দুদকের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী কাল : অভিযোগ ও সাজা দুটোই বেড়েছে

দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) ত্রয়োদশ প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী আগামীকাল মঙ্গলবার। নানা কর্মসূচির মধ্য দিয়ে দিবসটি পালন করবে দুদক। সকাল সাড়ে নয়টায় কমিশনের প্রধান কার্যালয় প্রাঙ্গণে জাতীয় পতাকা ও কমিশনের পতাকা উত্তোলন করবেন দুদক চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ।

এছাড়া তিনি সকাল পৌনে দশটায় একই স্থানে শান্তির প্রতীক পায়রা অবমুক্ত, বেলুন ও ফেস্টুন উড়ানো ছাড়াও বেলা ১০টায় বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালা অডিটোরিয়ামে কমিশনের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের দুর্নীতিমুক্ত থেকে দাফতরিক কার্যক্রম পরিচালনায় অঙ্গীকারাবদ্ধ থাকার লক্ষ্যে দুর্নীতিবিরোধী শপথ বাক্য পাঠ করাবেন।

একই স্থানে একই সময় দুর্নীতি দমন কমিশনের চলতি বছরের সার্বিক কার্যক্রম বিষয়ক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. মোহাম্মদ ফরাসউদ্দীন। কেন্দ্রীয় কর্মসূচির সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে কমিশনের ৬টি বিভাগীয় কার্যালয় এবং ২২টি সমন্বিত জেলা কার্যালয়ে একই কর্মসূচি উদযাপন করা হবে।

প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর কর্মসূচি উদযাপন উপলক্ষে কমিশনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের উদ্দেশে দুদক চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ বলেন, দুদকের সব আকাঙ্খা পূরণ হয়নি। আশা ছিল এমন অবস্থার সৃষ্টি হবে যাতে দুর্নীতিপরায়ণ ব্যক্তি বিশেষ করে সরকারি কর্মকর্তারা দুর্নীতি করার অনৈতিক সাহস সম্পূর্ণ হারিয়ে ফেলেন। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে এখনও সে পর্যায়ে যেতে পারেনি দুদক।

তিনি বলেন, কমিশনের বহুমুখী পদক্ষেপ গ্রহণের কারণেই এই প্রতিষ্ঠানের প্রতি জনগণের আস্থা বৃদ্ধি পাচ্ছে। ২০১৫ সাল থেকে ২০১৭ সালে কমিশনে অভিযোগ প্রাপ্তি বৃদ্ধি পেয়েছে প্রায় ৬০ শতাংশ। ২০১৭ সালে মামলার সাজার হার বৃদ্ধি পেয়ে প্রায় ৭০ শতাংশে উপনীত হয়েছে ।

তিনি বলেন, দুদকের সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য কর্মকর্তাদের দেশ-বিদেশে প্রশিক্ষণ দেয়া হচ্ছে। এ বছর কমিশনের নিজস্ব হাজতখানা, সশস্ত্র পুলিশ ইউনিট, গোয়েন্দা ইউনিট, দুদক অভিযোগ কেন্দ্রের হটলাইন ১০৬, রেকর্ড রুম নির্মাণ, সম্পদ পুনরুদ্ধার ইউনিট গঠনসহ বিভিন্ন অবকাঠামো নির্মাণের উদ্যোগ বাস্তবায়ন করা হয়েছে। তিনি এসব কার্যক্রম বাস্তবায়নের জন্য কর্মকর্তাদের অভিনন্দন জানান।

সরকারি অফিসে ৩ লাখ ৬০ হাজার পদ শূন্য

জনপ্রশাসন মন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম জানিয়েছেন, বর্তমানে দেশে সরকারি অফিস, মন্ত্রণালয়, অধিদফতরসমূহে ৩ লাখ ৫৯ হাজার ২৬১টি পদ শূন্য রয়েছে।

সোমবার বিকেলে জাতীয় সংসদে মোরশেদ আলমের (নোয়াখালী-২) প্রশ্নের জবাবে এ তথ্য জানান তিনি। এ সময় মন্ত্রী সংসদে উপস্থিত না থাকায় তার পক্ষে প্রশ্নের জবাব দেন প্রতিমন্ত্রী ইসমত আরা সাদেক।

মন্ত্রী জানান, শূন্য পদ পূরণের লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। সরকারি অফিসে শূন্য পদে লোক নিয়োগ একটি চলমান প্রক্রিয়া। বিভিন্ন মন্ত্রণালয়/বিভাগ এবং এর অধীন সংস্থাসমূহের চাহিদার প্রেক্ষিতে সরকারি কর্ম কমিশনের মাধ্যমে ৮ম, ৯ম, ও ১০-১২ গ্রেডের (১ম ও ২য় শ্রেণি) শূন্য পদে জনবল নিয়োগ করা হয়ে থাকে।

১৩-২০ গ্রেডের (৩য় ও ৪র্থ শ্রেণি) পদে স্ব স্ব মন্ত্রণালয়/বিভাগ/ অধিদফতর/ সংস্থার নিয়োগবিধি অনুযায়ী জনবল নিয়োগ দেয়া হয়। এছাড়া জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সংগঠন ও ব্যবস্থাপনা অনুবিভাগ থেকে ধারাবাহিকভাবে সব মন্ত্রণালয়/বিভাগ/ অধিদফতর/ বিভাগ স্ব স্ব নিয়োগবিধি অনুযায়ী বিভিন্ন পদে জনবল নিয়োগের প্রয়োজনীয় কার্যক্রম গ্রহণ করে থাকে।

রিজেন্ট এয়ারের সপ্তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী

বাংলাদেশের বেসরকারি শীর্ষস্থানীয় বিমান সংস্থা রিজেন্ট এয়ারের সপ্তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী অনুষ্ঠিত হয়ে গেল গত ১৮ নভেম্বর শনিবার। হোটেল রেডিসন ব্লুতে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পর্যটনমন্ত্রী জনাব রাশেদ খান মেনন এমপি এবং সংস্কৃতিমন্ত্রী জনাব আসাদুজ্জামান নূর এমপি।

বাংলাদেশের অভ্যন্তরীন বিমান যোগাযোগ ব্যাবস্থায় রিজেন্ট এয়ারের অবদানের কথা তুলে ধরে রাশেদ খান মেনন এমপি এই বিমান সংস্থাটির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর শুভেচ্ছা জনাান। সংস্কৃতিমন্ত্রী জনাব আসাদুজ্জামান নূর এমপি তার বক্তব্যে রিজেন্ট এয়ারের উজ্জল ভবিষ্যৎ কামনা করেন। এছাড়া সুচনা বক্তব্যে রিজেন্ট এয়ারের সিইও লে. জে. এম ফজলে আকবর যাত্রীসেবা ও রিজেন্ট এয়ারের ভবিষ্যৎ কর্মপরিকলাপনা তুলে ধরেন। অনুষ্ঠানে রিজেন্ট এয়ারের চেয়ারম্যান ইয়াসিন আলী ও এডি মাশরুফ হাবিব ছাড়াও রিজেন্ট এয়ারের সর্বস্তরের কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা উপস্থিত ছিলেন।

প্রসঙ্গত ২০১০ সালে এইচজি এভিয়েশন ‌‘রিজেট এয়ার ব্র্যান্ড’ নাম নিয়ে আকাশে ডানা মেলে হাবিব গ্রুপের এই বিমান সংস্থাটি। প্রতিষ্ঠার প্রথম বছরেই ‘বেস্ট এয়ার লাইন অব দ্যা ইয়ার’ খেতাবটি নিজেদের করে নেয় রিজেন্ট। একবছর পরেই দেশের সীমানা পেরিয়ে আর্ন্তজাতিক রুটে নাম লেখায় রিজেন্ট।

২টি ড্যাশ-৮ কিউ বিমান দিয়ে যাত্রা শুরু করা রিজেন্ট এয়ারের বহরে এখন যুক্ত হয়েছে আরো ছয়টি বোয়িং ৭৩৭ সুপরিসর বিমান যা ব্যাবহৃত হচ্ছে ৭টি আন্তর্জাতিক এবং ২টি অভ্যন্তরীণ রুটে যাত্রী পরিবহনে।

এদিকে সপ্তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীতে ১২-৩০ নভেম্বরের মধ্যে টিকেট কেটে ১৫ জানুয়ারি থেকে ১৫ জুন ভ্রমণের জন্য ৭টি আর্ন্তজাতিক এবং ২টি অভ্যন্তরীন রুটে ৫০ শতাংশ পর্যন্ত ছাড় ঘোষণা করেছে রিজেন্ট এয়ার। বর্ষপূর্তির ছাড়ের পর সব ট্যাক্সসহ ঢাকা ও চট্টগ্রাম থেকে ব্যাংকক যাওয়া-আসা ১৫ হাজার ৯৯৯ টাকা, কলকাতা ৮ হাজার ৪৯৯, মাসকাট ২২ হাজার ৪৯৯ এবং দোহা ২৬ হাজার ৪৯৯ টাকা।

অন্যদিকে ঢাকা থেকে কুয়ালালামপুর যাওয়া-আসা ১৭ হাজার ৯৯৯ টাকা, সিঙ্গাপুর ১৭ হাজার ৯৯৯, কাঠমান্ডু ১৩ হাজার ৯৯৯ এবং অভ্যন্তরীন রুট চট্টগ্রাম ৪ হাজার ৫০০ এবং কক্সবাজার ৬ হাজার ৪৯৯ টাকা করা হয়েছে। নির্ধারিত সময়ে টিকিট কেটে যাত্রীর পছন্দের সময়ে ভ্রমণ করতে পারবেন।

স্পিকারের সঙ্গে স্পেনের রাষ্ট্রদূতের সাক্ষাৎ

জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সঙ্গে তার সংসদ কার্যালয়ে বাংলাদেশে নবনিযুক্ত স্পেনের রাষ্ট্রদূত আলভারো ডি সালাস জিমেনেজ ডি আজকারাত সৌজন্য সাক্ষাৎ করেছেন।

সোমবার সাক্ষাতে তারা দ্বি-পাক্ষিক স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয়, ৬৩তম সিপিসি, দু’দেশের বাণিজ্যিক সম্পর্ক ও সংসদীয় কার্যক্রম নিয়ে আলোচনা করেন। স্পিকার বলেন, স্পেনের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক দীর্ঘদিনের। তিনি বাংলাদেশের উন্নয়ন ও অগ্রগতিতে স্পেনের সহযোগিতার প্রশংসা করেন এবং আগামীতেও এ সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

রাষ্ট্রদূত ৬৩তম কমনওয়েলথ পার্লামেন্টারি কনফারেন্স (সিপিসি) এর সফল আয়োজনের জন্য স্পিকারকে অভিনন্দন জানান। তিনি অর্থনৈতিক ও সামাজিক বিভিন্ন সূচকে বাংলাদেশের সফলতারও প্রশংসা করেন।

রাষ্ট্রদূত বলেন, বাংলাদেশের সঙ্গে স্পেনের বিভিন্ন ক্ষেত্রে বাণিজ্যিক সম্পর্ক রয়েছে। স্পেনের কয়েকটি বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশের তৈরি পোশাক শিল্পসহ অন্যান্য সেক্টরে কাজ করছে। ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশ ও স্পেনের সংসদীয় প্রতিনিধি দলের সফর ও অভিজ্ঞতা বিনিময়ের মাধ্যমে দু’দেশের পার্লামেন্ট উপকৃত হবে।

পুলিশের ১৩ এএসপিকে বদলি

ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) সহকারী পুলিশ কমিশনার (এএসপি সমমর্যাদা) পদের ১৩ কর্মকর্তাকে নতুন কর্মস্থলে বদলি করা হয়েছে। সোমবার ডিএমপি কমিশনার মো. আছাদুজ্জামান মিয়া স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশে এ বদলি বা পদায়ন করা হয়।

১৩ এএসপি বদলি :

ডিএমপির এএসপি কানিজ ফাতেমাকে ট্রাফিক-এডমিন অ্যান্ড রিসার্চ বিভাগে, প্রশাসন-উত্তরা বিভাগের এএসপি শিকদার মো. হাসান ইমামকে গোয়েন্দা-পূর্ব বিভাগে, ডিএমপির এএসপি ইমতিয়াজ মাহবুবকে প্রশাসন-উত্তরা বিভাগে, এএসপি আহসানুজ্জামানকে গোয়েন্দা-দক্ষিণ বিভাগে, এএসপি মো. খায়রুল আমিনকে পেট্রল-মোহাম্মদপুরে, এএসপি মো. সামসুজ্জামানকে মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগে, এএসপি সাদিয়া আফরিনকে উইমেন সাপোর্ট অ্যান্ড ইনভেস্টিগেশন বিভাগে, এএসপি মো. শিবলী নোমানকে ডিএমপির ওয়ার্কশপ বিভাগে, এএসপি মো. হান্নানুল ইসলামকে ট্রেনিং বিভাগে, এএসপি জুলফিকার আলীকে প্রটেকশন বিভাগে, ওয়ার্কশপের এএসপি মো. আব্দুল্লাহ-আল-মামুনকে এডমিন-ওয়ার্কশপ বিভাগে, এএসপি ইশতিয়াক আহমেদকে সাইবার সিকিউরিটি অ্যান্ড ক্রাইম এবং এএসপি পেট্রল-মোহাম্মদপুর বিপ্লব কুমার রায়কে প্রটেকশন বিভাগে বদলি করা হয়েছে।

জামালপুরে হচ্ছে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়

জামালপুরে ‘বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়-২০১৭’স্থাপনের বিল পাস করেছে জাতীয় সংসদ। সোমবার জাতীয় সংসদে বিলটি কণ্ঠভোটে পাস হয়।

বিলটি পাসের প্রস্তাব করেন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ। এর আগে বিরোধী দল জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য মো. ফখরুল ইমামসহ অন্যান্যদের বিলটির ওপর আনীত সংশোধনীসহ জনমত যাচাই-বাছাই কমিটিতে পাঠানোর প্রস্তাব নাকচ হয়ে যায়।

বিলে বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কাউন্সিল গঠন এবং কাউন্সিলের ক্ষমতা ও দায়িত্ব, অনুষদ গঠন ও এর দায়িত্ব-কর্তব্য, ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠা, বিভাগ গঠন, বিশ্ববিদ্যালয় তহবিল, অর্থ কমিটি গঠন, পরিকল্পনা ও উন্নয়ন কমিটি গঠন, বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠক্রম, ভর্তি, পরীক্ষা, পরীক্ষা পদ্ধতি, চাকরির শর্তাবলী, সংবিধি প্রণয়ন, বিশ্ববিদ্যালয় বিধি-প্রবিধি প্রণয়ন, বার্ষিক প্রতিবেদন, বার্ষিক হিসাবসহ সংশ্লিষ্ট বিষয়ে বিধানের প্রস্তাব করা হয়েছে।

বিলের উদ্দেশ্য ও কারণ সম্বলিত বিবৃতিতে বলা হয়েছে, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ে উচ্চতর শিক্ষার প্রসার এবং বিজ্ঞানের সঙ্গে সম্পৃক্ত বিষয়ে গবেষণা, প্রযুক্তি উদ্ভাবন ও হস্তান্তর এবং দেশে বিজ্ঞান শিক্ষা প্রসারের স্বার্থে প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণার আলোকে জামালপুরে ‘বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় বিল-২০১৭’ বিল সংসদে উপস্থাপন করা হলো।

বিমান বাহিনী প্রধান তুরস্ক সফর শেষে দেশে ফিরেছেন

বিমান বাহিনী প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল আবু এসরার, বিবিপি, এনডিসি, এসিএসসি তুরস্ক সফর শেষে সোমবার দেশে ফিরেছেন। সফরকালে বাংলাদেশ বিমান বাহিনী প্রধান তুরস্কের বিমান বাহিনী সদর দফতর পরিদর্শন করেন।

বিমান বাহিনী সদর দফতরে পৌঁছালে তুরস্ক বিমান বাহিনী চৌকস দল তাকে গার্ড অব অনার প্রদান করেন। তিনি গার্ড পরিদর্শন ও সালাম গ্রহণ করেন। সেখানে তিনি তুরস্ক বিমান বাহিনী কমান্ডারের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাতে মিলিত হন এবং পারস্পরিক স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয়ে মতবিনিময় করেন।

এছাড়াও তিনি ওই দেশের ঊর্ধ্বতন সামরিক ও বেসামরিক কর্মকর্তাদের সঙ্গে পেশাগত বিষয়ে আলোচনা করেন। বিমান বাহিনী প্রধান তুরস্কের প্রতিষ্ঠাতা কামাল আতাতুর্কের সমাধিস্থল পরিদর্শন করেন এবং পুষ্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে তাকে শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন।

গৌরব সমুন্নত রাখতে হবে সশস্ত্র বাহিনীকে : রাষ্ট্রপতি

সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের নেতৃত্বের প্রতি অনুগত থেকে তাদের গৌরব সমুন্নত রাখার আহ্বান জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো.আবদুল হামিদ।

২১ নভেম্বর ‘সশস্ত্র বাহিনী দিবস’ উপলক্ষে দেয়া বাণীতে তিনি এ আহ্বান জানান।

রাষ্ট্রপতি তার বাণীতে বলেছেন, যেকোনো বাহিনীর উন্নয়নের পূর্বশর্ত হলো নেতৃত্বের প্রতি গভীর আস্থা, পারস্পরিক বিশ্বাস, শ্রদ্ধাবোধ, কর্তব্যপরায়ণতা, পেশাগত দক্ষতা এবং সর্বোপরি শৃঙ্খলা। আমার দৃঢ়বিশ্বাস, সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যগণ নেতৃত্বের প্রতি পরিপূর্ণ অনুগত থেকে কঠোর অনুশীলন, পেশাগত দক্ষতা, কর্তব্যনিষ্ঠা ও দেশপ্রেমের সমন্বয়ে তাদের গৌরব সমুন্নত রাখতে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখবেন।’

দিবসটি উপলক্ষে বাংলাদেশ সেনা, নৌ ও বিমান বাহিনীর সকল সদস্যকে তিনি আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দনও জানান।

মহান মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসে ২১ নভেম্বর একটি স্মরণীয় দিন- এ কথা উল্লেখ করে আবদুল হামিদ বলেন, ১৯৭১ সালের এই দিনে তিন বাহিনী সম্মিলিতভাবে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর উপর সর্বাত্মক আক্রমণ পরিচালনা করে। তাদের সম্মিলিত আক্রমণে ‘আমাদের কাঙ্ক্ষিত বিজয় ত্বরান্বিত হয়’।

সশস্ত্র বাহিনী দিবসে পরম শ্রদ্ধার সঙ্গে তিনি স্মরণ করেন সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে; যিনি দীর্ঘ সংগ্রাম, জেলজুলুম ও ত্যাগ তিতিক্ষা সহ্য করে সমগ্র জাতিকে বাঙালি জাতীয়তাবাদ ও স্বাধীনতার মন্ত্রে উদ্বুদ্ধ করেন।

রাষ্ট্রপতি বলেন,নানা চড়াই উৎরাই পেরিয়ে ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ প্রথম প্রহরে বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতার ঘোষণা দেন। তাঁরই নেতৃত্বে দীর্ঘ ন’মাস সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর আমরা চূড়ান্ত বিজয় অর্জন করি।

মুক্তিযুদ্ধে আত্মোৎসর্গকারী বীরশ্রেষ্ঠ সিপাহী মোস্তফা কামাল, বীরশ্রেষ্ঠ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দীন জাহাঙ্গীর, বীরশ্রেষ্ঠ সিপাহী হামিদুর রহমান, বীরশ্রেষ্ঠ মো. রুহুল আমিন, ইআরএ- ১’র বীরশ্রেষ্ঠ ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট মতিউর রহমান, বীরশ্রেষ্ঠ ল্যান্স নায়েক নুর মোহম্মদ শেখ ও বীরশ্রেষ্ঠ ল্যান্স নায়েক মুন্সী আব্দুর রউফকেও গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেন রাষ্ট্রপতি।

রাষ্ট্রপতি দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের জন্য শাহাদতবরণকারী মুক্তিযোদ্ধাসহ সশস্ত্র বাহিনীর বীর শহীদদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করেন এবং যুদ্ধাহত ও শহীদ পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।

মহান মুক্তিযুদ্ধে সশস্ত্র বাহিনীর অবদান ও বীরত্বগাথা জাতি গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।

আবদুল হামিদ বলেন,বাংলাদেশের সশস্ত্র বাহিনী জাতির অহংকার। মহান মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে গড়ে ওঠা সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যগণ দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষার মহান দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি যেকোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকবিলা, বেসামরিক প্রশাসনকে সহযোগিতাসহ জাতিগঠনমূলক কর্মকাণ্ডে প্রশংসনীয় ভূমিকা পালন করে যাচ্ছেন। কেবল দেশেই নয়, সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যগণ জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে অংশ নিয়ে পেশাগতদক্ষতা, সততা ও নিষ্ঠার সাথে দায়িত্ব পালন করে বহির্বিশ্বে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করে চলেছেন। শান্তি মিশনে দায়িত্ব পালনকালে অনেক সদস্য শাহাদতবরণ করেছেন উল্লেখ করে তিনি তাদের আত্মার মাগফেরাত কমনা করেন এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান। রাষ্ট্রপতি বলেন,‘স্বাধীনতা আমাদের মহান অর্জন। স্বাধীনতাকে আরো অর্থবহ এবং এর সুফল জনগণের কাছে পৌঁছে দিতে আমাদের নিরন্তর প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখতে হবে।’

তিনি বলেন,সশস্ত্র বাহিনীর উন্নয়নে সরকার ফোর্সেস গোল-২০৩০ প্রণয়ন করেছে। এর ফলে সেনা, নৌ ও বিমান বাহিনীতে জনবল, স্থাপনা, আধুনিক যুদ্ধসরঞ্জাম বৃদ্ধিসহ বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কর্মসূচি বাস্তবায়িত হচ্ছে। আমার বিশ্বাস এসব কর্মসূচি সশস্ত্র বাহিনীকে আরও আধুনিক, দক্ষ ও গতিশীল করবে। তিনি ‘সশস্ত্র বাহিনী দিবস ২০১৭’ উপলক্ষে সশস্ত্র বাহিনীর উত্তরোত্তর সমৃদ্ধি এবং বাহিনীসমূহের সকল সদস্য ও তাদের পরিবারবর্গের অব্যাহত সুখ, শান্তি ও সমৃদ্ধি কামনা করেন।

সশস্ত্র বাহিনীর আধুনিকায়নে কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে সরকার

সশস্ত্র বাহিনীর প্রতিটি সদস্য দেশপ্রেম, পেশাদারিত্ব এবং উন্নত নৈতিকতার আদর্শে স্ব স্ব দায়িত্ব নিষ্ঠার সঙ্গে পালন করে যাবেন বলে প্রত্যাশা ব্যক্ত করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সশস্ত্র বাহিনী দিবস উপলক্ষে দেয়া এক বাণীতে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেছেন।

সরকার সশস্ত্র বাহিনীর আধুনিকায়নে সর্বাত্মক কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, জাতির পিতার সার্বিক নির্দেশনায় ১৯৭৪ সালে প্রণীত হয় জাতীয় প্রতিরক্ষা নীতি। এই নীতির আলোকে বর্তমান সরকার ‘ফোর্সেস গোল-২০৩০’ প্রণয়ন করেছে ।

এ ছাড়াও পেশাগত দায়িত্বপালনের পাশাপাশি সশস্ত্র বাহিনী দুর্যোগ মোকাবিলা, অবকাঠামো নির্মাণ, আর্তমানবতার সেবা, বেসামরিক প্রশাসনকে সহায়তা এবং দেশ গঠনমূলক কর্মকাণ্ডে অংশগ্রহণ করছে বলেও বাণীতে উল্লেখ করেন তিনি।

দিবসটি উপলক্ষে সেনা, নৌ ও বিমান বাহিনীর সকল সদস্যকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে ১৯৭১ সালে ২১ নভেম্বর দেশপ্রেমিক জনতা, মুক্তিবাহিনী, সশস্ত্র বাহিনী ও বিভিন্ন আধাসামরিক বাহিনীর সদস্যগণ দখলদার পাকিস্তানি বাহিনীর বিরুদ্ধে আক্রমণ করেন। সম্মিলিত আক্রমণের ফলে ১৬ ডিসেম্বর দখলদার পাকিস্তানি বাহিনীর আত্মসমর্পণের মাধ্যমে চূড়ান্ত বিজয় অর্জিত হয়। মুক্তিযুদ্ধে বাঙালি জাতির অগ্রযাত্রা ও বিজয়ের স্মারক হিসেবে প্রতিবছর ২১ নভেম্বর ‘সশস্ত্র বাহিনী দিবস’ পালন করা হয়।

প্রধানমন্ত্রী বাণীতে বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আহ্বানে সাড়া দিয়ে সমগ্র বাঙালি জাতি ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল। তাঁর দূরদর্শিতা, সাহস, ন্যায়ের প্রতি অবিচল আস্থা এবং ঐন্দ্রজালিক নেতৃত্বে বাঙালি জাতি পরাধীনতার শৃঙ্খল ভেঙে ছিনিয়ে এনেছিল স্বাধীনতার রক্তিম সূর্য।

ঐতিহাসিক এই দিনে বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধের সকল বীর শহীদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করে তিনি শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেন দেশমাতৃকার জন্য জীবন উৎসর্গকারী সশস্ত্র বাহিনীর শহীদদের।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, স্বাধীনতার পর যুদ্ধ বিধ্বস্ত দেশ পুনর্গঠনের পাশাপাশি জাতির পিতা একটি আধুনিক ও চৌকস সশস্ত্র বাহিনী গড়ে তোলার কাজ শুরু করেন। সেনাবাহিনীর জন্য তিনি মিলিটারি একাডেমি, কম্বাইন্ড আমর্ড স্কুল ও প্রতিটি কোরের জন্য ট্রেনিং স্কুলসহ আরও অনেক সামরিক প্রতিষ্ঠান এবং ইউনিট গঠন করেন। তিনি চট্টগ্রামে বাংলাদেশ নৌবাহিনী ঘাঁটি ঈসা খাঁ উদ্বোধন করেন।

বঙ্গবন্ধু ব্যক্তিগত উদ্যোগে তৎকালীন যুগোশ্লাভিয়া থেকে নৌবাহিনীর জন্য দু’টি জাহাজ সংগ্রহ করেন জানিয়ে তিনি বলেন, যেগুলো প্রায় ৪০ বছর পর আজও চালু আছে। একইভাবে বিমান বাহিনীর জন্য বঙ্গবন্ধু তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়ন থেকে সুপারসনিক মিগ-২১ জঙ্গি বিমানসহ হেলিকপ্টার, পরিবহণ বিমান ও র্যাডার সংগ্রহ করেন।

ঢাকা সেনানিবাসে আজ যান চলাচল সীমিত থাকবে

সশস্ত্র বাহিনী দিবস উপলক্ষে আজ মঙ্গলবার ঢাকা সেনানিবাসে বিভিন্ন কর্মসূচি পালিত হবে। এদিন ঢাকা সেনানিবাস এলাকায় যান চলাচল সীমিত থাকবে।

আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদফতর (আইএসপিআর) জানিয়েছে, আজ ঢাকা সেনানিবাসের রাস্তাগুলো (শহীদ জাহাঙ্গীর গেট থেকে স্টাফ রোড পর্যন্ত প্রধান সড়ক) যানজট মুক্ত রাখার লক্ষ্যে সেনানিবাসে অবস্থানকারী ব্যক্তিবর্গ এবং আমন্ত্রিত অতিথিদের বহনকারী যানবাহন ব্যতীত সকল প্রকার যানবাহন চালকদের সকাল ৭টা থেকে সকাল ১০টা ৩০ মিনিট পর্যন্ত এবং বেলা ১২টা থেকে রাত ৮টা ৩০ মিনিট পর্যন্ত সেনানিবাস এলাকা দিয়ে চলাচল পরিহার করার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে।

সেনানিবাসের মধ্য দিয়ে যানবাহন চলাচলে সাময়িক অসুবিধার জন্য সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের পক্ষ থেকে আন্তরিক দুঃখ প্রকাশ করা হয়েছে।

সশস্ত্র বাহিনী দিবস উপলক্ষে সেনাকুঞ্জের বৈকালীন সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত সশস্ত্র বাহিনীতে কর্মরত কর্মকর্তাদের বিকেল ৩টার মধ্যে এবং অন্যান্য অতিথিদের বিকেল সোয়া ৩টার মধ্যে উপস্থিত হওয়ার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে।