ইবাদত কবুলে যে র্শতগুলো মেনে চলা আবশ্যক

আমলে সালেহ বা নেক কাজই হলো ইবাদত। আল্লাহ তাআলা তাঁর ইবাদত-বন্দেগি তথা দাসত্ব করার জন্যই তিনি মানুষকে সৃষ্টি করেছেন। এ কারণেই দুনিয়ার শান্তি ও পরকালের মুক্তিতে আমলে সালেহ-এর বিকল্প নেই। তবে সে আমলে সালেহ-এর জন্য শর্ত হলো ঈমান।

তাইতো আল্লাহ তাআলা কুরআনুল কারিমের অনেক জায়গায় ঈমানের সঙ্গে সঙ্গে আমলে সালেহ-এর কথা বলেছেন। কেননা ঈমানবিহীন আমলে সালেহ বা ভালো কাজের কোনো দাম নেই।

আর প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘আমল অল্প হোক; কিন্তু ঈমান মজবুত হতে হবে। নাজাতের জন্য অল্প আমলই যথেষ্ট।’

আমলে সালেহ তথা ইবাদত বন্দেগি আল্লাহ তাআলার দরবারে গ্রহণযোগ্য হওয়ার জন্য কিছু গুরুত্বপূর্ণ শর্ত রয়েছে। এ শর্তগুলোর বাস্তবায়ন ছাড়া আমল তথা ইবাদত-বন্দেগি কবুল হওয়ার আশা করা যায় না। আর তাহলো-

ইলম বা জ্ঞান অর্জন
ইলম বা জ্ঞান অনুযায়ী আমল করা। আমলে সালেহ তথা ইবাদত-বন্দেগির জন্য জ্ঞান থাকা আবশ্যক। না জেনে আল্লাহ তাআলার ইবাদত সম্ভব নয়। আমল করার জন্য ঐ আমলের জ্ঞান সঠিকভাবে অর্জন করা জরুরি।

এ জন্য ইলম ছাড়া আমল বিশুদ্ধ হওয়া কঠিন। আর ঐ আমলই কবুল হয়, যা সহিহ এবং বিশুদ্ধ হয়। আর ইবাদতে ভুল হলে দুনিয়া ও পরকালের জিন্দেগি বরবাদ হয়ে যাবে।

নিয়তের বিশুদ্ধতা
নিয়তের বিশুদ্ধতা ইবাদত কবুলের অন্যতম শর্ত। নিয়ত ব্যতীত আমল বা ইবাদত প্রতিদান প্রাপ্তির যোগ্য নয়। অধিকাংশ ইবাদত বা আমলই নিয়ত ছাড়া কবুলই হয় না। এ কারণেই প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘নিশ্চয় সব আমল নিয়তের ওপর নির্ভরশীল।’ (বুখারি)

সবর বা ধৈর্য অবলম্বন
আমলে সালেহ সম্পাদনে ধৈর্য এবং ধীরস্থির থাকা জরুরি। তাড়াহুড়ো করে আমলে সালেহ বা ইবাদত বন্দেগি করা কোনো মুমিনের কাজ নয়।

নেক আমল করতে গিয়ে বান্দার উচিত, সে যেন অস্থিরতার প্রদর্শন না করে ধীরস্থিরতা ও ধৈর্য অবলম্বনের মাধ্যমে আমলে মনোযোগী হওয়া।

ইখলাস তথা একনিষ্ঠতা থাকা
ইখলাস ব্যতীত বান্দার কোনো আমলই কবুল হয় না। আমল যেহেতু ইবাদত; আর ইবাদত-বন্দেগিতে বান্দার একনিষ্ঠতা সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন।

ঐ আমলই আল্লাহর দরবারে কবুল হয়, যে আমল শুধুমাত্র তাঁর জন্যই করা হয়। দুনিয়ার সব পেরেশানি থেকে মুক্ত হয়ে যে আমল শুধুমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য করা হয়।

মনে রাখতে হবে
>> ইবাদত-বন্দেগির জ্ঞান অর্জন করতে হবে;
>> ইবাদত-বন্দেগিতে নিয়তের বিশুদ্ধতা থাকতে হবে;
>> ইবাদত-বন্দেগিতে ধৈর্য তথা ধীরস্থির থাকতে হবে;
>> শুধুমাত্র আল্লাহর জন্য একনিষ্ঠতার সঙ্গে ইবাদত বন্দেগি করতে হবে।

আল্লাহ তাআলা উম্মতে মুসলিমাহকে উল্লেখিত বিষয়গুলো মেনে শুধুমাত্র আল্লাহর জন্যই আমলে সালেহ তথা ইবাদত-বন্দেগি করার তাওফিক দান করুন।

প্রিয়নবির আহ্বান, ‘আমল বা ইবাদত অল্প হোক; তা যেন ঈমানের সঙ্গে হয়, তবে তা অবশ্যই নাজাতের জন্য যথেষ্ট হবে।’ এ হাদিসের ওপর আমল করার তাওফিক দান করুন। আমিন।

বিন্দুমাত্র হারাম খাদ্য ভক্ষণেও ইবাদত কবুল হবে না

হালাল রুটি-রুজি ইবাদত কবুলের পূর্বশত। হালাল রুটি ও রুজি শুধু নিজের জন্য তা নয়, বরং পরিবারের সবার জন্য প্রযোজ্য। কারণ প্রতিটি খারাপ কর্মের প্রভাব শুধু নিজের ওপরই পড়ে না। তার প্রতিক্রিয়া পরিবার তথা সন্তান-সন্তুতির ওপরও পড়ে। সুতরাং নিজের হালাল উপার্জন দিয়ে জীবিকা অবলম্বন করার পাশাপাশি পরিবারকেও বিন্দু পরিমাণ হারাম ভক্ষণ থেকে হেফাজত করা কালেমায় বিশ্বাসী মুসলমানের ওপর ফরজ।

আল্লাহ বলেন, وَلاَ تَأْكُلُواْ أَمْوَالَكُم بَيْنَكُم بِالْبَاطِلِ وَتُدْلُواْ بِهَا إِلَى الْحُكَّامِ لِتَأْكُلُواْ فَرِيقًا مِّنْ أَمْوَالِ النَّاسِ بِالإِثْمِ وَأَنتُمْ تَعْلَمُونَ অর্থাৎ `তোমরা অন্যায়ভাবে একে অপরের সম্পদ ভোগ করো না। এবং জনগণের সম্পদের কিয়দংশ জেনে-শুনে পাপ পন্থায় আত্নসাৎ করার উদ্দেশে শাসন কতৃপক্ষের হাতেও তুলে দিও না।` সূরা আল-বাক্বারাহ : আয়াত ১৮৮)

দেশে সুদ, ঘুষ, পরের সম্পদ আত্মসাৎ, খাদ্যে ভেজাল, চুরি-ছিনতাই ইত্যাদি বৃদ্ধি পেয়েছে। সম্পদের নেশায় মানুষ পাগল হয়ে উঠছে। আমরা একটু ভাবছি না এর পরিণাম কত ভয়াবহ। ক্ষণস্থায়ী দুনিয়া ছেড়ে অবশ্যই আমাদের প্রস্থান করতে হবে। সম্পদ তখন আমাদের কোনো কাজেই আসবে না। এ বিষয়ে হাদিসে নববিতে অনেক সতর্কবাণী রয়েছে।

রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, যে দেহে হারাম খাদ্যে উৎপন্ন মাংস রয়েছে তা জান্নাতে যাবে না। নবী (সা.) আরও বলেছেন, হালাল জীবিকা সন্ধান করা প্রত্যেক মুসলমানের ওপর ফরজ (তাবরানি ও বায়হাকি) ইবাদাত কবুলের জন্য হালাল খাদ্য অন্যতম শর্ত।

হযরত  ইবনে ওমর রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, যে ব্যক্তি দশ দিরহাম দিয়ে কোনো বস্ত্র ক্রয় করে এবং সেই দশ দিরহামের মধ্যে একটি দিরহামও হারাম হয় তবে যতক্ষণ সেই বস্ত্র তার পরিধানে থাকবে, ততক্ষণ তার নামাজ কবুল হবে না।

হজর যাবের রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কা’ব ইবনে ওজরাকে বলেছেন,  যে দেহের অস্থি-মজ্জা হারাম সম্পদ দ্বারা প্রতিপালিত হয়েছে তা কখনো বেহেশতে প্রবেশ করবে না এবং একমাত্র দোযখই হবে তার জন্যে সঠিক স্থান।

সুতরাং…
হালাল রুটি ও রুজি ইবাদত কবুলের পূর্বশর্তই নয়। হালাল রুজি নিজের ও পরিবারের জন্য ফরজ। আল্লাহ তাআলা হালাল জীবিকা অন্বেষণের তাওফিক দান করুন। হালাল আয়-ইনকাম করার তাওফিক দান করুন। আমিন।

জাগোনিউজ২৪.কমের সঙ্গে থাকুন। গুরুত্বপূর্ণ দুআ ও আমল শিখুন। সুন্দর সুন্দর ইসলামি আলোচনা পড়ুন। কুরআন-হাদিস মোতাবেক আমলি জিন্দেগি যাপন করে আল্লাহর নৈকট্য অর্জন করুন। আমিন, ছুম্মা আমিন।

ইবাদত বন্দেগির কুরআনিক পদ্ধতি

ইসলাম পূর্ণাঙ্গ জীবন ব্যবস্থা। এ কথাটি আল্লাহর। অথচ বান্দা তার সুফল লাভে ব্যর্থ। ইবাদত-বন্দেগিসহ দৈনন্দিন জীবনের কোনো কাজেই বান্দাহ মজা পায় না। আল্লাহ তাআলা বান্দার কল্যাণে সমগ্র জাহান সৃষ্টি করেছেন। সৃষ্টি করেছেন সব উপাদান, যা প্রয়োজন নিত্যদিন।বান্দা সব কার্যক্রমের  স্বাদ তখনই পাবে, যখন আল্লাহ প্রদর্শিত পথে সে চলবে।কিভাবে ইবাদতে পরিপূর্ণতা লাভ হবে, বান্দা পাবে পরিপূর্ণ স্বাদ তা জাগো নিউজের পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হলো-

এক. আল্লাহকে পূর্ণ ভালোবাসা অর্থাৎ আল্লাহর ভালোবাসা বা আল্লাহ যা ভালোবাসেন তাঁর ভালোবাসাকে অন্য সব বস্তুর ওপর প্রাধান্য দেয়া।

দ্বিতীয়. আল্লাহর নিকট পূর্ণ বিনয়-নম্রতা ও আনুগত্য প্রকাশ করা অর্থাৎ বান্দা আল্লাহ তাআলার আদেশসমূহ পালনের এবং নিষেধাজ্ঞাসমূহ হতে বেঁচে থাকার মাধ্যমে বিনয় ও নম্রতা প্রকাশ করবে।

সুতরাং পূর্ণ বশ্যতা, বিনয়-নম্রতা, আশা-আকাঙ্ক্ষা ও ভয়-ভীতির সঙ্গে পূর্ণ ভালবাসাকে ইবাদত বলে। এইরূপ আমলের মাধ্যমেই বান্দা স্বীয় প্রভূর ভালোবাসা লাভ করে এবং সন্তুষ্টি অর্জনে সক্ষম হয়।

আল্লাহ ফরজ বিধি-বিধান পালনের মাধ্যমে আল্লাহর নৈকট্য অর্জনকে ভালোবাসেন। পাশাপাশি বান্দার নফল ইবাদত যত বেশি বৃদ্ধি পাবে ততই তার নৈকট্য ও মর্যাদা আল্লাহর নিকট বৃদ্ধি পাবে। আল্লাহর অনুগ্রহ ও করুনায় এই মাধ্যমই আল্লাহর পক্ষথেকে মুমিন বান্দার নাজাতে উপায়।

আল্লাহ বলেন, `তোমরা স্বীয় প্রতিপালককে ডাক, কাকুতি-মিনতি করে, অত্যন্ত সংগোপনে। তিনি সীমা লংঘনকারীদের ভালোবাসেন না। (সূরা আ`রাফ : আয়াত ৫৫)

আল্লাহ ঘোষণা অনুযায়ী ইবাদত করবে বিনয়ের সহিত গোপনে। গোপনে ইবাদত করার অবস্থা থাকা সত্তেও মানুষ প্রকাশ্যে লোক দেখানোর জন্যও ইবাদত করে। তাই আল্লাহ বলেছেন তোমরা ইবাদতে সীমা লংঘন কর না। আল্লাহর প্রিয় বান্দারা যখন দোয়া করবে তখন কোনো শব্দ শোনা যাবে না।
ইবাদতে আমাদের করণীয়-
১. ইবাদত গোপনে করতে হবে;
২. ইবাদতে বিনয় থাকতে হবে;
৩. ইবাদতে কাঁদতে হবে।
৪. কান্না না আসলে কান্নার ভান করতে হবে
৫. লোকে আবেদ হিসেবে সম্মান করবে এই নিয়্যত ইবাদত করা যাবে না
৬. প্রত্যেকটি কাজ আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য করতে হবে
৭. যা সম্ভব নয় এমন দুআ করা যাবে না। যেমন- নবী হওয়ার দোয়া ইত্যাদি।
৮. নামাজি এমনভাবে নামাজ পড়বে, যাতে পাশে শয়নকারী স্ত্রীও টের না পায়
৯. হাফেজ কুরআন তিলাওয়াত করবে, যাতে অন্য কারও নিকট হাফেজ পরিচিতি প্রকাশ না হয়।

আল্লাহ যেন সমগ্র মানবজাতিকে নিরবে অত্যন্ত গোপনে আল্লাহর ইবাদত বন্দেগি করার তাওফিক দান করেন। ইবাদত-বন্দেগিতে যেন আল্লাহ ভয় এবং মহব্বত থাকে। আল্লাহ আমাদের তাঁর শিকানো পদ্ধতিতে তাঁকে স্মরণ করার, সর্ব প্রকার লোক দেখানো ইবাদত-বন্দেগি থেকে হেফাজত করে সঠিক নিয়মে ইবাদত-বন্দেগি করার তাওফিক দান করেন। আমিন। জাগোনিউজ২৪.কমের সঙ্গে থাকুন। সুন্দর সুন্দর ইসলামি আলোচনা পড়ুন। কুরআন-হাদিস মোতাবেক আমলি জিন্দেগি যাপন করে আল্লাহর নৈকট্য অর্জন করুন। আমিন, ছুম্মা আমিন।

ইবাদত-বন্দেগিতে একনিষ্ঠতার গুরুত্ব ও মর্যাদা

ইবাদত-বন্দেগি হবে মহান আল্লাহ তাআলার সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য। আর এ ইবাদত-বন্দেগিতে যদি একনিষ্ঠতা না থাকে, গভীর মনোযোগ না থেকে তবে তা হবে নিষ্ফল। এ কারণেই আল্লাহ তাআলা কুরআনুল কারিমের অনেক জায়গায় একনিষ্ঠভাবে ইবাদত-বন্দেগি করতে নির্দেশ দিয়েছেন।

প্রকৃতপক্ষে ইবাদতে ইখলাছ বা একনিষ্ঠতাই হলো ইসলামের মূল বিষয়। আল্লাহ তাআলা তা সুস্পষ্টভাবে ঘোষণা করেন, ‘তারা তো আদিষ্ট হয়েছিল আল্লাহর আনুগত্যে বিশুদ্ধচিত্ত হয়ে একনিষ্ঠভাবে তার ইবাদত করতে এবং নামাজ প্রতিষ্ঠা করতে এবং জাকাত আদায় করতে আর এটাই সঠিক ধর্ম।’ (সুরা বাইয়্যেনাহ : আয়াত ৫)

আলোচ্য আয়াতে আল্লাহ তাআলা মানুষকে শিরক হতে তাওহিদের প্রতি এবং দুনিয়ার সব ধর্ম হতে বিমুখ হয়ে শুধুমাত্র ইসলামের প্রতি ঝুঁকে একনিষ্ঠভাবে তাঁর ইবাদত-বন্দেগি করতে নির্দেশ দিয়েছেন। যেভাবে আদিষ্ট হয়েছিলেন হজরত ইবরাহিম আলাইহিস সালাম।

অন্য আয়াতে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘(হে রাসুল!) আপনি বলুন, নিশ্চয়ই আমি আদিষ্ট হয়েছি আল্লাহর আনুগত্যে বিশুদ্ধচিত্ত হয়ে তাঁরই ইবাদত (দাসত্ব) করি।’ (সুরা যুমার : আয়াত ১১)

আল্লাহ তাআলা কুরআনুল কারিমে ইখলাছ তথা একনিষ্ঠতাপূর্ণ ইবাদতকে তার জন্য নির্দিষ্ট করেছেনে। আল্লাহ বলেন, ‘নিশ্চয়ই আমি আপনার কাছে এ কিতাব যথাযথভাবে নাজিল করেছি; সুতরাং আপনি আল্লাহর আনুগত্যে একনিষ্ঠ হয়ে তাঁর উপাসনা করুন। জেনে রাখুন! খাঁটি আনুগত্য শুধুমাত্র আল্লাহ তাআলারই প্রাপ্য।’ (সুরা যুমার : আয়াত ২-৩)

এ আয়াতে আল্লাহ তাআলা বান্দাকে একনিষ্ঠ হয়ে তাঁর সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য নেক আমল তথা ইবাদত-বন্দেগির জোর তাগিদ দিয়েছেন।

উল্লেখিত আয়াতগুলো থেকে এ কথা পরিষ্কার যে, ‘ইসলামে ইবাদত-বন্দেগিতে একনিষ্ঠতা এক গুরুত্বপূর্ণ শর্তের নাম। দুনিয়া আগমনকারী সব নবি-রাসুলগণই ইবাদত-বন্দেগিতে একনিষ্ঠতার প্রতি আদিষ্ট হয়েছেনে।

পরিশেষে…
ইসলামি শরিয়তের সব দিক ও শাখায় আল্লাহর হুকুম পালনে এবং তার নৈকট্য অর্জনে একনিষ্ঠতার বিকল্প নেই। নিঃসন্দেহে নবি-রাসুলগণের দাওয়াতের মূলমন্ত্রেই ছিল ইখলাস তথা একনিষ্ঠতা। তাওহিদ ও ইখলাস হলো কলব বা হৃদয়ের কর্মের সর্বোচ্চস্তর।
আল্লাহর দাসত্ব হলো অন্তরের কাজ। যদি অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ দ্বারা দাসত্ব করা হয় কিন্তু মানুষের অন্তর ইখলাস ও তাওহিদ থেকে শূন্য থাকে; তবে সে যেন একটি মৃত দেহ; যার কোনো রূহ নেই। আর নিয়ত হলো অন্তরের আমল।

আর এ ইখলাস তথা একনিষ্ঠতাই হলো ইবাদত কবুলের দু’টি শর্তের মধ্যে একটি। তাই ইখলাস তথা একনিষ্ঠতা ব্যতিত ইবাদত কবুল হবে না।

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে ইসলামি শরিয়তের প্রতিটি কাজে মনে মননে ইখলাস তথা একনিষ্ঠতা অবলম্বনের তাওফিক দান করুন। ইখলাসের মাধ্যমে ইবাদত করে আল্লাহর নৈকট্য অর্জন করার তাওফিক দান করুন। আমিন।

আমল কবুলে ইখলাসের গুরুত্ব

দৈনন্দিন জীবনে মানুষের প্রতিটি কাজই ইবাদত। আল্লাহ তাআলা মানুষে তাঁর ইবাদতের জন্যই সৃষ্টি করেছেন। কুরআনের বিধান অনুযায়ী জীবন পরিচালনাই মানুষের একমাত্র কাজ। তবে মানুষের প্রতি কাজেই ইখলাস তথা একনিষ্ঠতার গুরুত্ব অনেক বেশি।

জান্নাত লাভে ইখলাসপূর্ণ ইবাদতের গুরুত্ব যেমন বেশি তেমনি মানুষের আমল কবুল হওয়ার জন্য ইখলাসপূর্ণ ইবাদতও জরুরি। ইখলাস তথা এননিষ্ঠতাকে আমল কবুলের পূর্বশর্ত করা হয়েছে।

আল্লাম ইবনে কাসির রহমাতুল্লাহি আলাইহি বলেন, ‘দু’টি শর্ত সমন্বয় ব্যতিত আল্লাহ তাআলা বান্দার কোনো আমলই গ্রহণ করবেন না।

প্রথমত : মানুষ আল্লাহ তাআলার সন্তুষ্টি লাভে যে আমল করবে, সে আমল ইসলামি শরিয়ত কর্তৃক অনুমোদিত হতে হবে।

দ্বিতীয়ত : ইখলাস সহকারে শিরকমুক্তভাবে (একনিষ্ঠভাবে আল্লাহর জন্য নিবেদিত হয়ে) ইবাদত করতে হবে। (ইবনে কাসির)

আল্লামা সাজি রহমাতুল্লাহি আলাইহি বলেন, ‘মানুষের ইবাদত ও আমল আল্লাহর কাছে গ্রহণযোগ্য হতে ৫টি কাজ আবশ্যক।
>> আল্লাহ তাআলার পরিচয় লাভ করে আমল করা;
>> হক বা সত্য সম্পর্কে সঠিক সিদ্ধান্তে উপনীত হয়ে আমল করা;
>> ইখলাস বা একনিষ্ঠভাবে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য আমল করা;
>> রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সুন্নাত মোতাবেক আমল করা;
>> হালাল খাদ্য গ্রহণ করে আমল করা। (আল-জামে লি-আহকামিল কুরআন : কুরতুবী)

আল্লাহর কাছে মানুষের আমল গ্রহণযোগ্য হতে ইখলাসের গুরুত্ব উঠে এসেছে প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের হাদিসে পাকে-

রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন,
‘যে আমল বা ইবাদত আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য ইখলাসের সঙ্গে করা হয় না;
আল্লাহ তাআলা সে আমল কবুল করবেন না।’ (নাসাঈ)

এ কারণেই আল্লাহ তাআলা কুরআনুল কারিমের অনেক জায়গায় ইখলাসের সঙ্গে তাঁর ইবাদত-বন্দেগি করার জন্য নির্দেশ প্রদান করেছেন।

হাদিসে ইখলাসবিহীন আমলকারীর জন্য পরকালে মহাক্ষতি ও বিপদের সতর্কবাণী করা হয়েছে। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন-

‘কেয়ামতের দিন আল্লাহ তাআলা যখন সব মানুষকে একত্র করবেন,
তখন একজন ঘোষণাকারী এ মর্মে ঘোষণা করবে, যে ব্যক্তি আল্লাহর উদ্দেশ্যে
নিবেদিত কাজে অন্য কাউকে তাঁর সঙ্গে শরিক করেছে; সে যেন আল্লাহকে
বাদ দিয়ে সেই শরিকের কাছ থেকে প্রতিদান বুঝে নেয়। কেননা আল্লাহ তাআলা
সব ধরনের অংশীদার ও অংশীদারিত্ব থেকে মুক্ত।’ (ইবনে মাজাহ)

সুতরাং আমল কবুলে ইখলাসের গুরুত্ব অনুধাবনে কুরআন ও সুন্নাহরে নির্দেশ মেনা চলা জরুরি। মুসলিম উম্মাহর উচিত কুরআন-সুন্নাহর নির্দেশনা মোতাবেক শুধুমাত্র আল্লাহ তাআলার জন্য একনিষ্ঠভাবে ইবাদত-বন্দেগি করা।

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে দুনিয়ার প্রতিটি কাজেই আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে ইখলাসের সঙ্গে করার তাওফিক দান করুন। পরকালের সফলতা দান করুন। দুনিয়ার সব আমলগুলো কবুল করুন। আমিন।

মানুষের ভালোবাসা ও নেতৃত্ব লাভের আমল

প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হাদিসে ইরশাদ করেন, ‘আল্লাহ তাআলার ৯৯টি গুণবাচক নাম রয়েছে। যে ব্যক্তি এ গুণবাচক নামগুলোর জিকির করবে; সে জান্নাতে যাবে।’

দৈনন্দিন জীবনে আল্লাহ তাআলার এ গুণবাচক নামগুলোর জিকির আজকার ও আমলে রয়েছে আলাদা আলাদা ফজিলত ও উপকারিতা।

আল্লাহ তাআলার গুণবাচক নাম সমূহের মধ্যে (اَلْقَيُّوْمُ) ‘আল-ক্বাইয়্যুম’ একটি। মানুষের ভালোবাসা লাভ এবং কোনো কাজ মনমতো সম্পদনের জন্য কাযকরী আমলও এটি।

আল্লাহর গুণবাচক নাম (اَلْقَيُّوْمُ) ‘আল-ক্বাইয়্যুম’-এর জিকিরের আমল ও ফজিলত তুলে ধরা হলো-

 

উচ্চারণ : ‘আল-ক্বাইয়্যুম’
অর্থ : ‘যিনি নিজে চিরস্থায়ী এবং সৃষ্টিজীবকে প্রতিষ্ঠাকারী’

আল্লাহর ‍গুণবাচক নাম (اَلْحَيُّ)-এর আমল

ফজিলত
>> যে ব্যক্তি শেষ রাতে আল্লাহ তাআলার পবিত্র গুণবাচক নাম (اَلْقَيُّوْمُ) ‘আল-ক্বাইয়্যুম’ অধিক হারে পাঠ করে, ওই ব্যক্তিকে জনগণ ভালোবাসতে শুরু করে।

>> যে ব্যক্তি আল্লাহ তাআলার পবিত্র গুণবাচক নাম (اَلْقَيُّوْمُ) ‘আল-ক্বাইয়্যুম’-এর অধিক জিকির করে, সে ব্যক্তির সব কাজই তার মনমতো হবে।

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহর সব মানুষকে তাঁর গুনবাচক নামের ফজিলত লাভ করার তাওফিক দান করুন। কুরআন সুন্নাহ মোতাবেক জীবন পরিচালনার তাওফিক দান করুন। আল্লাহ তাআলার গুণবাচক নাম (اَلْقَيُّوْمُ) আল কাইয়্যূমু এর বিশেষ ফজিলত মানুষের ভালোবাসা লাভ এবং মন মতো কাজ করার তাওফিক দান করুন। আমিন।

গুগল অ্যাডসেন্সে বাংলা ভাষার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন ৪ ডিসেম্বর

জনপ্রিয় সার্চ ইঞ্জিন গুগলের অ্যাড নেটওয়ার্ক ‘গুগল অ্যাডসেন্স’-এ যুক্ত হয়েছে ‘বাংলা ভাষা’। গত ২৬ সেপ্টেম্বর (মঙ্গলবার) থেকে গুগল তাদের নেটওয়ার্কে বাংলা ভাষা যুক্ত করেছে। এবার ঢাকায় বাংলা ভাষায় অ্যাডসেন্সের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করবে গুগল।

২০০৩ সালে চালু হওয়া ‘গুগল অ্যাডসেন্স’র শুরুর পরই বিজ্ঞাপন সুবিধা থেকে পিছিয়ে ছিল বাংলা ভাষার ওয়েবসাইটগুলো। তবে বাংলা ভাষার সাইটগুলোতে অ্যাডসেন্স চালুর করায় লাভবান হচ্ছে বাংলাদেশ।

জানা গেছে, আগামী ৪ ডিসেম্বর (সোমবার) ঢাকার একটি পাঁচ তারকা হোটেলে বাংলা ভাষায় অ্যাডসেন্সের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করবে গুগল। বাংলাদেশ, ভারতসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বাংলা ভাষার ব্যবহার ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। এসব কিছু বিবেচনা গুগল এ অ্যাডসেন্স চালু করে।

বিশ্বের প্রায় দেড় কোটি ওয়েবসাইটে গুগল অ্যাডসেন্স ব্যবহার করা হচ্ছে। বাংলা ভাষায় অ্যাডসেন্স চালু হওয়ার ফলে এ সংখ্যায় নতুনমাত্রা যুক্ত হয়েছে। বাংলাদেশে-ভারতে বিভিন্ন ওয়েবসাইটে ইতোমধ্যে গুগল অ্যাডসেন্স চালু করা হয়েছে।

দেশে মোবাইল ফোন গ্রাহক ১৪ কোটি ছাড়িয়েছে

প্রায় ১৭ কোটি জনসংখ্যার বাংলাদেশের মানুষের হাতে ১৪ কোটি ৭ লাখ ১৩ হাজার মোবাইল সিম রয়েছে। যাদের মধ্যে ইন্টারনেট ব্যবহার করছেন ৭ কোটি ৩৮ লাখ ১৭ হাজার।

বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) মঙ্গলবার এই তথ্য প্রকাশ করেছে। গত বছরের সেপ্টেম্বরে এই সংখ্যা ছিল ১১ কোটি ৯০ লাখ ৮৭ হাজার (মোবাইল সিম) ও ৬ কোটি ২৯ লাখ ৬৮ হাজার (ইন্টারনেট)।

গত বছর সেপ্টেম্বরে গ্রামীণ ফোনের গ্রাহক সংখ্যা ছিল ৫ কোটি ৫০ লাখ ১৫ হাজার। যা বেড়ে এ বছর ৬ কোটি ৩৮ লাখ ৮২ হাজারে পৌঁছেছে।

 

অন্যদিকে রবির গ্রাহক ছিল ২ কোটি ৩৮ লাখ ৩৪ হাজার। চলতি বছর রবি ও এয়ারটেল একীভূত করার পর এই সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ৪ কোটি ১২ লাখ ১১ হাজার।

বাংলালিংকের গ্রাহক ছিল ২ কোটি ৯৪ লাখ ৭১ হাজার। এ বছর তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩ কোটি ২৩ লাখ ৭৯ হাজারে।

সরকারি মোবাইল অপারেটর টেলিটকের গ্রাহক ছিল ২৯ লাখ ৮৯ হাজার। যা বেড়ে ৩২ লাখ ৪১ হাজারে পৌঁছেছে।

 

তবে গত বছরের সেপ্টেম্বরে দেশে ওয়াইম্যাক্স ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা ১ লাখ থাকলেও এবার তা কমে ৯০ হাজারে হয়েছে।

এছাড়া আইএসপি ও পিএসটিএন ইন্টারনেট গ্রাহক ছিল ৩৭ লাখ ৯৪ হাজার। এবছর এই সংখ্যা বেড়ে ৫৩ লাখ ২১ হাজারে পৌঁছেছে।

 

এই তালিকা তৈরির ক্ষেত্রে যারা বিগত ৯০ দিনের মধ্যে একবার হলেও সিম চালু করে হলেও ভয়েসকল, ইন্টারনেট কিংবা এসএমএস করেছেন তাদের অন্তর্ভু্ক্ত করা হয়েছে।

প্রতি একমাস পর পর বিটিআরসি দেশের মোবাইল ফোন গ্রাহকদের সংখ্যার তালিকা প্রকাশ করে আসছে।

বাংলাদেশে রোবট রেস্টুরেন্টের যাত্রা শুরু

বাংলাদেশের প্রথম রোবট রেস্টুরেন্টের যাত্রা শুরু হয়েছে। এ রেস্টুরেন্টে কোনো মানুষ নয়, কেবল রোবটই কাস্টমারদের খাবার সরবরাহ করছে। রাজধানীর মিরপুর রোডে প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন এবং আসাদ গেটের কাছে প্রধান সড়কের ফ্যামিলি ওয়ার্ল্ড টাওয়ারের দ্বিতীয় তলায় এ রেস্টুরেন্টটির অবস্থান।

বুধবার প্রতিষ্ঠানের নিজস্ব অডিটরিয়ামে রেস্টুরেন্টটির উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। যাত্রা শুরু উপলক্ষে রেস্টুরেন্ট কর্তৃপক্ষ এবং রোবট প্রস্তুতকারী সংস্থা এইচ জেড এক্স ইলেকট্রনিক টেকনোলজি কোম্পানি যৌথ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আয়োজকরা বলেন, বাংলাদেশে এটিই এ ধরনের প্রথম রেস্টুরেন্ট যেখানে রোবটের মাধ্যমে কাস্টমারদের খাবার সরবরাহ করা হবে। এর মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের জন্য একটি নতুন মাইলফলক এবং নতুন দিগন্তের সূচনা করলো। বাংলাদেশ ও চীন যৌথভাবে এ রেস্টুরেন্টটি পরিচালনা করবে বলে সম্মেলনে জানানো হয়।

 

শিশুদের বিনোদন ও খাবারের বিষয়টি চিন্তা করেই এ ধরনের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে বলে রেস্টুরেন্ট কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন। রেস্টুরেন্টটির পরিচালক রাহিন রাইয়ান নবী বলেন, ‘অনেক সময় দেখা যায় যে ওয়েটাররা কয়েক ঘণ্টা কাজ করার পরে ক্লান্ত হয়ে পড়েন। সেই ক্লান্ত অবস্থায়ই তারা কাস্টমারদের খাবার সরবরাহ করতে বাধ্য হন। কিন্তু রোবট কখনোই ক্লান্ত হবে না। তাই যখন রোবট খাবার সরবরাহ করবে তখন এটি কাস্টমারকে আরও ভালো সেবা দিতে পারবে। সেটি সব বয়সের মানুষের জন্য অত্যন্ত রোমাঞ্চকর পরিবেশও তৈরি করবে। বিশেষ করে শিশুরা সবচেয়ে বেশি রোমাঞ্চিত হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘খাবারের দাম সাধ্যের মধ্যেই রাখা হবে যাতে সব শ্রেণির মানুষই এ সেবা নিতে পারেন। শিশুদের জন্য আমাদের বিশেষ কিছু খাবার থাকছে। এবং আমরা খাবারের মান ও পারিবারিক পরিবেশ অবশ্যই বজায় রাখা হবে। যাতে করে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে যে কেউ এখানে খেতে আসতে পারেন।’

যারা উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছিলেন তাদের সবাইকেই রোবটের কার্যক্রম দেখেন। উপস্থিত সবার জন্যই এটি ছিল একটি সম্পূর্ণ নতুন অভিজ্ঞতা।

 

রেস্টুরেন্টটির পরিচালক আরো বলেন, একজন ওয়েটারের পক্ষে সব সময় খাবারের গুণগতমান নিশ্চিত করা ও জীবানুমুক্ত থাকা সম্ভব হয় না। তাই আমরা রোবট দিয়ে এসব কাজ করাচ্ছি। রেস্টুরেন্টটিতে প্রাথমিকভাবে দুইটি রোবট কাজ শুরু করবে।

সংবাদ সম্মেলনে রেস্টুরেন্টটির পরিচালক রাহিন রাইয়ান নবী, এইচ জেড এক্স ইলেকট্রনিক টেকনোলজি কোম্পানির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ম্যাক্স সোয়াজ, কাস্টমার রিলেশন ম্যানেজার তানভিরুল হক উপস্থিত ছিলেন।

এইচ জেড এক্স ইলেকট্রনিক টেকনোলজি কোম্পানির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ম্যাক্স সোয়াজ জানিয়েছেন, বাংলাদেশে রোবট ডিজিটালাইজেশনের জন্য যে কোনো সহযোগিতা করার জন্য তারা সব সময় প্রস্তুত।

 

যে কারণে এ উদ্যোগ

প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান আনোয়ারুন নবী মজুমদারের দুই সন্তান তাসিন রওনাক নবী এবং রাহিন রাইয়ান নবী বিদেশে উচ্চ শিক্ষার জন্য অধ্যয়নরত অবস্থায় চীন সফরে যান। সেখানে গিয়ে তারা চীনের রোবট দ্বারা খাবার সরবরাহ পদ্ধতি দেখে আকৃষ্ট হন। তারা তখন সংশ্লিষ্ট রোবট কোম্পানির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ম্যাক্স সোয়ার্জ এর সঙ্গে যোগাযোগ করেন এবং বাংলাদেশে রোবট রেস্টুরেন্টে চালুর বিষয়ে আলোচনা করেন। এর প্রেক্ষিতে পরবর্তীতে এটি বাংলাদেশে চালু করা হয়।

সর্বসাধারণের সুবিধার্থে প্রাথমিক অবস্থায় আগামী এক মাসের জন্য শিশুদের ‘কিডমিল’ এবং দেশীয় খাবারের সেট ফুড পরিবেশন করা হবে। যার মূল্য সর্বোচ্চ ৫শ’ টাকার বেশি হবে না।

নতুন প্রজন্মের ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম বাংলালিংক ইনোভেটর

ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে নতুন প্রজন্মকে ক্যারিয়ার গঠনের সুযোগ দিতে বাংলালিংক শুরু করেছে পরিকল্পনার প্রতিযোগিতা “বাংলালিংক ইনোভেটর”। অভিনব এই প্রতিযোগিতার মাধ্যমে বিজয়ীরা বাংলালিংকের ডিজিটাল অগ্রযাত্রার সঙ্গী হওয়ার সুযোগ পাবেন।

বুধবার জাতীয় প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে এই প্রতিযোগিতার উদ্বোধন করা হয়। এসময় উপস্থিত ছিলেন বাংলালিংকের চিফ হিউম্যান রিসোর্সেস অ্যান্ড অ্যাডমিনিস্ট্রেশন অফিসার মঞ্জুলা মোরশেদ, হেড অব ট্যালেন্ট অ্যাকিউজিশন মোস্তফা রায়হানুল আলম ও কমিউনিকেশন ডিরেক্টর আসিফ আহমেদ।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণের জন্য আগ্রহী প্রতিযোগীদের বিনোদন, লাইফস্টাইল, শিক্ষা, ক্লাউড কমপিউটিং ও এআই বিষয়ক অভিনব ব্যবসায়িক পরিকল্পনা জমা দিতে হবে। প্রতিভাবান প্রতিযোগীদের বাছাই করে গ্রুমিং, বুট ক্যাম্প সেশন, ওয়ার্কশপ ও অন্যান্য কার্যক্রমের মাধ্যমে তাদের দক্ষতা বৃদ্ধিতে সাহায্য করবে “বাংলালিংক ইনোভেটর”। সুনিয়ন্ত্রিত প্রক্রিয়ার মাধ্যমে নির্বাচিত বিজয়ী দল পাবেন ৫ লাখ টাকা পুরস্কারসহ বাংলালিংকের “স্ট্র্যাটেজিক অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রোগ্রাম”-এর অ্যাসেসমেন্ট সেন্টারে সরাসরি যোগদানের সুযোগ। প্রথম ও দ্বিতীয় রানার-আপ পাবেন যথাক্রমে ৩ লাখ ও ১ লাখ টাকা।

বাংলালিংকের চিফ হিউম্যান রিসোরর্সেস অ্যান্ড অ্যাডমিনিস্ট্রেশন অফিসার মঞ্জুলা মোরশেদ বলেন, “দেশের প্রযুক্তিগত উন্নয়নে তরুণরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে। আমরা সম্ভাবনাময় তরুণদের জন্য একটি ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম তৈরি করতে চাই যাতে তারা তাদের দক্ষতা আরও বৃদ্ধি করতে পারে এবং ভবিষ্যতের ডিজিটাল বিশ্বে বাংলাদেশকে নেতৃত্ব দিতে পারে। আমরা বিশ্বাস করি, সম্ভাবনাময় এই তরুণরা ‘স্ট্র্যাটেজিক অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রোগ্রাম’- এর মাধ্যমে বাংলালিংকের ক্রমন্নোতিতেও অবদান রাখতে পারবে।”

বাংলালিংকের কমিউনিকেশনস ডিরেক্টর আসিফ আহমেদ বলেন, “প্রতিভাবান তরুণদের জন্য অভিনব এই প্ল্যাটফর্ম আনতে পেরে আমরা গর্বিত। তরুণদের অভিনব বিভিন্ন পরিকল্পনা সঠিকভাবে বাস্তবায়ন করা গেলে তা সমাজের সার্বিক উন্নয়নে অবদান রাখতে পারে। প্রযুক্তির মাধ্যমে জীবনযাত্রার পরিবর্তনে বিশ্বাসী একটি প্রতিষ্ঠান হিসেবে আমরা অতীতেও এ ধরনের অভিনব প্রতিযোগিতার উদ্যোগ নিয়েছি। এবারের আয়োজনে আমরা বিপুল সাড়া ও অংশগ্রহণ প্রত্যাশা করছি।”

প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণের জন্য রেজিস্ট্রেশন করা যাবে www.banglalink.net/en/ennovators ঠিকানায়। রেজিস্ট্রেশন করার সময় ১৫ থেকে ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত।