বিশ্বকাপে যেমন হতে পারে ব্রাজিল-আর্জেন্টিনার গ্রুপ

বাছাই পর্বের লড়াই শেষ। স্বাগতিক রাশিয়াসহ বিশ্বকাপে জায়গা করে নিয়েছে ৩২টি দেশ। আগামী ১ ডিসেম্বর হবে দলগুলোর গ্রুপ নির্ধারণের ড্র।

এদিকে গ্রুপ পর্বের ড্রয়ের পটগুলোও নির্ধারণ হয়ে গেছে। চলতি বছরের অক্টোবরে ফিফা র‍্যাংকিং অনুযায়ী পটগুলোতে জায়গা পাচ্ছে কোয়ালিফাই করা দলগুলো। কোয়ালিফাই করা ৩২ দলের মধ্যে র‍্যাংকিংয়ের প্রথম ৭ দল এবং স্বাগতিক রাশিয়া আছে পট-১ এ। র‍্যাংকিং অনুযায়ী পট-২, পট-৩ এবং পট-৪ এ থাকছে যথাক্রমে আটটি করে দল।

এই চার পটের প্রত্যেকটি থেকে লটারির মাধ্যমে একটি করে দল নিয়ে গড়া হবে আটটি গ্রুপ। অর্থাৎ, ‘এ’ থেকে ‘এইচ’ পর্যন্ত প্রতি গ্রুপে থাকবে চারটি করে দল।

নিয়ম অনুযায়ী, একই কনফেডারেশন থেকে কোয়ালিফাই করা একাধিক দল একই গ্রুপে থাকতে পারবে না। উয়েফাভুক্ত দলগুলোর এ ক্ষেত্রে নিয়ম কিছুটা ব্যতিক্রম। এ অঞ্চলের দল বেশি হওয়ায় সর্বোচ্চ দুইটি দল একই গ্রুপে থাকতে পারবে। একই পটে থাকায় গ্রুপ পর্বে দেখা হবার কোন সম্ভাবনা নেই ব্রাজিল ও আর্জেন্টিনার।

তবে গ্রুপ পর্বে মেসি/নেইমারদের দেখা হয়ে যেতে পারে স্পেনের। স্পেনকে না পেলে আর্জেন্টিনা/ব্রাজিল পেতে পারে ইংল্যান্ড, সুইজারল্যান্ড এবং ক্রোয়েশিয়ার মধ্য থেকে একটি দল অথবা মেক্সিকোকে। পট-২ থেকে যদি ইউরোপের কোন দলকে না পায় আর্জেন্টিনা অথবা ব্রাজিল, তবে পট-৩ থেকে ডেনমার্ক, আইসল্যান্ড এবং সুইডেনের মধ্য থেকে একটি দল হতে পারে তাদের গ্রুপ সঙ্গী। তিউনিসিয়া, মিসর এবং সেনেগালের মধ্য থেকেও একটি দলকে পেতে পারে দলদুটি। তবে এক্ষেত্রে পট-২ থেকে কোন আফ্রিকান দল গ্রুপে থাকতে পারবে না। গত আসরের মতো ইরানকেও একই গ্রুপে পেতে পরে মেসি-নেইমাররা।

পট-২ এবং পট-৩ থেকে ইউরোপের কোন দলকে না পেলে অথবা যে কোনো একটি দল পেলে গ্রুপ পর্বেই আর্জেন্টিনা কিংবা ব্রাজিলের সঙ্গে দেখা হতে পারে সার্বিয়ার। তা যদি না হয় তবে অস্ট্রেলিয়া, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া কিংবা সৌদি আরবের মধ্য থেকে যে কোনো একটি দলকে পেতে পারে মেসি-নেইমাররা তবে যদি ইরান না থাকে।

আর্জেন্টিনা অথবা ব্রাজিলের সম্ভাব্য সহজ গ্রুপ: আর্জেন্টিনা/ব্রাজিল, মেক্সিকো, মিশর এবং সৌদি আরব।

আর্জেন্টিনা অথবা ব্রাজিলের সম্ভাব্য কঠিন গ্রুপ: আর্জেন্টিনা/ব্রাজিল, স্পেন, ডেনমার্ক এবং নাইজেরিয়া।

রিয়ালের ড্রতে আরও এগিয়ে গেল বার্সা

চলতি মৌসুমটা খুব একটা ভাল যাচ্ছে না বর্তমান চ্যাম্পিয়ন রিয়াল মাদ্রিদের। জিরোনা ও রিয়াল বেতিসের মত দলের কাছে হেরে আছে পয়েন্ট টেবিলের তৃতীয় স্থানে। এরই মধ্যে আগের ম্যাচে লুইস সুয়ারেজের জোড়া গোলে লেগানেসকে ৩-০ গোলে হারিয়ে চির প্রতিদ্বন্দ্বী বার্সাও এগিয়ে ১১ পয়েন্ট ব্যবধানে।

তাই বার্সার সঙ্গে ব্যবধান কমাতে মাদ্রিদ ডার্বিটি ছিল রোনালদোদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। তবে হাইভোল্টেজ এই ম্যাচে নগর প্রতিদ্বন্দ্বী অ্যাথলেটিকোর সঙ্গে গোলশূন্য ড্র করেছে জিনেদিন জিদানের দল। এতে চির প্রতিদ্বন্দ্বী বার্সার সঙ্গে ব্যবধান একের বেশি কমাতে পারলো রিয়াল মাদ্রিদ

অ্যাথলেটিকোর নতুন মাঠ ওয়ান্ডা মেট্রোপলিটানোয় ম্যাচের তৃতীয় মিনিটেই গোলের সুযোগ পায় স্বাগতিক দলের ফরোয়ার্ড কোরিয়া। মার্সেলো ও রাফোয়েল ভারানের ভুলে বল পেয়ে যান আর্জেন্টাইন এই তারকা। তবে গোলরক্ষককে একা পেয়েও লক্ষ্যভ্রষ্ট শট নিয়ে বসেন এই তারকা।

ম্যাচের ৩১ মিনিটে রিয়ালের হয়ে গোলের সুযোগ পেয়েছিলেন ক্রুস। তবে রোনালদোর বাড়ানো বল পাশের জালে জড়ান জার্মান তারকা। চার মিনিট পর রোনালদোর ফ্রি-কিক ঝাঁপিয়ে কর্নারের বিনিময়ে ঠেকান গোলরক্ষক ইয়ান ওবলাক।

দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই ইনজুরিতে ভোগা নিয়মিত অধিনায়ক সার্জিও রামোসকে তুলে নেন জিদান। বেনজেমার বদলে মাঠে আসেন মার্কো আসেনসিও। এরপর রিয়ালের আক্রমণের ধার বেড়ে যায়। তবে ফরোয়ার্ডদের ব্যর্থতায় আরাধ্য গোলের দেখা আর মেলেনি।

উল্টো ম্যাচের ৭৮ মিনিটে প্রায় গোল খেয়েই বসেছিল রিয়াল। কেভিন গ্যামিরোর চিপ শটে বল কিকো কাসিয়ার মাথার উপর দিয়ে ভিতরে ঢুকতে যাচ্ছিল। একেবারে শেষ মুহূর্তে হেড করে ফেরান ভারানে।

এই ড্রয়ে চির প্রতিদ্বন্দ্বী বার্সেলোনার বিপক্ষে ১০ পয়েন্টে পিছিয়ে পড়লো জিদানের শিষ্যরা। ৩৪ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের শীর্ষে আছে মেসির বার্সা। এক ম্যাচ কম খেলা ভালেন্সিয়া ২৭ পয়েন্ট নিয়ে আছে দ্বিতীয় স্থানে।

বাংলাদেশের বিপক্ষেই কোচ হয়ে আসছেন হাথুরু!

পদত্যাগপত্র পাঠিয়ে দিয়েই নিজের দায়িত্ব শেষ করে ফেলেছেন চন্ডিকা হাথুরুসিংহে। বাংলাদেশ দলের কোচের দায়িত্ব আর পালন করবেন না তিনি। অথচ বিসিবি এখনও চেয়ে আছে তার ফেরার আসায়। আগেরদিনই বিসিবি পরিচালক এবং ক্রিকেট অপারেশন্স কমিটির চেয়ারম্যান আকরাম খান বলেছেন, ‘হাথুরু আসলে তাকে থেকে যাওয়ার প্রস্তাব দেয়া হবে। অন্ততঃ সামনে শ্রীলঙ্কা সিরিজটা যেন তিনি সম্পন্ন করে যান, সে অনুরোধ জানানো হবে।’ একই সঙ্গে আকরাম খান এও জানিয়েছেন, আগামী দুই-তিনদিনের মধ্যে ঢাকায় আসার সম্ভাবনা রয়েছে হাথুরুর।

কিন্তু বিসিবি এখনও অলীক স্বপ্ন দেখে যাচ্ছে। হাথুরু যে বাংলাদেশ দলের কোচিংয়ে আর ফিরছেন না এটা এখন পুরোপুরিই নিশ্চিত। শুধু তাই নয়, তিনি ঢাকায় ফিরবেন, তবে বাংলাদেশের কোচ হিসেবে নয়, কিংবা এ সম্পর্কিত কোনো আলোচনার জন্যও নয়। তিনি ঢাকায় ফিরে আসবেন, বাংলাদেশেরই বিরুদ্ধে, শ্রীলঙ্কার কোচ হয়ে।

ক্রিকেটের জনপ্রিয় ওয়েবসাইট ইএসপিএন ক্রিকইনফো সংবাদ প্রকাশ করেছে, ‘শ্রীলঙ্কা ক্রিকেট বোর্ডের সঙ্গে হাথুরুসিংহের মৌখিক আলোচনা ইতোমধ্যেই সম্পন্ন হয়ে গেছে। শুধু তাই নয়, আগামী এক সপ্তাহের মধ্যেই আনুষ্ঠানিকভাবে চুক্তিপত্রে স্বাক্ষর করবে দুই পক্ষ এবং আগামী মাসে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে বাংলাদেশের হোম সিরিজে লঙ্কানদের কোচ হয়েই ঢাকায় আসবেন হাথুরুসিংহে।’

নভেম্বর ৯ তারিখই ক্রিকইনফোর মাধ্যমে সবাই জানতে পারে, বিসিবির কাছে পদত্যাগপত্র পাঠিয়ে দিয়েছেন চন্ডিকা হাথুরুসিংহে। ওইদিনই সন্ধ্যায় বিসিবি প্রেসিডেন্ট নাহমুল হাসান পাপন মিডিয়ার কাছে স্বীকার করেন, দক্ষিণ আফ্রিকা সিরিজের সময়ই বিসিবির কাছে পদত্যাগপত্র পাঠান হাথুরু। তবে তারা তার (হাথুরু) সঙ্গে কথা না বলে এ বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্তে যাবেন না বলেও জানান পাপন। যদিও পাপন, এমনকি বিসিবির কয়েকজন কর্মকর্তা মিডিয়াকে জানিয়েছিলেন, হাথুরু আর তাদের কারো সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন না। কারও কল ধরছেন না। বিসিবির সিইও যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাননি।

হাথুরুসিংহে শ্রীলঙ্কার কোচের দায়িত্ব নিচ্ছেন নাকি অন্য কোথাও যাচ্ছেন, এ বিষয়ে এখনও পর্যন্ত কিছু জানে না বিসিবি। বোর্ড পরিচালক এবং মিডিয়া কমিটির চেয়ারম্যান জালাল ইউনুস ক্রিকইনফোকে জানান, ‘আনুষ্ঠানিকভাবে আমরা এখনও জানি না সে আমাদের এখানে থাকছে কী থাকছে না। কিংবা অন্য কোথাও চাকরি নিচ্ছে কি-না সেটাও জানি না।’

যখন জিজ্ঞাসা করা হলো যে, শ্রীলঙ্কার কোচ হয়ে তো সম্ভবত তার প্রথম অ্যাসাইনমেন্ট হতে যাচ্ছে বাংলাদেশের বিপক্ষে সিরিজ। বিষয়টা কেমন হবে? জবাবে জালাল ইউনুস বলেন, ‘যদি সে শ্রীলঙ্কার কোচের পদ গ্রহণ করে এবং বাংলাদেশের বিপক্ষে সিরিজেই এখানে আসে, তাহলে এটা লঙ্কানদের জন্য বিশাল সুবিধার। কারণ, আমাদের খেলোয়াড়দের সম্পর্কে এ মুহূর্তে হাথুরুসিংহে ছাড়া আর কেউ বেশি জানে না। শুধুমাত্র ল্যাপটপে বসেই নয়, একেবারে হাতে-কলমে সব কিছু জানে সে। তিনি আমাদের দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা সম্পর্কেও অবহিত। আমাদের উইকেট এবং পরিবেশ সম্পর্কেও তার স্বচ্ছ ধারনা, জানা-শোনা। তবে এটা ঠিক, লঙ্কান ক্রিকেটারদের সঙ্গে সে দীর্ঘদিন পর কাজ করতে যাবে। সুতরাং, এখানে তার মানিয়ে নিতে কিছু সময় লাগতেই পারে।’

২০১৪ সালে ঠিক একই অবস্থায় পড়েছিল শ্রীলঙ্কাও। কারণ, লঙ্কানদের প্রধান কোচের পদ থেকে হঠাৎ পদত্যাগ করে ইংল্যান্ডের সহকারী কোচের দায়িত্ব নেন পল ফারব্রেস। তার এক সপ্তাহ পরই ইংল্যান্ড সফরে গিয়েছিল শ্রীলঙ্কা।

নারিন ঝড় ম্লান করে দিলেন হাসান আলি

আগেরদিনই জাগো নিউজের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে ঢাকা ডায়নামাইটসের কোচ খালেদ মাহমুদ সুজন জানিয়েছিলেন, মোহাম্মদ আমিরকে নিয়ে পড়েছেন তিনি মধুর সমস্যায়। যদি আমিরকে সুযোগ দেয়া হয়, তাহলে একজন ব্যাটসম্যান কমাতে হবে তাকে। কিন্তু কাকে বাদ দেবেন? ব্যাটসম্যানরা যে সবাই ফর্মে! তারওপর বিদেশি কোটার বিষয় আছে। কাকে বাদ দিয়ে আমিরকে নেবেন তিনি?

কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের বিপক্ষে সাকিব আল হাসান যখন টস করতে নামছিলেন, তখনও জানা গেল না কী সিদ্ধান্তটাই না নিচ্ছে ঢাকা! গত তিন ম্যাচের মধ্যে দুই ম্যাচেই দলের সেরা পারফরমার শহিদ আফ্রিদিকে বসিয়ে রাখা হলো। নেয়া হলো মোহাম্মদ আমিরকে। আফ্রিদি ব্যাট এবং বল হাতে সমান পারফরমার। এবারের বিপিএলে ব্যাট হাতে যেমন ঝড় তুলছেন, তেমনি বল হাতে তো রীতিমত বিধ্বংসীরূপ ধারণ করছেন তিনি। ৩ ম্যাচে ৯ উইকেট শিকারই তার সবচেয়ে বড় প্রমাণ।

আফ্রিদিকে বসিয়ে রেখে ঢাকা কি ভুল করলো? জবাব পেতে হয়তো খুব বেশি দেরি করতে হয়নি। পাকিস্তানি এই ড্যাশিং ওপেনারের পরিবর্তে ওপেনিংয়ে নামানো সুনিল নারিন না হয় তার অভাবটা পূরণ করেছেন। ঝড় তুলেছেন ব্যাটে। ৪৫ বল খেলে ৭ বাউন্ডারি আর ৫ ছক্কায় করেছেন ৭৬ রান। এছাড়া কুমার সাঙ্গাকারা করেছেন ২৮ রান। বাকি ব্যাটসম্যানদের কেউই আর দুই অংকের ঘরও ছুঁতে পারেননি।

যেখানে আনকোরা ব্যাটসম্যান সুনিল নারিন উত্তাল ব্যাটিং করে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের বোলার এবং ফিল্ডারদের দিশেহারা করে দিয়েছিলেন, সেখানে কেন মাত্র ১২৮ রানেই অলআউট ঢাকা ডায়নামাইটস? যে দলটি এই টুর্নামেন্টেই এখনও পর্যন্ত দু’বার ২০০ প্লাস স্কোরের জন্ম দিয়েছে, তারা কিভাবে ১৮.৩ ওভারে ১২৮ রানে অলআউট হয়?

ভাগ্যিস সুনিল নারিন দাঁড়াতে পেরেছিলেন। না হলে যে ঢাকাকেই সর্বনিম্ন রানের লজ্জায় অধোবদন হতে হতো! সেই লজ্জা থেকে বাঁচিয়েছেন কেবল নারিনই। আইপিএলে কলকাতা নাইট রাইডার্সের হয়ে বেশ কয়েকটি ম্যাচে নারিনের ইনিংস ওপেন করার অভিজ্ঞতা আছে। টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে মার-মার কাট-কাট ব্যাটিংই দরকার। যে কয়বল টিকে থাকা যায়, মারতে হবে। স্ট্রাইক রেট যত পারা যায় বাড়িয়ে ব্যাটিং করতে হবে। নারিন সেটা পারেন। কেকেআরেও সেটা প্রমাণ করেছেন। বিপিএলে ঢাকার হয়ে এই প্রথম ইনিংস ওপেন করতে নেমেও পারলেন। তার নিজের কাজটা তিনি করে দিয়ে গেছেন। ৪৫ বলে ৭৬ রান চাট্টিখানি কথা নয়!

কিন্তু নারিনের এই উত্তাল উইলোবাজি যে পুরোপুরিই ম্লান হয়ে গেলো এক তরুণ পাকিস্তানি পেসারের হাতে! চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতেই এই পেসার বুঝিয়ে দিয়েছিলেন, আগামীর ক্রিকেট বিশ্ব শাসন করবেন তিনি। করছেনও। মোহাম্মদ আমিরের সঙ্গে মিলে পাকিস্তানের বোলিং ব্যাটারিতে কতটা ভয়ঙ্কর শক্তির রূপ দিয়েছেন হাসান আলি, তা কেবল তাদের প্রতিপক্ষ হওয়া দলগুলোই বুঝতে পারছে। যেমনটা বুঝতে পেরেছিল ভারত, আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ফাইনালে।

আজ বুঝতে পারলো ঢাকা ডায়নামাইটস। যদিও এই ম্যাচে আমির আর হাসান আলি পরস্পর প্রতিপক্ষ। কিন্তু হাসান আলি যে সত্যি সত্যি বর্তমান সময়ে পেস জগতের এক উজ্জ্বল নক্ষত্র, সেটা যে কোনো উইকেট কিংবা পরিবেশেই হোক না কেন, তার প্রমাণ দিয়েছেন তিনি। পাকিস্তানের ঘরোয়া টি-টোয়েন্টি টুর্নামেন্ট শেষ করে আসার পর আরও একটি ম্যাচ খেলেছেন তিনি। রংপুর রাইডার্সের বিপক্ষে ওই ম্যাচে ছিলেন পুরোপুরি খরুচে বোলার। ৩৯ রানে দিয়েছিলেন তিনি। নিয়েছিলেন ১ উইকেট।

এরই মধ্যে ঢাকায় পার করে ফেলেছেন নিজের চতুর্থতম দিন। এর মাঝেই ঢাকার পরিবেশের সঙ্গে খাপ খাইয়ে ফেলেছেন নিজেকে। উইকেটটাও বেশ পড়া হয়ে গেছে। যে কারণে আজ যখন প্রতিপক্ষ ব্যাটসম্যান সুনিল নারিন ব্যাট হাতে ঝড় তুলছিলেন, তখন বল হাতে আরও বিধ্বংসীরূপে আবির্ভূত হয়ে গেলেন হাসান আলি।

কতটা বিধ্বংসী? তা তার বোলিং ফিগার দেখলেই বোঝা যাবে। ৩.৩-০-২০-৫। টি-টোয়েন্টিতে এর চেয়ে বিধ্বংসীরূপ আর কে কবে দেখেছে? পরিসংখ্যান ঘাটলে হয়তো আর দু’একটি পাওয়া যাবে। তাও পুরো টি-টোয়েন্টির ইতিহাসে। হাসান আলির এই ঝড়েই উড়ে গেল ঢাকার শক্তিশালি ব্যাটিং লাইনআপ। সুনিল নারিনের ঝড় তখনই ম্লান হয়ে গেলো, হাসান আলির সামনে।

২০ রান দিয়ে একা একজন ৫ উইকেট নেয়ার পর অন্যদের আর কিছু করার থাকে না। সঙ্গে যোগ হয়েছিলেন সাইফউদ্দিন আর ঢাকার দুর্ভাগ্য। সাইফউদ্দিন ফিরিয়েছিলেন ভয়ঙ্কর নারিনকে। আর দুর্ভাগ্য হলো, দুটি রান আউট। ২৮ রান করা সাঙ্গাকারা হয়েছেন রানআউট। গত তিন ম্যাচের মধ্যে দুটিতেই বিধ্বংসী ব্যাটিং করা কাইরন পোলার্ডও হয়েছেন রানআউট। ঢাকার আকার্শে দুর্ভাগ্য ভর তো করেছিল তখনই। ১২৮ রানে অলআউট হওয়ার মধ্য দিয়ে যার ষোলকলা পূর্ণ হলো।

আমিরকে নিয়ে দোটানায় ঢাকা

প্রথম দিন সিলেটের কাছে ৯ উইকেটে হার দেখে অতি বড় সমর্থকও ভড়কে গিয়েছিলেন। সে কি , এবার একদম শুরুতে এ কি হতচ্ছিরি অবস্থা ঢাকা ডায়নামাইটসের ? দলে তো তারকার অভাব নেই। গতবারের চেয়ে বরং বেশী। স্থানীয় ক্রিকেটার সংগ্রহও হয়েছে বেশ। সব মিলে সর্বাধিক তারার মেলা। কাগজে কলমে এক নম্বর দল।

সেই দল শুরুতে অনুজ্জ্বল ক্রিকেট খেলে বড় ব্যবধানে হারায় পরিণতি নিয়ে একটা সংশয়ের মেঘ এসে জমেছিল ভক্তদের মনে। কিন্তু সময় গড়ানোর সাথে সাথে সে মেঘ কেটে গেছে। মাঝে বৃষ্টিতে ধুয়ে মুছে যাওয়া ম্যাচটি ব্র্যাকেটবন্দী করলে টানা চার খেলায় জিতেছে গতবারের চ্যাম্পিয়নরা। এক কথায় ঢাকার জয়রথ সচল। চলছে উল্কার বেগে।

পাঁচ বিদেশী এভিন লুইস, কুমারা সাঙ্গাকারা, শহিদ আফ্রিদি, কাইরন পোলার্ড আর সুনিল নারিন। সাথে সাকিব, জহুরুল, মোসাদ্দেক, নাদিফ চৌধুরী ও আবু হায়দার রনি থাকছেন প্রায় নিয়মিত। মাঝে দক্ষিণ আফ্রিকান ক্যামেরন ডেলপোর্টকেও খেলানো হয়েছে দুই ম্যাচ। কিন্তু ব্যাট হাতে কিছু করতে পারেননি এ প্রোটিয়া। কাজেই এখন ঢাকার পাঁচ বিদেশী মোটামুটি ঠিক হয়ে গেছে- এভিন লুইস, আফ্রিদি, সাঙ্গাকারা, কাইরন পোলার্ড আর সুনিল নারিন।

আর স্থানীয় তিন পেসার-মোহাম্মদ শহিদ, সাদ্দাম ও খালেদ আহমেদের যে কোন একজনকে ঘুরিয়ে বসিয়ে খেলানো হচ্ছে। সব মিলে টিম কম্বিনেশন হয়েছে যথার্থ । সামর্থের সেরা লাইনআপই খুঁজে পেয়েছেন কোচ খালেদ মাহমুদ ও অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। ব্যাটসম্যান ও বোলারদের ব্যক্তিগত পারফরমেন্সও ভালো।

ক্যারিবীয় ওপেনার এভিন লুইস নিয়মিত ভালো করছেন। শুরুতে একদিকে রানের চাকা সচল রাখছেন। ব্যাটে ধারাবাহিকতাও বেশ। পাঁচ খেলায় দুই হাফ সেঞ্চুুরিতে তার সংগ্রহ ২০৪। আরেক ওয়েস্ট ইন্ডিয়ান কাইরন পোলার্ডও মিডল-লেট অর্ডারে সফল। পর পর দুই ম্যাচে ব্যাট হাতে জ্বলে উঠে দলের সাফল্যে গুরুত্বপূর্ন অবদান রেখেছেন তিনি।

আফ্রিদী ব্যাট হাতে এখন পর্যন্ত (তিন খেলায় ৫৩ , সর্বোচ্চ ৩৭) ঝড় তুলতে না পারলেও বোলিং দিয়ে পুষিয়ে দিচ্ছেন। একমাত্র বোলার হিসেবে তিন খেলায় অংশ নিয়ে দু’বার ৪ উইকেট করে পেয়েছেন এ পাকিস্তানী লেগস্পিনার। সাঙ্গাকারা এখন পর্যন্ত লম্বা ইনিংস খেলতে না পারলেও (তিন খেলায় ৮০ রান, সর্বোচ্চ ৩২) গড়পড়তা তার ব্যাট থেকে ২৫ থেকে ৩০ আসছে।

আলোচিত আলোড়িত সুনিল নারিনের (৪ খেলায় তিন বার ব্যাট করে ২৩ , সর্বোচ্চ ১৬) ব্যাটিংয়ের অবস্থা অনেকটা আফ্রিদির মতোই; ব্যাটে ঝড় তুলতে না পারলেও বোলিং দিয়ে পুষিয়ে দিচ্ছেন এ ওয়েস্ট ইন্ডিয়ান স্পিনার (৪ খেলায় ৬ উইকেট)।

এর সাথে জহুরুল রান করছেন নিয়মিত। অধিনায়ক সাকিবের ব্যাট সেভাবে কথা না বললেও বোলার সাকিব দ্বিতীয় ম্যাচ থেকেই নিজেকে খুঁজে পেয়েছেন। আর বাঁহাতি পেসার আবু হায়দার রনি ( ৫ ম্যাচে ১০ উইকেট) সাফল্যকে নিরন্তর সঙ্গী করে ফেলেছেন। ভাইটাল ব্রেক থ্রু দেয়ার পাশাপাশি প্রায় ম্যাচে সমীহ জাগানো বোলিং আর গড়পড়তা দুই তিন উইকেট করে পাচ্ছেন তিনি।

সব মিলে দারুণ এক দল ঢাকা। এ মুহুর্তে সর্বাধিক ম্যাচ জেতানো পারফরমারে ঠাসা। সেই দলে যুক্ত হয়েছেন পাকিস্তানের মোহাম্মদ আমিরও। শনিবার রাতেই রাজধানীতে এসে পৌঁছৈছেন এ বাঁহাতি ফাস্টবোলার।

এমনিতেই দারুণ দল। শুধুই তারকায় ভরা না, ম্যাচ জেতানো পারফরমারেও ঠাসা । সে কারণে দুর্দমনীয় হয়ে উঠা। সেই দলে মোহাম্মদ আমিরের মত একজন ফাস্টবোলারের অন্তর্ভুক্তি, ঢাকার শক্তি যে আরো বাড়লো!

এই তো কয়েক মাস আগে ইংল্যান্ডের ওভালে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ফাইনালে আমিরের এক আগুন ঝড়ানো স্পেলে বিরাট কোহলির ভারতের বিশ্বসেরা ব্যাটিং লাইন আপ পুরে ছাড়খাড় হয়েছিল। সেই আমির এখন ঢাকা ডায়নামাইটস শিবিরে।

আমির ও ঢাকা সাপোর্টাররা অপেক্ষার প্রহর গুনছেন। ভাবছেন আজ দুপুরে কুমিল্লার সাথে ম্যাচেই হয়ত আমিরের বারুদমাখা বোলিংয়ের দেখা মিলবে। এমন এক ফাস্টবোলারকে ছাড়া কি আর মাঠে নামবে সাকিবের দল?

দর্শক, ভক্ত ও সমর্থকরা তাদের মতো করেই ভাবছেন। কিন্তু ভিতরের খবর অন্যরকম। ম্যাচের আগের দিন রাতেও ঠিক হয়নি আমির খেলবেন, কি খেলবেন না। নাহ, কোন ইনজুরি নেই। আবার ভ্রমণ ক্লান্তি, অবসাদও নেই। তাহলে সমস্যা কোথায় ? আমিরের খেলা নিয়ে সংশয় কিসের?

এ প্রশ্নের সত্যিকার জবাব দিতে পারেননি কোচ খালেদ মাহমুদ সুজনও। রোববার রাতে জাগো নিউজের সাথে আলাপে ঢাকা থিংক ট্যাঙ্ক নিশ্চিত করে বলতে পারেননি , আমির খেলবেনই। কিন্তু কেন এ অনিশ্চয়তা? আমিরের মত বিশ্ব মানের ফাস্টবোলার খেলবেন, কি খেলবেন না; তা বলতে কেন দ্বিধা আর সংশয় ঢাকা কোচের? খুব জানতে ইচ্ছে করছে, তাইনা?

তাহলে শুনুন খালেদ মাহমুদের ব্যাখ্যা , ‘আমি আমার দলের শক্তির জায়গায় হাত দিতে গিয়ে দশবার ভাবছি। আমার মনে হয় এ মুহূর্তে আমার দলের যে শক্তি আছে, সেটা ব্যাটসম্যান কেন্দ্রীক বা ব্যাটিং নির্ভর। আমার বিদেশী কোটায় যে পাচঁজন খেলছে (লুইস, আফ্রিদি, সাঙ্গাকারা, পোলার্ড ও নারিন ) তারা সবাই ব্যাট হাতে অবদান রাখতে পারে। রেখেছেও।’

সঙ্গে তিনি যোগ করেন, ‘যেহেতু পাঁচজনের বেশী ফরেনার খেলানো যাবে না, তাই আমিরকে খেলাতে হলে ঐ পাঁচজনের একজনকে বাদ দিতেই হবে। আর তা দিতে গেলেই আমার দল থেকে একজন ব্যাটসম্যান কমাতে হয়। আমি আমার ব্যাটিং শক্তি কমিয়ে মাঠে নামবো কিনা, সেটাই ভাবছি। তাই বলতে পারছি না, আমির খেলবে কিনা। ওর খেলার সম্ভাবনা ফিফটি ফিফটি।’

এদিকে প্রতিপক্ষ কুমিল্লাকে সমীহর চোখেই দেখছেন ঢাকা কোচ। তার মূল্যায়ন, কুমিল্লাও বেশ সমৃদ্ধ দল। শক্ত প্রতিপক্ষ। তাই তো কন্ঠে এমন সংলাপ সুজনের, ‘দুটিই ভালো দল । দুই দলের সামর্থ ও শক্তি যথেষ্ট। দুই দলেই বেশ ক’জন ম্যাচ উইনারও আছে । আমার মনে হয় খুব ভালো খেলা হবে। মাঠে যারা সময় মত জ্বলে উঠতে পারবে, তারাই জিতবে।’

কোচ খালেদ মাহমুদ সুজনের কথা শুনে মনে হচ্ছে ঢাকা হয়ত আজ আমিরকে ছাড়াই মাঠে নামবে কুমিল্লার বিপক্ষে। কারণ ওপরে লুইস আর আফ্রিদিকে বাদ দেয়ার প্রশ্নই আসে না। আর পোলার্ড-নারিনও সার্ভিস দিচ্ছেন ভালো। বাদ দিতে হলে সাঙ্গাকারাকেই বাদ দিতে হয়। কিন্তু তার মেধা, মনন, প্রজ্ঞা আর অভিজ্ঞতার কথা ভাবলে আবার বাদ দেয়া কঠিন। সত্যিই মধুর সমস্যায় ঢাকা।

দেখা যাক, কোচ সুজন আর ক্যাপ্টেন সাকিব কিভাবে এ মধুর সমস্যার সমাধান করেন?

পিছিয়ে পড়েও ম্যানইউয়ের দুর্দান্ত জয়

চলতি মৌসুমের শুরুটা দুর্দান্ত ছিল ইউনাইটেডের। তবে মাঝ পথে দলের মূল খেলোয়াড়দের ইনজুরিতে কিছুটা খেই হারিয়ে ফেলেন। অবশেষে ইনজুরি কাটিয়ে দলে ফিরলেন পগবা-ইব্রাহিমোভিচরা। এতেই ঘরের মাঠে পিছিয়ে পড়েও নিউক্যাসল ইউনাইটেডের বিপক্ষে ৪-১ গোলের জয় নিয়ে মাঠ ছেড়েছে মরিনহোর দল।

ঘরের মাঠ ওল্ড ট্র্যাফোর্ডে ম্যাচের শুরু থেকেই বলের নিয়ন্ত্রণ নিজেদের করে নিয়ে খেলতে থাকে। তবে উল্টো এক আক্রমণে ম্যাচের ১৪ মিনিটে পিছিয়ে পরে দলটি। ইংলিশ ফরোয়ার্ড ডুয়াইট গেইলের গোলে লিড নেয় নিউক্যাসল।

পিছিয়ে পড়ে আক্রমণের ধার বাড়িয়ে দেয় স্বাগতিকরা। ম্যাচের ৩৭ মিনিটে দলকে সমতায় ফেরান মার্শিয়াল। ডান দিক থেকে পল পগবার ক্রসে হেডে বল জালে জড়ান ফরাসি এই ফরোয়ার্ড। আর বিরতিএ ঠিক আগে স্বদেশি মিডফিল্ডার অ্যাশলে ইয়ংয়ের ক্রসে হেডে দলকে ২-১ লিড এনে দেন ইংল্যান্ডের ডিফেন্ডার ক্রিস স্মলিং।

বিরতি থেকে ফিরে আক্রমণের ধার বাড়িয়ে দেয় ম্যানইউ। ম্যাচের ৫৪ মিনিটে মার্কাস র‌্যাশফোর্ডের হেডে বাড়ানো বল অনায়াসে জালে ঠেলে দেন ফরাসি মিডফিল্ডার পগবা। ৭০ মিনিটে স্পেনের হুয়ান মাতার পাস থেকে দলের চতুর্থ গোলটি করেন বেলজিয়ামের ফরোয়ার্ড রোমেলু লুকাকু।

এদিকে দীর্ঘদিনের চোট কাটিয়ে ফেরা জ্লাতান ইব্রাহিমোভিচকে ম্যাচের ৭৭ মিনিটে মার্শিয়ালের বদলি নামান কোচ। তবে বাকি সময়ে মাঠে ফেরাটাকে রাঙানোর মতো কিছু করতে পারেননি সুইডেনের এই ফরোয়ার্ড। এ জয়ে ২৬ পয়েন্ট নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে আছে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড।

দিকের অন্য ম্যাচে গাব্রিয়েল জেসুস ও কেভিন ডি ব্রুইনের গোলে লেস্টার সিটিকে হারিয়েছে ৩৪ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে আছে পেপ গার্দিওলার ম্যানচেস্টার সিটি। আর হ্যাজার্ডের জোড়া গোলে ওয়েস্ট ব্রমউইচ অ্যালবিওনকো ৪-০ গোলে হারিয়েছে চেলসি। ২৫ পয়েন্ট নিয়ে তৃতীয় স্থানে আছে গতবারের চ্যাম্পিয়নরা।

ভ্যালেন্সিয়ার বিপক্ষে নিষিদ্ধ পিকে

লা লিগায় পয়েন্ট তালিকার শীর্ষে বার্সেলোনা। দ্বিতীয় স্থানেই আছে ভ্যালেন্সিয়া। নিকট প্রতিদ্বন্দ্বিদের বিপক্ষে পরের রোববারের (২৭ নভেম্বর) গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচটি খেলতে পারবেন না জেরার্ড পিকে। লিগানেসের বিপক্ষে ৩-০ গোলে বার্সেলোনা জয় পাওয়ার দিনই যে মৌসুমে তার পঞ্চম হলুদ কার্ডটি দেখে ফেলেছেন এই ডিফেন্ডার!

লিগানেসের বিপক্ষে ম্যাচের আধা ঘন্টা পেরুতেই হলুদ কার্ড দেখেন পিকে। নর্দিন আম্রাব্যাটের সঙ্গে বল ট্যাকলের সময় এই ঝামেলা হয়েছে তার। আপিলটা এসেছিল বার্সার পক্ষ থেকেই। অথচ রেফারি উদিয়ানো ম্যালেনকো দৌঁড়ে এসে হলুদ কার্ড দেখিয়ে দেন পিকেকে।

বার্সা কোচ আরনেস্তো ভালভার্দে রেফারি ম্যালেনকোর কাছে অভিযোগ করেছিলেন। ম্যাচশেষে তাই সিদ্ধান্ত নিয়ে ভীষণ অসন্তোষ প্রকাশ করলেন তিনি।

ভালভার্দে মনে করছেন, প্রতিপক্ষ দোষ করলেও ঘরের দর্শকদের চাপে পিকেকে কার্ড দেখিয়েছেন রেফারি। তিনি বলেন, ‘আমি এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করেছিলাম। কেননা আম্রাব্যাটই গায়ে ধাক্কা লাগিয়েছিল, চ্যালেঞ্জটা দিয়েছিল সে। তবে ঘরের দর্শকরা চাপ তৈরি করে (কার্ডের জন্য)। আমার মনে হয়, এটা এমন একটা ফাউল ছিল যেটা আমাদের পক্ষে যেতে পারতো।’

ইকার্দির জোড়া গোলে ইন্টার মিলানের জয়

ফর্মে থাকা মাওরো ইকার্দির জোড়া গোলে রোববার রাতে আটলান্টাকে ২-০ গোলে হারিয়েছে ইন্টার মিলান। এতে সিরিআ’র পয়েন্ট তালিকায় জুভেন্টাসকে পেছনে ফেলে দুই নাম্বারে উঠে এসেছে তারা।

চলতি বছরের জুনে ম্যানেজার লুসিয়ানো স্প্যালেটি আসার পর একটি ম্যাচও হারেনি ইন্টার মিলান। দিনের অপর ম্যাচে ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন জুভেন্টাস সাম্পদোরিয়ার কাছে হেরে যাওয়ায় সুবিধা হয়েছে তাদের। পয়েন্ট তালিকার দ্বিতীয় স্থানে উঠে শীর্ষে থাকা নাপোলির থেকে এখন মাত্র ২ পয়েন্ট পিছিয়ে রয়েছে ব্ল্যাক এন্ড ব্লুরা।

ম্যাচের শুরু থেকেই আটলান্টা শিবিরকে ব্যতিব্যস্ত রেখেছিল ইন্টার মিলান। তবে আক্রমণ শানালেও গোলের দেখা পায়নি তারা। প্রথমার্ধ শেষ হয়েছে গোলশুন্য ভাবেই।

দ্বিতীয়ার্ধের ৫১তম মিনিটে আন্তোনিও কেনদ্রেভপার কর্নার থেকে দুর্দান্ত এক হেডে বল জালে জড়ান ইকার্দি। এর নয় মিনিট পর (৬০তম মিনিটে) দলকে আবারও আনন্দে ভাসান ইন্টার অধিনায়ক। এবার দানিলো ডি’এমব্রোসিওর ক্রস থেকে বল পেয়ে গোল করেন এই আর্জেন্টাইন। এটি চলতি মৌসুমের ১৩ ম্যাচে তার ১৩তম গোল।

ইকার্দি অবশ্য এই সংখ্যাটা বাড়িয়ে নিতে পারতেন আরও। আটলান্টার গোলরক্ষক অ্যাত্রিত বেরিশা তারে বেশ কয়েকটি শট ঠেকিয়ে দিয়েছেন। ঠেকিয়েছেন নিশ্চিত গোল হতে যাওয়া একটি হেডও।

টস জিতে ফিল্ডিংয়ে সিলেট

রংপুর রাইডার্স আর সিলেট সিক্সার্সের শনির দশা কাটছেই না। হারের বৃত্তেই বন্দী হয়ে রয়েছে দল দুটি। তাই দু’দলেরই সামনেই জয়ে ফেরার লক্ষ্য। এমন এক সমীকরণের ম্যাচে প্রথমেই টস জিতে রংপুরকে ব্যাটিংয়ের আমন্ত্রণ জানিয়েছে সিলেটের অধিনায়ক নাসির হোসেন।

সাত ম্যাচ খেলে তিন জয় ও তিন পরাজয়ে সাত পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের চার নম্বরে রয়েছে সিলেট। ঢাকা পর্বে একটি ম্যাচও এখনও জিততে পারেনি সিলেট। তাই আজকের ম্যাচে জয়ের বিকল্প ভাবছে না নাসিরবাহিনী।

এদিকে শেষ ম্যাচে রংপুরের হয়ে মাঠে নেমেছিল ক্রিস গেইল- ব্রেন্ডন ম্যাককালাম। দু’জনেই ছিলেন ফ্লপ। রংপুরের লক্ষ্য এই, দুই ব্যাটসম্যান জ্বলে উঠে দলকে পয়েন্ট টেবিলের তলানী থেকে টেনে তুলবে।

সিলেট সিক্সার্স একাদশ
নাসির হোসেন, সাব্বির রহমান, নুরুল হাসান সোহান, শুভাগত হোম, আবুল হাসান রাজু, তাইজুল ইসলাম, বাবর আজম, লিয়াম প্লাঙ্কেট, দানুসকা গুনথিলাকা, আন্দ্রে ফ্লেচার ও টিম ব্রেসনান।

রংপুর রাইডার্স
মাশরাফি বিন মর্তুজা, মোহাম্মদ মিথুন, শাহরিয়ার নাফীস, সোহাগ গাজী, রুবেল হোসেন, জিয়াউর রহমান, ক্রিস গেইল,ব্রেন্ডন ম্যাককালাম, রবি বোপারা, থিসারা পেরারা, জহির খান।

শেষ মুহূর্তের রোমাঞ্চের পরও টেস্ট ড্র

কলকাতার ইডেন গার্ডেনে শেষ দিনে টেস্ট নিশ্চিত ড্র জেনেও যে ক’জন দর্শক এসেছিলেন খেলা দেখার জন্য, শেষ মুহূর্তের দারুণ এক রোমাঞ্চকর অনুভুতি নিয়েই ঘরে ফিরতে পেরেছেন তারা। কারণ, নিষ্প্রাণ ম্যাচটিতে শেষ বেলায় যেভাবে ভারতীয় বোলাররা লঙ্কান ব্যাটসম্যানদের ওপর, চেপে বসেছিলেন- আর কিছুক্ষণ সময় পেলে তো ম্যাচটাই হয়তো জিতে যাচ্ছিলেন তারা। বিরাট কোহলিদের জন্য হতো সেটা বিরাট পাওয়া।

কিন্তু টেস্ট চলে তার আপন গতিতে। সময় শেষ হয়ে গেলে খেলাও শেষ। অবস্থায় যাই হোক না কেন, তার ওপর ভিত্তি করেই ফল নির্ধারণ। সুতরাং, সে হিসেবে নিস্প্রান ড্র দিয়েই শেষ হলো ম্যাচটি। কেউ জেতেনি, কেউ হারেওনি। শেষ মুহূর্তের রোমাঞ্চ ক্রিকেটকেই জয়ী করে দিয়েছে।

ইডেন গার্ডেনে সবুজ উইকেট তৈরি করেই বিপদে পড়েছিল ভারত। লঙ্কান পেসারদের গতির আগুনে পুড়তে হলো তাদের। প্রথম ইনিংসে তাই অলআউট হতে হয়েছে মাত্র ১৭২ রানে। যদিও শ্রীলঙ্কাও খুব বেশিদুর এগুতে পারেনি। ২৯৪ রানে অলআউট হয়েছিল সফরকারীরা। ১২২ রানের লিড নিতে সক্ষম হয় দিনেশ চান্ডিমালের দল।

জবাব দিতে নেমে দ্বিতীয় ইনিংসে পুরোপুরি ভিন্ন চেহারায় ভারত। এটাই ছিল ভারতের আসল চেহারা। খোলস ছেড়ে বেরিয়ে আসে ভারতীয় ব্যাটসম্যানরা। ওপেনার শেখর ধাওয়ান ৯৪ রান করে আউট হন। ৭৯ রান করেন আরেক ওপেনার লোকেশ রাহুল। বিরাট কোহলি করেন অপরাজিত সেঞ্চুরি। তিনি নট আউট থাকেন ১০৪ রানে।

৮ উইকেট হারিয়ে দলীয় ৩৫২ রানে ইনিংস ঘোষণা করে ভারত। ফলে জয়ের জন্য শ্রীলঙ্কার সামনে দাঁড়িয়ে যান ২৩১ রানের লক্ষ্য। এই লক্ষ্য তাড়া করে জয় সম্ভব নয়। কারণ সময় ছিল খুব কম। নিশ্চিত ড্রয়ের ম্যাচ। কিন্তু ব্যাট করতে নেমে উল্টো ভারতীয় পেসারদের তোপের মুখে দিশেহারা হয়ে পড়ে লঙ্কান ব্যাটসম্যানরা। ভুবনেশ্বও কুমার আর মোহাম্মদ শামি যেন মুর্তিমান আতঙ্ক। একের পর এক উইকেট তুলে নিতে শুরু করেন তারা। ভুবনেশ্বর নেন ৪ উইকেট। শামি নেন ২টি। ১টি নেন উমেষ যাদব।

৭ উইকেট হারিয়ে শ্রীলঙ্কা যখন দিন শেষ করে স্কোরবোর্ডে তাদের রান ৭৫। ভাগ্যিস দিন শেষ হয়ে গিয়েছিল। আর কিছুক্ষণ থাকলে পরাজয়ই বরণ করতে হতো তাদের।