যায় করেছেন। তাই বলে তাদের ছবি তুলে আপনিও অন্যায় করবেন? এভাবে আপনার ছবি তোলা অন্যায় হয়েছে।’

এরপর নিপ্পন নামের ওই কর্মীকে দিয়ে আনসার সদস্য কামালকে ডেকে আনান হাসান ইমাম। আনসার সদস্যকে ধমকে তিনি বলেন, ‘এখানে বাইরের লোক ঢুকছে কীভাবে? তোমরা কোথায় থাক?’

আনসার সদস্য কামালকে ধমক দিয়ে দাঁড় করিয়ে রেখেই ওই চিকিৎসক টেলিফোনে কাউকে ফোন দেন। ফোনে তিনি বলেন, ‘স্যার এখানে একজন সাংবাদিক এসে ওষুধ কোম্পানির রিপ্রেজেন্টেটিভরা রোগীর প্রেসক্রিপশন দেখছিল তার ছবি তুলেছে। স্যার এভাবে বাইরের লোক ঢুকে পড়লে আমি কি করব? আমার পক্ষে তো ওষুধ কোম্পানির রিপ্রেজেন্টেটিভদের বার বার খুঁজে বের করে দেয়া সম্ভব না। যাদের দায়িত্ব, সেই আনসার সদস্যরা কিছুই করছে না। তাদের বার বার বলার পরও বাইরের লোক ভিতরে ঢুকে পড়ছে।’

টেলিফোনে কথা বলা অবস্থাতেই তিনি এ প্রতিবেদককে বলেন, ‘আপনি চলে যান। আমরা বিষয়টি দেখছি। এরপর কখনো ছবি তুলতে আসলে অনুমতি নিয়ে আসবেন।’

চিকিৎসক হাসান ইমামের কক্ষ থেকে বের হয়ে দেখা গেলো নিপ্পন পরিচয় দেয়া ওই কর্মী এবং আনসার সদস্যরা মেডিকেল রিপ্রেজেন্টেটিভদের বের করে দিচ্ছেন। কিন্তু এ প্রতিবেদক আউটডোর থেকে বের হয়ে আবার আধাঘণ্টা পর সেখানে যান। গিয়ে আগের মতোই রোগীদের ঘিরে মেডিকেল রিপ্রেজেন্টেটিভদের প্রেসক্রিপশনের ছবি তোলায় ব্যস্ত থাকতে দেখেন।

কংগ্রেস সভাপতির দায়িত্ব নিচ্ছেন রাহুল

ভারতের অন্যতম রাজনৈতিক দল জাতীয় কংগ্রেসের সভাপতি পদে রাহুল গান্ধীকে বসানোর প্রস্তাব পাস করেছে দলটির ওয়ার্কিং কমিটি।

সোমবার (২০ নভেম্বর) নয়াদিল্লিতে কংগ্রেস সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধীর ১০ জনপথের বাড়িতে বৈঠক বসে কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটির। ওই বৈঠকেই রাহুল গান্ধীকে সভাপতি পদে বসাতে প্রস্তাব পাস হয়।

কংগ্রেসের বর্তমান সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধী বলেন, ‘রাহুল সভাপতি হলে দল আরও শক্তিশালী হবে। কংগ্রেসের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ১ ডিসেম্বর সাংগঠনিক নির্বাচনের বিজ্ঞপ্তি জারি করা হবে। মনোনয়ন পেশ করার শেষ দিন ৪ ডিসেম্বর। মনোনয়ন পরীক্ষা করা হবে ৫ ডিসেম্বর। মনোনয়ন প্রত্যাহারের শেষ দিন ১১ ডিসেম্বর। সাংগঠনিক নির্বাচন হবে ১৬ ডিসেম্বর। ভোট গণনা এবং ফল ঘোষণা হবে ১৯ ডিসেম্বর।’

তবে দলীয় সূত্রে জানা যায়, কংগ্রেসের সভাপতি পদে রাহুল গান্ধী ছাড়া আর কারো মনোনয়ন পেশ করার সম্ভাবনা নেই। ফলে, ৫ ডিসেম্বরই কংগ্রেসের সভাপতি হিসেবে রাহুল গান্ধীর নাম ঘোষণা করা হতে পারে।

কংগ্রেসের দলীয় সূত্রে খবর, আগামী ১৮ ডিসেম্বর গুজরাট ও হিমাচল প্রদেশে বিধানসভা নির্বাচনের ফল ঘোষণার পরের দিন দলের দায়িত্ব নিতে চলেছেন রাহুল গান্ধী। এদিন কংগ্রেসের ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন ভারতের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং, মল্লিকার্জুন খাড়গে, আহমেদ পটেলসহ কংগ্রেসের প্রথম সারির নেতারা।

অন্তর্বর্তীকালীন কোচ হচ্ছেন সুজন

বাংলাদেশ জাতীয় দলের কোচের পদ থেকে চন্ডিকা হাথুরুসিংহে পদত্যাগের পর থেকেই এক ধোয়াশা সৃষ্টি হয়েছে। হাথুরু কোচ থাকছেন কি থাকছেন না তা এখনো অনিশ্চত।

এদিকে আগামী মাসের শেষ দিকে একটি পূর্ণাঙ্গ সিরিজ খেলতে ঢাকা আসছে শ্রীলঙ্কা ক্রিকেট দল। তাই হাথুরু ফিরছে না ধরে নিয়েই দলের অন্তর্বর্তীকালীন কোচের দায়িত্ব নিচ্ছেন জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক খালেদ মাহমুদ সুজন।

সোমবার (২০ নভেম্বর) বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) সভাপতি নাজমুল হাসান জানিয়েছেন, জাতীয় দলের কোচ হিসেবে অনেকের নামই আলোচনায় এসেছে। তবে আন্তর্বর্তীকালীন কোচ খালেদ মাহমুদের হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি।

মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে সাংবাদিকদের নাজমুল হাসান বলেন, ‘হাথুরুসিংহের জন্য আমরা আর অপেক্ষা করতে চাই না। নতুন কোচ খুঁজছি আমরা। দেশি-বিদেশি অনেকের নামই আলোচনায় এসেছে। কেউ নিজে থেকেই যোগাযোগ করছেন। তবে আপাতত আমরা আন্তর্বর্তীকালীন কোচ হিসেবে কাউকে দায়িত্ব দিতে চাই। এ ক্ষেত্রে খালেদ মাহমুদের হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি।’

হাথুরুসিংহের জন্য অপেক্ষা না করলেও তিনি কেন পদত্যাগ করেছেন সেটা জানতে চায় বিসিবি। এ ব্যাপারে বিসিবি সভাপতি বলেন, ‘হাথুরুসিংহে যে কয়দিন বাংলাদেশ দলের দায়িত্বে ছিলেন, তিনি যথেষ্টই পেশাদার ছিলেন। কিন্তু কী কারণে তিনি পদত্যাগ করেছেন সেটা আমরা জানতে পারিনি। তার পদত্যাগের কারণ সম্পর্কে আমরা জানতে চাই। সে কারণে আমরা তাকে ঢাকায় আসতে বলেছিলাম।’

অবশ্য নতুন কোচ হিসেবে বেশ কয়েকদিন ধরেই আলোচনায় আসে খালেদ মাহমুদের নাম। তা ছাড়া তিনি নিজেও আগ্রহ দেখিয়েছেন মাশরাফিদের কোচ হতে।

খালেদ মাহমুদ এর আগে বাংলাদেশ জাতীয় দলের সহকারী কোচ ছিলেন। বেশ কিছুদিন দলের ম্যানেজারের দায়িত্বে ছিলেন। বিপিএলের গত আসরে তার অধীনে দারুণ সাফল্য পেয়েছিল ঢাকা ডায়নামাইটস। জিতেছিল শিরোপা। এবারও তিনি ঢাকার কোচ।

সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়স বাড়ছে না

সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়স বাড়িয়ে ৩৫ বছর করার কোনো পরিকল্পনা আপাতত সরকারের নেই বলে জানিয়ে দিয়েছেন জনপ্রশাসনমন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম।

সোমবার (২০ নভেম্বর) জাতীয় সংসদে এক প্রশ্নের জবাবে জনপ্রশাসনমন্ত্রীর অনুপস্থিতিতে প্রশ্নের জবাব দেন জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ইসমাত আরা সাদেক।

স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য রুস্তম আলী ফরাজির প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, ‘সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়স বাড়িয়ে ৩৫ বছর করার কোনো পরিকল্পনা আপাতত নেই।’

জনপ্রশাসনমন্ত্রী বলেন, ‘আগে বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বড় ধরনের সেশনজট থাকলেও বর্তমানে উল্লেখযোগ্য সেশনজট নেই বললেই চলে। ফলে শিক্ষার্থীরা সাধারণত ১৬ বছরে এসএসসি, ১৮ বছরে এইচএসসি এবং ২৩ থেকে ২৪ বছরে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করে থাকেন। সাধারণ প্রার্থীদের জন্য চাকরিতে প্রবেশের সর্বোচ্চ বয়সসীমা ৩০ বছর বিধায় স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করার পরও তারা চাকরিতে আবেদনের জন্য ছয় থেকে সাত বছর সময় পেয়ে থাকেন। এ ছাড়া ৩০ বছর বয়সসীমার মধ্যে একজন প্রার্থী চাকরির জন্য আবেদন করলে নিয়োগপ্রক্রিয়া সম্পন্ন হতে এক থেকে দুই বছর সময় লাগলেও তা গণনা করা হয় না।’

মন্ত্রী আরও বলেন, ‘সম্প্রতি চাকরি থেকে অবসর গ্রহণের বয়সসীমা ৫৭ বছর থেকে ৫৯ বছরে উন্নীত হওয়ায় বর্তমানে শূন্য পদের সংখ্যা স্বাভাবিকভাবেই কমেছে। এই প্রেক্ষাপটে চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা বাড়ানো হলে বিভিন্ন পদের বিপরীতে চাকরিপ্রার্থীদের সংখ্যা ব্যাপক হারে বেড়ে যাবে। ফলে নিয়োগের ক্ষেত্রে অধিকতর প্রতিযোগিতার সৃষ্টি হতে পারে। এতে করে যাঁদের বয়স বর্তমানে ৩০ বছরের বেশি, তারা চাকরিতে আবেদন করার সুযোগ পেলেও ৩০ বছরের কম বয়সী প্রার্থীদের মধ্যে হতাশার সৃষ্টি হতে পারে।’

টিটুর পক্ষে লড়বে ৫ সংগঠনের ১০ আইনজীবী

ফেইসবুকে ধর্ম অবমাননাকর লেখা ও ছবি পোষ্ট করার অভিযোগে গ্রেফতার রংপুরের পাগলাপীর ঠাকুরপাড়ার টিটু রায়ের পক্ষে আইনী লড়াইয়ের ঘোষণা দিয়েছে ৫ টি সামাজিক ও ধর্মীয় সংগঠনের রংপুর শাখা।

সোমবার (২০ নভেম্বর) সন্ধ্যায় এ তথ্য জানিয়েছেন ওই ৫টি সংগঠনের সমন্বয়কারী এ্যাড. রথীশ চন্দ্র বাবু সোনা।

এ সংগঠনগুলোর ১০ আইনজীবী বিনা খরচে এ মামলা লড়বেন বলে জানা গেছে।সংগঠনগুলো হচ্ছে ঘাতক দালাল নির্মুল কমিটি, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট, বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ, ব্লাস্ট এবং হিন্দু-বৌদ্ধ-খৃষ্টান ঐক্য পরিষদ।

রথীশ চন্দ্র জানান, শুধু টিটু রায়ই নয় এ ধরনের ঘটনার শিকার যে কোন নাগরিককে বিনা খরচে আইনী সহায়তা দিবেন।

তিনি বলেন, ‘টিটু রায়ের পরিবারের পক্ষ থেকে আইনী সহযোগিতা চাওয়া হয়নি।সংগঠনগুলো স্ব উদ্যোগে এ পদক্ষেপ নিয়েছে।’ টিটু রায়ের পরিবারের কাছ থেকে প্রয়োজনীয় তথ্য ও কাগজপত্র সংগ্রহ করা হচ্ছে বলে জানান তিনি।

টিটু রায়ের পক্ষে যে ১০ জন আইনজীবী মামলা লড়বেন তারা হলেন, এডভোকেট ইন্দ্রজিত রায়, এডভোকেট কমল মজুমদার, এডভোকেট বিনয় ভূষন, এডভোকেট নরেন চন্দ্র সরকার, এডভোকেট মাহফুজ শিবলী, এডভোকেট রিয়াজুল ইসলাম এবং ব্লাস্টের ৪ জন। বর্তমানে টিটু রায় ২য় দফায় আরও ৪ দিনের রিমান্ডে রয়েছেন।