গুগল প্লে স্টোরে নেই ইউসি ব্রাউজার!

গুগল প্লে স্টোর থেকে সরিয়ে ফেলা হল ইউসি ব্রাউজার। ব্যবহারকারীদের তথ্য পাচারের অভিযোগে এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে গুগল। অ্যাপটির মালিকানায় ছিল চীনের ইন্টারনেট জায়ান্ট আলিবাবার ইউসিওয়েব।

মূল ব্রাউজারটি সরিয়ে ফেললেও প্লে স্টোরে এখানো ইউসি মিনি ব্রাউজার পাওয়া যাচ্ছে। ব্যবহারকারীদের অভিযোগ, এই ব্রাউজার গোপনে চীনের সার্ভারে তথ্য পাচার করছিল। এমন অভিযোগের ভিত্তিতে বিষয়টি নিয়ে তদন্ত শুরু করে ভারত সরকার। তদন্তে অভিযোগের সত্যতা পাওয়ায় এনিয়ে গুগলের কাছে অভিযোগ করা হয়। এরপরই প্লে স্টোর থেকে ইউসি ব্রাউজার সরিয়ে ফেলে গুগল।

উল্লেখ্য, ডাউনলোডের দিক দিয়ে গুগলের ক্রোম ব্রাউজারের চেয়ে বেশ এগিয়ে ছিল ইউসি ব্রাউজার। প্লে স্টোর থেকে ৫০ কোটিরও বেশি বার ব্রাউজারটি ডাউনলোড করেছেন ব্যবহারকারীরা।

আইফোনের ফেস আইডি হ্যাক!

বায়োমেট্রিক নিরাপত্তা ফিচার হিসেবে টাচ আইডির পরিবর্তে আইফোন ১০-এ ব্যবহার করা হয়েছে ফেস আইডি। তবে এই ফিচার ঘোষণা দেওয়ার পর থেকেই নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা বলছেন, সহজেই এটি বাইপাস করা সম্ভব। যদিও অ্যাপল এই দাবি প্রত্যাখ্যান করেছে প্রতিবারই।

এবার তা প্রমাণ করে দেখিয়েছে ভিয়েতনামের সাইবার নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠান ‘বিক্যাভ’। প্রতিষ্ঠানটি ১৫০ ডলারেরও কম মূল্যের থ্রিডি প্রিন্টেড মুখোশ ব্যবহার করে খুব সহজেই ফেস আইডি আনলক করে দেখিয়েছে।

পুরো ব্যাপারটি নিয়ে একটি ভিডিও প্রকাশ করেছে বিক্যাভ। এতে দেখা গেছে, এই মুখোশে চোখের জায়গায় দুটো চোখের ছবি বসানো আছে। একইভাবে আছে নাক ও মুখের ছবি। মুখোশের মাধ্যমে আনলক করার পর প্রতিষ্ঠানটির ভাইস প্রেসিডেন্ট নিজের চেহার দিয়েও ফোনটি আনলক করেছেন।

ফেস আইডি হ্যাকিংয় বিষয়ে অ্যাপল জানিয়েছে, ফোনের সামনে মুখের ছবি ধরে ফেস আইডি আনলক করা সম্ভব নয়। কারণ আনলক করার সময় আইফোন ইনফ্রারেড রশ্মি ব্যবহার করে যা থ্রিডি ইমেজ স্ক্যান করার মাধ্যমে আনলকের কাজটি করে থাকে। থ্রিডি ইমেজ না হলে কোনোভাবেই ফোন আনলক করা সম্ভব নয়।

তবে ফেস আইডি হ্যাকিংয়ে বিক্যাভের পুরো প্রক্রিয়াটি নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। ফোনটির ফেস আইডি যদি শুরুতেই ওই মুখোশ ব্যবহার করে নিবন্ধন করা হয়ে থাকে, তাহলে মুখোশ দিয়ে আনলক করা যাবে, এমনটাই স্বাভাবিক। তবে এ বিষয়ে স্পষ্ট করে কিছু জানায়নি বিক্যাভ।

অন্যদিকে ভিডিওতে প্রথমবারেই মুখোশের মাধ্যমে ফেস আইডি আনলক করার বিষয়টি দেখানো হলেও একবার নাকি একাধিকবার চেষ্টা করে বাইপাস করা সম্ভব হয়েছে কিনা, তাও জানায়নি প্রতিষ্ঠানটি।

তবে এসব প্রশ্ন থাকলেও পুরো ব্যাপারটি নিয়ে চিন্তায় পড়েছে সাইবার নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা। তাদের মতে, কোন না কোনোভাবে ফেস আইডি হ্যাক করার আরও উন্নত প্রযুক্তি ঠিকই বের করে নেবে সাইবার অপরাধীরা।

বিক্যাভের মতে, সাধারণ ব্যবহারকারীরা নয়, এক্ষেত্রে প্রধান লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হতে পারেন বড় ব্যবসায়ী, রাজনীতিবিদ কিংবা সরকারের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা।

৯ বছরের অর্জন তুলে ধরা হবে ডিজিটাল ওয়ার্ল্ডে

দেশের তথ্যপ্রযুক্তি খাতের সবচেয়ে বড় উৎসব ‘ডিজিটাল ওয়ার্ল্ড’ শুরু হচ্ছে ৬ ডিসেম্বর। রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে পঞ্চম বারের মত এটি আয়োজন করতে যাচ্ছে সরকারের তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ।

বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজধানীর কারওয়ান বাজারের সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্কে ‘ডিজিটাল ওয়ার্ল্ড’ আয়োজনের বিস্তারিত জানাতে এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।

সংবাদ সম্মেলনে আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক জানান, ডিজিটাল ওয়ার্ল্ড প্রতি বছর তিন দিন করে হলেও এবার আইটি সংশ্লিষ্টদের দাবির প্রেক্ষিতে উৎসব চার দিনব্যাপী করা হয়েছে। এছাড়া এবারের উৎসবে গত ৯ বছরে তথ্যপ্রযুক্তি খাতে বাংলাদেশের অর্জনগুলো তুলে ধরা হবে। ডিজিটাল ওয়ার্ল্ডে আগতরা জানতে পারবেন আমাদের আইসিটি খাত কতটা উন্নতি করেছে।

ডিজিটাল ওয়ার্ল্ডকে সফল করতে সকলের প্রতি আহ্বান জানিয়ে পলক বলেন, এবারের ডিজিটাল ওয়ার্ল্ডে ৭০ জন বিদেশি এবং শতাধিক স্পিকার ২৯টি সেশনে অংশ নেবেন। এতে গুগল, ফেসবুক, নুয়ান্স, অ্যাংরিবার্ড, কোয়ালকম এবং মটোরোলাসহ পৃথিবীর শীর্ষ আইটি প্রতিষ্ঠানগুলো অংশ নেবে।

জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, দেশের প্রতিটি ইউনিয়নকে ফাইবার অপটিক ক্যাবলের আওতায় আনা হচ্ছে। ফলে কানেকটিভিটি সারা দেশে ছড়িয়ে পড়ছে। আইসিটি শিল্পের উন্নয়ন ও কর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষ্যে দেশের বিভিন্ন জেলায় মোট ২৮টি হাইটেক পার্ক ও সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্ক স্থাপনের কাজ এগিয়ে চলছে। আইসিটি খাতে ২০০৮ সালে রফতানি আয় ছিল ২৬ মিলিয়ন ডলার। নয় বছরে সেটা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৮০০ মিলিয়নে। বর্তমানে দেশের প্রান্তিক পর্যায়ে পৌঁছেছে তথ্যপ্রযু্ক্তি সেবা।

৬-৯ ডিসেম্বর পর্যন্ত এই প্রদর্শনী প্রতি দিন সকাল নয়টা থেকে শুরু হয়ে রাত নয়টা পর্যন্ত চলবে। এতে প্রবেশের জন্য কোনো ফি লাগবে না। তবে অনলাইনে নিবন্ধন করতে হবে। এবারের ডিজিটাল ওয়ার্ল্ডের স্লোগান ‘রেডি ফর টুমরো’। উৎসবের বাজেট ধরা হয়েছে ১২ কোটি টাকা।

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন তথ্যপ্রযুক্তি বিভাগের সচিব সুবীর কিশোর চৌধুরী, কম্পিউটার কাউন্সিলের নির্বাহী পরিচালক স্বপন কুমার সরকারসহ তথ্যপ্রযুক্তি বিভাগের কর্মকর্তা এবং বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা।

আরও তিন দেশের দায়িত্বে সোনিয়া বশির কবির

নতুন করে আরও তিনটি দেশের দায়িত্ব পেয়েছেন মাইক্রোসফট বাংলাদেশের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) সোনিয়া বশির কবির। দেশগুলো হলো নেপাল, ভুটান ও লাওস। এখন থেকে তিনি এই চার দেশের ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন। শনিবার মাইক্রোসফটের পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে একথা জানানো হয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, প্রতিশ্রুতিময় ও বহুমুখী এই ভূমিকায় আগামী দিনগুলোতে সোনিয়া বশির কবির এই চার দেশে মাইক্রোসফটের ডিজিটাল ট্রান্সফরমেশনের লক্ষ্যপূরণ সংক্রান্ত ব্যবসায়িক সিদ্ধান্ত নেবেন। ডিজিটাল ট্রান্সফরমেশনের মূল লক্ষ্য হলো লোকবল, তথ্য ও পদ্ধতিকে একত্রীকরণের মাধ্যমে গ্রাহকদের জন্য মান উন্নয়ন ও ডিজিটাল জগতে প্রতিযোগীতায় এগিয়ে থাকা। তিনি এ দায়িত্ব পালনকালে সরকারি, বেসরকারি ও পার্টনার প্রতিষ্ঠানসমূহের সঙ্গে আসন্ন প্রযুক্তি বিপ্লব সংক্রান্ত অবকাঠামোভিত্তিক কাজ করবেন।

আগামী ২০১৮ সালের মধ্যে বাংলাদেশ, ভুটান, নেপাল ও লাওসের জিডিপি প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে যথাক্রমে ৭.১, ৬.৯, ৬.৯ ও ৬.৫ শতাংশ। জিডিপি প্রবৃদ্ধির পাশাপাশি প্রগতিশীল উৎপাদনকারী খাত স্থানীয় অর্থনীতি অনেকাংশে উন্নতির পথে অগ্রসর হতে পেরেছে, যা আরও বেশি মানুষের মধ্যে প্রযুক্তির ব্যবহার নিশ্চিত করছে। উল্লিখিত দেশগুলো ট্রান্সফরমেশন নিয়ে কার্যক্রম অব্যাহত রাখলেও মাইক্রোসফট ও এর পার্টনাররা প্রযুক্তির মাধ্যমে উন্নয়নের ধারা দ্রুতগতিতে এগিয়ে নিয়ে যেতে, প্রতিটি মানুষকে দক্ষ করে তোলা এবং প্রতিষ্ঠানগুলোর আরও বেশি মুনাফা অর্জনে দৃঢ়-প্রতিজ্ঞ।

এ প্রসঙ্গে মাইক্রোসফট এশিয়া প্যাসিফিকের সাউথইস্ট এশিয়া নিউ মার্কেটসের জেনারেল ম্যানেজার মাইকেল সিমন্স বলেন, ‘ইমার্জিং মার্কেটের ক্ষেত্রে ডিজিটাল ট্রান্সফরমেশনের বিষয়টি প্রতিষ্ঠান, সরকার এবং মাইক্রোসফটের জন্য বেশ গুরুত্বপূর্ণ। উল্লিখিত দেশগুলোতে চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের সম্ভাবনা ব্যাপক যার ফলে দেশগুলোতে অর্থনৈতিক উন্নয়ন ঘটবে। এশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের ইমার্জিং মার্কেটে ডিজিটাল ট্রান্সফরমেশনে সোনিয়া বশির কবিরের অভিজ্ঞতা দারুণভাবে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে বলে আমি বিশ্বাস করি।’

এ ব্যাপারে সোনিয়া বশির কবির বলেন, ‘কয়েকটি দেশের যে নতুন দায়িত্ব আমি পেয়েছি তা নিয়ে আমি সত্যিই সম্মানিত বোধ করছি এবং ডিজিটাল ট্রান্সফরমেশনের যাত্রা নিয়ে আমি বেশ উচ্ছ্বসিত। প্রতিটি মানুষ ও প্রতিষ্ঠানগুলো যেন ইন্টেলিজেন্ট ক্লাউড ও ইন্টেলিজেন্ট নতুন প্রান্তের সুযোগ গ্রহণ করতে পারে সে লক্ষ্য নিয়ে কাজ করব।’

মাইক্রোসফটে কাজের পাশাপাশি সোনিয়া বশির কবির জাতিসংঘের আওতাভুক্ত টেকনোলজি ব্যাংক ফর ডেভেলপড কান্ট্রিজ (এলডিসিএস)-এর গভর্নিং কাউন্সিল মেম্বর হিসেবে কাজ করছেন। সম্প্রতি জাতিসংঘের জেনারেল অ্যাসেম্বলি সপ্তাহে সাস্টেইনেবল ডেভেলপমেন্ট গোল (এসডিজি) সংক্রান্ত সেরা ১০ পথিকৃতের একজন হিসেবে সোনিয়া বশির কবিরকে ইউএন গ্লোবাল কমপ্যাক্ট স্বীকৃতি প্রদান করেছে। তিনি ২০১৬ সালে মাইক্রোসফট ফাউন্ডারস অ্যাওয়ার্ড পুরস্কার জয় করেন। বিশ্বব্যাপী মাইক্রোসফটে চাকরিরত প্রায় এক লাখ কর্মকর্তা ও কর্মচারীর মধ্যে মাত্র ১০ জনকে এ সম্মাননা দেয়া হয়ে থাকে।

এরিকসন বাংলাদেশের ২০ বছর পূর্তি

কৃষি, স্বাস্থ্য এবং আধুনিক জীবন যাপনে বাংলাদেশ কেমন প্রযুক্তিময় হবে তারই বর্ণাঢ্য আয়োজন দেখালো এরিকসন বাংলাদেশ। বাংলাদেশে এরিকসনের ২০ বছর পূর্তি উপলক্ষ্যে রাজধানীর লা মেরিডিয়ান হোটেলে এই টেকনোলজিক্যাল প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়।

প্রদর্শনীতে এরিকসনের বিভিন্ন দিক বর্ণনা করেন এরিকসনের বাংলাদেশ, মালয়েশিয়া ও শ্রীলংকার প্রধান টড এসটন। তিনি বলেন, ‘আমরা গুরুত্বপূর্ণ এ খাতে প্রতিশ্রুতি রক্ষার চেষ্টা করেছি। আমাদের ধারণা, উদ্ভাবনী তথা বৈপ্লবিক প্রযুক্তিতে আমূল পরিবর্তন এসেছে। ফলে দৈনন্দিন জীবন, ব্যবসা ও সমাজের নানাবিধ সমস্যা সমাধানের পথ উন্মোচিত হয়েছে।’

ফেসবুক ইভেন্টে আলোচনার শীর্ষে বাংলাদেশের কার্নিভাল

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে বাংলাদেশ থেকে গত ছয় মাসে যত ইভেন্ট আয়োজন করা হয়েছে তার মধ্যে সবার শীর্ষে রয়েছে বাইক কার্নিভাল। বৈশ্বিকভাবে স্বীকৃত অনলাইন বিশ্লেষক পাবলিশিং কোম্পানি সোশ্যাল বেকারস সর্বশেষ ১৮০ দিনের সবচেয়ে আলোচিত তিনটি ইভেন্টের নাম প্রকাশ করেছে।

এতে দেখা যাচ্ছে, ঢাকা বাইক কার্নিভাল ২০১৭ নামের ইভেন্ট সবার শীর্ষে অবস্থান করছে। এই ইভেন্টে মোট ৯ লাখ ২১ হাজার ৭৩৩ জন রিচ করেছেন। এর মধ্যে ২১ হাজার ১৯৮ জন রেসপন্স করেছেন। যেখানে একই সময়ে দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা ইভেন্ট এক তৃতীয়াংশের নিচে অবস্থান করছে।

গত ১০ নভেম্বর থেকে দুইদিনব্যাপী বাংলাদেশে সর্বপ্রথম বাইক কার্নিভাল অনুষ্ঠিত হয়। বাইকবিডির আয়োজনে ও ইয়ামাহার (এসিআই মটরস) সৌজন্যে এই কার্নিভালে নজর কাড়া বাইক র্যালি, আকর্ষণীয় বাইক গেম শো, কালচারাল প্রোগ্রামের পাশাপাশি ছিল মন মাতানো কনসার্ট।

অনুষ্ঠানের আকর্ষণ হিসেবে ছিল ভারত থেকে আগত লেডি বাইকার গ্রুপ, যারা মটরসাইকেল নিয়ে নানা নৈপুণ্য দেখান। কনসার্টে অংশ নিয়েছিল জনপ্রিয় ব্যান্ড নেমেসিস, এলআরবিসহ আরও অনেকে।

দুদকের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী কাল : অভিযোগ ও সাজা দুটোই বেড়েছে

দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) ত্রয়োদশ প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী আগামীকাল মঙ্গলবার। নানা কর্মসূচির মধ্য দিয়ে দিবসটি পালন করবে দুদক। সকাল সাড়ে নয়টায় কমিশনের প্রধান কার্যালয় প্রাঙ্গণে জাতীয় পতাকা ও কমিশনের পতাকা উত্তোলন করবেন দুদক চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ।

এছাড়া তিনি সকাল পৌনে দশটায় একই স্থানে শান্তির প্রতীক পায়রা অবমুক্ত, বেলুন ও ফেস্টুন উড়ানো ছাড়াও বেলা ১০টায় বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালা অডিটোরিয়ামে কমিশনের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের দুর্নীতিমুক্ত থেকে দাফতরিক কার্যক্রম পরিচালনায় অঙ্গীকারাবদ্ধ থাকার লক্ষ্যে দুর্নীতিবিরোধী শপথ বাক্য পাঠ করাবেন।

একই স্থানে একই সময় দুর্নীতি দমন কমিশনের চলতি বছরের সার্বিক কার্যক্রম বিষয়ক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. মোহাম্মদ ফরাসউদ্দীন। কেন্দ্রীয় কর্মসূচির সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে কমিশনের ৬টি বিভাগীয় কার্যালয় এবং ২২টি সমন্বিত জেলা কার্যালয়ে একই কর্মসূচি উদযাপন করা হবে।

প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর কর্মসূচি উদযাপন উপলক্ষে কমিশনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের উদ্দেশে দুদক চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ বলেন, দুদকের সব আকাঙ্খা পূরণ হয়নি। আশা ছিল এমন অবস্থার সৃষ্টি হবে যাতে দুর্নীতিপরায়ণ ব্যক্তি বিশেষ করে সরকারি কর্মকর্তারা দুর্নীতি করার অনৈতিক সাহস সম্পূর্ণ হারিয়ে ফেলেন। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে এখনও সে পর্যায়ে যেতে পারেনি দুদক।

তিনি বলেন, কমিশনের বহুমুখী পদক্ষেপ গ্রহণের কারণেই এই প্রতিষ্ঠানের প্রতি জনগণের আস্থা বৃদ্ধি পাচ্ছে। ২০১৫ সাল থেকে ২০১৭ সালে কমিশনে অভিযোগ প্রাপ্তি বৃদ্ধি পেয়েছে প্রায় ৬০ শতাংশ। ২০১৭ সালে মামলার সাজার হার বৃদ্ধি পেয়ে প্রায় ৭০ শতাংশে উপনীত হয়েছে ।

তিনি বলেন, দুদকের সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য কর্মকর্তাদের দেশ-বিদেশে প্রশিক্ষণ দেয়া হচ্ছে। এ বছর কমিশনের নিজস্ব হাজতখানা, সশস্ত্র পুলিশ ইউনিট, গোয়েন্দা ইউনিট, দুদক অভিযোগ কেন্দ্রের হটলাইন ১০৬, রেকর্ড রুম নির্মাণ, সম্পদ পুনরুদ্ধার ইউনিট গঠনসহ বিভিন্ন অবকাঠামো নির্মাণের উদ্যোগ বাস্তবায়ন করা হয়েছে। তিনি এসব কার্যক্রম বাস্তবায়নের জন্য কর্মকর্তাদের অভিনন্দন জানান।

সরকারি অফিসে ৩ লাখ ৬০ হাজার পদ শূন্য

জনপ্রশাসন মন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম জানিয়েছেন, বর্তমানে দেশে সরকারি অফিস, মন্ত্রণালয়, অধিদফতরসমূহে ৩ লাখ ৫৯ হাজার ২৬১টি পদ শূন্য রয়েছে।

সোমবার বিকেলে জাতীয় সংসদে মোরশেদ আলমের (নোয়াখালী-২) প্রশ্নের জবাবে এ তথ্য জানান তিনি। এ সময় মন্ত্রী সংসদে উপস্থিত না থাকায় তার পক্ষে প্রশ্নের জবাব দেন প্রতিমন্ত্রী ইসমত আরা সাদেক।

মন্ত্রী জানান, শূন্য পদ পূরণের লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। সরকারি অফিসে শূন্য পদে লোক নিয়োগ একটি চলমান প্রক্রিয়া। বিভিন্ন মন্ত্রণালয়/বিভাগ এবং এর অধীন সংস্থাসমূহের চাহিদার প্রেক্ষিতে সরকারি কর্ম কমিশনের মাধ্যমে ৮ম, ৯ম, ও ১০-১২ গ্রেডের (১ম ও ২য় শ্রেণি) শূন্য পদে জনবল নিয়োগ করা হয়ে থাকে।

১৩-২০ গ্রেডের (৩য় ও ৪র্থ শ্রেণি) পদে স্ব স্ব মন্ত্রণালয়/বিভাগ/ অধিদফতর/ সংস্থার নিয়োগবিধি অনুযায়ী জনবল নিয়োগ দেয়া হয়। এছাড়া জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সংগঠন ও ব্যবস্থাপনা অনুবিভাগ থেকে ধারাবাহিকভাবে সব মন্ত্রণালয়/বিভাগ/ অধিদফতর/ বিভাগ স্ব স্ব নিয়োগবিধি অনুযায়ী বিভিন্ন পদে জনবল নিয়োগের প্রয়োজনীয় কার্যক্রম গ্রহণ করে থাকে।

রিজেন্ট এয়ারের সপ্তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী

বাংলাদেশের বেসরকারি শীর্ষস্থানীয় বিমান সংস্থা রিজেন্ট এয়ারের সপ্তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী অনুষ্ঠিত হয়ে গেল গত ১৮ নভেম্বর শনিবার। হোটেল রেডিসন ব্লুতে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পর্যটনমন্ত্রী জনাব রাশেদ খান মেনন এমপি এবং সংস্কৃতিমন্ত্রী জনাব আসাদুজ্জামান নূর এমপি।

বাংলাদেশের অভ্যন্তরীন বিমান যোগাযোগ ব্যাবস্থায় রিজেন্ট এয়ারের অবদানের কথা তুলে ধরে রাশেদ খান মেনন এমপি এই বিমান সংস্থাটির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর শুভেচ্ছা জনাান। সংস্কৃতিমন্ত্রী জনাব আসাদুজ্জামান নূর এমপি তার বক্তব্যে রিজেন্ট এয়ারের উজ্জল ভবিষ্যৎ কামনা করেন। এছাড়া সুচনা বক্তব্যে রিজেন্ট এয়ারের সিইও লে. জে. এম ফজলে আকবর যাত্রীসেবা ও রিজেন্ট এয়ারের ভবিষ্যৎ কর্মপরিকলাপনা তুলে ধরেন। অনুষ্ঠানে রিজেন্ট এয়ারের চেয়ারম্যান ইয়াসিন আলী ও এডি মাশরুফ হাবিব ছাড়াও রিজেন্ট এয়ারের সর্বস্তরের কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা উপস্থিত ছিলেন।

প্রসঙ্গত ২০১০ সালে এইচজি এভিয়েশন ‌‘রিজেট এয়ার ব্র্যান্ড’ নাম নিয়ে আকাশে ডানা মেলে হাবিব গ্রুপের এই বিমান সংস্থাটি। প্রতিষ্ঠার প্রথম বছরেই ‘বেস্ট এয়ার লাইন অব দ্যা ইয়ার’ খেতাবটি নিজেদের করে নেয় রিজেন্ট। একবছর পরেই দেশের সীমানা পেরিয়ে আর্ন্তজাতিক রুটে নাম লেখায় রিজেন্ট।

২টি ড্যাশ-৮ কিউ বিমান দিয়ে যাত্রা শুরু করা রিজেন্ট এয়ারের বহরে এখন যুক্ত হয়েছে আরো ছয়টি বোয়িং ৭৩৭ সুপরিসর বিমান যা ব্যাবহৃত হচ্ছে ৭টি আন্তর্জাতিক এবং ২টি অভ্যন্তরীণ রুটে যাত্রী পরিবহনে।

এদিকে সপ্তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীতে ১২-৩০ নভেম্বরের মধ্যে টিকেট কেটে ১৫ জানুয়ারি থেকে ১৫ জুন ভ্রমণের জন্য ৭টি আর্ন্তজাতিক এবং ২টি অভ্যন্তরীন রুটে ৫০ শতাংশ পর্যন্ত ছাড় ঘোষণা করেছে রিজেন্ট এয়ার। বর্ষপূর্তির ছাড়ের পর সব ট্যাক্সসহ ঢাকা ও চট্টগ্রাম থেকে ব্যাংকক যাওয়া-আসা ১৫ হাজার ৯৯৯ টাকা, কলকাতা ৮ হাজার ৪৯৯, মাসকাট ২২ হাজার ৪৯৯ এবং দোহা ২৬ হাজার ৪৯৯ টাকা।

অন্যদিকে ঢাকা থেকে কুয়ালালামপুর যাওয়া-আসা ১৭ হাজার ৯৯৯ টাকা, সিঙ্গাপুর ১৭ হাজার ৯৯৯, কাঠমান্ডু ১৩ হাজার ৯৯৯ এবং অভ্যন্তরীন রুট চট্টগ্রাম ৪ হাজার ৫০০ এবং কক্সবাজার ৬ হাজার ৪৯৯ টাকা করা হয়েছে। নির্ধারিত সময়ে টিকিট কেটে যাত্রীর পছন্দের সময়ে ভ্রমণ করতে পারবেন।

স্পিকারের সঙ্গে স্পেনের রাষ্ট্রদূতের সাক্ষাৎ

জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সঙ্গে তার সংসদ কার্যালয়ে বাংলাদেশে নবনিযুক্ত স্পেনের রাষ্ট্রদূত আলভারো ডি সালাস জিমেনেজ ডি আজকারাত সৌজন্য সাক্ষাৎ করেছেন।

সোমবার সাক্ষাতে তারা দ্বি-পাক্ষিক স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয়, ৬৩তম সিপিসি, দু’দেশের বাণিজ্যিক সম্পর্ক ও সংসদীয় কার্যক্রম নিয়ে আলোচনা করেন। স্পিকার বলেন, স্পেনের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক দীর্ঘদিনের। তিনি বাংলাদেশের উন্নয়ন ও অগ্রগতিতে স্পেনের সহযোগিতার প্রশংসা করেন এবং আগামীতেও এ সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

রাষ্ট্রদূত ৬৩তম কমনওয়েলথ পার্লামেন্টারি কনফারেন্স (সিপিসি) এর সফল আয়োজনের জন্য স্পিকারকে অভিনন্দন জানান। তিনি অর্থনৈতিক ও সামাজিক বিভিন্ন সূচকে বাংলাদেশের সফলতারও প্রশংসা করেন।

রাষ্ট্রদূত বলেন, বাংলাদেশের সঙ্গে স্পেনের বিভিন্ন ক্ষেত্রে বাণিজ্যিক সম্পর্ক রয়েছে। স্পেনের কয়েকটি বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশের তৈরি পোশাক শিল্পসহ অন্যান্য সেক্টরে কাজ করছে। ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশ ও স্পেনের সংসদীয় প্রতিনিধি দলের সফর ও অভিজ্ঞতা বিনিময়ের মাধ্যমে দু’দেশের পার্লামেন্ট উপকৃত হবে।