যে কোনো প্রান্তে হামলা চালাতে চীনের হাইপারসনিক প্রস্তুতি

মাত্র ১৪ মিনিটে চীনা যুদ্ধবিমান পৌঁছে যাবে মার্কিন উপকূলে, চালাতে পারবে পরমাণু হামলাও। শুধু আমেরিকায় নয়, খুব অল্প সময়েই যুদ্ধবিমানটি পারমাণু বোমা ফেলতে পারবে পৃথিবীর যে কোনো প্রান্তে। তেমনই এক হাইপারসনিক যুদ্ধবিমান তৈরি করছে চীন।

হংকংভিত্তিক ইংরেজি দৈনিক সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে। এতে বলা হয়েছে, আগামী তিন বছরের মধ্যে এ হাইপারসনিক জেট আকাশে উড়বে। হাইপারসনিক জেটটি তৈরির কাজ চলছে। চীনা এক বিজ্ঞানী বলেছেন, জেটটিকে পরীক্ষা করা হবে একটি উইন্ড টানেলের মধ্যে। সেই বিশেষ উইন্ড টানেলও তৈরির কাজ চলছে।

অত্যন্ত গোপনীয় উইন্ড টানেল প্রকল্পটিতে কাজ করছেন যে বিজ্ঞানীরা, তাদেরই একজনের সাক্ষাৎকার নিয়েছে সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট। তবে হাইপারসনিক জেট তৈরি হচ্ছে, সেটির পরীক্ষা শুধু নয়, আরও নানা ধরনের হাইপারসনিক অস্ত্রশস্ত্র এবং সরঞ্জাম তৈরির পরিকল্পনা নিয়েছে চীন।

২০২০ সালের মধ্যেই টানেলটি তৈরি হয়ে যাবে বলে চীনা বিজ্ঞানী ঝাও ওয়েই জানিয়েছেন। ওই বছরের মধ্যেই পরমাণু হামলায় সক্ষম হাপারসনিক জেটটি তৈরির কাজ শেষ হবে। সেকেন্ডে ১২ কিলোমিটার বেগে উড়তে পারবে চীনের এই হাইপারসনিক যুদ্ধবিমান। অর্থাৎ শব্দের ৩৫ গুণ বেগে ছুটে চলবে বিমানটি।

এ গতিবেগে উড়লে চীন থেকে মার্কিন উপকূলে পৌঁছাতে মাত্র ১৪ মিনিট সময়ের প্রয়োজন হবে। তবে এটিই চীনের প্রথম হাইপারসনিক জেট প্রকল্প নয়। ডিএফ-জেএফ নামে একটি হাইপারসনিক জেট ২০১৩ সালেই তৈরি করে চীন। এ পর্যন্ত অন্তত সাত বার পরীক্ষামূলক সফল উড্ডয়ন করা হয়েছে।

এই ডিএফ-জেডএফ শব্দের পাঁচগুণ এবং ১০ গুণ বেগে উড়তে পারে। ডিএফ-জেডএফ ব্যবহার করেই পৃথিবীর যে কোনও প্রান্তে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালানো বা পরমাণু বোমা ফেলা সম্ভব বলে চীনা বিজ্ঞানীদের দাবি। কিন্তু তার চেয়েও অনেক শক্তিশালী, দ্রুতগামী এবং প্রায় অপ্রতিরোধ্য জেট তৈরির পথে চীন অনেকটা এগিয়েছে। আনন্দবাজার।

অভিবাসীবিরোধী নন ট্রাম্প

অভিবাসীদের প্রতি বরাবরই কঠোর অবস্থান নিতে দেখা গেছে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে। এ কারণে বেশ সমালোচিতও হয়েছেন তিনি। তবে ট্রাম্পকে অভিবাসীবিরোধী বলতে মোটেও রাজি নয় হোয়াইট হাউস। খবর এনডিটিভি।

হোয়াইট হাউসের প্রিন্সিপাল ডেপুটি প্রেস সেক্রেটারি রাজ শাহ বলেন, প্রথমত আমি মনে করিনা যে অভিবাসীদের প্রতি ট্রাম্প কঠোর বক্তব্য দিয়েছেন তার মানেই তিনি অভিবাসীবিরোধী। বরং তার এসব বক্তব্য কেবলমাত্র অবৈধ অভিবাসীদের জন্য।

কংগ্রেসনাল কমিটির এক আইনে এইচ-১বি ভিসাধারী ব্যক্তিদের নূন্যতম বেতন ৯০ হাজার থেকে ৬ লাখ মার্কিন ডলার করার কথা প্রস্তাব করার একদিন পরেই রাজ শাহ এমন মন্তব্য করেছেন। শ্রমিক ভিসার ক্ষেত্রে বিশেষ করে ভারতীয় আইটি বিশেষজ্ঞ বা আইটিতে কর্মরত ব্যক্তিদের কাছে এইচ-১বি ভিসা বেশ জনপ্রিয়।

তবে এইচ-১বি ভিসার ক্ষেত্রে বেশ কিছু পরিবর্তন আনা হচ্ছে। রাজ শাহ বলেন, ট্রাম্প চান অভিবাসন নীতির মাধ্যমে সবচেয়ে বেশি মেধাবী এবং যোগ্যতাসম্পন্ন ব্যক্তিদের সুযোগ করে দিতে। তিনি আইনের মাধ্যমে বৈধ পদ্ধতিগুলোকেই প্রতিষ্ঠা করতে চান।

তিনি বলেন, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প অভিবাসনের ক্ষেত্রে বেশ কিছু চমৎকার প্রস্তাবণা এনেছেন। এগুলো কারো উপর চাপিয়ে দেয়া নয় বরং এটাকে মেধাভিত্তিক করার বৈধ পদ্ধতি যা মার্কিন অর্থনীতির কাজে আসবে এবং এক্ষেত্রে মার্কিন শ্রমিকদেরই আগে গুরুত্ব দেয়া হবে।

তিনি আরো বলেন, মার্কিন অর্থনীতিতে সহায়তা করতে অভিবাসী প্রত্যাশা, এখানে এসে জননিরাপত্তা এবং নিরাপত্তার জন্য হুমকি হতে পারে এমন ব্যক্তিকের যাচাই করাকে আমি মোটেও অযৌক্তিক মনে করি না। আমি মনে করি এটা অবশ্যই যৌক্তিক এবং জনগণ এটাকে সমর্থন করে।

তবে ট্রাম্পের বক্তব্যকে ভুলভাবে উপস্থাপন করায় মূলধারার গণমাধ্যমের সমালোচনা করেছেন রাজ শাহ। এসব খবরের কারণে হোয়াইট হাউসকে প্রায়ই হতাশ হতে হয় বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

‘পদত্যাগে রাজি হয়েছেন মুগাবে’

‘জিম্বাবুয়ের নেতা রবার্ট মুগাবে প্রেসিডেন্ট পদ থেকে পদত্যাগে রাজি হয়েছেন। এ জন্য তিনি একটি খসড়া চিঠিও প্রস্তুত করেছেন।’ সেনাবাহিনীর সঙ্গে মুগাবের পদত্যাগ আলোচনার সঙ্গে সরাসরি সংশ্লিষ্ট জিম্বাবুয়ের এক কর্মকর্তার বরাত দিয়ে সোমবার মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।

ওই কর্মকর্তা বলছেন, নিজের, স্ত্রীর এবং তার ব্যক্তিগত সম্পত্তির পূর্ণ নিরাপত্তাসহ মুগাবের বেশ কিছু দাবি মেনে নিয়েছেন দেশটির সেনা প্রধান।

তিনি বলেন, রোববার টেলিভিশনে দেয়া ভাষণে মুগাবে সেনাবাহিনীর ক্ষমতা দখলকে সাংবিধানিকভাবে বৈধ ঘোষণা করবেন বলে প্রত্যাশা করেছিলেন সেনা জেনারেলরা। এমনকি সেনাবাহিনীর সঙ্গে মুগাবের বোঝাপড়াও হয়েছিল সেরকম।

জিম্বাবুয়ের ওই কর্মকর্তা বলেছেন, পদত্যাগের জন্য প্রেসিডেন্টকে অবশ্যই সংসদের স্পিকারের কাছে একটি চিঠি পাঠাতে হবে। জিম্বাবুয়েতে অনিশ্চয়তার নতুন একটি সপ্তাহ শুরু হয়েছে। রোববার মুগাবের নিজ দল জানু-পিএফ প্রধানের পদ থেকে বহিষ্কারের পর দেশটির স্বাধীনতা যুদ্ধের এ গেরিলা নেতাকে প্রেসিডেন্টের পদ ছাড়তে ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দেয়া হয়েছে।

একই সঙ্গে এই সময়ের মধ্যে তিনি পদত্যাগ না করলে সংসদে অভিশংসনের মাধ্যমে তাকে ক্ষমতাচ্যুত করা হবে বলেও হুমকি দিয়েছে জানু-পিএফ। রোববার টেলিভিশনে দেয়া ভাষণে অনেকে প্রত্যাশা করেছিলেন ৩৭ বছরের দেশ শাসনের অবসানে নিজের পদত্যাগের ঘোষণা দেবেন মুগাবে। কিন্তু সেই ঘোষণা না দেয়ায় অনেকে বিস্ময় প্রকাশ করেন।

এর আগে শনিবার মুগাবের পদত্যাগের দাবিতে রাজধানী হারারের রাস্তায় সেনাবাহিনী ও জানু-পিএফের সমর্থনে হাজার হাজার মানুষ বিক্ষোভ মিছিল করেন। বুধবার দেশটির শাসনক্ষমতা সেনাবাহিনী কেড়ে নেয়ার পর থেকে গৃহবন্দি রয়েছেন মুগাবে।

রোববারের ভাষণে মুগাবে কোথাও যাবেন না বলে জানিয়েছেন। একই সঙ্গে তিনি তার রাজনৈতিক দল জানু-পিএফ’র আগামী কংগ্রেসে নেতৃত্ব দেয়ার প্রত্যাশা প্রকাশ করেছেন।

রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে মুগাবের ওই ভাষণের পর জিম্বাবুয়ের রাস্তায় অনেকেই নেমে আসেন; এসময় অনেকেই বিস্ময় প্রকাশ করেন। হারারের বাসিন্দা টিনা মাদজিমুর মুগাবের ওই ভাষণকে ‘বিভ্রান্তিকর’ বলে মন্তব্য করেন। তিনি সেনা জেনারেলদের বোকা বানিয়েছেন।’

মাদজিমুর বলেন, ‘এই মানুষটি জিম্বাবুয়েকে তার হাতে নিয়ে কবরে যাবেন।’

কংগ্রেসের সভাপতি পদে রাহুল গান্ধীর নাম ঘোষণা

শুরুরও একটা সূচনা থাকে। সোমবার ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লির ১০ জনপথে দলীয় কার্যালয়ে সেই সূচনাটাই করতে চেয়েছিলেন কংগ্রেস সভাপতি সোনিয়া গান্ধী। অনেকটা প্রত্যাশিতভাবেই দলের পরবর্তী সভাপতি হিসাবে রাহুল গান্ধীর নাম প্রস্তাব করেছে কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটি এবং কোনো ধরনের বিরোধিতা ছাড়াই তা পাস হয়েছে।

পশ্চিমবঙ্গে বাংলা দৈনিক আনন্দবাজার বলছে, সব কিছু ঠিক থাকলে আগামী মাসে কংগ্রেস নতুন সভাপতি হিসাবে রাহুলকে পাবে। দলের সভাপতি পদে রাহুলের অভিষেকের পথ প্রশস্ত করতে সোমবার ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠক ডেকেছিলেন সোনিয়া গান্ধী।

গত ১৭ বছর ধরে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় সোনিয়াই দলের সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন। কিন্তু, গুজরাটের বিধানসভার ভোটের আগে রাহুলের রাজনৈতিক ওজন আরও বাড়াতে চায় কংগ্রেস। কংগ্রেসের সূত্রগুলো বলছে, সে লক্ষ্যেই তাকে সভাপতির পদে আনা হবে।

সোমবার কংগ্রেস মুখপাত্র রণদীপ সিংহ সুরজওয়ালা বলেন, ‘দলের পরবর্তী সভাপতি নির্বাচনের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। রাহুল গান্ধীর নাম প্রস্তাব করেছে ওয়ার্কিং কমিটি। তা পাসও হয়েছে। যদি আর কেউ প্রার্থী হিসাবে মনোনয়ন দাখিল না করেন, তবে তিনিই দলের পরবর্তী সভাপতি হচ্ছেন।’

কংগ্রেস বলছে, সভাপতি পদে নির্বাচনের জন্য আগামী ১ ডিসেম্বর বিজ্ঞপ্তি জারি করা হবে। মনোনয়ন জমা দেয়ার শেষ তারিখ ৪ ডিসেম্বর। ওই দিন বিকাল ৩টা পর্যন্ত মনোনয়নপত্র জমা দেয়া যাবে। পরের দিন অর্থাৎ ৫ ডিসেম্বর সেই মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই চলবে। মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ সময় ১১ ডিসেম্বর।

প্রার্থীদের চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ হবে ওই দিন বিকাল ৪টায়। আগামী ১৬ ডিসেম্বর নির্বাচন। গণনা এবং ফলপ্রকাশ ১৯ ডিসেম্বর। যদিও কংগ্রেস সূত্র বলছে, রাহুল ছাড়া এখন পর্যন্ত অন্য কোনো প্রার্থীর কথা তাদের জানা নেই। সম্ভাবনাও নেই বলে তাদের আশা। সে ক্ষেত্রে ৪ ডিসেম্বরই কংগ্রেস সভাপতি হিসাবে রাহুলের নাম ঘোষণা করা হতে পারে।

আসেম সম্মেলনেও নীরব সু চি

মিয়ানমারের রাজধানী নেইপিদোতে সোমবার এশিয়া-ইউরোপ মিটিং (আসেম) শুরু হয়েছে। আন্তর্জাতিক এ সম্মেলনে এশিয়ার শক্তিধর দেশ চীন ও ভারত এবং ইইউ এর পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা অংশ নিয়েছেন। ওই সম্মেলনে রোহিঙ্গা সঙ্কট সমাধানের ব্যাপারে কথা বলবেন বিশ্ব নেতারা এবং সেখানে মিয়ানমারও কোনো সমাধান দেবে বলে আশা করা হচ্ছে।

কিন্তু এপির এক খবরে বলা হয়েছে, বরাবরে মতোই রোহিঙ্গা ইস্যু নিয়ে নীরব অবস্থান নিলেন মিয়ানমারের স্টেট কাউন্সিলর এবং পররাষ্ট্রবিষয়ক কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অং সান সু চি। বরং সোমবারের ওই সম্মেলনে এশিয়া এবং ইউরোপের দেশগুলোর মধ্যে একটি নতুন এবং শক্তিশালী অংশীদারিত্ব এবং শান্তি ও স্থিতিশীলতা উন্নয়ন ও রক্ষার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।

তিনি বলেন, নতুন যোগাযোগের জন্য আমাদের অবশ্যই অংশীদারিত্ব লালন করা উচিত। এটা শুধুমাত্র সরকারগুলোর মধ্যেই নয় বরং বেসরকারি খাত এবং বেসামরিক নাগরিক সম্প্রদায়ের মধ্যেও এবং তা অবশ্যই এক দেশ থেকে অন্য দেশের মানুষের মধ্যেও হওয়া উচিত।

এশিয়া এবং ইউরোপের পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের অংশগ্রহণে মিয়ানমারের আন্তর্জাতিক কনভেনশন সেন্টারে দু’দিনব্যাপী আসেমের ১৩তম উদ্বোধনী ভাষণে মিয়ানমারের ডি ফ্যাক্টো নেত্রী সু চি এমন মন্তব্য করেন।

রোহিঙ্গা ইস্যুতে নীরব অবস্থানের কারণে শুরু থেকেই সমালোচিত হয়ে আসছেন সু চি। এ সম্মেলনেও রোহিঙ্গা ইস্যু নিয়ে কোনো কথাই বলেননি তিনি। বরাবরের মতোই এখানেও রোহিঙ্গা ইস্যুকে এড়িয়ে অন্যান্য বিষয় নিয়ে কথা বলেছেন তিনি।

ওই সম্মেলনে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এএইচ মাহমুদ আলীও অংশ নিয়েছেন। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সম্মানিত প্রতিনিধি ফেডেরিকা মোগেরিনি এবং অন্যান্যরা বক্তব্য দিয়েছেন।

গত ২৫ আগস্ট মিয়ানমারের বেশ কয়েকটি পুলিশ চেকপোস্টে হামলার ঘটনাকে কেন্দ্র করে রাখাইনে অভিযান শুরু করে মিয়ানমার সেনাবাহিনী। অভিযানের নামে সেখানে হত্যা, ধর্ষণ এবং রোহিঙ্গাদের বাড়ি-ঘর আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেয় সেনারা।

সেনাবাহিনীর নির্যাতন-নিপীড়ন থেকে বাঁচতে রাখাইন থেকে পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে ৬ লাখের বেশি রোহিঙ্গা মুসলিম। নিজের দেশে সেনাবাহিনীর এমন বর্বরতা দেখেও চুপ করে থেকেছেন শান্তিতে নোবেল পাওয়া নেত্রী অং সান সু চি।

আন্তর্জাতিক চাপের মধ্যেও রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে গুরুত্বপূর্ণ কোনো পদক্ষেপ নেননি তিনি বরং বরাবরই সেনাবাহিনীর প্রতি সমর্থন রেখে তিনি রোহিঙ্গাবিরোধী বক্তব্য দিয়েছেন।

সম্প্রতি বেশ কয়েকটি দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী রোহিঙ্গাদের প্রকৃত অবস্থান জানতে বাংলাদেশে অবস্থিত রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোতে সফর করেছেন। এসব ক্যাম্প পরিদর্শন শেষে রোববার তারা জানিয়েছেন যে, আসেম সম্মেলনে রোহিঙ্গা ইস্যুটি তুলে ধরবেন। রোহিঙ্গাদের আশ্রয় নিয়ে বাংলাদেশকেও অনেক কঠিন পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হচ্ছে। তারাও চায় যে আসেম সম্মেলনে রোহিঙ্গা ইস্যু নিয়ে কঠোর অবস্থান নেবে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়।

আসেম সম্মেলনে পরিবহন, পর্টন, জলবায়ু পরিবর্তন, নিরাপত্তা, দারিদ্র্য দূরীকরণ, সাংস্কৃতিক যোগাযোগ, শিক্ষা, বাণিজ্য এবং বিনিয়োগ নিয়েও আলোচনা করা হবে।

ইউরোপীয় ইউনিয়নের এক কূটনীতিক বলেছেন, আমি এ বিষয়টি নিশ্চিত করতে পারি যে, ইউরোপীয়ান নেতারা রোহিঙ্গা ইস্যুকে যথেষ্ঠ গুরুত্ব দিচ্ছে। তারা এ বিষয়টি সমাধানের জন্য মিয়ানমার কর্তৃপক্ষকে অবশ্যই চাপ দেবে।

১২ বছরের মধ্যে গুরুতর সঙ্কটে মেরকেল

জার্মানিতে জোট সরকার গঠনের ব্যাপারে যে আলোচনা চলছিল তা ভেস্তে গেছে। এতে করে চ্যান্সেলর হিসেবে এক যুগের মধ্যে এবারই সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছেন অ্যাঞ্জেলা মেরকেল।

মেরকেলের দল সিডিইউ এবং গ্রিন পার্টির সঙ্গে গত চার সপ্তাহ ধরে আলোচনা করেছে এফডিপি। তবে এখন পর্যন্ত সমঝোতায় আসতে পারেনি দলগুলো।

এফডিপি নেতা ক্রিশ্চিয়ান লিন্ডনার জানান, তাদেরকে বিশ্বাস করার মতো কোনো ভিত্তি নেই। সে কারণে ঠিক কী ঘটতে যাচ্ছে, তা পরিষ্কারভাবে বলা যাচ্ছে না।

তবে প্রেসিডেন্ট ফ্রাঙ্ক ওয়াল্টার স্টেইনমিয়ারের সঙ্গে মেরকেলের সাক্ষাতের কারণে পরিস্থিতি বদলে যেতে পারে। পার্লামেন্ট ভেঙে দিয়ে আগাম নির্বাচনের ডাক দেয়ার ক্ষমতা রয়েছে প্রেসিডেন্টের।

সেপ্টেম্বরের নির্বাচনে মেরকেলের দল জয়ী হলেও বেশিরভাগ ভোটার মূলধারার দলগুলোর সমর্থন বদলে ফেলেছেন।

মেরকেল জানিয়েছেন, আলোচনা ভেস্তে যাওয়ার ব্যাপারে তিনি কথা বলতে সোমবারের পরে প্রেসিডেন্টের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন। আনুষ্ঠানিকভাবে প্রেসিডেন্টকে তিনি জানাবেন, আলোচনা ব্যর্থ হয়েছে।

তিনি আরও জানান, ‘একজন চ্যান্সেলর হিসেবে, আগামীতে দুর্দিন আসলে এই দেশ ভালভাবে পরিচালনা করার বিষয়টি নিশ্চিত করার জন্য আমি সবকিছুই করব।’

নাইকো দুর্নীতি মামলা : সোমবার আদালতে যাবেন না খালেদা

নাইকো দুর্নীতি মামলায় ২০ নভেম্বর আদালতে হাজিরা দিতে উপস্থিত হবেন না বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। ওইদিন মামলাটি ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৯ এর বিচারক মাহমুদুল হাসানের আদালতে অভিযোগ গঠন শুনানির দিন ধার্য রয়েছে।

খালেদা জিয়ার আইনজীবী সানাউল্লাহ মিয়া বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, সোমবার নাইকো দুর্নীতি মামলার হাজিরা দিতে খালেদা আদালতে উপস্থিত হবেন না।

মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, কানাডার কোম্পানি নাইকোর সঙ্গে অস্বচ্ছ চুক্তির মাধ্যমে রাষ্ট্রের আর্থিক ক্ষতি সাধন ও দুর্নীতির অভিযোগে খালেদা জিয়াসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে দুদকের সহকারী পরিচালক মুহাম্মদ মাহবুবুল আলম গত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে ২০০৭ সালের ৯ ডিসেম্বর তেজগাঁও থানায় নাইকো দুর্নীতি মামলাটি দায়ের করেন।

পরের বছরের ৫ মে এ মামলায় খালেদা জিয়াসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়। আসামিদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রের প্রায় ১৩ হাজার ৭৭৭ কোটি টাকার আর্থিক ক্ষতির অভিযোগ আনা হয়।

ব্লগার অভিজিৎ হত্যা : ‘জঙ্গি’ সদস্য সায়মনের জবানবন্দি

বিজ্ঞানমনস্ক লেখক ও মুক্তমনা ব্লগের প্রতিষ্ঠাতা অভিজিৎ রায় হত্যা মামলায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন ‘জঙ্গি’ সংগঠন আনসার আল ইসলামের (আনসারুল্লাহ বাংলা টিম) সদস্য মোজাম্মেল হুসাইন ওরফে সায়মন।

রোববার তাকে আদালতে হাজির করে মামলা তদন্তকারী কর্মকর্তা। এ সময় তার স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি রেকর্ড করার আবেদন করেন তিনি। ঢাকা মহানগর হাকিম আহসান হাবীব তার স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি রেকর্ড করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

শনিবার বাউনিয়া বাদালদি রোড এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করে পুলিশের কাউন্টার টেররিজম বিভাগ। উল্লেখ্য, ২০১৫ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি বইমেলা থেকে বের হওয়ার পথে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি এলাকায় ব্লগার অভিজিৎ রায়কে কুপিয়ে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। ওই ঘটনায় গুরুতর আহত হন তার স্ত্রী রাফিদা আহমেদ। পরে শাহবাগ থানায় অভিজিতের বাবা অধ্যাপক ড. অজয় রায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।

হত্যাকাণ্ডের কয়েকদিন পর আল-কায়েদার ভারতীয় উপমহাদেশ শাখা (একিউআইএস) ওই হত্যাকাণ্ডের দায় স্বীকারের খবর দেয় জঙ্গিগোষ্ঠীর ইন্টারনেট ভিত্তিক তৎপরতা নজরদারি করা ওয়েবসাইট ‘সাইট ইন্টেলিজেন্স গ্রুপ।’ বাংলাদেশ সরকার বরাবরই বলে আসছে, এসব হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে আন্তর্জাতিক জঙ্গিগোষ্ঠীর কোনো সম্পর্ক নেই।

সালমান শাহের মৃত্যু : মামা কুমকুমের জবানবন্দি

চিত্রনায়ক সালমান শাহের অপমৃত্যুর মামলা আদালতে সাক্ষী হিসেবে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন তার মামা আলমগীর কুমকুম। রোববার ঢাকা মহানগর হাকিম নুর নবীর আদালতে তিনি এই জবানবন্দি দেন।

জবানবন্দিতে তিনি বলেন, তার ভাগিনা সালমান শাহের মৃত্যুর আগের রাতে তার সঙ্গে পারিবারিক সমস্যার বিষয়ে ফোনে আলাপ হয়। তিনি ঢাকায় এসে সব সমস্যার সমাধান করবেন বলে সালমান শাহকে আশ্বাস দিয়েছিলেন।

প্রসঙ্গত, ১৯৯৬ সালের ৬ সেপ্টেম্বর মারা যান চিত্রনায়ক চৌধুরী মোহাম্মদ শাহরিয়ার ইমন ওরফে সালমান শাহ। ওই সময় এ বিষয়ে অপমৃত্যুর মামলা করেন তার বাবা কমরউদ্দিন আহমদ চৌধুরী।

পরে ১৯৯৭ সালের ২৪ জুলাই ছেলেকে হত্যা করা হয়েছে অভিযোগ করে মামলাটি হত্যা মামলায় রূপান্তরিত করার আবেদন জানান তিনি। অপমৃত্যুর মামলার সঙ্গে হত্যাকাণ্ডের অভিযোগের বিষয়টি একসঙ্গে তদন্ত করতে সিআইডিকে নির্দেশ দেন আদালত। সালমান শাহর মৃত্যুর ঘটনাটি তদন্ত করে ১৯৯৭ সালের ৩ নভেম্বর আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেয় সিআইডি।

চূড়ান্ত প্রতিবেদনে সালমান শাহর মৃত্যুকে আত্মহত্যা বলে উল্লেখ করা হয়। ২৫ নভেম্বর ঢাকার সিএমএম আদালতে ওই চূড়ান্ত প্রতিবেদন গৃহীত হয়। সিআইডির প্রতিবেদন প্রত্যাখ্যান করে তার বাবা কমরউদ্দিন আহমদ চৌধুরী রিভিশন মামলা করেন।

২০০৩ সালের ১৯ মে মামলাটি বিচার বিভাগীয় তদন্তে পাঠান আদালত। এরপর প্রায় ১২ বছর মামলাটি বিচার বিভাগীয় তদন্তে ছিল।

২০১৪ সালের ৩ আগস্ট ঢাকার সিএমএম আদালতের বিচারক বিকাশ কুমার সাহার কাছে বিচার বিভাগীয় তদন্তের প্রতিবেদন দাখিল করেন মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট ইমদাদুল হক। এ প্রতিবেদনে সালমান শাহর মৃত্যুকে অপমৃত্যু হিসেবে উল্লেখ করা হয়।
২০১৪ সালের ২১ ডিসেম্বর সালমান শাহর মা নীলা চৌধুরীর ছেলের মৃত্যুতে বিচার বিভাগীয় তদন্ত প্রতিবেদন প্রত্যাখ্যান করেন এবং বিচার বিভাগীয় তদন্ত প্রতিবেদনের বিরুদ্ধে নারাজি দেবেন বলে আবেদন করেন।

২০১৫ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি নীলা চৌধুরী ঢাকা মহানগর হাকিম জাহাঙ্গীর হোসেনের আদালতে বিচার বিভাগীয় তদন্ত প্রতিবেদনের নারাজির আবেদন দাখিল করেন।

নারাজি আবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, আজিজ মোহাম্মদ ভাইসহ ১১ জন তার ছেলে সালমান শাহর হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত থাকতে পারেন। আদালত নারাজি আবেদনটি মঞ্জুর করে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নকে (র‌্যাব) তদন্তভার প্রদান করেন।

মামলাটিতে র‌্যাবকে তদন্ত দেয়ার আদেশের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ গত বছরের ১৯ এপ্রিল মহানগর দায়রা জজ আদালতে একটি রিভিশন মামলা করেন।সর্বশেষ ২০১৬ সালের ২১ আগস্ট ঢাকার বিশেষ জজ-৬ এর বিচারক ইমরুল কায়েস রাষ্ট্রপক্ষের রিভিশনটি মঞ্জুর করেন এবং র‌্যাব মামলাটি আর তদন্ত করতে পারবে না বলে আদেশ দেন।

সোনালী ব্যাংকের তিন পদের নিয়োগ আপাতত স্থগিত

সোনালী ব্যাংকের সিনিয়র অফিসার, অফিসার ও অফিসার (ক্যাশ) পদে নিয়োগ আপাতত স্থগিত থাকবে বলে আদেশ দিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ।

ব্যাংকের পক্ষে নিয়োগের স্থগিতাদেশ তুলে দেয়ার আবেদন সোমবার খারিজ করে আদেশ দেন দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি মো. আব্দুল ওয়াহ্হাব মিঞার নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগের বেঞ্চ।

আদালতে সোনালী ব্যাংকের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস, বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষে ছিলেন শামীম খালেদ। নিয়োগ প্রার্থীদের পক্ষে ছিলেন কামরুল হক সিদ্দিকী, আব্দুল মতিন খসরু, বিএম ইলিয়াস কচি। তাদের সঙ্গে ছিলেন ব্যারিস্টার জ্যোর্তিময় বড়ুয়া।

পরে জ্যোর্তিময় বড়ুয়া সাংবাদিকদের জানান, সোনালী ব্যাংকের নিয়োগ নিয়ে ৫৪৩ জন হাইকোর্টের রিট আবেদনের পর গত বছরের ৮ আগস্ট হাইকোর্ট রুল জারি করে নিয়োগের ওপর স্থগিতাদেশ দেন। পরবর্তীতে আপিল বিভাগ ৩২ জনের নিয়োগের বিষয়ে আদেশ দিয়ে রুল নিষ্পত্তি করতে বলেন।

চলতি বছরের ২৭ জুলাই হাইকোর্ট রুল খারিজ করে রায় দেন। হাইকোর্টের ওই রায় স্থগিত চেয়ে চেম্বার বিচারপতির আদালতে ১৩৮ প্রার্থী আবেদন করেন। ৬ সেপ্টেম্বর চেম্বার আদালত হাইকোর্টের রায় স্থগিত করেন। ওই স্থগিতাদেশ তুলে দেয়ার জন্য সোনালী ব্যাংক আপিল বিভাগে আবেদন করেন।

জ্যোর্তিময় বড়ুয়া বলেন, সোমবার সোনালী ব্যাংকের সে আবেদন খারিজ করে দেন আপিল বিভাগ। সোনালী ব্যাংকের সিনিয়ির অফিসার, অফিসার ও অফিসার ক্যাশ পদে নিয়োগ আপাতত স্থগিত থাকবে।

২০১৪ সালের ২৭ জানুয়ারি সোনালী ব্যাংকের অফিসার (ক্যাশ) পদে ৭২৫, অফিসার পদে ৫৪৭ এবং সিনিয়র অফিসার পদে ৪৩৫ জনের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে।

ওই নিয়োগের সকল প্রক্রিয়া সম্পন্নের পরও অনেক প্রার্থীকে নিয়োগ দিয়ে বাকিদের অপেক্ষমান রাখা হয়। এর মধ্যে গত বছর ফের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেয় সোনালী ব্যাংক। ওই নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে অপেক্ষমান থাকা প্রার্থীরা হাইকোর্টে রিট করে বলে জানান জ্যোর্তিময় বড়ুয়া।